নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেমন ছিল ব্রাজিলের স্বাধীনতা এবং ব্রাজিলীয় সাম্রাজ্য ? পোস্টটি উৎসর্গ সামুর নিবেদিত প্রাণ ব্লগার চাঁদগাজী ভাইকে

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪


১৮২১ সালের ২৬শে এপ্রিল রাজা ষষ্ঠ জোয়াউঁ ইউরোপে ফিরে যান এবং সেখানে যাবার পূর্বে তার বড় ছেলে পেদ্রু জি কান্তারাকে ব্রাজিলের রিজেন্ট হিসেবে স্থলাভিষিক্ত করেন। পরবর্তীতে পর্তুগিজ সরকার ব্রাজিলকে পুনরায় পর্তুগিজ উপনিবেশে পরিণত করতে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ১৮০৮ সাল থেকে চলে আসা অঞ্চলটির নিজেদের অর্জন থেকে বঞ্চিত ব্রাজিলীয়রা পুরনায় ঔপনিবেশিক শাসনের বিরোধিতা করেন। রিজেন্ট পেদ্রু পর্তুগালে ফিরতে অস্বীকৃত জানান এবং ব্রাজিলীয়দের দাবির পক্ষে অবস্থান নেয়। ১৮২২ সালের ৭ই নভেম্বর পেদ্রু আনুষ্ঠানিকভাবে পর্তুগালের কাছে থেকে ব্রাজিলের স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া হয়।আর সে একই বছরের ১২ই অক্টোবর ডম পেদ্রু ব্রাজিলের প্রথম সম্রাট হিসাবে স্থলাভিষিক্ত হন এবং ১৮২২ সালের ১ই ডিসেম্বর সিংহাসনে আরোহণ করেন।আর এর মাধ্যমেই ব্রাজিলে ৩২২ বছর ধরে চলে আসা ঐতিহাসিক পর্তুগিজ শাসনের অবসান ঘটে।তৎকালীন সময়ে ব্রাজিলীয়রা রাজতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন এবং গণতন্ত্র ততোটা জনপ্রিয়ও ছিল না। স্বাধীনতার ঘোষণার ফলস্বরূপ ব্রাজিলের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় আর সেটা ব্রাজিলের উত্তর, উত্তর-পূর্ব, এবং দক্ষিণাঞ্চলসহ পর্তুগিজ অধিকৃত প্রায় সম্পূর্ণ অঞ্চলেই ছড়িয়ে পড়ে। অবেশেষে ১৮২৪ সালের ৮ই মার্চ পর্তুগিজ সৈন্যরা ব্রাজিলীয়দের কাছে আত্মসমর্পন করে,এবং ১৮২৫ সালের ২৯শে আগস্ট পর্তুগাল ব্রাজিলের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেন।

১৮২৪ সালের ১৫ই মার্চ ব্রাজিলের প্রথম সংবিধানটি জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত করার পূর্বে সেটি মিউনিসিপ্যালিটি কাউন্সিলগুলোর অনুমোদন লাভ করে। ১৮৩১ সালের ১ এপ্রিল প্রথম পেদ্রু সিংহাসন ছেড়ে দেন এবং তার কন্যার রাজত্ব পুনরায় দাবি করার উদ্দেশ্যে পর্তুগালে পাড়ি জমান।তবে যাবার আগে তিনি তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে সিংহাসনের উত্তরাধিকার হিসেবে নির্বাচিত করে যান এবং তার ছেলে পরবর্তীতে ডম দ্বিতীয় পেদ্রু নামে সিংহাসনে আরোহন করেন।যেহেতু নতুন সম্রাটের রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত সাবালকত্ব অর্জনের জন্য সময়ের প্রয়োজন ছিল তাই সে সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার উদ্দেশ্যে রিজেন্সি পদ্ধতি চালু করা হয় এবং সম্রাটের পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রিজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়।

