নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অাব্দুল্লাহ তাহির

অাব্দুল্লাহ তাহির › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘হনুজ দূর অস্ত’

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৫

অনুসিদ্ধান্ত একঃ
আপনি আনিসুল হকের মত সাবলীল নন। জাফর ইকবালের মত চেতনার ফিল্টারওয়ালা নন। আসিফ নজরুল কিম্বা ফরহাদ মজহারও মত আইএসআইয়ের শেখানো বুলি আওড়াতে পারদর্শী নন। ত্যানা পেঁচিয়ে বলার ওস্তাদ আব্দুল গাফফার চৌধুরীনও নন। সুতরাং আপনার কথার কোন একাডেমিক ভ্যালু নেই। মিডিয়া ভ্যালুর প্রশ্নই ওঠে না।

অনুসিদ্ধান্ত দুইঃ
আপনি শাহরিয়ার কবিরের মত মোঁচওয়ালা মুক্তিযুদ্ধের সোল এজেন্ট নন। কিম্বা শাহবাগের চেতনার মঞ্চে গিয়ে অগ্নীকন্যার পাশের পারফিউম শুঁকে অগ্নিপুরুষ হতে পারেন নি। সুতরাং আপনার মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা বলার কোন অধিকার নেই। আপনি চেতনার ফিল্টারে্র চিপাই আঁটকে গেছেন।

অনুসিদ্ধান্ত তিনঃ
আপনি যত যৌক্তিক কথাই বলুন আর যত নি্রপেক্ষভাবেই সত্যকে সামনে আনার জন্য কলম চালিয়ে যান, যদি কর্তৃত্বশীলদের পছন্দের বাহিরে কিছু করেন তো পদে পদে আপনাকে আটকে যেতে হবে। ঠিক যেমন করে সামহোয়ারের এই প্রানের বন্ধনে আপনাকে বিনা কারনেই বিদায় নিতে হয়। এডমিনদের যদি ইগোতে একটু লাগে তবেই শেষ! যুক্তির তখন আর মুক্তি নেই।

এই তিনটি অনুসিদ্ধান্তকে সামনে রেখে আশার প্রদীপ এটাই যে ইদানিং সামু তার সহনশীলতার মাত্রা অনেকাংশে বাড়িয়ে নিয়েছে।

আমি অত্যন্ত ব্যাথাতুর হৃদয়ে সমসাময়িক এক ঘৃণ্য বিষয় নিয়ে লিখার মনস্থির করেছি। এতটুকু আশা করাটা মনে হয় অন্যায় হবে না যে সামুর প্রাজ্ঞ ব্লগার বন্ধুরা এই ইস্যুতে একটু কনসার্ন হয়ে পুনশ্চ চিন্তা করবেন।

লিখার চিন্তা মাথায় আসে ২৬ শে নভেম্বরের দৈনিক প্রথম আলোতে শিশির ভট্টাচার্য্য সাহেবের যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি ও গণমাধ্যমের রুচিবৈকল্য শিরোনামের মতামত পড়ে। সেদিনই ভেবেছিলাম তাই তো ! আমরা জাতি হিসেবে কোথায় ছুটে চলছি? কোন অজানায় ? গন্তব্য কোথায়? শিশির ভট্টাচার্য লিখেছেনঃ

বাংলাদেশের গণমাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড-সংশ্লিষ্ট মুদ্রণ বা সম্প্রচারনীতিতে সুরুচির অভাব রয়েছে। দণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে থেকেই দৈনিকের প্রথম পৃষ্ঠায় ছাপা হতে থাকে ফাঁস লাগানো ম্যানিলা দড়ির রঙিন ছবি। জল্লাদের নাম, ফাঁসুরের সংখ্যা, আসামির পরিবারের কোন সদস্যটি ঠিক কয়টার সময় দেখা করতে এল, তারা কে কী বলল, আসামি ক্ষমা চেয়েছে নাকি চায়নি, শেষ সময়টুকু কার কীভাবে কেটেছে, লাশবাহী গাড়ি কখন বেরিয়ে গেল, গাড়ির রং কী ছিল ইত্যাদি গুরুত্বের সঙ্গে বলা হতে থাকে দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে। আমজনতা হয়তো এসবই জানতে চায়। কিন্তু রুচি বা গণমাধ্যমের দায়দায়িত্বের বিষয়টিকে উপক্ষোর সুযোগ কই।
জনগণের রুচি গঠনে প্রধান ভূমিকা রাখার কথা ছিল গণমাধ্যমের। কিন্তু দেশে দেশে, যুগে যুগে ‘মিডিওকার’ হওয়াই যদি মিডিয়ার ভবিতব্য হয়, তবে জনগণের রুচিবৈকল্য আরোগ্যের সম্ভাবনা ‘হনুজ দূর অস্ত’।


