![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘরের এক কোণে মোমবাতি জ্বলছে। ঘরের সব দরজা-জানালা বন্ধ , পর্দাটাও টেনে দেয়া। ধীর-স্থিরভাবে মোমের শিখা জ্বলছে, ঘরে হলুদাভ আলো শাড়ি মেলে ধরে বসে আছে। আর আমি বসে আছি ঠিক মোমবাতিটির পাশে, পড়নে কালো শাড়ি। আচমকা আচমকা ফুঁ দিয়ে শিখা কাঁপিয়ে দিই, নিজের ছায়া কেঁপে উঠতে দেখি।
গতবছর এই দিনে মেয়েটা নিজের কোল থেকে পড়ে গেলো, বয়স হয়েছিল দিন কতক। কোল থেকে পড়েই মরে গেলো, একটু কাঁদতে চেয়েছিল শরীরে শক্তিটুকুও পায় নি। কিভাবে পড়েছিল আমার হাত থেকে আমি জানি না, মায়ের হাত থেকে এর আগে কোন শিশু পড়ে গেছে? সম্ভব না। সেদিন জেনেছিলাম সবকিছুতে সফল মেয়েটির একটি ব্যর্থতা সব ঢেকে দিবে, সব গোগ্রাসে খেয়ে ফেলবে। কিন্তু স্বস্তির ঢেঁকুরটা কে তুলেছিল সেদিন?
স্বামী - সবটুকু উজাড় করে ভালোবাসতো যে, অচেনা পুরুষ হয়ে উঠলো। ও আমাকে ভয় করতে শুরু করলো নাকি ঘৃণা বুঝার সুযোগটা দেয় নি। নিজের মা-বাবাই যেখানে বারবার বলতো জগতের “ব্যর্থ”,“জঘন্য”, “নিকৃষ্ট” মা আমি,আমার বেঁচে থাকা মানায় না, তখন বছর কয়েকের এক পুরুষকে দোষ দি-ই কি করে। যার নব্য ভালোবাসার বস্তুটি আমি অবহেলায় খুঁইয়ে ফেলেছি।
তখন বেশ সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম, কানটা কেঁটে ফেলবো নাকি হাতের রগটা। কথা শুনতে হবে না,চারপাশটা Mute করে দিতাম। হাতের রগটা কাটলে টিভিটাই অফ হয়ে যেতো।
টিভি অফ করার সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম, বেঁচে গেলাম। এরপর আর কেউ আমাকে কোনদিন কিছু বলে নি, একটা ঘর পেলাম নিজের বাসায়। পুরাতন চাকরিটা ছেড়ে নতুন আরেক জায়গায় কাজ করা শুরু করলাম।
মেয়ের চেহারাটা মনে করতে চেষ্টা করি রাতের বেলা ঘুমাবার ঠিক আগে, মনে করতে পারি না। জন্মানোর কয়েকদিন পরে কোলে পেয়েছিলাম, কোলে পাবার দুই দিন পরেই তো... আমি যদি আরো অসুস্থ হতাম, ওকে যদি আরো কিছুদিন নিবীর পর্যবেক্ষণে রাখতো তাহলে কতই না ভালো হতো। মেয়েটার নাম ঠিক করে রেখেছিলাম “নিশি” রাখবো। আমার সবকিছু নিশিতে রেখেই চলে গেলো।
মা তুই কোনদিন আমাকে মনে করবি? মনে করলে কোনদিন মাফ করবি? আমি তোর মা’র থেকে খুনি একটু বেশি।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৩৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: