![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘুম জড়ানো চোখে কম্বলের ভেতর
থেকে বের হতেই অবনীর
অগ্নিমুর্তি দেখতে পেলো রাতুল ।
আজ ও বিপদ আছে মনে মনে আঁচ
করে নিলো রাতুল ।
--তাহলে জেগেছো এতক্ষনে ।
--জাগবো না কেন ?
আমি কি একেবারে ঘুমিয়ে গেছি নাকি ?
--থাক আজাইরা কথা বাদ
দিয়ে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নেও যাও ।
--আরেকটু ঘুমাই না অবনী ।
--এবার ঠান্ডা পানি ঢেলে দিবো কিন্তু
।
--না না থাক উঠছি শীতের সকালে ও
তোমার হাত থেকে নিস্তার নাই বুঝেছি ।
--কয়টা বাজে হিসাব আছে ?
--কয়টা বাজবে আর আট টা বাজে ।
--নয়টা বাজে এখন ।
--কি বলছো ?
তুমি আমাকে উঠিয়ে দেওনি কেনো ?
অফিসে জরুরি মিটিং ছিল আমার ।
--সেই ৭ টা থেকে তোমাকে ডাকছি ।
ডাকতে ডাকতে আমার
গলা ব্যাথা হয়ে গেছে ।
তুমি যেভাবে ভাল্লুকের মত
ঘুমাচ্ছো তোমাকে কে ডেকে তোলবে ?
যাও তাড়াতাড়ি ফ্রেশ
হয়ে আসো আমি টেবিলে নাস্তা দিচ্ছি ।
--হুম আমি ফ্রেশ
হয়ে আসছি তুমি তাড়াতাড়ি নাস্তা দেও
।
--হুম আসো ।
--হুম আসছি ।
--কি হলো আর কতক্ষন লাগাবে ?
--এইতো আমার শেষ ।
--একসাথে বসে নাস্তা করে রাতুল
বেরিয়ে পড়বে অফিসের পথে ।
--আজকের কথা মনে আছে ?
--কি আজকে ?
--তোমার কি কিচ্ছু মনে থাকে না ?
--
আরে বাবা কি আজকে সেটা বলবে তো ?
--আজ কত তারিখ ?
--২২ শে জানুয়ারী ।
এটা কি আমি ভুলতে পারি বলো ?আজ
আমাদের বিবাহ বার্ষিকি ।
--ঠিক আছে তাড়াতাড়ি এসো ।আজ
বাইরে ডিনার করবো ।তুমি বাসায়
থেকে এসে নিয়ে যাবে মনে থাকবে ?
--হুম থাকবে ।
আচ্ছা আমি যাচ্ছি দরজা টা আটকে দাও
।
--হুম
--অফিস যেতে যেতে দশটা বেজে গেছে ।
রাতুল ভাবছে নির্ঘাত আজ বস এর
কথা শুনতে হবে ।কিন্তু না বস
আজকে কিছুই বললো না রাতুল কে ।
অফিস থেকে কাজ সেরে তাড়াতাড়ি বের
হয়েই অবনীর জন্য ফুল কিনবে ।
গাড়ি নিয়ে ফুলের দোকানে যেতেই
দেখতে পেলো একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে ।
এম্বুলেন্সে কয়েকজন
কে উঠানো হচ্ছে ।রাতুল ফুলের
দোকানের সামনে গাড়ি থামিয়ে ফুল
নিলো ।
গাড়িতে উঠতেই হঠাৎ বাম হাতের
মধ্যাঙ্গুলিতে কিছু একটার স্পর্শ
পেলো। মনে হল আঙ্গুলটাকে কিছু
একটা আঁকড়ে ধরে রেখেছে।
অনেকটা বিষ্ময় নিয়ে পিছনের
দিকে তাকালো দেখলো প্রায় দুই - আড়াই
বছরের কোন এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের
একটা মেয়ে রাতুলের হাত ধরে রেখেছে।
মেয়েটা কোন সম্ভ্রান্ত ঘরের,
বুঝলো তার পোশাক-আশাক দেখে। দেখেই
বুঝা যাচ্ছে কোনরকম
হাটতে পারে বাচ্চাটা।রাতুল ওর
দিকে তাকাতেই,মেয়েটা বলল কোলে বলেই
হাতদুটো বাড়িয়ে দিল রাতুলের দিকে।
রাতুল স্বভাবতই ছোট বাচ্চাদের
প্রতি একটু দুর্বল। আর বাচ্চাটাও
একটু বেশিই কিউট। তাই
কোলে তুলে নিলো। স্বভাবতই ছোট ছোট
গালগুলোতে একটা চুমু দিলো।
কি আশ্চর্য! সেও রাতুলের
গালে একটা হামি খেল। রাতুল
তো অবাক। রাতুল এবার জিজ্ঞেস
করলো মামনি তোমার বাবা মা কোথায় ?