জঘণ্য অপরাধীদের পরিনিতিও খুবই জঘন্য হয়। এর সাথে একমাত্র অন্ধ-দলকানা দালালরাই ভিন্নমত পোষন করতে পারে। যুদ্ধাপরাধের শাস্তি কার্যকরে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় নি। মৌনতার ব্যাখ্যা একেকজনের কাছে একেকরকম। তবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দুই বিপরীত মেরুর দল। আওয়ামী লীগ ও জামায়াত। আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল আর মিষ্টি বিতরনের বার্তা বুঝায় যায় তারা বেজায় খুশী। আর জামায়াত বরাবরের মতই রায় প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের সাধু প্রমাণ করে ছাড়ে! আওয়ামী লীগের মিষ্টি বিতরনের অর্থ যেমন পাশবিক, ঠিক তেমন জামায়াতের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোটাও তেমনই গোয়ার্তুমি আর ধারাবাহিক। দুটোর কোনটিই আমার মত নাগরিক সহ্য করতে পারে নি।

আমার আজকের লিখার বিষয় এই দুটো রাজনৈতিক দল নয়। বরং দুটো রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের বাহিরে মিডিয়া যা করলো-তা বাংলাদেশে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এক এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার! মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের মিডিয়া কভারেজে কতটা মানবতাকে সমুন্নত করা হলো তার সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের পর্যালোচনা করা সময়ের দাবী। ব্লগ শুরুর আগে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির পরে বাংলাদেশের মিডিয়াই প্রকাশিত কয়েকটি কার্টুন ও ছবির সাথে পরিচিত করে দেই। ধৈর্য নিয়ে দেখবেন কি ?


একজন অপরাধীর লম্বা জিহবার বীভৎস চিত্রায়ন দিয়ে আমরা কোন বাংলাদেশ চাইছি?



লাল চোখের গোলাম আযম দিয়ে আগামী প্রজন্মকে কি গঠনমূলক বাংলাদেশে পাঠ শিখাচ্ছি?


এটাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খা ছিল?

এবার আসুন কয়েকটি পত্রিকার শিরোনাম দেখিঃ

বাংলানিউজ২৪ লিখলোঃ
সাকাপুত্রের স্বভাব

হুকার মাঝেও দেখি সাকার স্বভাব!

মরেও শান্তি দিল না সাকা-মুজাহিদ

ভাইয়ের বাড়িতে ঠাঁই হয়নি সাকার

নিজ এলাকায় প্রতিহত হবে সাকার মরদেহ!

আমি বিদগ্ধ ব্লগার বন্ধুদের এই নিউজগুলো একবার পড়ার অনুরোধ করছি।

সাকাপুত্রের স্বভাব শিরোনামের নিউজে জহিরুল ইসলাম খোন্দকার নামের এক চেতনার ফিল্টারওয়া বলেছেনঃ

