নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আেলা আধােরর েখলা

সপ্ন আমার বাড়ি। আমি সপ্নের মাঝে থাকি।

আেলা আধােরর েখলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্ষুধা বৃত্তান্ত‬

৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:২৩

অনেকদিন ধরেই ক্ষুধা-জনিত সমস্যায় ভুগছি। অবশ্য “ক্ষুধা”র সংজ্ঞা আমার কাছে বাকি সবারথেকে খানিকটা ভিন্ন। আমার মতে ক্ষুধা তিন ধরনের। অন্নের ক্ষুধা, মনের ক্ষুধা আর মস্তিষ্কের ক্ষুধা। অবশ্য এই তিন ধরনের বাইরে আরও একধরনের ক্ষুধা আছে বটে, কিন্তু সেটা আবার সমাজের চোখে বিতর্কিত ;) । অন্নের ক্ষুধা অন্নেই মিটে যায়। মনেরটা মনের মানুষে। কিন্তু মস্তিষ্কের ক্ষুধাটা একটু বেশীই জটিল। আমার মনুষ্য মস্তিষ্কের জন্য যাই করিনা কেন বেচারার ক্ষুধা মিটেনা। আবার কোন কিছুতে মিটলেও সেই খাদ্য আবার মস্তিষ্কের বেশিদিন ভালো লাগেনা।

এককালে মস্তিষ্কের ক্ষুধা জিনিশটা যে কি তাই বুঝতামনা। আর যখন থেকে বুঝা শুরু করলাম তখন থেকেই বেচারাকে নিয়ে পরলাম মহা মুশকিলে। কিছুতেই শান্ত করা যায়না, in fact তৃপ্ত করা যাচ্ছেনা। Scientific way তে বললে মস্তিষ্কের সুষম খাদ্য হছে glucose supply, fat, blood, oxygen এবং আরও অনেক কিছু। কিন্তু আমার মস্তিষ্কের আবার শুধু এগুলোয় হয়না। গীটার বাজানোর আপ্রান চেষ্টা, বইয়ের পোকা হয়ে যাওয়া, ভারী ভারী দর্শনশাস্ত্রের বই পড়া, হটাত যোগাযোগের বাইরে চলে যাওয়া......কি না করলাম মস্তিষ্কের শান্তির জন্য, ত্রিপ্তির জন্য, কিন্তু কোন কাজ হয় নাই।

মাঝে মাঝে যখন মনে হয় কিছুক্ষণ একলা থাকা দরকার, কিংবা নিরবতা দরকার, তখনি ফুলার রোডে চলে যাই। সন্ধার পরে নিওন আলোয় কাঠগোলাপ গাছের নিচে ফুটপাতে এক কাপ কড়া লিকারের চা নিয়ে নিরিবিলি কিছুক্ষণ বসে থাকলে কেমনজানি একটা ঘোর চলে আসে। হটাত করে মনে হয় আমিও যদি পান্তুর মতন সবর মিত্রের সামনে বলতে পারতাম "একটা সিগারেট হবে স্যার?"। তখন আবার মনে হয় এই নিরিবিলি, শান্ত পরিবেশ, নিওন আলো এগুলোই মস্তিষ্কের আহার।

আমি আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা ছাড়া থাকতে পারিনা। আড্ডা না দিলে মনে হয় একটা অদৃশ্য খাঁচার ভিতরে বন্দী হয়ে আছি। কারনে-অকারনে সিদ্দিকের মতো হাসা-হাসি, ছোট-বড় সব কথায় জোক করা, কখনো কখনো আবার আড্ডা দিতে দিতে দার্শনিক হয়ে যাওয়া কি না করি আমরা। মাঝে মাঝে মনে হয় এই বন্ধুরা, আড্ডাবাজি, হাসিঠাট্টা এইসব মস্তিষ্কের খাদ্য। অবশ্য যখন বন্ধুদের মধ্যে ঝগড়া হয় তখন মনেহয় মস্তিষ্কের এই খাদ্যগুলো junk food টাইপের, টেস্ট ভালোই কিন্তু শরীরের জন্য ভালোনা। :P

এতো কিছু করেও যখন মস্তিষ্ককে কোন দীর্ঘমেয়াদী শান্তি দিতে পারলামনা, তখন একজন জ্ঞানী মানুষের পরামর্শে বই পড়া শুরু করলাম। উক্ত জ্ঞানীর মতে বইয়ের নেশা অনেকটা মাদকের নেশার মতন, একবার রক্তের সাথে মিশেগেলে এইটা ছাড়া অন্য কিছু আর ভালো লাগবে না। বাস......শুরু করলাম বই পড়া। William Shakespeare, John Green, Dan Brown, J.K. Rowling, রবীন্দ্রনাথ, হুমায়ূন আহমেদ.........সবার বই পড়লাম, এখনো পড়ছি। আসলেই বই পড়ার নেশাড় মধ্যে কেমন জানি একটা মাদকতা আছে। মাঝে মধ্যে মনে হয় John Green ও Dan Brown এর লেখনী সম্পর্কে তাদের থেকে আমিও কোন অংশে কম জানিনা, তাদের বিশাল রকমের পাঙ্খা (Fan) হয়ে গিয়েছি । Dan Brown এর বইগুলো পড়ে এতই Inspired হয়েছি যে Stephen Hopkins, Katherine Solomon, Nikola Tesla এর বইও পড়ে ফেলেছি। যদিও Business Grad. এর ছাত্র হিসেবে বিজ্ঞান বিষয়ক এইসব বইয়ের কথা-বার্তা খুব কমই বুঝেছি, তারপরও পড়ার নেশায় পড়েছি। একটা বই পড়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়টা মনেহয় যেন মস্তিষ্ক আহার করছে। কিন্তু বই পড়া শেষ হলে কিংবা বই মনের মত না হলে তখন আবার মস্তিষ্কটা জ্বালাতন শুরু করে।

আমার এই লোভী ক্ষুধার্ত ব্রেইনটার বিলাসিতার আহার জোগাতে জোগাতে অনেক মার্জনীয়-অমার্জনীয় ভুল করেছি। মাঝে মাঝে ভাবি যখন ভুল করতাম তখন যদি কোন প্রবীর রয় এসে আমাক ভারী গলায় বলতো "শোনো......জীবনে ভাত-ডাল আর বিরিয়ানির তফাৎটা বুঝতে শেখো..........প্রথমেরটা necessity, পরেরটা luxury"।

মস্তিষ্কের পিছে এতো কষ্ট করার পর বুঝলাম জিনিশটা আসলে তেমন কিছুইনা। মনেরটাই সব। মনের ক্ষুধার সাথে মস্তিষ্কের ক্ষুধার কেমনজানি একটা synchronization কাজ করে। মনেরটা যখন মিটেযায় তখন আপনা-আপনিই কিন্তু মস্তিষ্কের ক্ষুধা চলে যায়। কিভাবে? একটু scientific way তে বলি। আমরা যখন কাউকে ভালবাসি তখন আমাদের মস্তিষ্কে dopamine, adrenaline ও norepinephrine নামক তিনধরনের কেমিক্যালের মাত্রা বেড়ে যায় এবং মস্তিষ্ক relax মোডে চলে গিয়ে নিউরনগুলোকে অতি মাত্রায় sensitive করে দেয়। একবার relax মোডে চলে গেলে বেচারা মস্তিষ্ক কিন্তু ক্ষুধা ভুলে যায়। ওর আর কোন চাহিদা থাকেনা তখন। কিন্তু আসলেই কি তাই?!!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.