নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

সৈয়দ মামুনূর রশীদ

কাঙাল মানুষ, কাঙাল মন / আগা-গোড়া কাঙালী জীবন/ দুঃখ করি না, দুঃখ দিই না/ জোৎস্নার দিঘীতে স্নান দিয়ে/ সুখে ভাসতে চাই।

সৈয়দ মামুনূর রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারাগারের মাদক বা মাদকের কারাগার ;

২২ শে জুন, ২০১৮ রাত ৮:৫৩

একটি মাঝারি সাইজের কারাগারে যে পরিমাণ মাদক কনজিউম হয় তিনটি বড় সাইজের জেলায় সে পরিমাণ মাদক ব্যবহার হয় না। দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের সবকটি কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দশগুণ বেশী কয়েদি রাখা হয় অঘোষিত বা পরোক্ষভাবে মাদকের সহায়তায়। মাদক দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে না রাখলে এ দশগুণের বেশী সংখ্যক কয়েদিরা কারা বিদ্রোহ বা কারাগার ভেঙে ফেলার অশংকা কিন্তু উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখানে আরো বেশী দুঃখজনক সত্য হলো বাংলাদেশের কারাগারগুলো সংশোধনাগার না হয়ে অপরাধিদের জন্য উচ্চতর প্রশিক্ষণাগারে পরিণত হয়েছে। এখানে নির্দাগী যুবক ঢুকে দাগী হয়, দাগী ঢুকে বেপরোয়া হয় আর বেপরোয়া ঢুকে ভয়ংকর সন্ত্রাসীতে পরিণত হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়নমুলক কাজ হলেও কারাগার বা কারাবন্দিদের নিয়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর তেমন উদ্যোগ বা উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় না। অথচ দেশে কর্মরত এনজিওগুলোর সবচেয়ে বেশী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্র হতে পারতো কারাগার। বাংলাদেশের এসডিজি অর্জনে কারাগার উন্নয়ন একটি বড় ফ্যাক্টর। যাহোক বর্তমানে চলমান মাদক নির্মুল অভিযানে মাদক পরিবহন, পরিবেশন এবং সেবন পর্যায়ে যতটুকু কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে মাদক অনুপ্রবেশ বা উৎপাদনে তেমন কঠোর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। মাদক নির্মুলে প্রথমে অনুপ্রবেশ বা উৎপাদন ঠেকাতে হবে তারপর পরিবহন, পরিবেশন এবং সেবন বা ভোক্তা পর্যায়ে ঠেক দিলে কার্যক্রমটি আরো বেশী ফলপ্রসু হতে পারতো। মনে রাখতে হবে মাদকের ভোক্তা পর্যায়ে দমন অভিযানে শতভাগ সফলতা আসবে না। এ পর্যায়ে সফলতা আনতে হলে উন্নতমানের আধুনিক চিকিসা সম্বলিত মানবিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত পর্যাপ্ত সংশোধন কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। শুনা যায় এখন মাদক পরিবহনে হিজড়া সম্প্রদায় সম্পৃক্ত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। অবশ্য আগেও মাদক পরিবহনে হিজড়াদের সম্পৃক্ততা ছিল বলে অনেকে মনে করেন। এবার আসি মাদকের শ্রেনীবিভাগ নিয়ে। উৎস বিচারে মাদককে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম। অনেকেই মনে করেন সৃষ্টির প্রথম প্রাকৃতিক মাদক ‌'গুনদম'। গুনদম খেয়ে বাবা আদম বিতাড়িত হলেন এবং অনেকগুলো বিদ্যা অর্জন করলেন। এ হিসেবে পুরো পৃথিবীটাকে মাদকের কারাগারও বলা যায়। তারপর যুগে যুগে বিভিন্ন গোষ্ঠিতে বিভিন্ন ধরণের প্রাকৃতিক মাদকের ব্যবহার দেখা যায় - যা কখনো মহামারি বা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানি পর্যায়ে পৌঁছেনি। বরং একসময় মোগল সম্রাট বা প্রাচীন যোদ্ধারা তালের রস বা গোলপাতা গাছের রস থেকে উৎপাদিত তারি খেতো বলবর্ধক হিসেবে। মাদকের সবচেয়ে ভয়াবহতা পরিলক্ষিত হয় কৃত্রিম বা মানবসৃষ্ট মাদক অবিস্কার, উৎপাদন বা ব্যবহারের পর থেকেই। অধুনা শুনা যায় সারাবিশ্বে গাঁজা নিষিদ্ধ করে আমেরিকা এবং কানাডাসহ বিভিন্ন উন্নত রাষ্ট্র এখন গাঁজা চাষ করছে মেডিসিন গাছ হিসেবে। বর্তমানে বাংলাদেশে মাদকের ফলে যে পরিমাণ মানবসম্পদ নষ্ট হচ্ছে, যে পরিমাণ অপরাধ বেড়েছে তা দুর্যোগের পর্যায়ে চলে গেছে। মাদক নির্মূল প্রক্রিয়াকে একপ্রকার দুর্যোগ মোকাবেলা কার্যক্রমও বলা যায়। আসুন আমরা সকলে মাদক নির্মুলে এগিয়ে আসি এবং সর্বাত্মক সহায়তা করি। মাদক নির্মূলে নিরিহ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখাটাও অত্যন্ত জরুরী। কারণ নিরীহ মানুষ খুন হওয়া কারো কাছে পরিসংখ্যনের সংখ্যা হলেও যার স্বজন মারা যায় তাদের কাছে একটি জীবন, একটি সংসার। এছাড়াও নিরীহ মানুষ খুন হলে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে - যা এধরণের অভিযানে বড়ধরণের বাধা হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশের অনেক সন্ত্রাসী বা গডফাদার আছে তারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এক ঢিলে দুই পাখি মারবে। মানুষ খুন করে একসাথে প্রতিপক্ষ দমন এবং মাদক নির্মুল অভিযান দুর্বল করার ষড়যন্ত্র করার প্রচেষ্টা চালাবে। অনেকেই মনে করছেন সাম্প্রতিক ইকরাম হত্যাকান্ড তেমনি একটি উদাহরণ। শুধু গডফাদার নয় আইন শৃন্খলা নিয়ন্ত্রণ বাহিনীও এতে জড়িয়ে যেতে পারে অর্থ কিংবা বিভিন্ন লোভে। সুতরাং জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত রাখা যেমন জরুরী তারচেয়ে বেশী জরুরী সর্তক থাকা।
--------------------------------------সৈয়দ মামুনূর রশীদ

Uploaded picture related Link; The speech of honorable President ;
http://www.dhakatimes24.com/2018/03/20/73850/কারাগারে-মাদক-রুখতে-কঠোর-হতে-বললেন-রাষ্ট্রপতি

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.