নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাসের পাতায় পৃথিবীর প্রথম জীব হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমণ কারী দূরভাগা লাইকা

১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:১৬


লাইকা ছিল একটি কুকুর যাকে সকলেই বলে পৃথিবীর প্রথম জীব হিসেবে পৃথিবীর কক্ষপথ পরিক্রমণের সৌভাগ্য
গণ।আসলে কি লাইকার জন্য সেই অভিযান যেমন ছিল সৌভাগ্যের তেমন ছিল দূর্ভাগ্যে। ১৯৫৭ সালের ৩রা নভেম্বর উৎক্ষেপণ করা সোভিয়েত নভোযান স্পুতনিক ২ তে চড়ে এটি মহাকাশ ভ্রমণ করেছিল লাইকা নামক সে দূর্ভাগা কুকুরটি।লাইকার মূল নাম ছিল কুদরিয়াভকা এবং লাইকা ছিল একটি মেয়ে কুকুর।অত্যধিক চাপ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে উৎক্ষেপণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লাইকা মারা গিয়েছিল। তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কোন সমস্যা হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।আর এই মহাকাশ অভিযানেরও কয়েক দশক পর লাইকা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ মানুষকে জানানো হয়েছিল।লাইকা পুরো ভ্রমণের সময় বেঁচে না থাকলেও এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছিল যে পৃথিবীর কক্ষপথে উৎক্ষেপিত মহাকাশযানে ওজনহীন থাকা সত্ত্বেও যাত্রীর পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব। এর মাধ্যমে মনুষ্যবাহী নভোযান প্রকল্প শুরু হতে পেরেছিল। কোন জীবের উপর মহাকাশের পরিবেশের প্রভাব কিরকম হয় তাও লাইকার মাধ্যমে জানা গিয়েছিল।

স্পুতনিক ১ এর সফল অভিযানের পর রুশ নেতা Nikita Khrushchev ৭ই নভেম্বর বলশেভিক বিপ্লবের ৪০তম বর্ষপূর্তীতে দ্বিতীয় আরেকটি মহাকাশ অভিযান প্রেরণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। আগেরটির চেয়ে অনেক সূক্ষ্ণ একটি উপগ্রহের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই উপগ্রহের নির্মাণ কাজ ডিসেম্বরের আগে শেষের সম্ভাবনা না থাকায় এর ভাগ্যে স্পুতনিক ২ জোটেনি। স্পুতনিক ৩ এর মাধ্যমে এই উপগ্রহ কক্ষপথে প্রেরণ করা হয়।নভেম্বর সময়সীমার মধ্যে শেষ করার জন্য অপেক্ষাকৃত সাধারণ ও নিম্নমানের একটি নকশা বানাতে হয়েছিল। রুশ কর্মকর্তারা জানান, অক্টোবরের ১০ কি ১২ তারিখে এই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ নভোযান তৈরির জন্য তারা সময় পেয়েছিলেন মাত্র ৪ সপ্তাহ। এ কারণে স্পুতনিক ২ অনেক নিচু মানের এবং অপরীক্ষিত যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। তাতে করে যেহেতু জীবন্ত একজন যাত্রীকে পাঠাতে হয়েছিল সেহেতু এর সাথে সৌর বিকিরণ এবং মহাজাগতিক রশ্মি পরিমাপের ব্যবস্থা সংযুক্ত করতে হয়েছিল।নভোযানটিতে জীবন ধারণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এতে একটি অক্সিজেন উৎপাদক এবং অক্সিজেনকে বিষাক্ত হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা এবং কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ছিল। একটি পাখা ছিল যা কেবিনের তাপমাত্রা ১৫° সেলসিয়াস থেকে বেড়ে গেলেই সক্রিয় হয়ে উঠতো এবং কুকুরের সহনীয় তাপমাত্রা বজায় রাখতো। ৭ দিন বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার জেলাটিন হিসেবে সরবরাহ করা হয়েছিল। কুকুরটিকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য একটি ব্যাগের সাথে যুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। উঠে দাড়ানো, হাটা বা শোয়ার জন্য লাইকা যেন বেশি নড়াচড়া করতে না পারে এজন্য শিকল ছিল। তবে কেবিনটিতে যাতে উল্টো ভাবে লাইকা ঘোড়তে পারে সেরকম যথেষ্ট পরিমান কোনো জায়গা ছিল না। কুকুরকে ঘোড়ার সাজের মত একটি হার্নেস পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। হৃদ্যন্ত্রের পাল্স নির্ণয়ের জন্য একটি ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম ছিল। তাছাড়াও শ্বসন হার, সর্বোচ্চ ধমনী চাপ এবং কুকুরের চলাচল শনাক্ত করার উপযোগী যন্ত্রপাতিও ছিল।

