![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কোন বনে ছিলি, ও পাখি রে! কোন জল-সমুদ্রে ছিলি, ও মাছ রে! পাখিরা বন্দি খাঁচায়, মাছেরা বন্দি অ্যাকুরিয়মে। এই পাখি ধরে আনা হয়েছে নানান দেশ থেকে, মাছগুলোও। ঢাকা শহরের কাঁটাবন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটে সারি-সারি পাখি বিক্রির দোকান, মাছ বিক্রির দোকান। আছে কিছু ফুলের দোকান, আর কিছু কফিন বাকশোর দোকান। ঠিক এই মার্কেটের অপজিটেই আমার বাসা। আমাকেও ধরে আনা হয়েছে কোনো বন থেকে, কোনো নদীর ধার থেকে। আমিও বন্দি বাসায়, 'সভ্যতা'য়, রাস্তায়, নেশায়; ঘড়িতে বন্দি আমি, বন্দি জীবিকায়। হয়তো আমি বন্দি, ভালোবাসায়, ঘৃণায়। পার্থক্য, আমাকে কেউ কিনে নিয়ে যায় না। পাখিগুলো বিক্রি হতে থাকে, মাছগুলো কিনে নিয়ে যায় মানুষ। এই মার্কেটে বিদেশি কুকুর, বেড়াল-খরগোশ ও বিভিন্ন প্রাণী বিক্রি হয়। বাসা থেকে বেরুলেই চোখে পড়ে সব, দেখতেই হয়। মাঝে মাঝে ভাবি, আজ বন্দি পাখিদের সঙ্গে গল্প করব, খাঁচার কাছে গিয়ে দাঁড়াই। মাছগুলোরও গল্প শুনতে অ্যাকুরিয়মের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। দোকানদার আমাকে দেখে বোঝে, 'কেনে না, ফাও দেখে যায়'। আবার তেমন কিছু বলে না, কারণ তারা এও বোঝে, অত্র এলাকায় আমি প্রায় 'নেটিভ বালক'। ফলে, একটা ছাড়ও আমি পাই। নড়াইলে শিল্পী এসএম সুলতানের বাড়িতে দেখেছি খাঁচাভর্তি পাখি-ইঁদুর-গিনিপিগসহ নানান পশুপ্রাণী। মনীষী আহমদ ছফাও একটি শালিক পুষতেন, সেই শালিক ছিল তার পুত্র। একদিন খাঁচা খুলে ছফা তার পুত্রকে বললেন, 'যা, উড়ে যা।' শালিকপুত্র খাঁচার দরজা খোলা পেয়ে উড়ে গেল। ছফা তার 'পুষ্প বৃক্ষ এবং বিহঙ্গপুরাণ'-এ লিখেছেন, 'মুক্তির আনন্দে পুত্র আমার কয়েকদিন বাদে এক মেয়ে শালিক জুটিয়ে নিয়ে এসে ছাদের রেলিং-এ এমনভাবে বসল, জানলা দিয়ে আমি তাদের দেখলাম। বুঝলাম, ছেলে আমার লায়েক হয়েছে।'
গতসন্ধ্যায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে, কাঁটাবন ধরে হাঁটতে হাঁটতে, মাছপাখিদের দেখে ভাবতে ভাবতে, খাঁচা-অ্যাকুরিয়মগুলো দেখতে দেখতে মনে হয়ে গেল, সম্ভবত আমিও একটা পাখি, আমিও একটা মাছ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৪
শূন্য পথিক বলেছেন: আমার গোল্ড ফিস গুলো সব মরে গেল