![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেঘের কোলে রোদ-১৫
থানার গেটের সামনে একটা লোককে দেখে চমকে উঠল গনেশ।
বিড়বিড় করে বলল,উনি এখানে?
বেঁটেখাটো মানুষ।ফর্সা।মাথায় টাঁক।পরনে ধূতি-পাঞ্জাবি।ঠোঁটের কোণে
পানের কষের দাগ। গনেশকে বোধকরি লক্ষ্য করেছেন।মুখে বিরক্তি
ফুটে উঠল।গটগটিয়ে হেঁটে এলেন গেটের দিকে।
---কাকাবাবু আপনি এখানে?
গনেশের জিজ্ঞাসায় একটু চমকালেন।তারপর স্বাভাবিক স্বরে বললেন,
এই এখানে একটু দরকার ছিল,বড়বাবু আমার বন্ধু কিনা।
কথা বলছেন পান চিবানো বন্ধ না করে। পা-ও তাঁর এগিয়ে যাচ্ছে গেটের
দিকে।
চলে গেলেন। কিন্তু গনেশের মনে একটা কাঁটার মত খচখচানি ছড়িয়ে
গেলেন তিনি।রোমিলাও একটু অবাক।বলল,চেনো উনাকে?
গনেশ হেসে বলল,চিনি মানে,আমাদের এলাকার সক্কলে উনাকে হাড়েহাড়ে
চেনে।প্রবাদ আছে,যেখানেই দাঙ্গা-ফসাদ,সেখানেই নেতা প্রসাদ।
---আমিও উনাকে দেখেছি,ডাক্তারখানায় ওয়াশিমদাকে যখন পুলিশ
অ্যারেস্ট করল,তখন উনি ভিড়ের মাঝে ছিলেন।বলল ঈষা।
---তবে কি এই গন্ডোগোলের পেছনে উনার কোন ভূমিকা আছে?
আবারো বিড়বিড় করল গনেশ।
---নিশ্চয় আছে,তাই তো উনি ছুটে এসেছেন তোমাদের দাদাকে বাঁচাতে।
---তা কেন হবে দাদার সঙ্গে উনার তো কোন মাখামাখি ছিল না।বলল
গনেশ।
---পুলিশ যখন দাদাকে অ্যারেস্ট করল তখন তো উনাকে বেশ হাসিখুশি
দেখলাম।গনেশের সমর্থনে ঈষা বলল।
---এটাও সেই মুখ ও মুখোশের খেলা,উপরে হয়ত দুজনের গালাগালির
সম্পর্ক,ভেতরে দ্যাখো গলাগলি।তোমাদের দাদাকে পুলিশ অ্যারেস্ট করল
দেখে,উনি টাকার খেলা খেলতে এখানে এসেছেন।পুলিশের হাতে পঞ্চাশ
হাজার গুঁজে গেলেন এখন।
---কি জানি দিদি,আমার কেমন যেন সব গোলমাল লাগছে।হতাশ-ভঙ্গিতে
মাথা নাড়ল গনেশ।
---আরো কত চমক ভেতরে অপেক্ষা করছে কে জানে।বলল রোমিলা।
থানার ভেতরে সত্যিই চমক অপেক্ষা করেছিল।ঈষা স্বপ্নেও ভাবেনি
তার মা’কে লক-আপে দেখবে।ছুটে গেল সে।বলল,মা, তুমি এখানে?
ম্লান হেসে সুচেতা বলল,হ্যাঁরে মা,চুরির দায়ে তোর মামা আমাকে
পুলিশে দিয়েছে।
---কি চুরি করেছিলে তুমি,তোমার ভাইদের ঘরে কী এমন ধনসম্পদ
আছে?
