![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার শপথ শুনিয়েছি, আমি প্রস্তুত হচ্ছি, আমি সব কিছুর নিজস্ব প্রতিশোধ নেবো আমি আমার ফিরে আসবো
ঝরঝর বাদলা দিনে পথ চলতে ছাতার মত উপকারী বন্ধু আর নেই। একসময় জুতা এবং ছাতা ছিল আভিজাত্যের প্রতিক। সাধারণ মানুষ কেউ জুতা বা ছাতা ব্যবহার করতে পারতো না। শুধুমাত্র শাসক ও অভিজাত শ্রেনী ছাতা ব্যবহার করতো। সেই সময় ছাতা ছিল বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে মারসিডিজ বা বিএমডাব্লিউ গাড়ীর মত আভিজাত্যের প্রতিক । জুতা আবিষ্কারের গল্প আমাদের অনেকেরই জানা। কিন্তুু ছাতা? হ্যাঁ, ছাতা আবিষ্কৃত হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে। ঠিক কোথায় এবং কারা প্রথম ছাতা আবিষ্কার করেছিল এই নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেউ বলে মিশরীয়রা প্রথম ছাতা আবিস্কার করে আবার কেউ বলে চাইনিজরা। তবে প্রাচীন মিশর, গ্রীস এবং চীন দেশের চিত্রকর্মে ছাতার নিদর্শন পাওয়া যায়। ছাতা প্রথমে ব্যবহৃত হত সুর্যের তাপ থেকে রক্ষা পাবার জন্য এবং মহিলারাই ছিল মুলত ছাতা ব্যবহারকারী। তবে বৃষ্টি প্রতিরোধ করার জন্য প্রথম ছাতার ব্যবহার শুরু করে চাইনিজরা। ছাতা আবিষ্কারের কাহিনী অনেক পুরাতন হলেও অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত ছাতার আকৃতি ছিল অনেক বড় এবং ওজনও ছিল বেশী। যেহেতু ছাতার রডগুলো ছিল কাঠের বা তিমি মাছের কাঁটার এবং হাতল ছিল প্রায় দেড় মিটার লম্বা তাই ছাতার গড় ওজন বেশী ছিল, আনুমানিক ৪-৫কেজি।
ছাতা ইংরেজী প্রতিশব্দ ‘umbrella” শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ”umbra” শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ shade বা shadow। আজ থেকে প্রায় চার হাজার বছর আগে ছাতা আবি®কৃত হলেও ষোড়শ শতকের প্রথম দিকে এসে ছাতা কিছুটা জনপ্রিয়তা লাভ করে উত্তর ইউরোপের বৃষ্টি প্রধান এলাকায়, বিশেষ করে লন্ডনে। তবে এই সময় শুধু মহিলারাই ছাতা ব্যবহার করত। পুরুষদের মাঝে ছাতার কোন ব্যবহার ছিলনা। পারস্য পর্যটক এবং লেখক জোনাস হ্যানওয়ে ছাতাকে জনপ্রিয় করতে ইংলান্ডের রাস্তায় একটানা ৩০ বছর ছাতাকে সঙ্গী করেন। মুলত তিনিই ইংল্যান্ডে পুরুষদের মাঝে ছাতার ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলেন। যে কারণে ইংরেজদের মাঝে ছাতার আরেক নাম ’হ্যানওয়ে’। হ্যানওয়ের প্রচেষ্টাতেই একটা সময় নারী-পুরুষ সবাই ছাতাকে নিত্যসঙ্গী করলেন। এই সময়ে একটা কৌতুক খুব জনপ্রিয় ছিল। এক ভদ্রলোক সব সময় ছাতা ব্যবহার করেন। একদিন অফিসে বের হবার সময় নতুন ছাতাটা হঠাৎ নষ্ট হয়ে গেল। মন খারাপ করে ভদ্রলোক ছাতা ছাড়াই একটা পাবলিক বাসে উঠে বসলেন। বাস থোক নামবার সময় অভ্যাস বসত সহযাত্রী ভদ্রমহিলার ছাতা নিয়ে বাস থেকে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঠিক এই সময় ভদ্রমহিলা ছাতা চোর বলে চিৎকার করলে বাসের অন্য যাত্রীরা তাকে ধরে ফেলল। লোকজন ছাতাটি কেড়ে নিলো এবং তাকে গনধিক্কআর দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দিল। ভদ্রলোক পরদিন বাসার সমস্ত পুরানো ছাতা দোকানে নিয়ে সারাতে দিলেন। বিকেলে অফিস শেষ করে সেই দোকান থেকে মোট আটটা নিয়ে বাসে উঠলেন। ঘটনাক্রমে সেদিনও তিনি বসেছেন ঐ ভদ্রমহিলার পাশে। ভদ্রমহিলা তার হাতে এতগুলো ছাতা দেখেই বলে উঠলেন -আজ দেখছি আপনার শুভদিন, পুরো অফিস ঝেড়ে এসেছেন!
