নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নরকাসুরের কিংবদন্তি অসমের ইতিহাস

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:২৮


ভাগবত পুরাণে উল্লেখ থাকা মতে নরকাসুর বা নরক ভূমি এবং বরাহর অসুর পুত্র। উত্তর বিহারের রাজা জনক তাকে বড় করেন। বাণাসুরের প্রভাবে তিনি অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন।তিনি শেষ দানব রাজা ঘটকাসুরকে সিংহাসনচ্যুত করে প্রাগজ্যোতিষ রাজ্য স্থাপন করেন। পশ্চিমে করতোয়ার থেকে পূর্বে দিক্রঙ পর্যন্ত তার রাজ্য বিস্তৃত ছিল।নরক বিদর্ভের রাজকুমারী মায়াকে বিয়ে করেছিলেন। পরে শ্রীকৃষ্ণের হাতে তার মৃত্যু হয়।নরকাসুরের কিংবদন্তি অসমের ইতিহাসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারন কামরূপ শাসন করা কয়েকটি রাজবংশ নরকাসুরের থেকেই হয়েছে বলে মানা হয়। গুয়াহাটীর দক্ষিণে তার নামে একটি পাহাড় আছে। শক্তি দেবী এবং উপাসনার স্থান কামাখ্যার সাথেও তার নামও যুক্ত করা হয়েছিল।

রামায়ণ এবং মহাভারতের প্রথম শতকের পর লেখা অংশগুলিতে নরকাসুর এবং তার প্রাগজ্যোতিষ রাজ্যের উল্লেখ আছে। তার পুত্র ভগদত্ত‌ মহাভারতের যুদ্ধে কৌরবদের হয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে মানা হয়। বরাহ প্রজাপতির কথা শতপথ ব্রাহ্মণে আছে যদিও আনুমানিক পঞ্চম শতকে রচিত হরিবংশ সেই ভূমির সংস্পর্শে পুত্র উপজার কথা উল্লেখ আছে। বিষ্ণু পুরাণে নরকের সেই কাহিনী বেশি করেই বলা হয়েছে।পরে রচিত ভাগবত পুরাণে এই কাহিনী পুনরায় বর্ণিত হয়েছে।আসামে রচিত উপপুরাণ কালিকা পুরাণে এবং ১০ম শতক নরকাসুরের কিংবদন্তি অনেক বেশি বর্ণিত হয়েছে। তাতে সীতার পিতা বিদেহর জনকের কাহিনীও নরকাসুরের কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

নরকের মাতা ভূমি দেবী বিষ্ণুর কাছে বর চেয়েছিলেন যেন তার পুত্র দীর্ঘ জীবন লাভ করে এবং সে শক্তিশালী হয়। বিষ্ণু এই বর পূরণ করেন। সঙ্গে বিষ্ণু নরকাসুরকে কামাখ্যা দেবীর পূজা করতে শেখান। প্রথম অবস্থায় ভালভাবে শাসন করা নরকাসুর শোণিতপুরের বাণাসুরের প্রভাবে পড়ে অত্যাচারী হয়ে ওঠে।নরকাসুর কামাখ্যা দেবীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। দেবীকে বলাতে দেবী শর্ত রাখেন যে মোরগ বা কুক্কুট রাত পেরোনোর জানান দেওয়ার আগে যদি নরক নীলাচল পাহাড়ের তলা থেকে মন্দির পর্যন্ত এক রাতের মধ্যে সিঁড়ি নির্মাণ করতে পারেন তবে তিনি বিয়ে করতে রাজী হবেন। নরকাসুর সেইমত সিড়ি নির্মাণ করে রাত পেরোনোর আগে শেষ করার উপক্রম করলেন। কামাখ্যা দেবী তখন ভয় পেয়ে একটি মোরগকে চেপে ধরাতে সে ডাক দেয়। নরকও রাত পেরোলো বলে ভেবে কাজ অর্ধেক রাখলেন। পরে আসল কথা জানতে পেরে নরক কুক্কুটটিকে ক্রোধবশত ধাওয়া করে হত্যা করেন। এজন্য দরং জেলায় কুকুরাকটা নামে একটি স্থান আছে। অন্যদিকে অসমাপ্ত সিঁড়িটিকে মেখেলা-উজোয়া পথ বলে অভিহিত করা হয়।তারপর বশিষ্ঠ মুনিকে কামাখ্যা মন্দিরে উপাসনা করতে অনুমতি না দেয়ায় মুনি নরক এবং দেবীকে অভিশাপ দেন যে এই মন্দিরে পূজা করা কারো মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে না। শিবের হস্তক্ষেপে এই অভিশাপ সেই বছর পর্যন্ত সীমিত হয়। তাতে নরকাসুর বিষ্ণু এবং কামাখ্যার অপ্রিয়ভাজন হয়ে ওঠেন।

