মানুষ কিভাবে বাঁচে?

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:৪৫

আমার প্রতিবেশী আজিম ভাই খুবই স্বাস্থ সচেতন। কিন্তু প্রায়ই দেখি নিজের বা ছেলে মেয়েদের অসুখ নিয়ে ডাক্তারের কাছে ছুটছেন। সেদিন রাস্তায় দেখলাম খুব মনমড়া হয়ে চিন্তিত মুখে হাটছেন।

-আজিম ভাই কেমন আছেন?

- না রে ভাই, ভাল নাই। ছেলেটার অসুখ কিছুতেই সারছে না।

- কি হয়েছে আবার? গতসপ্তায়ই না এক অসুখ থেকে উঠল।

- আর বলবেন না, প্রতি মাসে একটা না একটা অসুখ বাধাবেই। গসপ্তায় গেল সর্দি-জ্বর, এখন আবার শ্বাস কস্ট হচ্ছে।

-ডাক্তার দেখান নি?

-ডাক্তারের পিছনে ছুটতে ছুটতেইতো জান গেল। যত বড় ডাক্তার তত বেশি টেস্ট আর দামি ওষুধ। কাজের কাজ কিছুই হয় না। ওষুধ খেয়ে কয়েকদিন ভাল থাকে, তার পর আবার একটা নতুন অসুখ বাধিয়ে বসে।

- শুনেছি পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব হলে ভাইরাস জনিত রোগ বেশি হয়।

- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব মানে?(আজিম ভাই বেশ রেগেই গেলেন) জানেন প্রতিদিন ঘর মোছা হয় ডেটল দিয়ে, সাপ্লাই পানি প্রথমে ফুটিয়ে তার পর ফিল্টার করে খাই, ছেলেদের কখনই ময়লা কাদায় যেতে দেই না, ওদের দেখে রাখার জন্য কাজের লোক পর্যন্ত রেখেছি। তারপরও রোগ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না।



আজিম ভাই এর মেজাজ খারাপ বুঝে আর কথা বাড়ালাম না। আসলেই এত সতর্কতার পর, বড় বড় ডাক্তারের দেয়া দামি দামি অষুধ খাওয়ার পরও যদি ছেলে সুস্থ না থাকে তাহলে কার মেজাজ খারাপ না হয়ে পারে?



আজিম ভাই থেকে বিদায় নিয়ে একটু সামনে এগুতেই চোখে পরল রাস্তার পাশে ময়লা নিয়ে খেলতে থাকা এক শিশুর দিকে। কতই বা বয়স হবে ৩-৪ বছর। খালি পায়ে ময়লা হাফ প‌্যান্ট আর ছেড়া গেঞ্জি গায়ে ডাস্টবিন থেকে কুড়ান খেলনা নিয়ে মহা আনন্দে খেলছে। দৃশ্বটা চোখে পড়তেই কিছু প্রশ্ন উদয় হল - এই বাচ্চাটা এই পরিবেশে বেঁচে আছে কিভাবে? ওর কি অসুখ হয় না?



কখনও কি চিন্তা করেছেন ডাক্তার ওষুধ হাসপাতাল ক্লিনিক কোন কিছুর সেবা পাওয়ার সুযোগ বঞ্চিত নোংরা পরিবেশে বাস করা এইসব পথ শিশুরা কিভাবে বাঁচে?

১ টি +১/-০