নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

কাঙাল মানুষ, কাঙাল মন / আগা-গোড়া কাঙালী জীবন/ দুঃখ করি না, দুঃখ দিই না/ জোৎস্নার দিঘীতে স্নান দিয়ে/ সুখে ভাসতে চাই।

সৈয়দ মামুনূর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আর্ন্তজাতিক নারী দিবস ঃ প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

২৮ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:২৪


১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কে কর্মজীবী নারীদের এক সফল আন্দোলনের ফসল পরবর্তী ঊনিশ শতকের ০৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। তার পূর্বে এটি কর্মজীবী নারী দিবস হিসেবে পালিত হতো। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল “অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান”। নারীদের শুধু অধিকার নয় মর্যাদায়ও সমতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় একজন নারী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পরে তার স্বামী মায়ের কাছে অন্য আরেকটি সন্তান হিসেবে সমাদৃত হয়ে থাকে কিন্তু অপরপক্ষে স্বামীর পরিবারে নববধু হিসেবে আসা নারীটি হয়ে উঠে একজন আগন্তুক। সমাজের এই চিত্র সবখানে সবসময় সংগঠিত না হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এধরণের পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। পরিবারে একজন শিক্ষিত, স্বাবলম্বী, প্রতিষ্ঠিত নারীও দেখা যায় মর্যাদার প্রশ্নে তার অবস্থান স্বামীর সমান্তরাল রেখায় থাকলেও সমরেখায় অধিষ্ঠিত হতে পারেন না। আজকের এই সভ্যতার সূবর্ণ যুগেও নারীর অধিকার ও মর্যাদার বিষয়টি আলোচনায় আসছে বারবার। নারীর অধিকার ও সমমর্যাদার বিষয়ে সাম্প্রতিক অনেকগুলো আলোচনার মধ্যে একটি বিষয় পরিলক্ষিত হয় আমাদের সমাজ ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে নারীর অধিকার বিষয়টির বেশ অগ্রগতি হলেও সমমর্যাদার বিয়টি এখনও অবহেলিত।
বাংলাদেশে নারীরা স্বীয় যোগ্যতায়, বিষ্ময়কর দক্ষতায় অতীতের সকল ভ্রান্ত বিশ্বাস ম্লান করে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন রাষ্ট্রিয় সকল সেক্টরে। সেনাবহিনী, নৌবাহিনী, গভার সাগরের নাবিক, পাইলট, পুলিশ, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, কুটনীতিবিদ, বিচারক, বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, রেল-নৌ-সড়ক, ইউপি মেম্বার, মন্ত্রী, আমলা, রাষ্ট্রপ্রধান, বিরোধীদলীয় নেত্রী - সবখানে সর্বত্র সগর্বে নারীর বিচরণ। এতদসত্বেও অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে পেশাগত জীবনের সফল নারীরা নিজ পরিবারে আপন পরিবার-পরিজনের মাঝে কিংবা পারিপার্শ্বিক সমাজে পুরুষের সমান মর্যাদার আসন পায় না- যদিও নারীরা পুরুষের পাশাপাশি সমান যোগ্যতায়, দক্ষতায় নিজের অধিকার আদায়ে সক্ষমতা অর্জন করেছে। বর্তমান বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সকল অর্জনে নারীর আবদান উল্লেখ করার মতো। সুতরাং আমাদের সমাজে, আপন পরিবারে সকলকে সচেতনভাবে এগিয়ে আসা জরুরী যে, নারীর অর্জিত অধিকারের বিপরীতে যেন মর্যাদার আসনও নিশ্চিত হয়। অন্যথায় বিবেকের আদালতে মানুষ হিসেবে কিংবা উত্তর পুরুষের কাছে একদিন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে নারীর এত সফলতা, নিপুণতা, অর্জন সত্ত্বেও কেন তাদের প্রতি হেন নেতিবাচক মর্যাদাহানিকর আচরণ? এধরণের পরিস্থিতি উত্তরণে প্রয়োজন সর্বপ্রথম নিজেকে বদলানো এবং নিজ পরিবার থেকে কাজ শুরু করা। বাংলাদেশের প্রত্যেক পরিবারে প্রতিটি শিশু, প্রতিটি তরুণ, প্রতিটি যুবকের প্রথমপাঠ যেন হয়; অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে নারী-পুরুষ সমানে সমান। কারণ পারিবারিক শিক্ষাই মানুষের জীবন-যাপনে, আচার-আচরণে একটি বড় জায়গা দখল থাকে। পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সমাজের রেওয়াজ, রীতি, নীতি নির্ধারক পর্যায়েও নারীর প্রতি সম্মানজনক আচরণে ধারণাগত শিক্ষার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এভাবে সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে যদি পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রিয় পর্যায়ে ধারণাগত ও আচরণগত ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়, তাহলে নিশ্চয় সর্বস্তরে, সর্বত্রে নারীর সমান অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা সম্ভব। সমাজে নারীর সমান অধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা হলেই নারীর প্রতি সকল ধরণের সহিংসতা রোধ করা সম্ভবপর হয়ে উঠবে। কারণ এখনো সমাজে ভাল মানুষের সংখ্যা বেশী, দুস্কৃতকারী রয়েছে হাতেগোনা, কতিপয়, গুটিকয়েক। সঠিক উদ্যোগ এবং যথাযথ প্রক্রিয়ায় এধরণের সচেতনতামুলক কার্যক্রমে সমাজের সকলকে সম্পৃক্ত করা যায় তাহলে অবশ্যই সমাজের কতিপয়, গুটিকয়েক দুস্কৃতকারীদের হটিয়ে একটি সুন্দর, সূস্থ নারীবান্ধব, উন্নয়নবান্ধব প্রগতিশীল বাসযোগ্য সমাজ বিনির্মাণ করা কঠিন কিছু নয়। নারী’কে শুধু সহধর্মিনী কিংবা সন্তান পালনের জন্য নির্ধারিত না ভেবে তার যোগ্যতা অনুসারে মানুষ ভেবে দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করলে এগিয়ে যাবে দেশ,এগিয়ে যাবে সমাজ। বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় আয়োজিত নারী দিবসের এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল নারীদের বলেন, পরমুখাপেক্ষী না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে। তিনি আরো বলেন,মাতৃমৃত্যু রোধে বাংলাদেশ এমডিজি গোল অর্জন করেছে। সামাজিক কিংবা যে কোনধরনের প্রতিহিংসামুলক কর্মকান্ডে নারীরাই সবচেয়ে বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই সবার প্রতি তিনি আহবান জানান,অর্ন্তমুখী না হয়ে নিজের মর্যাদা রক্ষায় নিজেদেরই এগিয়ে আসার। বর্তমান বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে সভ্যতায়, উন্নয়ণে, অর্জনে বিশ্বের অন্যান্য দেশ/জাতির সাথে এগিয়ে যেতে “অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান“ প্রতিপাদ্যটি অত্যন্ত জরুরী, অর্থবহ এবং প্রাসঙ্গিক।
----সৈয়দ মামুনূর রশীদ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.