![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মেঘের কোলে রোদ-১৮
ঝড়ের মত হাঁটছে গনেশ। বড় উকিল নামে খ্যাত রফি আমেদের
বাসাটা সে চেনে। ক্রাইম ডিফেন্সে বহু কেস জিতেছেন তিনি।
ফি-ও অনেক।
ঈষা বলেছে,আমার গহনা যা কিছু আছে সব বিক্রি করে দেব,
তুমি উকিলসাহেবের সাথে কথা বল।
ঈষা মেয়েটিকে যত দেখছে ততই অবাক হচ্ছে গনেশ। এই মেয়ে
স্টেজে-স্টেজে যাত্রাপালা করে।অন্য নটীদের চেয়ে তার রেট বেশী।
অনেকেই বলে,অহংকারও।
যে মেয়ে স্টেজের বাইরে তেমন কাউকে পাত্তা দেয় না,সেই মেয়ে
আজ দাদাকে বাঁচাতে নিজের সর্বস্ব বেচতে চায়ছে!
অন্যদিকে শহরের একটা মেয়ে যে কিনা সমাজসেবাকেই নিজের
জীবনের পণ করেছে।গরীব-দুখীদের সাহায্য করার জন্যে গ্রামে-গ্রামে
ঘুরে বেড়ায়,সে এতটুকু আগ্রহ দেখাল না।হয় অমনই হয়,কলকাতার
মেয়ে মানবাধিকারের পতাকা নিয়ে ছোটে কিন্তু প্রকৃত অসহায় কে
বাঁচাতে আসে না।
পেছনে একটা রিকশো ঝড়ের গতিতে আসছে ঘন্টি বাজিয়ে।রাস্তার
একপাশে সরে গেল গনেশ।রিকশোটা তার পাশ দিয়ে চলে গেল না।
থামল।রিকশোয় বসে থাকা তরুণী বলল,রিকশোয় উঠে এসো গনেশ।
বিস্মিত গনেশ বলল,দিদি আপনি?
---হ্যাঁ ভাই,ট্রেন ওঠার পর মনে হল,কোথায় যেন ভুল হচ্ছে,তাই নেমে
চলে এলাম।বলে মৃদু হাসল রোমিলা।একটু থেমে বলল,রিকশোচলককে
বল কোথায় তোমার উকিলের বাসা।
--ইন্দ্রপস্থ।বলে রিকশোয় উঠে বসল গনেশ।
রিকশ চলছে দ্রুতগতিতে।রোমিলা শান্ত স্বরে বলল,উকিলবাবুর সাথে কি
তোমার পরিচয় আছে।
---না,তাঁর নামডাক আছে তাই যাচ্ছি।
নামী উকিলের চেম্বারে যেমন হয় তারচেয়েও বেশী ভিড়।
বিশাল বারান্দা জুড়ে সারি সারি বেঞ্চ পাতা। সেখানে বসে অপেক্ষা করছে
উৎকন্ঠিত মুখের নরনারী।তাদের কাছে গিয়ে খাতাকলম নিয়ে তথ্য সংগ্রহ
করছে দু-জন তরুণী।
অপেক্ষমান নরনারীর ভিড়ে প্রসাদবাবুকে দেখতে পেল গনেশ।বলল,উনিও
এখানে?
মেয়েটি তখন প্রসাদবাবুকে বলছে,আপনার কাজ হয়ে গেছে প্রসাদবাবু,এখনই
উকিলবাবুর কাছে ফোন এসেছিল,আপনার আসামী দোষ স্বীকার করেছে,
আজকেই তাকে কোর্টে তোলা হবে।আপনি এখন ভেতরে যান,উকিলবাবুর
সাথে কথা বলুন।
হাসতে হাসতে উকিলবাবুর চেম্বারে ঢুকলেন প্রসাদ।
একটু পরে মেয়েটি এসে দাঁড়াল রোমিলার সামনে।বলল,আপনার বোধহয়
নতুন কেস?
---হ্যাঁ।
---বধূহত্যা কিম্বা নির্যাতনের কেস আমাদের উকিলবাবু ধরেন না।
---না,না,আমাদের কেসটা অন্য,একজনকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
---কেসটা মার্ডার কেস?
---হ্যাঁ,ব্যপারটা ওই রকমই।
---কিরকম একটু বলুন তো?
---এক তরুণের সাথে তার পোষা কুকুর খুন,আসামী লক-আপে আছে।
---ওয়াশিমের কেস,এটাতে উকিলবাবু আপনাদের বিরোধীপক্ষের,একটু
আগে একজনকে বলছিলাম না,আসামী জবানবন্দী দিয়েছে,ওই কেস।
ওখানে কিছু করার নাই।
---দাদা দোষ স্বীকার করেছে?
---হ্যাঁ, লিখিতভাবে দোষ স্বীকার করেছে।
উত্তেজনায় উঠে দাঁড়িয়েছিল গনেশ,এখন দু-হাতে মাথা চেপে ধরে মেঝেয়
বসে পড়ল সে।
(পরের কথা আগামী পর্বে)
©somewhere in net ltd.