![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দু-চারজন বড় মাপের নাস্তিকের সাথে কথাবার্তা বলার ভাগ্য হয়েছিলো। অন্তত এটা বুঝেছি, সহজে কেউ নাস্তিক হতে পারে না। বেশীর ভাগ ধর্মীয় বিষয়ই যুক্তিপূর্ণভাবে লেখা, সেসবকে পাল্টা যুক্তি (সেটা সুযুক্তিই হোক বা কুযুক্তিই হোক) দিয়ে খন্ডন করা সহজ কথা না। এজন্য প্রচন্ড পরিমাণে পড়ালেখা করা লাগে, প্রচুর রেডি রেফারেন্স লাগে সর্বোপরি লাগে বিনয় মিশ্রিত আত্নবিশ্বাস, যেখানে, প্রতিপক্ষের কথা ও যুক্তি শোনবার মতোও মানসিক প্রস্তুতি থাকতে হয়। আস্তিক-নাস্তিকতার আড্ডার প্রচন্ড মুহুর্তে যখন একজন নামাজ পড়বার জন্য উঠতে চায়, তখন সেই নাস্তিকতার যুক্তিধারীই তাকে সসম্মানে জায়গা করে আড্ডার বিরতি দেন।এই আড্ডায়ই রমজানের সন্ধায় মাগরিবের সময় তাকে আস্তিককের জন্য পানি নিয়ে আসতে দেখেছি। আস্তিকতা - নাস্তিকতা থাকবে, কিন্তু সেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকবে না, এটা কেমন কথা। আপনি দুপাতা পড়েই নিজেকে বিশাল নাস্তিক দাবী করছেন, অথচ যুক্তির বদলে আক্রমণ আর গালিগালাজই আপনার মূল হাতিয়ার! অন্যের কথা বিন্দুমাত্র সম্মান সহকারে শোনবার ধৈর্য আপনার নেই, আপনি কিভাবে আশা করেন, আপনি অন্যের গালি খাবেন না?
একটা সময়ে নাস্তিকতা ছিলো জ্ঞানগর্ভ লোকদের (তারা সঠিক না ভুল সে বিতর্ক এখানে নয়) দখলে, আর এখন নাস্তিকতা একপ্রকার ফ্যাশানে পরিণত হয়েছে। ফেসবুকে মোল্লাদের কোন একটা বিষয়কে সমালোচনা করে - "আমিই নাস্তিক" জাতীয় মতবাদ প্রকাশ না করলে নাকি তাদের ইজ্জত থাকে না। রমজান মাসে দুপুরে লজ্জা নিয়ে খেতে দেখেছি আগে, এখন রমজানে দুপুরে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে সদর্পে খাওয়াটা নাকি জাতে তোলবার মেশিন! সবচেয়ে বড় কথা, বাংলা ভাষায় নাস্তিকতা প্রকাশ করতে শুধু মাত্র একটি মাত্র ধর্মের বিরুদ্ধে লেখাটাই নাকি যথেষ্ট!
