নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বঙ্গ বাংলা বাঙালি

বাংলার ভূমিপুত্র

দেশের সাধারন মানুষ

বাংলার ভূমিপুত্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্ব ৯

২৩ শে মে, ২০১৩ ভোর ৬:৩০

আদি বাংলার ইতিহাস

(প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ৯





অলিগোসিন থেকে বর্তমান (Oligocene-Recent) পর্যন্ত বিবর্তনঃ



এই পর্যায়ে ভূ-গঠনের সময়কাল ৩৭ মিলিয়ন বছর পূর্বে আরম্ভ হয়েছে। এ সময়ে সারা পৃথিবী থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠ (sea level) নেমে যায়, ফলে প্রচুর পরিমাণে পললের অধঃক্ষেপণ হয়। এই সময় দুই ধরনের পললায়ন পরিবেশ দেখা যায় যথা, স্বল্প গভীর কার্বনেট ফেসিস (Carbonate facies) ও গভীর সামুদ্রিক ফেসিস (deep basinal facies)। এই

সময়ে বেঙ্গল বেসিনের পূর্বদিকে বর্তমানে আরাকান-ইন্দো-বার্মা রেঞ্জ (Indo-Burma ranges) এর উৎপত্তি শুরু হয়। ৯



এই বিশাল পাহাড় শ্রেণীর উৎপত্তির শুরুতে এর পশ্চিমে বর্তমান চট্টগ্রাম ভাঁজ এলাকায় নিমড়বগমন দেখা যায় এবং প্রচুর পরিমাণে কণাপলি সঞ্চয় হয় এবং অভিক্ষেপ (thrusting) ও ভাঁজ (folding) হয় যা বর্তমানেও রয়েছে।



অলিগোসিন সময়ে বেঙ্গল বেসিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূ-আন্দোলনজনিত ঘটনা হলো তার আংশিক পৃকীকরণ। এই সময় বেঙ্গল বেসিন আসাম থেকে দূরে সরে আসে এবং বরাইল কাচার-মিকির পর্বতের উদ্ভব হয়। এই সময়েই আরাকান-ইওমা ভাঁজ অঞ্চল, শিলং ম্যাসিফ ও কাচার পর্বত পূর্ণতা লাভ করে। অলিগোসিনের শেষের দিকে এবং মাইওসিনের শুরুতে পূর্বেই সৃষ্ট ইন্দো-বার্মা রেঞ্জ পশ্চিমদিকে ধাবিত হয় এবং বার্মা প্লেটের সঙ্গে ধাক্কা লাগতে শুরু করে। এজন্যই প্রারম্ভিক মাইওসিন সময়েই বেঙ্গল বেসিনের অনেক জায়গায়ই অলিগোসিন সময়ে সঞ্চিত পললে ভাঁজ প্রচুর পরিমাণে ও অত্যধিক উপরিচাপের চিহ্ন বহন করে।শেষ মাইওসিনের পরেই প্রকৃত অর্থে বেঙ্গল বেসিনের ভূআন্দোলন প্রক্রিয়া পূর্ণতা লাভ করতে শুরু করে। এই সময়ে হিমালয় পর্বত গঠন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে থাকে। শিলং ম্যাসিফ-এর উর্ধ্বক্ষেপণ হয় এবং আঞ্চলিক ডাউকি চ্যুতির (regional dauki fault) সৃষ্টি হয় যার ফলে বেঙ্গল বেসিন বর্তমান ভূ-গাঠনিক রূপ লাভ করে প্লাইওস্টোসিন সময়ে, প্রায় ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে।