পৃথিবীর সকল রাজ্য জয় করার পর নরকাসুর স্বর্গ আক্রমণ করেন এবং ইন্দ্র পালাতে বাধ্য হন। তারপর নরক অদিতি দেবীর কুণ্ডলজোড়া চুরি করেন এবং ১৬০০০ স্ত্রীকে অপহরণ করে নিয়ে যান। ইন্দ্রকে ধরর সকল দেবতা বিষ্ণুর কাছে গিয়ে নরকাসুরের বিনাশের জন্য কাকুতি মিনতি করে। বিষ্ণু কৃষ্ণ‌ অবতারে সেই কাজ সমাপন করবেন বলে কথা দেন। বিষ্ণুর ভূদেবীকে দেওয়া বর অনুসারে নরক দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন। পরবর্তীতে কৃষ্ণর ভার্যা সত্যভামার সম্বন্ধী অদিতি সত্যভামাকে নরকাসুরের কুকীর্তি বলে। সত্যভামা কৃষ্ণকে নরকাসুরের বিপক্ষে যুদ্ধের জন্য রাজি করান। কৃষ্ণ এবং সত্যভামাগরুড়ে উঠে নরকাসুরের রাজ্য আক্রমণ করেন। কৃষ্ণ‌ নরকাসুরের সেনাপতি মুর কে বধ করার জন্য তিনি মুরারী বলেও পরিচিত। অবশেষে সুদর্শন চক্র দ্বারা কৃষ্ণ‌ নরকাসুরকে বধ করেন এবং অদিতির সোনার কুণ্ডলের সঙ্গে ১৬০০০ জন স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। প্রাগজ্যোতিষপুরের সিংহাসনে নরকাসুরের পুত্র ভগদত্তকে স্থাপন করা হয়।

উত্তর গুয়াহাটীতে অশ্বক্রান্ত অর্থাত অশ্বের আরোহণ নামে একটি মন্দির আছে। বিশ্বাস করা হয় যে প্রাগজ্যোতিষপুর আক্রমণ করার পূর্বে কৃষ্ণ সেখানে বিশ্রাাম নিয়েছিলেন এবং তার ঘোড়াগুলি সেখানে জল খেয়েছিল।নরকাসুরের মৃত্যুর পূর্বে তিনি মাতা সত্যভামাকে অনুরোধ করেন যে সকলে যেন তার মৃত্যু রঙিন আলোকোজ্জ্বলভাবে উদ্‌যাপন করে। সেইজন্য এই দিনটি নরক চতুর্দশী হিসেবে দীপান্বিতার আগের দিনটি পালন করা হয়। দক্ষিণ ভারতে এই প্রথা জনপ্রিয়।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:

এগুলো অনেক সুনদর রূপকথা, আপনার বর্ণনাটা অনেকটা স্পাগেটির মতো হয়ে গেছে!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ঠিক আছে এরপর থেকে আরো ভালো করার চেষ্টা করবো। :)

২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৪

জুন বলেছেন: ভালোলাগলো জটিল ইতিহাসটা পড়তে। অবশ্য এটা ইতিহাস নয়, এটি পুরাণ। কিন্ত ১৬০০০ হাজার স্ত্রি কার ছিলেন একটু কনফিউজড। আসামের কামাক্ষার মন্দির দেখে এসেছি।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ জুন আপু । শুভ সঁন্ধা ।সম্ভবত আপু এই ঘটনা ঘটেছিল তখনকার সময় আর নরকাসুর নামে এক অসুর ১৬০০০ কুমারীদের মাসের পর মাস বন্দী করে রেখেছিল তখন কৃষ্ণ সেই নরকাসুরকে মেরে তাদের মুক্ত করেছিলেন। পরে সম্ভবত কৃষ্ণ সেই বন্দি নারীদের বিয়ে করেছিলেন।

৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: পুরান কাহিনী হয়না পুরান ;)

ভালই লাগলো পুরানইতিহাস পাঠে

+++

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: সেটা কি আর হয়। আরো কত কাহিনী লুকিয়ে আছে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে। ;)

৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: প্রথম ছবি টা খুব ভয়াবহ।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ভয় পেলে কি আর চলবে ভাই রাজীব।

৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: দূর্গার হাতে নিহত সব অসুররাই মূলত এই অঞ্চলের আদিবাসী স্বাধীনতাসংগ্রামী।
বিদেশী আক্রমণকারীরা তাদের উপর গণহত্যা চালিয়ে নির্বংশ করে এই বিশাল ভূখন্ড দখল করেছে।
তারাই বিজয়ী হয়ে ইতিহাস লিখে স্থানীয়দের অসুর,হনুমান,ম্লেচ্ছ,পক্ষীভাষা-ভাষী-এইসব বিভিন্ন অপমাণজনক নাম দিয়েছে।
সাধারণ মানুষ না জেনে হিন্দুদের লেখা গাল-গল্প বিশ্বাস করবে।কিন্ত গবেষক ও ব্লগারদের বিস্তারিত জেনে লেখা উচিত।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই অনল চৌধুরী।

৬| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৪৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: মহিষাসুর-সহ দূর্গার হাতে নিহত সব অসুররাই মূলত এই অঞ্চলের আদিবাসী স্বাধীনতাসংগ্রামী।
বিদেশী আক্রমণকারীরা তাদের উপর গণহত্যা চালিয়ে নির্বংশ করে এই বিশাল ভূখন্ড দখল করেছে।
তারাই বিজয়ী হয়ে ইতিহাস লিখে স্থানীয়দের অসুর,হনুমান,ম্লেচ্ছ,পক্ষীভাষা-ভাষী-এইসব বিভিন্ন অপমাণজনক নাম দিয়েছে।
সাধারণ মানুষ না জেনে হিন্দুদের লেখা গাল-গল্প বিশ্বাস করবে।কিন্ত গবেষক ও ব্লগারদের বিস্তারিত জেনে লেখা উচিত।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৫

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই অনল চৌধুরী।

৭| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:১৭

অগ্নিবেশ বলেছেন: পৃথিবীর সকল রাজ্য জয় করিল অথচ কাক পক্ষী টের পাইল না। ভগবানের লীলাখেলা বোঝা দায়।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৬

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই অগ্নিবেশ।

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:২৩

ব্লগ মাস্টার বলেছেন: ভাল কাহিনী মনে হল।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ব্লগ মাস্টার ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.