তবে কুকুরটির প্রথমে লাইকা নাম ছিল না।কুকুরটি মস্কোর রাস্তা রাস্তায় ভবঘুরের মত ঘুরে বেড়াতো। এই নারী কুকুরটি যখন পাওয়া গিয়েছিল তখন তার বয়স ছিল প্রায় ৩ বছর আর ওজন ছিল প্রায় ৬ কেজি । সোভিয়েত কর্মকর্তারা এর বেশ কিছু নাম দিয়েছিল যার মধ্যে রয়েছে: লাইকা নামটিই পৃথিবীর সর্বত্র জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কুকুরের বেশ কয়েকটি প্রজাতির রুশ নাম ছিল লাইকা। মার্কিনীরা স্পুতনিকের শব্দ-কৌতুক হিসেবে লাইকার নাম দিয়েছিল মুটনিক। অনেক মার্কিনীই অবশ্য লাইকাকে শুধু কার্লি বলে ডাকতো। লাইকার পুরো পরিচয় সঠিকভাবে জানা যায়নি। সাধারণত ধারণা করা হয় যে এটি অনেকটা হাস্কির মত এবং এরকম অন্যান্য নর্ডিক প্রজাতি থেকে এসেছে। হাস্কির সাথে টেরিয়ারের কিছুটা সমন্বয় রয়েছে এতে।এর আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া কেবল অর্ধ-কক্ষীয় বা সাব-অরবিটাল অভিযানগুলোতেই প্রাণী পাঠাতো। স্পুতনিক ২ এর জন্য তিনটি কুকুরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল যাদের নাম ছিল আলবিনা, মুশকা এবং লাইকা। রুশ মহাকাশ-জীবন বিজ্ঞানী Oleg Gazenko লাইকাকে নির্বাচন করেন এবং তাকেই তিনি সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণ দেন।

