নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বঙ্গ বাংলা বাঙালি

বাংলার ভূমিপুত্র

দেশের সাধারন মানুষ

বাংলার ভূমিপুত্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ২৭

৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৮

আদি বাংলার ইতিহাস

(প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ২৭



পূবেই উল্লেখ করা হয়েছে, হেমন্ত বাংলার শ্রেষ্ঠ ঋতু এবং ঋতু প্রবাহের বিশ্রামাগার। হেমন্তে কর্মের শুরু। কবিরভাষায়ঃ



বাংলার জমিনে এই হেমন্তের দিন

শান্ত, শীতল, ক্লান্ত, উত্তাপ বিহীন

যেভাবে নাবিক ফিরে বহুদেশ ঘুরে

বাংলার মানুষ তাই শরতের পরে

রাত্রিশেষে জেগে উঠা পাখিদের মত

মাঠে ঘাটে চলে যায়, কর্মে হয় রত;

মাঠের সবুজ রং সোনা রং ধরে

কিষাণ কিষাণী মিলে ধান তুলে ঘরে।




বাংলার জীবনে শীত-বসন্ত ক্ষণস্থায়ী। শীতের তীব্রতা নেই, কিন্তু আমেজ আছে। বসন্তের বৈচিত্র্য বাঙালির জীবনে গভীর ছাপ রেখে যায়। এই প্রাকৃতিক পরিবেশে বেদের বাণী ধর্ম হিসেবে, সংস্কৃত ভাষা হিসেবে ভারতে যখন শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার তখনও বাংলার সৃজনশীল প্রতিভা মনুসংহিতার কঠোরতার স্থলে বৈষ্ণবের প্রেমের ধর্ম এবং অভিজাত সংস্কৃতের স্থলে অবহঠ প্রাকৃতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে ফেলে। ব্রাহ্মণদের চোখে অবহেলিত অবহটঠ ভাষায় লিখিত অনেক সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছিল, যার পরবর্তীকালে রূপান্তরিত রূপে আমরা পেয়েছি বাংলা ভাষার আদি জননীকে।



আদিকাল থেকে জলবায়ুর জন্যই বাংলার আদিবাসীরা একদিকে যেমন ছিল আবেগপ্রবণ খেয়ালী জীবননির্ভর, আবার অন্যদিকে তেমনি ছিল দুঃসাহসিক অভিযানের অভিযাত্রী এবং ছিল শক্তি, উদ্যম ও আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। কৃষিনির্ভর সমাজের গতি শান্ত ও স্তিমিত; এই শান্ত, স্নিগ্ধ জীবনের মাধুর্য আছে, কিন্তু বাইরের প্রবল আঘাতকে সর্বদা সহ্য করার শক্তি এই সমাজের গড়ে উঠে না।



ভৌগোলিক অবস্থানের দিক হতে বাংলা আর্যাবর্ত বা উত্তর ভারতের পূর্ব-প্রত্যন্ত প্রদেশ। বহুদিন পর্যন্ত এই প্রদেশ ছিল আর্যাবর্তের সীমার বাইরে। ভারতবর্ষের ধনৈশ্বর্যে প্রলুব্ধ হয়ে যখন যুগে যুগে বৈদেশিক জাতি উত্তর-পশ্চিম এবং উত্তর ভারতকে বিধ্বস্ত করেছে, তখন বাংলা ছিল এ সকল আক্রমণকারীদের স্পর্শের বাইরে। উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর ভারতের

অধিবাসীগণ যখন এই সকল বৈদেশিক আক্রমণ প্রতিরোধ প্রয়াসে সাহসী ও রণনিপুণ হয়ে উঠেছিল, বাঙালি তখন শান্ত নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাপন করছিল। পশ্চিম-উত্তর ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার অধিবাসীদের মতো বাংলাদেশের জনগণকে অনবরত যুদ্ধবিগ্রহে লিপ্ত থাকতে হয়নি, আর থাকার মতো, পাল রাজত্বের পূর্বে, অবস্থানও সৃষ্টি হয়নি। এজন্যই বোধহয় যুদ্ধবিমুখ জাতি হিসেবে বাঙালির কিছুটা হলেও বদনাম আছে, যা হয়ত পুরো সঠিক নয়।



আগামী পর্বেঃ ধর্মীয় চিন্তাচেতনা।



আদি বাংলার ইতিহাস (প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ১২০৫ খ্রিষ্টাব্দ) পর্ব ২৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.