নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হুজুগে ব্লগার..........।

টংকেশ্বরী

সন্তানের কাছে আমার একমাত্র প্রত্যাশা, ' মা 'সত্তার বাইরের যে আমি, তাকে যেন সে জানতে চেষ্টা করে। যদি সেই আমাকে সে ভালবাসে, তবে তাই হবে আমার শ্রেষ্ঠ পাওয়া......

টংকেশ্বরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছায়া পুতুল

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

এ পোড়া দেশে মধ্যবিত্ত হবার জ্বালার শেষ নেই। কিসের কিসের অভাবে আর কিসের কিসের উপস্থিতির কারনে জীবন শেষ, ফিরিস্তি দিতে গেলে সে হবে আরেক যন্ত্রণা। তবে, মোদ্দা কথা হলো, যার নিদান নেই, তাকে না চাইলেও বরণ করাই নিয়তি। বেশ কিছুদিন ধরে ভাদ্রের গরমে কাতর, উপরন্তু লোডশেডিং তো আছেই। বিদ্যুতের এই আসা যাওয়া আমাদের ভাগ্যের সাথে জড়িয়ে গেছে আর যতই রুপপুর তথা সমগ্র দেশের পক্ষে হুমকিস্বরুপ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বানানো হোক না কেন, অদূর ভবিষ্যতে লোডশেডিং আমাদের জীবন থেকে বিদায় নেবে , এমন আশা করা যায় না। তো, তাই ভাবছিলাম যে, বিদ্যুতের আগমনের যে কলাটির বিলুপ্তি ঘটেছে, তার দিকে মনোযোগী হওয়া যাক। ছায়া দিয়ে গল্প বলার সেই টেকনিকের নাম Shadowgraphy বা Ombromanie, বাংলায় হয়তো বলা যায় ছায়াবিদ্যা আর ছায়া গল্পের কারিগরকে বলা হয় shadowgraphist। কখন কোন আগুনের ছায়া কার দেয়ালে পড়েছিল আর তার মন বিচিত্র এই বিষয়টাতে চেনা কিছুর ছায়া দেখে পুলকিত হয়েছিল, বলা অসম্ভব। কিন্তু উইকি বলছে, এর উদ্ভব পূর্ব এশিয়াতে।



চীন দেশে এই ছায়া পুতুলের প্রচলন নিয়ে চমৎকার এক গল্প আছে। অনেক কাল আগে হান বংশের এক রাজা তাঁর প্রিয়তম স্ত্রীর মৃত্যুতে ভীষন ভেঙ্গে পড়েছিলেন। কিছুতেই প্রিয়তমার শোক কাটিয়ে উঠতে পারছিলেন না। কেবলই মনে পড়ে যাচ্ছিল পুরোনো দিনের সব কথা - প্রিয়তমার হাসি, গল্প। রাজার এই দুরাবস্থা আর রাজ্য শাসনে অবহেলা দেখে প্রজারা ভীষন চিন্তিত হয়ে উঠেছিল কিন্তু কি করা যায়, ভেবে পাচ্ছিল না। এমন সময় সেখানকার এক পুরোহিত একদিন বাচ্চাদের পুতুল নিয়ে খেলা খেলা দেখতে দেখতে চমৎকার এক আইডিয়া বের করে ফেললেন। রাজমহিষীর মতো দেখতে এক পুতুল তৈরি করে ছায়ার মাধ্যমে তাকে রাজার সামনে হাজির করলেন। শোকাভিভুত রাজা দেখলেন রানি তার দিকে তাকিয়ে নাচছে, গাইছে, তাদের প্রেমের গল্প বলছে সেই পুরোনো দিনের মতো। ছায়াতেই রাজা খুঁজে পেলেন রানিকে। আর এরপর যতদিন তিনি জীবিত ছিলেন, সারাদিনের রাজকার্য শেষে রাতের বেলায় বসতো এ আসর যেখানে ছায়া হয়ে তাঁর প্রিয়তম স্ত্রী তাঁর পাশে থাকতেন।





চীনের এই জনপ্রিয় কলাটি উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ফেলিসেইন ট্রেওয়ে'র ( Félicien Trewey ) হাত ধরে ইউরোপে রীতিমত আলোড়ন তোলে। বিখ্যাত ফরাসি এই জাদুকর হাতের সাহায্যে বিখ্যাত ব্যাক্তিদের ছায়া তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সবাইকে।







ইতিহাস বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার মূল উদ্দেশ্য তো আগেই বলেছি। হাসি মুখে নিয়তিকে বরণ করা আর অবশ্যম্ভাবীকে কাজে লাগিয়ে পরিস্থিতেকেই উল্টে তাক লাগিয়ে দেয়া। কেবল মাত্র হাতের সাহায্যে আলোকে কাজে লাগিয়ে ছোটখাট কিছু ছবি তৈরি অসম্ভব নয় মোটেই। আপনি পারবেন, পারবেনই। চেষ্টা করেই দেখেন একবার।















ছোটরা এতে ভীষন আনন্দ তো পাবেই সন্দেহ নেই আর একটু করে চর্চা করে বন্ধুদের সবাইকে তাক লাগিয়ে দিতে পারবে সহজেই। তবে, এর সবচেয়ে বড় প্রভাব আছে ছোটদের মনের উপর। ওরা এ থেকে জানতে পারবে, অন্ধকারে কোন কিছুর ছায়া পড়া মানেই ভূত নয়। ভূত বলে কিছূ নেই বলে বলে গলা ফাটানোর চেয়ে অনেক বেশি উপকারী এই কলা ওদের কল্পনার জগৎকে রাঙিয়ে তুলবে।









মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.