নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনাম হীন

নূরুল আজম

নূরুল আজম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সবাইকে পড়ার অনুরোধ করছি...!!! ভাল লাগবে আশা করি...!!!

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:১৫

প্রশ্নঃ আমি দীর্ঘদিন গ্যাস্টিকে ভুগছি , গ্যাস্টিকের ব্যাথ্যা হলে অনেক সময় বমি হয় এবং নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয় আর পেট ভুলে যায়, কি মেডিসিন খেলে কাজ হবে? অথবা একজন ভাল কোন ডাক্তারের পরামর্শ দেবেন ?



উত্তরঃ পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিক আলসার রোগের গ্যাস্টিক বা আলসার নামটির সাথে পরিচিত নন এমন লোক খুঁজে বের করা হয়তো খুব কঠিন হবে। সাধারণত লোকজন গ্যাস্টিক বা আলসার বলতে যা বুঝে থাকেন আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলি পেপটিক আলসার। পেপটিক আলসার যে শুধু পাকস্থলীতেই হয়ে থাকে তা কিন্তু নয়; এটি পৌষ্টিকতন্ত্রের যেকোনো অংশেই হতে পারে। সাধারণত পৌষ্টিকতন্ত্রের যে যে অংশে পেপটিক আলসার দেখা যায় সেগুলো হচ্ছে

১- অন্ননালীর নিচের প্রান্ত;

২- পাকস্থলী;

৩- ডিওডেনামের বা ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ এবং

৪ -পৌষ্টিকতন্ত্রের অপারেশনের পর যে অংশে জোড়া লাগানো হয় সে অংশে।



পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় উন্নয়নশীল দেশ তথা আমাদের এ উপমহাদেশে এ রোগীর সংখ্যা খুবই বেশি। ধনীদের চেয়ে গরিব লোকদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়। তবে নারী-পুরুষ প্রায় সমানভাবে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।



যেসব কারণে পেপটিক আলসার হতে পারে বংশগতঃ কারো নিকটতম আত্মীয়স্বজন, যেমন মা, বাবা, চাচা, মামা, খালা, ফুফু যদি এ রোগে ভুগে থাকেন তবে তাদের পেপটিক আলসার হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। যাদের রক্তের গ্রুপ ‘ও’ তাদের মধ্যে এ রোগের প্রবণতা বেশি।



রোগ-জীবাণুঃ হেলিকো বেক্টারে পাইলোরি নামক একপ্রকার অনুজীব এ রোগের জন্য বহুলাংশে দায়ী।



ওষুধঃ যেসব ওষুধ সেবনে পেপটিক আলসার হতে পারে তার মধ্যে ব্যথানাশক ওষুধ বা ঘ ঝধরফং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।



ধূমপানঃ ধূমপায়ীদের মধ্যে এ রোগের প্রবণতা বেশি।



এ ছাড়াও কারো পৌষ্টিকতন্ত্র থেকে যদি বেশি পরমাণে অ্যাসিড ও প্রোটিন পরিপাককারী একধরনের এনজাইম বা পেপসিন নামে পরিচিত তা নিঃসৃত হতে থাকে এবং জন্মগতভাবেই পৌষ্টিকতন্ত্রের গঠনতন্ত্রের গঠনগত কাঠামো দুর্বল থাকে তাহলেও পেপটিক আলসার হতে পারে।



তবে সাধারণত যে কথাটা প্রচলিত ভাজা-পোড়া কিংবা ঝালজাতীয় খাবার খেলে পেপটিক আলসার হয় এর কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ চিকিৎসা বিজ্ঞানে মেলেনি। তবে যারা নিয়মিত আহার গ্রহণ করেন না কিংবা দীর্ঘ সময় উপোস থাকেন, তাদের মধ্যে পেপটিক আলসার দেখা দিতে পারে।



উপসর্গগুলো

পেটব্যথাঃ সাধারণত পেটের উপরিভাগের মাঝখানে বক্ষ পিঞ্জরের ঠিক নিচে পেপটিক আলসারের ব্যথা অনুভব হয়। তবে কখনো কখনো ব্যথাটা পেছনের দিকেও যেতে পারে।



ক্ষুধার্ত থাকলে ব্যথাঃ এ জাতীয় রোগী ক্ষুধার্ত হলেই প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে এবং খাবার খেলে সাথে সাথে ব্যথা কমে যায়।



রাতে ব্যথাঃ অনেক সময় রাতের বেলা পেটে ব্যথার কারণে রোগী ঘুম থেকে জেগে ওঠে। কিছু খেলে ব্যথা কমে যায় এবং রোগী আবার ঘুমিয়ে পড়ে।