রিজেন্সি চালুর পর ব্রাজিলের বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয় যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্রোহে রূপ নিয়েছিল। আর সেটি রিজেন্সি ব্যবস্থাটিকে বেশ অস্থিতিশীল করে তোলে এবং রিজেন্টদের শাসনে ব্রাজিল প্রায় অরাজক একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। বিদ্রোহের ফলস্বরূপ কিছু কিছু প্রদেশ ব্রাজিল থেকে আলাদা হয়ে নিজেদের স্বাধীন প্রজাতন্ত্র গঠন করে যদিও সেসকল গোষ্ঠীর বিদ্রোহটি সত্যিকার অর্থে রাজতন্ত্রের বিপক্ষে ছিল না। তবে সেসব কিছুদিন বলবৎ ছিল যতোদিন দ্বিতীয় পেদ্রু নিজে রাষ্ট্রভার গ্রহণে অসমর্থ ছিলেন। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় পেদ্রুর আইনগত সাবালকত্ব অর্জনের বয়স কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয় এবং তিনি শাসনভার গ্রহণ করেন। ১৪ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহনের পর তিনি এক টানা ৫৮ বছর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তার রাজত্বকালে দেশটিতে অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকার পাশাপাশি ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নও সাধিত হয়েছিল।

তবে দ্বিতীয় পেদ্রুর ৫৮ বছর শাসনামলে ব্রাজিল তিনটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধে জয়লাভ করেন। যুদ্ধগুলো ছিল প্লেটাইন যুদ্ধ, উরুগুয়েইয়ান যুদ্ধ, এবং ওয়ার অফ ট্রিপল অ্যালায়েন্স।তাছাড়াও পেদ্রুর শাসনামলেই ব্রাজিল রাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হয়। মূলত সফল নির্বাচন এবং স্বাধীন গণমাধ্যমের ফলেই সে অর্জন সম্ভব হয়েছিল। সেই ৫৮ বছরের শাসনামলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জনটি ছিল দাস প্রথার বিলোপ সাধন। ১৮৫০ সালে আন্তর্জাতিকভাবে দাস পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়। আর তার পরেই ব্রাজিল ধীরে ধীরে দাস প্রথা বিলোপের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ১৮৮৮ সালে সম্পূর্ণ রূপে দাস প্রথার বিলোপ সাধিত হয়। অবশ্য স্বাধীনতার পর থেকেই ব্রাজিলে দাসদের সংখ্যা ধীরে কমতে শুরু করেছিল। ১৮২৩ সালে মোট জনগণের ২৩% ছিল দাস আর ১৮৮৭ সালে এই হার নেমে আসে মাত্র ৫%-এ।

১৮৮৯ সালে রাজতন্ত্রের অবলোপনের পর সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের পক্ষে কেউ ততোটা আগ্রহী ছিলেন না। দ্বিতীয় পেদ্রু তখনও জনসাধারণের মাঝে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন কিন্তু তার নিজের ইচ্ছাতেই রাজতন্ত্রের সমাপ্তি ঘটে।তার দুই ছেলের মৃত্যুর পর পেদ্রুর মনে হয়েছিল এই রাজত্ব তার মৃত্যুর সাথেই শেষ হয়ে যাবে। রাজত্ব রক্ষার ব্যাপারে তিনি খুব আগ্রহী ছিলেন না। তাই তিনি নিজে এটি রক্ষার ব্যাপারে কিছু করেননি এবং কাউকে কিছু করতেও দেননি। দাস প্রথা বিলোপের সময় এর বিরোধীতাকারীরা সশস্ত্র বাহিনীকে ব্যবহার করে যাতে কোনো প্রকার সামরিক ক্যু ঘটাতে না পারে তা ঠেকাতেই মূলত তিনি গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হয়েছিলেন।