এই সময়ে বেঙ্গল বেসিনের পূর্ব-উত্তর দিকে এবং পূর্বদিকে যে বিপুল পরিমাণে মাইয়োপ্লায়োসিন যুগের পললায়ন ঘটেছিল তা ভাঁজগঠন, চ্যুতিগঠন ও অভিক্ষেপ হতে শুরু হয়। এই সময়েই ইন্ডিয়ান প্লেট উত্তর-পূর্ব দিকে সরে যচ্ছিল এবং বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে ধাবিত হচ্ছিল, ফলে ইন্ডিয়ান প্লেট ও বার্মা প্লেটদ্বয়ের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ ঘটে। ইন্ডিয়ান প্লেটের আকৃতি ত্রিভুজাকৃতির হওয়ায় এর কৌণিক দিকটা প্র মেই উত্তরের উপহিমালয়ের পাদদেশে সম্মুখ গভীরের (Sub-Himalayan foredeep) সাথে ধাক্কা খায়, কিন্তু ইন্ডিয়ান প্লেট-এর দক্ষিণ দিকে বিশাল অংশ তখনও প্রবহমান থাকে এবং এটির দক্ষিণ প্রান্ত পূর্বদিকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতমুখী ঘূর্ণায়মান গতি (counter clockwise rotational movement) সৃষ্টি করে এবং পূর্বদিকের পশ্চিমে এগিয়ে আসা বার্মা প্লেট-এর সাথে ঘূর্ণনগতির সৃষ্টি করে। ইন্ডিয়ান প্লেটের এরূপ উত্তর দিকে ধাবমান ও পূর্বদিকে ঘড়ির বিপরীতমুখী ঘূর্ণায়মান গতির কারণে বেঙ্গল বেসিনের ভূ-গঠনে বিভিন্ন তারতম্যের সৃষ্টি হয়। এ সময়ে বেসিনের কোথাও উঁচু আবার কোথাও নিচু ভূমি গঠিত হয়। এরূপ ভূ-গঠন যেমন বরিশাল-চাঁদপুর মাধ্যাকর্ষণজনিত উচ্চতা, মাধ্যাকর্ষণজনিত নিন্মতা, হাতিয়া নিন্ম, সুরমা নিন্ম ইত্যাদি। বেঙ্গল বেসিনের উত্তরপর্বাংশে ও পূর্বাংশে অবস্থিত পাহাড়শ্রেণীর উৎপত্তি কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে ইন্ডিয়ান প্লেটের সাথে বার্মা প্লেটের প্রায় পুর্ব - পশ্চিমে সংকোচন বল কাজ করে।১০ এর ফলে পূর্বাংশে চট্টগ্রাম ও ত্রিপুরা মিজোরাম এলাকায় বেশ কিছু সংখ্যক উত্তর-দক্ষিণ বরাবর বিস্তৃত ভাঁজ এলাকার সৃষ্টি হয়। এই সংকোচনের তীব্রতা পূর্বদিকে বেশি ছিল এবং যতই পশ্চিমে দিকে আসা যায় ততই কম ছিল। পূর্বাংশের ভাঁজ এলাকা যেমন- জলপানি, কাসালং, শিশক, মউডক, বান্দরবান সব ঊর্ধ্বভাঁজের তীব্রতা অনেক বেশি। এসব ঊর্ধ্বভাঁজের প্রায় উভয় ধারের বাহুতে (both limbs) লম্বালম্বি অভিক্ষেপ চ্যুতি রয়েছে এবং প্রচুর পরিমাণ স্থানীয় আড়াআড়ি চ্যুতি রয়েছে। কিন্তু পশ্চিমদিকের উর্ধ্বভাঁজ যেমন সেমুতাং সীতাকুণ্ড, পটিয়া, নীলা, ইনানী ঊর্ধ্বভাঁজের তীব্রতা তত বেশি নয়।এগুলোকে বক্স প্রকৃতির মৃদু ভাঁজ বলে। প্লেট সংঘর্ষের ফলে সৃষ্ট সংকোচনের প্র ম ধাপে এই ভাঁজ অঞ্চল সৃষ্টি হয়।বান্দরবান, গিলাছড়ি, সিতাপাহাড়, চ্যাংগুতাং, বড়মুড়া উর্ধ্বভাঁজের অবস্থান একই লাইন বরাবর রয়েছে। এদের স্তরতত্ত্ব ও ভূ-গঠন প্রায় একই রকমের। ভূ-গঠন অনুযায়ী মনে করা হয় এটি প্র ম ধাপে একই বিশাল দৈর্ঘ্যরে ঊর্ধ্বভাঁজ ছিল।পরবর্তীকালে উত্তর পশ্চিম-দক্ষিণ পূর্বদিক বরাবর ঘড়ির কাঁটার বিপরীতমুখী ঘূর্ণায়মান গতির সৃষ্টি হয়। তখন এরূপ খণ্ড খণ্ড উর্ধ্বভাঁজ হয় এবং প্রতিটি উর্ধ্বভাঁজ এরূপ উত্তর ও দক্ষিণে প্লাঞ্জ (plunge) সৃষ্টি করে দ্বিপ্লাঞ্জবিশিষ্ট অপ্রতিসম ঊর্ধ্বভাঁজের (double plunging asymmetric anticline) সৃষ্টি করেছে।



9 B.C.Mandal: The Structural and Tectonic Analysis of Eastern Fold Belt.



আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ)৮ম পর্ব

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.