![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"মৃত্যু ভয় যেদিন কেটেছে সেদিনই আমার মরণ হয়েছে"
কেন জানি আজ অনেক সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল।ভোরের আলো এভাবে দেখে একটু অবাকই হলাম।প্রতিদিনকার মত তাড়াহুড়া নেই, আজ আমার হাতে বিশাল একটা দিন।তাই চিন্তা করলাম একটু হেটে আসি।বের হতে না হতেই খেয়াল হল বৈশাখের সামান্য তান্ডব এলাকা জুড়ে।কোথাও গাছের ডাল ভেঙ্গে পরে আছে কোথাও মরা কাক।হটাত একটু দূরে চোখ গেল এক বুড়ি চাদর মুরি দিয়ে সোয়ে আছে একটা দোকানের বারান্দায়।একটু পর পর হাসছে।কৌতূহল থেকে কাছে গেলাম,গিয়ে দেখি এই মহিলা একটু অন্যরকম।বয়স ৫৫ হবে।দেখে মনে হল সে অত্যন্ত পরিপাটি। মনে হবে তার একটা সাজানো ঘর আছে।
সে আপন মনে বলে চলছে “আবির তোকে না বললাম জানালা লাগাতে তোর বাবার বই গুলি ভিজে যাবে তুই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিস,আর তোরা আমার কথা শুনবিইতো না,হয়েছিস বাবার মত।সব কাজ আমাকেই করতে হয়” বলেই হাসি।
“আবির তুই আমাকে নিতে আসিস,তোর বাবাতো আমাকে নিতে আসেনা? কাল রাতে বৃষ্টির মাঝে আমাকে ঘুমাতে হয়েছে তবুও ভাল ঘুম হয়েছেরে। তোরা সবাই ভার্সিটি যা অফিসে যা কিন্তু কখনও রাস্তা পার হবিনা ওভারব্রিজ দিয়েও না।চুপচাপ বাসের ভিতর বসে থাকবি ড্রাইভার যেখানে নামায় সেখানে নামবি না নামালে বাসে বসে থাকবি আর হারিয়ে গেলে আমাকে ফোন দিবি….হাহাহাহা। সব সময় এক পাড়ে থাকবি ঐ পাড়ে যাওয়ারই কি দরকার রে বাপ”
আরও অনেক কথা শুনলাম।ভাবলাম মানুষের এত কষ্ট আমি শুনে ভাগ নিতে যাব কেন? তার বরং চলে আসি।মহিলা কে জিজ্ঞেস করলে হয়ত অনেক কথাই বলবে।তাতে সমাধান হবেনা কষ্টই বাড়বে।
পাশের চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়ালাম চা খেতে।দোকানের মামা নিজ থেকেই বলতেছিল “তার জামাই বড় সরকারী অফিসার ছিল,একদিন রাস্তা পার হইতে গিয়ে বাসের চাপায় মইরা যায়।তার পর থেইকা মহিলা পাগলের মত বাইরে বাইরে ঘুরে।তার এক ছেলে দেখি তারে নিতে আসে কিন্তু মহিলা কয় তোদের বাপ নিতে আইলে যাব”
মাঝে মাঝে বাসের পিছনে দেখি লেখা থাকে “সাবধানে চলুন একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না”
শুধুই কি কান্না?
তানভীর মাহমুদুল হাসান
[email protected]
©somewhere in net ltd.