---তোর মামারা হাসিমুখে আমাকে বিদায় জানাতে বাসস্ট্যান্ড অব্দি
এসেছিল।এখানে নেমে দেখি পুলিশ আমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।
বলল,আপনার ব্যাগ সার্চ করব।করল।দেখলাম,তোর দাদুর সোনার
জলে পালিশ করা ঘড়ি।যা আমি তার মৃত্যুর পর দেখিনি।
আবার ম্লান হাসল সুচেতা।দু-ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল তার গাল
বেয়ে।
রোমিলা গিয়ে দাঁড়াল বড়বাবুর টেবিলের সামনে।ভ্যানিটি থেকে
কার্ড বের করে বলল,এই মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে
বলছি,আপনারা যা করছেন,তা ঠিক নয়।
বড়বাবুর মুখে পান-চিবোন হাসি।পিকদানে পিক ফেলে রুমালে
ঠোঁট মুছলেন তিনি।বললেন,কেন,কি অন্যায় করলাম বলুন তো?
---ওয়াশিমকে বাঁচাতে লোক আসছে,তাকে লক-আপে না ভরে
নির্দোষ এক ভদ্রমহিলাকে আটকে রেখেছেন।
---আস্তে দিদি আস্তে,এটা আপনার মানবাধিকারের অফিস নয়,
থানা,একসঙ্গে অত কথা বললে জবাব দেব কেমন করে?আপনাদের
আর প্রেসের জ্বালায় আমাকে দেখছি রিজাইন দিতে হবে।
---বেশ,আপনার যা বলার ধীরেসুস্থে বলুন,আমার তাড়া নাই।
শান্ত স্বরে বলল রোমিলা।
---প্রথমকথা আপনি যাকে ওয়াশিমের সুপারিশকারী বলছেন তিনি
আমার বন্ধু।এসেছিলেন অন্য কাজে।সুপারিশ করলে ওকে আমি
লক-আপেই রাখতাম।এটা জেনে রাখুন,ওয়াশিমকে আমি সহজে
ছাড়ব না।
রোমিলা সন্তুষ্টচিত্তে বলল,ওকে,আর ওই মহিলার কি হবে।
---এটা একটা সাজানো কেস তা আমি আগেই বুঝেছিলাম।তা কি
করব বলুন,আইনের কিছু বাধা-বাধ্যকতা আছে।যাই হোক,আপনি
আপনার সংস্থার পক্ষ থেকে একটা লিখিত দিন,আমি উনাকে
ছেড়ে দিচ্ছি।
---ঠিক আছে আমি লিখছি। বলে রোমিলা ব্যাগ থেকে প্যাড
বের করে লিখতে শুরু করল।
ঈষা আর গনেশ এদিক-সেদিক খুঁজে কোথাও দেখতে পেল না
ওয়াশিমকে।ঈষা বলল,ওয়াশিমদা কোথায়,তাকে তো লক-আপে
দেখছি না।
বড়বাবু হেসে বললেন,পাশের ঘরে ওর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
---আমরা একটু দেখব।
---না,ও স্বীকারোক্তি না দেওয়া পর্যন্ত কারো সাথে দেখা করতে দেয়া
হবে না।
রোমিলার লেখা শেষ।সে হাসিমুখে বলল,আহা দেখতে যখন চায়ছে
তখন একটু ব্যবস্থা করে দিন।শয়তানটাকে ওরা দেবতা জ্ঞান করে।
(পরের কথা আগামী পর্বে।)
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০১
তুষার আহাসান বলেছেন: না ভাই,এই লেখাটা না শেষ করা পর্যন্ত গল্প লিখতে পারছি না।
তবে আপনি ছাড়া কেউ পড়ছে না।
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৩
ঘুড্ডির পাইলট বলেছেন:

সব গুলা পর্ব কলাম পড়তাছি , মইদ্যে আবার আরেক গল্পে যাইবেন না। ছিরিজ লেখকরা আবার মাঝে মাঝে বিজ্ঞাপন বিরতির মতো কইরা অইন্য বিষয় পোষ্ট দিয়া ফালায়।