আমি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী কিংবা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। ইতোমধ্যে তাদের সম্পর্কে এদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই জেনে গেছেন। এই দুই নরপিশাচের যেদিন ফাঁসি রায় কার্যকর করা হলো, সেদিন প্রায় সারারাতই আমি ও আমার স্ত্রী জেগে ছিলাম কখন ফাঁসি কার্যকর করা হয় এবং কার্যকরের পরে কি ঘটে দেখার জন্য।
আমার স্ত্রী বলেছিলো, সাকা-মুজাহিদসহ সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার পর সরকারের উচিত হবে এদের পরিবারকে এদেশের নাগরিকত্ব বাতিল করে দিয়ে অন্য কোনো দেশে পাঠিয়ে দেওয়া। কেন জানতে চাইলে সে বললো, এরা এদেশে থাকলে ওদের বাবাদের চেয়েও আরো বড় ভয়ংকর হবে এবং এদেশ ও এদেশের সাধারণ মানুষের আরো অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।
কথাটি যখন বলছিলো তখন সাকার পরিবার সাকার সঙ্গে শেষ দেখা করে কারাগার থেকে বের হচ্ছে। আমি আমার স্ত্রীকে থামিয়ে দিয়ে বললাম, দেখি ওরা কি বলে। সাংবাদিক ভাইরা যখন জিজ্ঞাস করলেন সাকার ছেলে হুম্মামকে প্রশ্ন করলেন তখন জবাব দিলো, আমার বাবাকে প্রাণভিক্ষার বিষয়ে আমি জিজ্ঞাস করেছি। তিনি বলেছেন, এটা বাজে কথা, কে বলেছে? আমি তো আমার বাবাকে চিনি, আপনারাও চেনেন, আমার বাবা কি ক্ষমা চাইতে পারে? আপনারাই বলেন? একথা বলে ঠিক তার বাবার (সাকার) অঙ্গভঙ্গিতে মুখটাকে বাঁকা তেড়া করে একটি হাসি দিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেলেন।
ভাবতে অবাক লাগে, তার বাবার সঙ্গে শেষ দেখা করে এলেন, সে জানলো কিছুক্ষণ পর হয়তো তার বাবাকে ফাঁসিতে ঝোলাবে, আর তার অঙ্গ-ভঙ্গি, পোশাক-আশাক দেখে মনে হলো কোথাও বেড়াতে বা শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছে (মাথার চুলে জেল মাখানো, স্টাইল করে চুল আঁচড়ানো, পরনে পাকিস্তানি কাবলি সেট)। বলতে বা দেখতে যদি ভুল না করি থাকি, মনে হলো তার সব কথা বলা, আচার-আচরণ, অঙ্গ-ভঙ্গি সব কিছু তার বাবার (সাকার) মতোই।
আমি মনে করি যারা এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে বানচাল করার অপচেষ্টা করছে এবং এদের পরিবারকে বিভিন্নভাবে শেল্টার দিচ্ছে তাদের জাতি কোনোদিনও ক্ষমা করবে না। একদিন না একদিন এদেরও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের পরিবারকে একটি দল শেল্টার দিয়ে হয়তো পুনরায় রাজনীতিতে নিয়ে আসবেন, এদের পুনরুজ্জীবিত করে এদেশের মাটি ও মানুষকে কলঙ্কিত করবেন, যেভাবে অতীতে করেছিলেন।
আমাদের মনে রাখা উচিত ন্যাড়া বেল তলায় একবারই যায়। আরও মনে রাখতে হবে, উপরের দিকে ঢিল ছুড়লে কিন্তু নিজের গায়েই এসে পড়ে।
আসুন আমরা সবাই মিলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কলঙ্কমুক্ত, স্বাধীন সুন্দর দেশ ও জাতি গড়ার অঙ্গীকার করি।


প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা কয়েকটি পয়েন্ট এখানে খেয়াল করুনঃ
# যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে হবে।
# অন্য কোন দেশে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিতে হবে।
# যুদ্ধাপরাধী পরিবারের সাথে কারও যোগাযোগ রাখা যাবে না।
# ভবিষ্যতে তাদের কাউকে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

এবার "হুকার মাঝেও দেখি সাকার স্বভাব!"- শিরোনামের নিউজে নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত নিঝুম মজুমদার বলছেনঃ
আমি খুব সুক্ষ্ণভাবে লক্ষ্য করে দেখেছি যে হুকার ভেতরে সাকার মোটামুটি সব গুনাগুন (বদার্থে) রয়েছে। সাকা যেমন তাচ্ছিল্য করে কথা বলত, মুখটাকে উত্তর আর দক্ষিণে উঠিয়ে দিয়ে কথা বলত, হুকা ঠিক তাই করে। ওর ভেতর বাপের ফাঁসি নিয়ে আমি কোনো চিন্তাই দেখিনি। চোখে কালো সানগ্লাস, কাবুলি সুট, মাথায় জেল, ভাঁজ করে চুল আঁচরানো এসব সব আমাকে বেশ চিন্তিত করে দিয়েছে।

এই বিচারের ফলে আমরা ৪৪ বছর আগের অপরাধের একটা ন্যায্য সমাপ্তি টানতে চেয়েছি। আমাদের বাবা-চাচা-মা-বোন মুক্তিযুদ্ধে সাকাদের হাতে খুন হয়েছেন, মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন, আমরা সেসব অপরাধের বিচার করেছি আদালতে। সভ্য সমাজে যা হয়, তাই হয়েছে। এখানে প্রতিহিংসার কিছু নেই। অপরাধ করেছে, শাস্তি পেয়েছে। কিন্তু হুকাকে দেখে মনে হোলো, হুকা প্রতিশোধ নিতে চায় ভবিষ্যতে। ফেসবুকে দেখতে পেলাম হুকা নাকি শেখ হাসিনাকে দেখে নেবে বলেও জানিয়েছে। এসব প্রতিটি ব্যাপার অশনি সংকেত আমাদের ভবিষ্যৎ সময়ের জন্য।

