![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উন্নত বিশ্বের রাজনীতির সাথে উন্নয়নশীল দেশগুলোর রাজনীতির তফাতটা কী?
তফাতটা রাত আর দিনের মতোই। বুঝলেন না? আচ্ছা বলছি-
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে রাজনীতি হলো আধা কেজি সন্ত্রাস, এক মুঠ চাপাবাজি এবং তিন আঙ্গুলের এক চিমটি নীতির স্যালাইন। গণতন্ত্রের বুলি কপচে বিরোধীদলের মিটিং-এ ১৪৪ ধারা জারি করা যেমন এদেশে রাজনীতি, ঠিক তেমনি শুধুমাত্র বিরোধীতার জন্য বিরোধিতা করাও এদেশে রাজনীতি। বিরোধীদলের নৈরাজ্য রাজ্যে বরদাস্ত করা হবে না- রাষ্ট্রের জন্য এটা যেমন রাজনীতি তেমনি সরকার সমর্থকদের নৈরাজ্যে বিরোধীদের ইন্ধনের গন্ধ পাওয়াও রাজনীতি। তবে সবচেয়ে বড় রাজনীতি হলো- সন্ত্রাসী যেই হোক... হা হা হা...
রাজনীতির রাজ চক্করে ঘুরছে সবাই। একটু চোখ মেলে দেখুন কোথায় নেই রাজনীতি? শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কূটনীতি, সমরনীতি, একচোখানীতি, দুর্নীতি, সুনীতি এমনকি খেলাধুলাও রাজনীতির বাইরে নয়। খেলোয়ারদের যখন নির্দিষ্ট মৌসুমে দল বদল হয় তেমনি রাজনীতিকদেরও দলবদল নতুন কোনো ঘটনা নয়। দল বদল করে অনেক নেতাকেই তখন বলতে শোনা যায়, আরে ভাই দল বদল করছি তো কী হইছে? নীতি তো বদলাই নাই। এখানে প্রশ্ন হলো, তাদের নীতিটা কী?
তাদের নিতি হলো 'লুটেপুটে দে মা চেটেপুটে খাই' নীতি। অর্থাৎ যে দল যাবে ক্ষমতায় তারেই শুধু এদের মনে চায়। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে নাকি এরকম ডিগবাজির বিকল্প নেই। যেমন রাজনীতিতে বিকল্প নেই চাপাবাজির। রাজনীতির সাফল্যই নাকি নির্ভর করে চাপাবাজির উপর। যে যত বড় চাপাবাজ সে তত বড় নেতা। এদেশে নেতাদের চাপাবাজির প্রমান পাওয়া যায় নির্বাচনের সময়। পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতির ডালি সাজিয়ে ভোট এলেই তারা হাজির হয় জনগণের দুয়ারে। অথচ ক্ষমতায় গেলেই তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফল যে পরবর্তী নির্বাচনে তারা হাতেনাতে পায় না তা কিন্তু নয়। কিন্তু ঐ যে বলে কুত্তার লেজ! কুত্তার লেজের মতো তাদের মেরুদন্ড কখনওই সোজা হয় না।
বিজ্ঞানে সূর্য যেমন সকল ক্ষমতার উৎস তেমনি রাজনীতিতে গদিই সকল ক্ষমতার উৎস। তাই সকল রাজনীতিকের উদ্দেশ্য এবং পছন্দ ঐ এক জায়গায় এসে মিলে যায়। তোরা যে যা বলিস ভাই আমার গদিখানা চাই। এখানে বিরোধী দল এবং সরকারি দল সবাই এসে মিলে যায়। অথচ এদেশের রাজনীতিতে 'মিলন' শব্দটি কতটা কাঙ্খিত এবং একই সঙ্গে কতটা অবাস্তব এটা আমরা ছারা আর কে জানে! শত আলোচনা, পর্যালোচনা, পুঙ্খালোচনা করেও এখানে মতের মিল হয় না। এ পক্ষ যদি আগ্রহ প্রকাশ করে বলে, আমরা আলোচনায় বসতে রাজি। অন্যপক্ষ তখন পেঁচার মতো মুখ করে বলে, পরিবেশ নেই। এবার শুরু আসল খেলা। এই রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্যই তখন দেবদূতের মতো হাজির হয় বিদেশী মোড়লেরা। এ যেন রুটি সমবণ্টনের জন্য বানরের দারস্থ হওয়া। হি হি হি
রাজনীতির একই অঙ্গে কত রুপ! কেউ করে ধান্ধার রাজনীতি কেউ করে ধর্মের, আবার কেউ করে সুবিধার রাজনীতি কেউ করে স্বার্থের। এতসব রাজনীতির ভিড়ে আদর্শের রাজনীতি সত্যিই দুর্লভ।
পাঠক সবশেষে আপনার জন্য রাজনীতি বিষয়ক একটি গল্প :
ছেলে বাবাকে-
: বাবা এই যে সারাদিন তুমি রাজনীতি নিয়ে ব্যাস্ত থাকো, রাজনীতি জিনিসটা কী?
: সে তুমি বুঝবে না। আগে বড় হও তারপর...
: তুমি বুঝিয়ে বলো তাহলেই বুঝব।
: তাহলে শোনো, ধরো, এ বাড়িটা হলো দেশ। তোমার মা দেশ পরিচালনা করে। অর্থাৎ সরকার। তুমি, বাসার দাড়োয়ান, কাজের বুয়া এরা হল জনগণ। আর আমি হলাম রাজনৈতিক নেতা। আমি এদেশের রাজনীতি পরিচালনা করি।
: কিছুই তো বুঝলাম না।
: এজন্যই তো বললাম বড় হও তখন বুঝবে। এখন যাও। আমার একটা মিটিং আছে।
এর কিছুদিন পরের ঘটনা। এক রাতে ছেলে বাবাকে কাজের বুয়ার বিছানায় আবিষ্কার করায় বাবা হুঙ্কার দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন-
: এতো রাতে তুমি এখানে কী করছো?
: রাজনীতি বোঝার চেষ্টা করছি বাবা।
: মানে?
: বাবা, আমি আজ রাজনীতির মানে বুঝে গেছি।
: স্টুপিড!
: সত্যি বলছি বাবা। আমি রাজনীতির মানে বুঝে গেছি। এদেশে সরকার যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন রাজনৈতিক নেতারা জনগণকে ইচ্ছেমত ব্যবহার করে। ঠোঁট কামড়ে সহ্য করা ছাড়া গনগণের তখন আর কিছুই করার থাকে না। এটাই এদেশের রাজনীতি। আমি ঠিক বলেছি না বাবা?
©somewhere in net ltd.