বিশ্বের প্রথম ছাতার দোকান ”জেমস স্মিত এ্যান্ড সন্স” চালু হয় ১৮৩০ সালে এবং এই দোকান লন্ডনের ৫৩ নিউ অক্সফোর্ড ষ্টিটে আজও চালু আছে। ১৮৫২ সালে স্যামুয়েল ফক্স স্টিলের চিকন রড দিয়ে রাণী ভিক্টোরিয়ার জন্য ছাতা তৈরী করেন। ইংল্যান্ড বিশেষকরে লন্ডনে প্রচুর বৃষ্টি হয় জন্য সেখানে ব্যাপকভাবে ছাতার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যে কারণে লন্ডন ছাতার শহর হিসাবে পরিচিত। একসময় বিশ্বের অনেক দেশ বৃটিশদের কলোনি ছিল। আর সেই কারণে তারা বিভিন্ন দেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে অনেক কম খরচে ছাতা তৈরী করতে পারতো। সেই সময় তারা সোনা, রুপা, চামড়া, বিভিন্ন প্রানির শিং, বেত ও হাতির দাঁত দ্বারা ছাতার হাতল তৈরী করত। ১৭১৫ সালে মারিয়াস নামক এক পারস্যে নাগরিক পকেট ছাতা আবিষ্কার করার কৃত্তিত্ব দাবি করেন। এরপর উনিশ শতকের দিকে ছাতাকে বিভিন্ন ডিজাইনের এবং সহজে বহনযোগ্য করা হয়। ১৮৫২ সালে গেজ বা গেড নামে একজন প্যারিস নাগরিক স্বয়ংক্রিয় সুইসের সাহায্যে ছাতা খোলার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।
১৯২০ সালে জার্মানির বার্লিন শহরের হ্যানস হাপট নামক এক ব্যক্তি ছাতা তৈরীতে অভিনব পরিবর্তন আনেন । তিনি ছোট সাইজের সহজে পকেটে বহনযোগ্য ছাতা তৈরী করেন। ১৯৩৬ সালে লর্ড ও লেডী নামক এই ছাতা জার্মান জনগনের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছিল। ১৯৫০ সালের দিকে জার্মানির এই নিরিপস্ কোম্পানীর ছাতার ডিজাইন ও আকার ভ্রমনকারীদের মাঝে খুব সমাদৃত হয়েছিল। ১৯৬০ সালে পলেষ্টার কাপড়ের ছাতা পৃথিবীজুড়ে ব্যাপক হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিল। উপহার হিসাবেও ছাতা এই সময় খুবই সমাদৃত হয়েছিল। বিংশ শতকের শেষের দিকে ছাতার আর এক ধরনের পরিবর্তন আসে। একসময় ছাতার রং কালো থাকলেও এখন বাহারী রঙ্গের ছাতা তৈরী হচ্ছে। এ্যালুমিনিয়াম, ফাইবার গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করে অনেক আকর্ষনীয় ডিজাইনের ছাতা এসেছে বাজারে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে খোলা ও বন্ধের আলাদা সুইচ চমক এনেছে জনগনের মাঝে। ছাতার কাপড়, রং, সাইজ ও ডিজাইনে এসেছে অনেক ধরনের পরিবর্তন। অষ্টাদশ শতকে বৃষ্টি থেকে বাচার জন্য ছাতা ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে রোদ কিংবা বৃষ্টি সবসময়ই ছাতা ব্যবহৃত হচ্ছে।
16-08-09
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৪
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: ধন্যবাদ মোহাম্মদ লোমান।
২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৭
প্রচেত্য বলেছেন: বাহ, বেশ তথ্য সমৃদ্ধ
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৫
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: প্রীত হইলাম।
৩| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৯
জাবেদ ইয়াকুব বলেছেন: ছাতা বি্ষয়ে শিক্ষিত হইলাম। আপনাকে ধন্যবাদ
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১৬
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: আপনার জন্যও শুভকামনা।
৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৪
জেরী বলেছেন: একদম ১মের ছাতাটা অনেক সুন্দর
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৩৬
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: লাগবে নাকি? এক্সটা আছে., আওয়াজ দিয়েন
৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৩৬
মানুষ বলেছেন: শরীফ ছাতা কি এখনও আছে?
৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১০:৪০
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: চাইনা ছাতায় বাজার ভরে গেছে, তাই দেশী ছাতা অবস্থা বলা কঠিন।
৭| ১৪ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:২৯
সিপন মাহমুদ বলেছেন: খুবই তথ্যবহুল পোষ্ট। খুব ভাল লেগেছে। + ও প্রিয়তে......
৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১২:২৫
তারেক.মাহমুদ বলেছেন: thanks
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৩৫
মোহাম্মদ লোমান বলেছেন: ছাতা ইতিহাস ভালই লাগল।