তথ্যসূত্র ইন্টারনেট।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৬

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ব্রাজিলের ইতিহাস নিয়ে চমৎকার একটি পোস্ট; ভাল লাগলো ৷বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম দেশ হিসেবে রাশিয়া, কানাডা, চীন, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরেই ব্রাজিলের অবস্থান। কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর এটি আমেরিকা মহাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। এর সর্বমোট আয়তন ৮৫,১৪,৮৭৬.৫৯৯ কিমি; যার ভেতর জলভাগের আয়তন প্রায় ৫৫,৪৫৫ কিমি। দেশটিতে মোট তিনটি সময় অঞ্চল অবস্থিত। পশ্চিমের প্রদেশগুলো ইউটিসি-৪, পূর্বের প্রদেশগুলো ইউটিসি-৩ (এটি একই সাথে ব্রাজিলের সরকারি সময়), এবং আটলান্টিক দ্বীপপুঞ্জগুলো ইউটিসি-২ সময় অঞ্চলের অন্তর্গত।

ব্রাজিলে টপোগ্রাফি যথেষ্ট বৈচিত্রময়। দেশটিতে পাহাড়, পর্বত, সমভূমি, উচ্চভূমি, চরণভূমি প্রভৃতি বৈচিত্রের ভূভাগ বিদ্যমান। এর ভূখণ্ডের বেশিরভাগের উচ্চতা ২০০ মিটার (৬৬০ ফুট) থেকে ৮০০ মিটার (২,৬০০ ফু)-এর মধ্যে। দেশটির দক্ষিণ অর্ধাংশেই বেশিরভাগে উচ্চভূমি অবস্থিত। উত্তর-পশ্চিম অংশের সমভূমিগুলো ঢালু ও ভাঙা ভাঙা পাহাড় দিয়ে ঘেরা।

দেশটির দক্ষিণাঞ্চল বেশ অমসৃণ, এবং বেশিরভাগ অঞ্চলই রিজ ও পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত। এ অঞ্চলের গড় উচ্চতা ১,২০০ মিটার (৩,৯০০ ফুট) পর্যন্ত। এসকল পর্বতমালার মধ্যে রয়েছে মান্তিকিরা, এসপিনাসো পর্বত এবং সেরা দু মার। উত্তরে গুয়াইয়ানা উচ্চভূমি একটি বড় নিষ্কাশন বিভক্তির মাধ্যমে আমাজন বেসিনের দিকে প্রবাহিত নদীগুলো থেকে ভেনেজুয়েলা থেকে উত্তর দিকের ওরিনোকো নদী ব্যবস্থায় এসে সমাপ্ত হওয়া নদীগুলোকে পৃথক করেছে। ব্রাজিলের সর্বোচ্চ পর্বত হচ্ছে পিকু দা নেবলিনা যার উচ্চতা প্রায় ২,৯৯৪ মিটার (৯,৮২৩ ফুট) এবং সর্বনিম্ন অঞ্চল হচ্ছে আটলান্টিক মহাসাগর।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা সুপ্রিয় কাওসার ভাই। আপনেরা আছেন বলেই এখনও লেখায় উৎসাহ পাই।

২| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০২

রাজীব নুর বলেছেন: আপনাকে এবং শ্রদ্ধেয় চাঁদগাজীর জন্য শুভ কামনা।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই রাজীব নুর।

৩| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: ইতিহাস ময়ের কাথা বলে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা মাইদুল ভাই।

৪| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


ব্রাজিল গত শতকে অর্থনৈতিকভাবে ভয়ংকর খারাপ অবস্হায় ছিলো; ২০০৩-১০১১ সালে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ছিলেন সোস্যালিষ্ট লুইস নাচিও লুলা, তিনি দেশটিকে বেশ ভালো অবস্হানে নিয়ে আসেন।

আমার নামে উৎসর্গ করার জন্য ধন্যবাদ। কেহ আমার নামে পোষ্ট উৎসর্গ করলে আমি কৃতজ্ঞ থাকি; তবে, না করলে, আমি খুশী হই, কারণ উৎসর্গের বেলায় আমি ভয়ংকর কৃপণ।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা চাঁদগাজী ভাই। আপনার কৃপ্তামীর কথা ব্রাশ করে দিছি। ;)

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৪

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: খুব ভালো লাগল।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.