মাঝে মধ্যে ব্যথাঃ পেপটিক আলসারের ব্যথা সাধারণত সবসময় থাকে না। একাধারে ব্যথাটা কয়েক সপ্তাহ চলতে থাকে। তারপর রোগী সম্পূর্ণরূপে ভালো হয়ে যায়, এ অবস্থা কয়েক মাস থাকে তারপর আবার কয়েক সপ্তাহ ধরে ঠিক আগের মতো ব্যথা অনুভব হয় ।



ব্যথা কমেঃ পেপটিক আলসার ব্যথা সাধারণ দুধ, অ্যান্টাসিড, খাবার খেলে কিংবা বমি করলে অথবা ঢেঁকুর তুললে ব্যথা কমে। এ ছাড়াও পেপটিক আলসারের মধ্যে বুক জ্বালা, অরুচি, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা, কিংবা হঠাৎ রক্ত বমি অথবা পেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হতে পারে।



চিকিৎসা

শৃঙ্খলাঃ পেপটিক আলসারে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ব্যথানাশক ওষুধ অর্থাৎ এসপ্রিন জাতীয় ওষুধ সেবন থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে এবং নিয়মিত খাবার গ্রহণ করতে হবে।



ওষুধঃ পেপটিক আলসারের রোগীরা সাধারণত অ্যান্টাসিড, রেনিটিডিন, ফেমোটিডিন, ওমি প্রাজল, লেনসো প্রাজল, পেনটো প্রাজল জাতীয় ওষুধ সেবনে উপকৃত হন । কারণভিত্তিক



চিকিৎসাঃ জীবাণুজনিত কারণে যদি এ রোগ হয়ে থাকে তবে বিভিন্ন ওষুধের সমন্বয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়, যা ট্রিপল থেকে থেরাপি নামে পরিচিত।



অপারেশনঃ পেপটিক আলসারের ক্ষেত্রে অপারেশন সাধারণত জরুরি নয়। তবে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনের পরও যদি রোগী ভালো না হন, তবে কিছু খেলে যদি বমি হয়ে যায় অর্থাৎ পৌষ্টিক নালীর কোনো অংশ যদি সরু হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে অপারেশন করিয়ে রোগী উপকৃত হতে পারেন।



সময়মতো পেপটিক আলসারের চিকিৎসা না করলে রোগীর নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। যেমন



১- পাকস্থলী ফুটা হয়ে যেতে পারে;

২- রক্ত বমি হতে পারে;

৩ কালো পায়খানা হতে পারে;

৪- রক্তশূন্যতা হতে পারে;

৫- ক্যান্সার হতে পারে (কদাচিৎ) এবং

৬- পৌষ্টিক নালীর পথ সরু হয়ে যেতে পারে এবং রোগীর বারবার বমি হতে পারে।



কাজেই যারা দীর্ঘমেয়াদি পেপটিক আলসারে ভুগছেন তাদের উচিত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। পেপটিক আলসার-জনিত জটিলতা আগে থেকেই শনাক্ত করা এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া। প্রয়োজনে অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা ধরে না রেখে সুস্থ-সুন্দর-স্বাভাবিক জীবনযাপন করা।



**************************

অধ্যাপক ডা. এ কে এম ফজলুল হক

বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ সার্জারি বিশেষজ্ঞ, চেয়ারম্যান, কলোরেকটাল সার্জারি বিভাগ,

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৫

ভ্রমন কারী বলেছেন: ++++++++

২| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৬

ডি মুন বলেছেন: দরকারী পোষ্ট , অনেক ধন্যবাদ :)

৩| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৭

ইউসুফ আলী রিংকূ বলেছেন: আমি প্রায় দের বছর ধরে এই রোগে ভুগছি /:)

এবং আপনার বর্ণনা অনুযায়ী প্রায় সকল সমস্যাগুলো আমার মধ্যে আছে :( :(

ইন্দোস্কপি করে যখন প্রথম ধরা পরেছিল তখন ৪ টা স্পট ছিল :| :|

এখনো দিনে ৩-৪ বার বমি হয় B:-/ তবে ব্যথা করে না বলে কোনো ওষুদ খায়না /:)


এই বিষয়ে পোস্ট দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ

৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৮

ইউসুফ আলী রিংকূ বলেছেন: সমস্যাগুলো জায়গায় উপসর্গগুলো হবে

৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০০

স্বপনচারিণী বলেছেন: আমার কোন সমস্যা নেই। কিন্তু জেনে রাখা খুব জরুরী।

৬| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৮

স্বপ্ন বাংলা বলেছেন: আমার কোন ব্যথা নেই, কিন্তু সারাক্ষন গলা জ্বলে, কত মেডিসিন যে খেলাম তার হিসেব নেই। কিছু দিন ভালো থাকি আবার শুরু হয়। কি করা যায় বলুনতো ডাক্তার সাব ...........

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.