আমি যদি খুব বেশি ভুল না করে থাকি তাহলে এটা বলাই যায় যে খালেদা জিয়া খুব নিকট ভবিষ্যতে এই হুকাকে কিংবা তার মা ফাকা (ফারহাত কাদের) কে সংসদ সদস্য হবার জন্য মনোনয়ন দিবেন কিংবা তাদের আনুষ্ঠানিক ভাবে বিএনপিতে যোগ দেয়াবেন। এদের দুইজনের একজন রাজনীতি করবে আমি নিশ্চিত। তাহলে ঘটনা যা হচ্ছে সেটা হচ্ছে, এই রাজাকার পরিবারের কাছ থেকে আমরা ভবিষ্যতে আরো কিছু দেখতে যাচ্ছি যদিও পুরো ব্যাপারটা আমার অনুমান। আমি ভুল প্রমাণিত হতে পারি।

যদি একটা দেশের ন্যায় বিচাররের ফলে, ন্যায্য বিচারের ফলে এমন একটা পরস্থিতির সম্ভাবনা দেখি তাহলে প্রস্তুতিটা আমাদের তরফ থেকেও নিতে হবে। আমাদের তরফ থেকে প্রস্তুতিটা হচ্ছে আমরা তো এখন এক ধরনের কলম যুদ্ধ, ইন্টেলেকচুয়াল যুদ্ধ কিংবা মানসিক একটা যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছিই উপরন্তু একই সাথে আমরা হয়ত আমাদের সন্তানদের ট্রেনিং দিয়ে যাব এদের সাথে ফাইট করবার জন্য যদি আমরা বেঁচে না থাকি।


এখানেও সামারি টা কি দাঁড়ায় ?
# সাকাপুত্রের ড্রেস আপ শোকের মত কেন হলো না ?
# সাকাপুত্রের আচরন দেখে মনে হয় নি, সে চিন্তিত!
# সাকাপুত্র অথবা সাকার বউ নির্বাচন করতে পারে। এটা হতে দেয়া ঠিক হবে না।
# সাকাপুত্রদের বিরুদ্ধে নিজ সন্তানদের ট্রেনিং দিয়ে যেতে হবে দীর্ঘমেয়াদী লড়াইয়ের।


মরেও শান্তি দিল না সাকা-মুজাহিদ-শিরোনামের নিউজে শান্তনা চৌধুরী আক্ষেপ করে বলছেন সাকা মুজাহিদরা মরেও শান্তি দিচ্ছেন না। কেন তারা মিছেমিছি প্রানভিক্ষা নিয়ে মিথ্যাচার করছেন- বলে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অর্থাৎ মরে গিয়েও সাকা-মুজাহিদ নাটক করছেন আর কি ! ভদ্রলোক একটি গল্পও বলেছেন এখানেঃ
‘এক মাতবর গ্রামে খুব অত্যাচার করতো। অতিষ্ঠ সবাই। মৃত্যুর আগে তিনি অত্যাচারের কথা স্বীকার করে বললেন, তিনি মারা গেলে যাতে গোপনাঙ্গে বাঁশ ঢুকিয়ে তিন রাস্তার মাথায় টাঙানো হয় পাপের শাস্তি হিসেবে। যথারীতি তিনি মারা গেলেন আর গ্রামের লোকজন লাশ টাঙিয়ে রাখলো তিন রাস্তার মাথায়। পুলিশে খবর গেলো। এই ঘৃণ্য অপরাধের জন্য পুলিশ অনেক গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করলো।’ অর্থাৎ ওই শয়তান লোক মরেও শান্তি দিল না। আমাদের অবস্থা এখন অনেকটাই তেমন। মরেও শান্তি দিল না সাকা-মুজাহিদ।

অর্থাত সাকা-মুজাহিদ মারা যাওয়ার সময়ও দেশবাসীকে বিপদে ফেলতে চেয়েছেন। কি সত্য কথা! তাই নয় কি ? আমি এই নিউজগুলো ভাইয়ের বাড়িতে ঠাঁই হয়নি সাকারঝুলছে-আর আমরা তার ড্রেস আপ এবং গেট আপ নিয়ে কথা বলা শুরু করে দিয়েছি। সে কেন মন মরা হয়ে কান্নাকাটি করলো না- এটার ব্যখ্যাও দিতে হবে বাংলানিউজকে। সে কেন চুলে জেল মাখলো তার কৈফিয়াতও দিতে হবে নিঝুম বাবুকে। প্রশাসনিক কারনে সাকার মরদেহ তার ভাইয়ের বাড়িতে নেওয়া সম্ভব হয় নি। মিডিয়া হটকেক হিসেবে জাতিকে খাইয়ে দিলোঃ ভাইয়ের বাড়িতে ঠাঁই হয়নি সাকার। এরপর বিকালবেলা প্যারেড ময়দানে বিশাল জানাযায় সেই ভাই যোগ দিল। এবার শিরোনাম হলোঃ জামায়াতের জানাযায় গিকা!