এবার মেয়েটা আঙুল দিয়ে সামনের কিছু
দেখালো ।রাতুল
বুঝতে পারলো না মেয়েটা ঠিক
কি দেখিয়েছে তাই
মেয়েটা কে কোলে নিয়ে সামনের
দিকে হেঁটে যেতে থাকলো উদ্দেশ্য
মেয়েটা কিছু একটা বুঝাতে চেয়েছিল ।
এবার রাতুল আবার জিজ্ঞেস
করলো মামনি কি দেখিয়েছো এবার
মেয়েটা এক্সিডেন্ট হয়েছে ঐখান
টা দেখাচ্ছে ।রাতুল
কিছুটা হকচকিয়ে গেলো ।
সামনে এগিয়ে গেলো রাতুল
এম্বুলেন্সে দুইটা লাশ উঠানো হচ্ছে ।
রাতুল
ভেবে উঠতে পারছে না কি করবে চলে ও
যেতে পারছে না এইটুকু
একটা মেয়েকে ছেড়ে ।আর
কাউকে দেখতে ও পাচ্ছে না আশেপাশে ।
মেয়েটা রাতুলের কোলে বেশ
গুটি মেরে লুকিয়ে আছে ।রাতুল
মেয়েটা কে কোলে নিয়ে সোঁজা বাসায়
চলে এলো ।
কলিংবেল বাজতেই ভিতর
থেকে অবনি দরজা খুললো ।অবনি দেখেই
জিজ্ঞেস করলো ও কে?
--আগে ভিতরে ডুকতে দাও বলছি ।
ভিতরে গিয়েই অবনী কে সব
খুলে বললো রাতুল ।
অবনী রাতুলের কোল
থেকে মেয়েটা কে নিজের কোলে নিয়েই
ছোট ছোট গাল দুটোতে চুমো দিতেই
মেয়েটা অবনীর গালে চুমো দিল।অবনী ও
অবাক হলো এই টুকু একটা মেয়ে এত
কিউট কি করে হয় ।
--অবনী রাতুল কে বললো এখন
কি করবে তাহলে ?
--কাল পুলিশের কাছে যাবো একবার
দেখি কি বলে।
--হুম ।আজ আর বের হবো না ।
তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো আমি খাবার
দিচ্ছি ।আর ওকে জুস দিচ্ছি আমি ।
--হুম দাও আর পারলে ওকে একটু ঘুম
পাড়াও ।
--হুম ।মেয়েটা কে খায়িয়ে ঘুম পাড়াবার
চেষ্টা করছে কিন্তু
মেয়েটা ঘুমাতে চাচ্ছিলো না ।অবনীর
প্রিয় টেডিবিয়ার
টা নিয়ে খেলতে চাচ্ছিলো ।সারা রাত
মেয়েটা একটু ও জ্বালাইনি অবনী কে ও
খুব আপন করে ফেলেছে ।অবনীর ও খুব
মায়া পড়ে গেছে বাবুটার জন্য ।
সকালে উঠেই বাবু
টা কে নিয়ে যাবে পুলিশ স্টেশন
মেয়েটা অবনীর কোলে এ ছিল
মেয়েটা অবনীর কোল
ছেড়ে আসতে চাচ্ছিলো না ।শুধু
কান্না করছে অবনীর ও চোখের
কোনে ও পানি চিকচিক করছে ।
অবনী বলে উঠলো রাতুল
কে ওকে না নিয়ে গেলে কি হয়না ।
--রাতুল কিছু বলতে পারলো না শুধু
চেয়ে আছে বাবু টার দিকে ।
বাবু টা কে কোলে নিয়ে বের
হয়ে পড়লো ।বাবু টার
কান্না থামছে না ।পুলিশ
স্টেশনে এসে ওসির কাছে সব
খুলে বললো রাতুল ।
--ওসি বললো ওর তো কেউ খোঁজ
করেনি এখন ও ।আপনি বসেন
আমি দেখছি ।
ওসি অনেকক্ষন পর বললো রাতুল সাহেব
আপনি আপনার নাম্ভার টা দিয়ে যান
যদি কেউ খোঁজ
করে আমি আপনাকে জানাবো ।
আপনি ওকে নিয়ে যান ।
--রাতুল ওকে নিয়ে চলে আসলো বাসায় ।
অবনী খুব খুশি হয়েছে বাবু
টা কে নিয়ে আসাতে ।
বাবু টার বয়স এখন ৭ বছর ।বাবু
টা রাতুল আর
অবনী কে মা বাবা হিসেবে জানে । ভুলেই
গিয়েছিলাম মেয়েটার নাম তিথি ।
রাতুলের ঘরে আরেকজন নতুন
অতিথী এসেছে ।তিথির খেলার
সাথী একটা ছোটো ভাই যার নাম তুর্য ।
খুব ভাল এ কাটছে এখন রাতুল আর অবনীর সংসার ।
অবনীর জন্য এটা এ ছিল তার জীবনের শ্রেষ্ট উপহার ।
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৫
থার্ড পার্সন প্লুরাল বলেছেন: অবনী নিয়ে লিখতে না লিখতে এসে হাজির
।যাক ভাল লাগলো অবনীমনির
উপস্থিতিতে ।
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:০৩
শায়মা বলেছেন: বাহ!!!
এত সুন্দর!!!
আর নীচে তো অবনীমনি এসেই গেলো দেখছি!!!!!!!!
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৩
অবনি মণি বলেছেন: আপনার ভালো লাগাতে আমাদেরও ভালো লাগা !
ভেবেছিলাম আপনি এই অবনি কে নিয়েই লিখেছেন কিনা ! তাই উপস্থিত হয়ে গেলাম ! নিজের দেয়া নিজের নাম টা কোথাও দেখলে ভালই লাগে !
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৭
অবনি মণি বলেছেন:
