নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

উনত্রিশে এপ্রিল ; মরণ কে খুব কাছ থেকে দেখার দিন।জীবন কে নতুন ভাবে অনুধাবন করার দিন।

উনত্রিশে এপ্রিল

উনত্রিশে এপ্রিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি রিভিউঃঃ গেট আউট

৩০ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১১:২৯

ক্রিকেটে উইন্ডিজ দলটা আমার খুব পছন্দের। ঠিক ফেভারিট না হলেও কৃষ্ণকায় মানুষগুলোর চিত্তাকর্ষক খেলা, মাসলম্যান পাওয়ার হিট,উইকেট পাওয়ার পর বিচিত্র উদ্দ্যাপন,রোমাঞ্চকর বিজয় উল্লাস,ওদের মত করে কেউ পারেনা।শুধু ক্রিকেট কেন বাস্কেটবল এ আপনি গুগলে গ্রেট বাস্কেটবল প্লেয়ার লিখে সার্চ দেন?যে প্লেয়ারগুলোর নাম আসবে সব গুলায় কালো মানুষ !যেমন;হালের লি-বর্ন জেমস,গ্রিন,লিজেন্ড মাইকেল জর্ডান,উইল্ট চেম্বারলিন,করিম আব্দুল জব্বার,বিল রাসেল,কোবি ব্রায়ান্ট আর কত বলবো?কোন সাদা পাবেন না!সব কালো!ফুটবলে গ্রেট পেলে,হালের সাদিও মানে রজার মিলা,জর্জ উইহ,ইউসেবিও আরো কত কত!!হলিউড মুভিতে মরগান ফ্রিম্যন,ডেঞ্জেল ওয়াশিংটন, উইল স্মিথ,বিখ্যাত শব্দ ফা--কে নতুন ডাইমেনশনে নিয়ে যাওয়া স্যামুয়েল এল জ্যাকসন,মিউজিকে জগতবিখ্যাত মাইকেল জ্যাকসন।ইন্ট্রোটা বড়াবো না কারন লেখাটা অনেক বড় আরো অনেক অনেক কালো মানুষ পাওয়া যাবে সেটা খেলাধুলায় হোক,রাজনৈতিক হোক,অরাজনৈতিক হোক।
লেখাটা একটা কালো মানুষের মুভি নিয়ে যে মুভিটার ডিরেক্টর,মুল অভিনেতা, এবং প্লট ও কালো মানুষদের নিয়ে।

Get Out

Director -Jordan Peele

Cast-Daniel Kaluuya
IMDb-7.7(10)

মাত্র ৪.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলারের এই মুভিটি বক্স অফিসে কাঁপাই প্রায় ২৫৫.৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এবার বুঝেন কি পরিমাণ খেলা আছে এই মুভিতে!

২০১৭ সালের অস্কারে মাত্র ১টা বিভাগে (বেস্ট অরিজিনাল স্ক্রিনপ্লে)পুরস্কার পেলেও এদিক সেদিক মিলিয়ে ১৯৭ টা নমিনেশন পেয়ে এর ১৪৭ টায় জিতে নেয়।

প্লটঃ
আফ্রিকান আমেরিকানদের নিয়ে অনেক গল্প শুনেছেন,দেখেছেন 'টুয়েলভ ইয়ারস স্লেভ' 'জ্যাংগো আনচেইন্ড' 'গ্রিনবুক'আরো কত কি।সব জায়গার ই বেসিক প্লট ছিল "স্লেভ"। দাস বা দাসপ্রথার কাহিনী। গেট আউট ও প্রায় ওই কনসেপ্ট এ তৈরি। তবে এখন যেমন টাকা ক্যাশ না দিয়ে কার্ড,বিকাস, বা গিফট ভাউচার দিয়ে পেমেন্ট দেন " গেট আউট" হচ্ছে ঠিক ওই টাইপের ডিজিটাল প্লটের আধুনিক দাসপ্রথা টাইপ মুভি বা মুভির প্লট টাই জাস্ট ডিজিটাল কনসেপ্ট।

আসেন গল্পে যাই; যারা এই মুভি দেখতে চান তারা এর পরের লেখা পড়লে "গেট আউট" মুভি দেখে মজা পাবেন না।যারা মুভি দেখেন আমার উপরের লেখা দিয়েই এই মুভি দেখার ব্যাপারে আগ্রহ জন্মাবে।কারন নিচের অংশে প্রায় পুরো মুভিটার স্পয়লার দেয়া ।

--ক্রিস ওয়াশিংটন(ডেনিয়েল কালুয়া) একজন ব্ল্যাকম্যান,প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার।ভালবাসে এক ককেশিয়ান সুন্দরী মেয়েকে।নাম-রোজ অরমিটেজ।ক্রিস, রোজের দেয়া ইনভাইটে রাজি হয় রোজের বাড়িতে ওর মা-বাবার সাথে দেখা করার।যাওয়ার আগে ক্রিস জিজ্ঞেস করে আমিতো কালো তোমার মা-বাবার প্রতিক্রিয়া টা কি হবে?উত্তরে রোজ বলে আমার মা-বাবা রেসিস্ট না ওরা সব ব্যাপারে খুব রেশিয়াল।

রোজের বাবা ডিন একজন নিউরোসার্জন, মা একজন হিপনোথেরাপিস্ট(অজ্ঞ্যান করা বিশেষজ্ঞ)।
সব কিছুই ঠিক মত হচ্ছিল; রোজ-ক্রিস যখন বাসায় পৌছায় তখন রোজের মা-বাবা ভাল রিসিপশন দিচ্ছিল। রোজের বাবা ডিন ইন্ট্রো করাচ্ছিল উনার বাসার ব্যাপারে এবং বলে যাচ্ছিল;আমি থার্ড টাইম "ওবামা" কে ভোট দিয়েছি,একটা পুরোনো ছবিতে উনার বাবার ১৯৩৬ অলিম্পিকে ২য় হওয়া,অলিম্পিকে ১ম হওয়া ব্যাক্তিটি যে কালো ছিল, উনার বাসার কাজের লোক ২ জন কালো হলেও উনারা ওদের ফ্যামিলির বাইরের অংশ না এইসব কালোদের নিয়ে পজেটিভ কথা বার্তা এবং উনার একমাত্র মেয়ে যে বয়ফ্রেন্ড হিসেবে কালো মানুষ বেছে নিয়েছে এতেও তিনি গর্ববোধ করছেন।

ঘটনা শুরু হয় সিগারেট খাওয়া নিয়ে। রোজের বাবা জিজ্ঞেস করে ক্রিস সিগারেট খায় কিনা।ক্রিস হুম বলার পরেই সিগারেটের ব্যাপারে লম্বা একটা লেকচার দেয়ার পর বলে আমিও ১৫ বছর সিগারেট খেয়েছি তবে আমার ওয়াইফ একটা "হিপনোটাইজ" থেরাপি দিয়ে আমাকে সেরে তোলে তুমিও ট্রাই করতে পারো?মুভির পোস্টারে দেয়া "কাপ-পিরিচ-চামুচ" ওইগুলাই হচ্ছে রোজের মায়ের হিপনোটাইজ উপকরণ। আর একটা পোস্টারে দেখেন গেট লেখাটা সাদা রং এর৷ আর আউট লেখাটা কালো রং এর।