ঢাকার একটি সাংস্কৃতিক মহল মাঝের কয়েকবছর ধরের প্রচার করাবার চেষ্টা চালিয়েছিলো, দুর্গাপুজা নাকি আবহমান বাঙালী ঐতিহ্য! দুর্গাপুজার একটি পুরো টিভি প্রোগ্রাম তারা তৈরী করেছিলেন সনাতন ধর্মের মাত্র দুই একজন কে নিয়ে, বাকীদের নামের টাইটেল মুসলিম! এটা করে তারা প্রমাণ করবার চেষ্টা করেছেন এটা আসলের বাঙালির অনুষ্ঠান মাত্র, ধর্মের ব্যাপার না! সুখের কথা, সনাতন ধর্মপ্রাণ কয়েকজনের প্রতিবাদে এই অপচেষ্টার মৃত্যু ঘটে। আবহমান কাল থেকে আমাদের ধর্মীয় উৎসবগুলো সার্বজনিন, এটা সত্য কথা। মুসলমান রা দলবেধে দুর্গাপুজায় দেখতে যায়, এটা শিষ্ঠাচার আর ধর্মীয় সম্প্রীতির নিদর্শন। তাই বলে, তাদের শ্লোক আবৃত্তি করে ওনাদের ধর্মীয় পবিত্রতায় হাত দেয়াটা নিশ্চয়ই সম্মান দেখানো না। একই সাথে ঈদের দিন সবাই মিলে উপভোগ করতে চাওয়াটা ও শিষ্ঠাচার আর ধর্মীয় সম্প্রীতির নিদর্শন, কিন্তু ঈদের নামাজে কি অন্য ধর্মাবলম্বীদের দিয়ে ইমামতি করানোটা ওনাদের সম্মান দেয়ার ব্যাপার? প্রতি পদে পদে ভুল ব্যাখ্যা আর অনেক কাল ধরে আসা সম্মানের জায়গাটা নষ্ট করে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগা সমাজের একটি অংশের কাছে কেন জানিনা বাকীরা অসহায় হয়ে পড়ছে।
নিজের ধর্মকে সম্মান না দিতে পারলে অন্য ধর্মকেও সম্মান দেয়া যায় না, ছোটবেলা থেকে এমনটাই শিখে আসছি। কেমন যেন একটা ট্রেন্ড চালু হচ্ছে যে, কেউ কেউ নিজের ধর্মকে অপমান করে অন্য ধর্মকে বাড়তি সম্মান দিয়ে একটা নাম কামানো! এ থেকে নিজে কি পান, বা অন্যরা কি পায় আমার জানবার ইচ্ছা। আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে তিন ধর্মের অনুসারী আছে, বেশীরভাগই ধর্মপ্রাণ। বরং ওদের নিজের ধর্মের প্রতি মনোযোগ এবং সম্মান দিতে দেখে আমাদের অন্যান্যদের তাদের সম্বন্ধে শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যায় এবং নিজের ধর্মের কার্যাবলীর প্রতি আরও মনোযোগ বেড়ে যায়। কারও বাসায় গেলে, আন্টি পুজো করছেন জেনে আমরা নিচু গলায় কথা বলি, যাতে ওনার ডিস্টার্ব না হয়, তেমনি রোজার মাসে ওরা প্রায় দিনই চেস্টা করে আমাদের সাথে বসে একসাথে ইফতারে যোগ দেবার।
পরস্পরকে গালাগাল করলে, না আমাদের নিজেদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ে, না নিজের প্রতি সুবিচার হয়। অন্যকে সম্মানিত করতে হলে নিজেকে প্রথমে সম্মানের জায়গায় নিয়ে আসতে হয়।
জঙ্গীবাদের জুজু তুলে মোল্লাদের দেশের দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে, কিন্তু এর পরিণতি নিয়ে কেউই কি সঠিক ভাবে ভাবছে? বারবার তৈরী করা হচ্ছে মতিঝিল, রামু কিংবা সাতক্ষীরার ঘটনা। জীবন বাজী রেখে গাছে ঝুলে থাকা বন্ধুটিকে উদ্ধার করা বন্ধুটি কিংবা ভয়ঙ্কর জরুরী অবস্থায় নিঃসঙ্কোচে রক্ত দিতে আসা বন্ধুটির ধর্মীয় পরিচয় কোনদিন মনে বাধার তৈরী করে নাই, কিন্তু গত কয় বছর ধরে তৈরী হওয়া নাস্তিকতা, জঙ্গী জুজু আর মোল্লা পিটাও নীতি কি আমাদের সেই সম্প্রীতিতে অদৃশ্য দেয়াল তৈরী করে দিচ্ছে না?
১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:১৪
টি এম মাজাহর বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৬
আকাশ আহমাদ বলেছেন: আপনার লেখাটি চমৎকার হয়েছে। মুসলমান হয়ে ইসলাম বিরোরী কথা বার্তা যারা লিখে তাদের উ্চিত এই লেখাটি বারবার পড়া।
১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৪
টি এম মাজাহর বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১৪ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২১
জাকারিয়া জামান তানভীর বলেছেন: আমারও প্রশ্ন, সম্প্রীতির ফুলেল বাগানে নোংরা ইটের দেয়াল নির্মাণের কারিগর কারা? আপনার উপস্থাপনা ভালো লাগল। ধন্যবাদ।
১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৭
টি এম মাজাহর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩
তানভীরএফওয়ান বলেছেন: Nice article, many thank.