নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গত কয়েকদিন ধরে যে খবরটি বার বার শোনা যাচ্ছে তা হল সরকারী কর্মচারী নিয়োগে কোটা পদ্ধতি। সম্প্রতি ৩৪মত বিসিএস পরিক্ষার পর এটা নিয়ে শোরগোল শুরু হয় এবং কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে পরিক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্ররা রাজপথে নেমে আন্দোলন করতে থাকে। তাদের ওপর হামলাও হয়েছে দেখলাম। গতকাল প্রথম আলো পত্রিকা হেডলাইন করেছে শাহবাগে কোটা বিরোধী আন্দোলনে সারা ঢাকায় তীব্র যানজট। অথচ কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত পুরো শাহবাগ মোড়টাই অচল করে রাখা হয়েছিল,সেটার কারনে সৃষ্ট যানজট নিয়ে কোনো মিডিয়া কথা বলেনি।
যাইহোক মূল বক্তব্যে আসি। এদেশের লোক সংখ্যা ১৮কোটি। এদেশ পরিচালনার জন্যে মেধাবী লোক দরকার আছে এ ব্যাপারে সকলেই একমত হবেন। কিন্তু সে মেধা আমরা কিভাবে সংগ্রহ করি ?
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্যে ৩০% এবং অন্যান্য কোটা মিলে ৫৫%,বাকী ৪৫% চাকুরীর জন্যে ১৮কোটি লোকের ভেতরকার সবথেকে মেধাবীরা প্রচন্ড প্রতিযোগীতার সম্মুখিন হয়। এর ভেতর আছে স্বজনপ্রীতি এবং অর্থ বাণিজ্য। টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাস হওয়া এখন নতুন কিছু নয়। প্রেসের লোকেরা জোটবদ্ধ হয়ে একাজটি বিরাট অংকের টাকার মাধ্যমে করে বলে পত্রিকায় পড়েছি এবং অনেকের মাধ্যমে জেনেছি।
দেশকে যারা স্বাধীন করেছিল বা অগ্রনী ভূমিকা রেখেছিল তাদের প্রতি আমরা চীর কৃতজ্ঞ। তারা দেশের পক্ষ থেকে সুবিধা পাবেন এতে আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু সেই সুবিধার খাতও থাকতে হবে। একজন আমাকে পানিতে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে উদ্ধার করাতে কৃতজ্ঞ হয়ে তাকে আমি প্লেনের পাইলট হিসেবে নিয়োগ দিলে তা শুধু যাত্রীদের জন্যে বিপদের কারন হবেনা বরং তার নিজের জন্যেও সেটা বিপদ ডেকে আনবে। আমরা ইতিমধ্যে কিছু প্রমান পেয়েছি। প্রশাসনে অযোগ্য,চরিত্রহীন লোকের ছড়াছড়ি। তারা সমাজের মানুষের ক্ষতি করছেন এবং নিজেদের শারিরীক,মানুষিক,চারিত্রিক,পারলোকিক ক্ষতি করছেন।
এজন্যে আমাদেরকে পুরো ব্যাপার আবারও ভেবে দেখতে হবে। মুক্তিযোদ্ধারা বা তাদের সন্তানরা কোনো নির্দিষ্ট একাউন্ট থেকে অর্থ সাহায্য গ্রহন করুক। জাতি তাদেরকে উপহার সামগ্রী,পদক,সার্টিফিকেট দিয়ে সম্মানিত করুক। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী আরও বাড়িয়ে দিক। কিন্তু অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীদেরকে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পদে মোটামুটি বিনা প্রতিদ্বীতায় বসিয়ে দিলে তার কুফল ভোগ করতে হয় গোটা জাতিকে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা মেধাবী নয় এমনটা বলছি না কিন্তু তারাও অন্যদের মত প্রতিযোগীতায় আসুক আর অন্য ক্ষেত্রে সুবিধা গ্রহন করুক,বিসিএসে নয়।
দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিমান দুই লক্ষের কিছু বেশী ,তারা মোট জনতার এক শতাংশেরও কম। তাদের জন্যে এক শতাংশ কোটা বরাদ্য হলে সম্ভবত কারো আপত্তি থাকত না। এমনকি ৫% শতাংশ হলেও সেটা যথেষ্ঠ হত। তাছাড়া বর্তমানে খুব বেশী সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা চাকুরীর নির্ধারিত বয়স সীমায় অবস্থান করছেন না। দিন দিন এটা আরও কমছে। কারন,তাদের বয়স বাড়ছে।আর দেশে ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা মোট জনতার দুই শতাংসের কম। তাদের জন্যে ২/৩% কোটা থাকাই যথেষ্ট ছিল। বর্তমানে ছেলে মেয়ে যেহেতু একই মর্যাদা সম্পন্ন তাই মেয়েদের জন্যে আলাদা কোটা রাখা তাদের প্রতি বিশেষ বৈষম্য আরোপ করা বৈ কিছু নয়। এতে তাদের মেধাকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তারা যেহেতু এক তাই নারী-পুরুষ একসাথে মেধার প্রতিযোগীতায় আসুক।
এটা খুব অবাক কান্ড যে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ৪৫% পদের জন্যে মরনপণ লড়াই করছে আর মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ৫৫% পদের জন্যে আবেদন করছে। একদিকে কয়েক শত চাকুরীর জন্যে হাজার হাজার মেধাবীকে কয়েক স্তরে নিংড়ে তারপর মনোনিত করা হচ্ছে,আরেক দিকে তারচাইতেও বেশী সংখ্যক চাকুরীর জন্যে অল্প কিছু মানুষকে যা তা ভাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কোটা প্রথার কারনে একদিকে মেধার আধিক্যের জন্যে বাদ দিতে হচ্ছে,আরেক দিকে মেধার কোটা পূরণ না হওয়া সত্তেও কম মেধাবীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এর ফলাফল ভোগ করতে হচ্ছে আম জনতাকে। অযোগ্য ,অপদার্থ লোকেদের শাসনে ইতিমধ্যেই আমরা ক্লান্ত,পরাস্ত।
আমার মনে হয় পুরো কোটা ব্যবস্থা উঠিয়ে দিলেই সেটা সকল মানুষের জন্যে ভাল হবে। আর যদি সেটা রাখতেই হয় তবে সর্বোচ্চ সর্বমোট ৮ থেকে ১০% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। কোনোভাবেই এর বেশী নয়। আর সরকারে উচ্চ পদের জন্যে কোনো রকম কোটা রাখা উচিত নয়। যারা দেশকে,মানুষকে ভালবাসে বলে দাবী করে,তাদের এ ব্যাপারটি ভেবে দেখা উচিত শুধু তাই নয়,অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সকল জনতার দাবী হওয়া উচিত, কোটা প্রথা বন্ধ হোক ! আর হলে সেটা সব মিলে ১০% এর নীচে হোক। তবে না থাকা অধিক সঙ্গত এবং ন্যায় বিচারে সহায়ক।
১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩০
দ্য েস্লভ বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪১
হাসিবুল ইসলাম বাপ্পী বলেছেন: সরকার কি শুধু মাত্র এই কোঠা এর মাদ্ধমেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাবে???