চলে যাই মুভির এন্ডিং এর একটু আগে,মুল প্লটে;
আসল ঘটনা হচ্ছে মুভিতে শেতাঙ্গ বুড়ো-বুড়িদের একটা সোসাইটি আছে যে সোসাইটির লিডার রোজের বাবা "ডিন অরমিটেজ"(নিউরোসার্জন) । উনারা একটা ডিজিটাল দাসপ্রথা আবিস্কার করেন যেখানে নিলামের মাধ্যমে " শক্তিশালী ব্ল্যাকম্যান"দের বিক্রি করা হয়।এতে ডিজিটালের কি আছে?
আসলে এখানে ওই ব্ল্যাকম্যান দের কিনে নিয়ে কেউ দাসগীরি করায় না!
ব্ল্যাকম্যানের মাথা কেটে টোটাল "নার্ভাস সিস্টেম" টা নিয়ে নিলামে কিনে নেওয়া বুড়ো সাদা চামড়ার লোকটার "নার্ভাস সিস্টেম" টা জুড়ে দেয়া হয় এতে করে বুড়ো সাদা চামড়ার ব্যাক্তিটি মরে গেলেও উনার টোটাল আইডিওলজি এবং ব্রেন একি থাকে।কালো মানুষের মাথার ভেতর সাদা লোকের মগজ! তার মানে উনার ফ্যামিলি মেম্বার সব উনাকে চিনে(যদিও কালো তবে ইয়াং)।উনিও উনার সব আত্মীয় কে চিনে।কি অদ্ভুত ডিজিটাল দাসপ্রথা!

ক্রিস পার্টিতে কালো এক লোককে দেখার পর ফ্ল্যাশ(এই জায়গা মনে রাখতে হবে) দিয়ে ছবি উটানোর পর ঘটনা হালকা আঁচ করতে পারলেও পাত্তা দেয়না।তার পরেও ওই ছবিটা তার বন্ধু "রড" কে পাঠিয়ে দেয়।ফোনে যখন রড বলে লোগান নামের কালো লোকটি আসলে "সেক্স স্লেভ"। কেননা উনার উয়াইফ লোগানের তুলনায় যতেস্ট বয়স্ক।আরো পরে যখন জানায় লোগান নামের ওই ব্যাক্তিটি আসলে লোগান না।ওর নাম " আন্দ্রে"।আর আন্দ্রে ৬ মাস আগে নিখোঁজ তখন ক্রিস সিদ্ধান্ত নেয় সে আর এই বাসায় থাকবেনা। সে রোজকে বলে রেডি হতে রোজ ও ওকে সায় দেয় 'ওকে চল চলে যাই 'বলে ব্যাগপত্র গোছাতে যায়।এরি ফাঁকে ক্রিস যখন রোজের গোপন লাল বাক্সে রোজের সাথে অনেকগুলো কালো মানুষের আলাদা আলাদা ছবি দেখে ফেলে তখন আর কিছু বোঝার বাকী থাকেনা এই ঘটনায় তার সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড ও জড়িত।

যাই হোক একেবারে শেষে চলে যাই নায়ক কে তো বাঁচাতে হবে।
আপাত ড্রামা টাইপ মুভিটা চরম থ্রিলারে রুপ নেয় যখন দেখা যায় রোজ একেরপর এক ক্রিসের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে এবং "গ্রান্ড-মা" আর "গ্রান্ড-পা"কে নির্দেশনা দেয়।

গ্রান্ড-মা" আর "গ্রান্ড-পা" আসলে মুভিতে রোজের বাবার ফ্যামিলি মেম্বার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া রোজদের বাসার কাজের লোক।মানে গ্রান্ড-মা" আর "গ্রান্ড-পা" মুভিতে আগে থেকেই ব্ল্যাকম্যান/ব্ল্যাকউইমেন দিয়ে ট্রান্সপ্লান্ট করা ছিল।
কি টুইস্ট রে মাইরি?
আরো টুইস্ট আছে?
গ্রান্ড-মাকে ক্রিস মেরে ফেলতে পরলেও গ্রান্ড-পা প্রায় সফল হয়ে যায় ক্রিস কে পরাস্ত করতে তবে ওই যে এক জায়গায় মনে রাখতে বললাম "ফ্ল্যাশ" এর কথাটা?