ফাঁসির পর যে যুদ্ধের শেষ হওয়ার কথা, তা অব্যাহত রাখার ঘোষনা আসছে বুক চেত sb]িয়ে!একজন তো আরো আগ বাড়িয়ে বর্তমান লড়াইকে সাকা-মুজাহিদের পুত্রদের প্রজন্ম পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার উদাত্ত্ব আহবান করলেন। মানে এই ফাঁসির খেলা সহসাই থামছে না। সাকা-মুজাহিদের পুত্রদেরও ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলাতে হবে ! আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এতটাই শাণিত ! এতটাই শক্ত!

শাহরিয়ার কবির দাবী করে বসেছেন সাকা–মুজাহিদের সম্পদও বাজেয়াপ্ত করতে হবে। কি চমৎকার। তাদের অর্জিত সম্পদকেও ফাঁসি দিতে হবে। এটা দখলদারিত্ব নয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জ্বলজ্যান্ত নমুনা


সম্মানিত ব্লগার বন্ধু, আপনাদের মনে আছে ২১ শে নভেম্বর গভীর রাতের কথা ? ইলেকট্রিক মিডিয়াতে কি দারুন নাটকীয়তার ভংগিতে, উচ্ছ্বাসের সাথে, খুশীর জোয়ারে সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির ঘোষনা দেয়া হচ্ছিল। উপস্থাপক আর লাইভ ব্রডকাস্টারদের সে কি উচ্ছ্বাস! যেন কারো বিবাহ হচ্ছে। লাশের সাথে কি দারুন মানবতাবাদী আচরন। মৃত্যুকে পাশবিক ভঙ্গিতে উপস্থাপনে সত্যিই বাংলাদেশের মিডিয়ার কোন তুলনা নেই। কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত হচ্ছে আর বাহিরে কয়েকজন চেতনার উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা। টিভি চ্যানেলগুলো তার লাইভ ব্রডকাস্টিং করছে। প্রায়ই কাউকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে- সাকা- মুজাহিদের ফাঁসি একটু পরেই। আপনার কেমন লাগছে। উত্তরে আনন্দের সাথে হইহুল্লোড় করে বলা হচ্ছে - আমি ভীষন খুশী ! শুধুমাত্র এটিএন নিজের একটা ভিডিও একটা দিলাম। শিরোনামঃ যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি, সারা বাংলার হাসি



এই পর্যন্ত পরেই আমাকে অনেক ব্লগার রাজাকারের প্রেতাত্মা বলে গালি দিতে শুরু করবেন। মেনে নিলাম। শুধু বলছি-কোন ভুলের সংশোধন প্রক্রিয়া যদি ভুলভাবে হয়-তাহলে তৃতীয় আরেকটি ভুলের সৃষ্টি হয়। ঘৃণা দিয়ে ভালবাসার স্বদেশ গঠন করা যায় না। বিদ্বেষ আর হিংসা দিয়ে ঐক্যবব্ধ বাংলাদেশ হয় না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যুদ্ধের হুমকি দিয়ে কেউ ভাল থাকে না।

২০০৯ সালে নৌকায় ভোট দিয়ে আমরা বিশ্বাস করেছিলাম-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আকাঙ্খার বাংলাদেশ হবে। যুদ্ধাপরাধীদের সুষ্ঠ বিচার হবে। তারপর এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। শাসকগোষ্ঠী আমাদের এক সম্মিলিত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছিল। বলা হয়েছিল-আর একটু পথ। তারপরেই ঐক্যবদ্ধ এক জাতি। কিন্তু এখন দেখছি-ফাঁসির কাষ্ঠে তাদের সন্তানদেরও ঝুলিয়ে দেয়া হবে! নাহ। এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না। সত্যিই এমন বাংলাদেশ আমাদের কাছে আকাঙ্খিত নয়।

আমি শেষ করছি-মিডিয়ার ভুমিকা নিয়ে। বাংলাদেশের মিডিয়া নিজেই ফ্রাঙ্কেস্টাইনের দানবে পরিনিত হয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী আর দখলদারদের সেবাদাসে পরিনত হয়েছে। এ কেমন মানবাধিকার ! মানবতাবিরোধীদের ফাঁসি দিতে গিয়ে তাদের স্বজনদেরও নিষ্ঠুরভাবে আঘাত করছে মিডিয়া। খুবই ভয়ংকরভাবে! আমিও শিশির ভট্টাচার্যের মত বলিঃ ‘হনুজ দূর অস্ত’।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.