আর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলে কি তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না????
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের ছেলের জীবন কাটে চায়ের দোকানের পানি টেন
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান আরও নানা ভাবে করা যায়, তাদের সন্তানদেরও আরও নানা ভাবে সিক্ষার জন্য সাহায্য করা যাবে।
প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কে একটি করে ফ্লাট বাসা দেওয়া হোক, তাদের প্রতিমাসে ১০০০০ টাকা করে দেওয়া হোক, তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা খরচ দেওয়া হোক, তাদের টিউশন ফীস মউকুফ করা হোক...
আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু তাই বলে বিসিএস এর মতো জায়গায় কেন এতো বিশাল পরিমানে তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা???
এই কোটা প্রথা বাতিলের দাবী এর মানে কিন্তু এই না যে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতে হবে না। এর মানে হচ্ছে তাদের এই অন্যায় সুবিধা প্রথা বন্ধ করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য এমনিতেই কিন্তু সরকার কম সুযোগ সুবিধা দেয় নাই।
ভালো ভালো স্কুল কলেজে কিন্তু তাদের জন্য আলাদা ভাবে কোটা এর ব্যাবস্থায় তাদের ভর্তি করা হয়, সেখানে তারা আলাদা সুবিধা পেল, মানলাম এটা।
এরপর যখন বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির সময় এলো, তখনও তাদের জন্য কোটা এর বাবস্থা।
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান শুধু এই কোঠা দিয়েই হয় না। আশা করি বুঝতে পারেছেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানের এই কোঠা এমন আকার ধারন করেছে যে কিছু দিন পর হয় জাতীয় বিভিন্ন খেলা-ধুলা প্রতিযোগিতায় এমন হবে যে প্রথম স্থান রাখা হবে তাদের জন্য, আর বাকি ১ম আর ২য় স্থানের আমাদের প্রতিযোগিতা করতে হবে। :p :p
আমেরিকার কোঠা নিয়ে আব্রাহাম লিংকনের একটি ঘটনা বলি...
একবার আব্রাহাম লিংকনের কাছে এক ভদ্রলোক এসে বীরদর্পে বললেন-
-- আমার ছেলেকে রাষ্ট্রীয় উচ্চপদস্থ চাকুরি দিন...
-- আব্রাহাম লিংকন: কেন ?
-- ভদ্রলোক: আমার ছেলে চাকরি পাওয়ার যোগ্য তাই।
... -- আব্রাহাম লিংকন: কিসেরযোগ্যতা আছে আপনার ছেলের?
-- ভদ্রলোক: আমার বাবা (ছেলের দাদা) আমেরিকার জন্যস্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন;
আমরা আমেরিকার মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বংশধর-তাই দেশ সেবার সেরা
চাকরি আমাদের দেয়া উচিৎ.....!
-- আব্রাহাম লিংকন: ওকে থাঙ্কস; আপনাদের পরিবার দেশের জন্য অনেক করেছে; এবার সাধারণ মানুষকে দেশের জন্য কাজ করতে দিন।
___________________________________________________
এই লিঙ্ক থেকে বিস্তারিত পড়ে আসতে পারেন।
____________________________________________________
অথবা এই লিঙ্ক এ বিস্তারিত...
___________________________________________________
১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩২
দ্য েস্লভ বলেছেন: দারুন বললেন
৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৭
হাসান কালবৈশাখী বলেছেন: Click This Link
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২৭
টুম্পা মনি বলেছেন: আমার মনে হয় পুরো কোটা ব্যবস্থা উঠিয়ে দিলেই সেটা সকল মানুষের জন্যে ভাল হবে। আর যদি সেটা রাখতেই হয় তবে সর্বোচ্চ সর্বমোট ৮ থেকে ১০% এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। কোনোভাবেই এর বেশী নয়। আর সরকারে উচ্চ পদের জন্যে কোনো রকম কোটা রাখা উচিত নয়। যারা দেশকে,মানুষকে ভালবাসে বলে দাবী করে,তাদের এ ব্যাপারটি ভেবে দেখা উচিত শুধু তাই নয়,অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পুরোপুরি একমত।