আলবিনা দুইটি অধিক উচ্চতার পরীক্ষণমূলক রকেট উড্ডয়নে অংশ নিয়েছিল। মুশকাকে যন্ত্রপাতির কর্মক্ষমতা এবং জীবন ধারণের উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিতকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল।স্পুতনিক ২ এর কেবিন খুব ছোট ছিল। এতো ছোট জায়গায় থাকতে কুকুরদেরকে অভ্যস্ত করার জন্য প্রায় ২০ দিন পর্যন্ত তাদেরকে এর থেকেও ছোট কক্ষে রাখা হয়েছিল। এতো ছোট ঘরে আটকে থাকার কারণে তাদের মল-মূত্র ত্যাগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, বিশ্রামে ব্যঘাত ঘটায় তারদের অবস্থা স্বাভাবিকের তুলনায় খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মল নরম করে দেওয়ার জন্য ল্যাক্সাটিভ ব্যবহার করেও কোন লাভ হচ্ছিল না। গবেষকরা বুঝতে পারলেন অনেক দিনের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ছাড়া কার্যকর কোনো ফল লাভ সম্ভব নাই। কুকুরদেরকে একটি সেন্ট্রিফিউজে রাখা হয়েছিল যাতে সিম্যুলেশনের মাধ্যমে রকেট উৎক্ষেপণের সময়কার ত্বরিত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। তাছাড়াও নভোযানের শব্দের সিম্যুলেশন করা একটি যন্ত্রের মাধ্যমেও তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এতে তাদের হৃদ্কম্পনের হার দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল এবং চাপ ৩০-৬৫ টর পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তাদের এক ধরণের পুষ্টিকর জেল খাওয়ানো হতো। মহাকাশে এই জেলকেই তাদের খাদ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছিল।উৎক্ষেপণ মঞ্চে নিয়ে যাওয়ার আগে এক বিজ্ঞানী লাইকাকে তার সঙ্গে করে নিজের বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন। সোভিয়েত মহাকাশ চিকিৎসা বিষয়ে লেখা একটি কালপঞ্জিমূলক গ্রন্থে ডঃ ভ্লাদিমির ইয়াজদোভ্স্কি লিখেছেন, আমি তার জন্য সুন্দর কিছু করতে চেয়েছিলাম: কারণ তার আয়ু আর বেশি দিন ছিল না।নাসার একটি দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে যে ১৯৫৭ সালের ৩১শে অক্টোবর অর্থাৎ উৎক্ষেপণের ৩ দিন আগেই লাইকাকে কৃত্রিম উপগ্রহটির ভেতর স্থাপন করা হয়েছিল। উৎক্ষেপণের দিন সেখানে প্রচণ্ড শীত ছিল। সেই কারণে একটি নমনীয় নলের ভেতর দিয়ে গরম পানি প্রবাহিত করার মাধ্যমে লাইকার ধারকটিকে গরম রাখা হচ্ছিল। উৎক্ষেপণের ঠিক আগে লাইকাকে সার্বক্ষণিক চোখে চোখে রাখতে দুই জন সহকারী নিয়োগ করা হয়েছিল।

তথ্যসূত্রঃ
ইন্টারনেট।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৩২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আহারে লাইকা!

১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৪১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ভাই মোস্তফা সোহেল অনেকেই তাকে সৌভাগ্যবান বলেও আমি তাকে দূর্ভাগা বলি কারন জেনে শুনে মরণ যাত্রায়
পা বারানো বা ঠেলে দেয়া।

২| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৪০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
মানুসের মহান সাফল্যের জন্য জীবন দিল লাইকা।

১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৪২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: এটাই লাইকার জন্য ছিল দূর্ভাগ্য ্যধন্যবাদ ভাই মোঃ মাইদুল সরকার।

৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২

লায়নহার্ট বলেছেন: {লাইকাকে পাঠানোর আগে তাকে জিজ্ঞেস করে পাঠানো হয়নি}

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৪:৫৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সেটা বললেও লাইকার কিছু করার ছিলনা।

৪| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: ছোটবেলায় যখন লাইকার কথা প্রথম জেনেছিলাম তখন খুব অবাক হয়েছিলাম।

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:০২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: এখন একটু ভেবে দেখুন ।দেখবেন লাইকার জন্য অনেক কষ্ট লাগবে।

৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


মহাশুন্য অভিযানে, মানব সভ্যতার অগ্রগতির জন্য লাইকাকে প্রাণ দিতে হয়েছে; এটার দরকার ছিলো; তথ্যবহুল পোষ্ট।

পোষ্টের শুরুর দিকে সামান্য ভুল আছে, সে "পৃথিবীর কক্ষপথ" পরিভ্রমণ করেনি; সে পৃথিবীর চারিদিকে স্পুটনিক'এর ( স্যাটেলাইট) কক্ষপথ পরিভ্রমনে ছিল।

সুন্দর পোষ্ট।

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:১২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ তথ্যের কথা মাথায় রাখলাম।

৬| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০

:):):)(:(:(:হাসু মামা বলেছেন: সুন্দর ইতিহাস। :)

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:১২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ হাসু ভাই।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৬

একদম_ঠোঁটকাটা বলেছেন: অনেক কিছু জানা হল।

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:১৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই একদম_ঠোঁটকাটা।

৮| ১২ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:২৫

সূচরিতা সেন বলেছেন: অনেক অজানা বিষয় জানা হল।

১৪ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৫:১৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ বোন সূচরিতা সেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.