মুভিতে ট্রান্সপ্লান্ট করা যে কোন ব্যাক্তি আসলে ক্যামেরার ফ্ল্যাশে উনার আসল ক্যারেক্টারে মুভ করে অল্প কিছু সময়ের জন্য।আর ক্রিসকে পরাস্ত করার ওই সময়ে হঠাৎ করে ক্রিসের মোবাইলের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ জ্বলে উটে কিছু সময়ের জন্য গ্রান্ড-পা তার ব্ল্যাকম্যান ক্যারেক্টরে ফিরে গিয়ে রোজের কাছ থেকে গান চেয়ে নিয়ে প্রথমে রোজকে গুলি করে পরে নিজের গলায় গুলি ঠেকিয়ে আত্মহত্যা করে।

আমার দেখা টুইস্ট মুভির এক নাম্বারে এতদিন ছিল স্প্যানিশ "দ্যা ইনভিসিবল গেস্ট " মুভিটি।তবে এখন "গেট আউট" এক নাম্বারে।

কনক্লুশনঃ উপর ওয়ালা আসলে কাউকেই সবকিছু পরিপূর্ণ করে দিয়ে তৈরী করেনা নাই।সাদা মানেই যে সব কিছুই তার সাদা হবে তা না।আবার কালো বলেই তাকে সাদাদের চাইতে ফিজিক্যালি স্ট্রং করে বানিয়ে দিয়ে একটা হোমজিনিয়াস ব্যালেন্স তৈরি করেছেন।অলিভার জিরুদের মত আন্ডাররেটেড ফুটবলার যেমন ফুটবলের পরম অরাধ্য "বিশ্বকাপ" টা হাতে নিয়ে একের পর এক চুমু কেটেছেন সেখানে মেসি-রোনালদোর মত গ্রেট প্লেয়ার রা ওই ট্রফিটার সামনে দিয়ে অশ্রু বিসর্জন করেছেন ছুতেও পারেন নাই।
সুতরাং পৃথিবীতে আসলে ধনী-গরীব,সাদা-কালো সবাই সমান।আপনি নিজেকে কখনোই আমিই বিশাল কিছু কিংবা আমিই কেন হতভাগা এই টাইপের না ভেবে আপনি যতটুকু পেয়েছেন ওইটাই সর্বোচ্চটা পেয়েছেন ধরে নেন তাহলেই ভাল থাকবেন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১:৪৮

আমিই মুসাফির বলেছেন: যেগুনে রঙ্গ বৈষম্য করে হেগুনে অমানুষ। এগুনরে হিডি মন চায় বস্তাত বাঁদী বুড়িগঙ্গাত হালাই দি।

২| ৩১ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: মুভিটা দেখব।

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৭

অন্তরা রহমান বলেছেন: টু মাচ ওভারহাইপড মুভি। খুবই হতাশ হয়েছিলাম দেখে। আমার রেটিং ৬/১০।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৯ রাত ১২:৩৩

সুমন কর বলেছেন: দেখেছিলাম, আর ভালো প্রত্যাশা করেছিলাম।

৫| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৪৫

ফারুকী সাহেব বলেছেন: মুভিটা দেখেছি। খুবই বিরক্তিকর লেগেছে। মুভি দেখার পর লোকজনের রিভিউ পড়তে বসেছি। আপনি লিখেছেন, টুইস্টের পর টুইস্ট। বাস্তবে মুভির সাথে আপনার এই কথার কোন মিল নাই। আসলে পুরো একটা লেইম মুভি এটা। আমি দেখেই এটাকে সর্বোচ্চ ৪/৫ রেটিং দিতে পেরেছি। না ঠিক মত হরর হয়েছে, না রোমান্স হয়েছে, না থ্রিলার হয়েছে। খুবই স্লো এবং টাইম ওয়েস্ট করা মুভি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.