নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সচল মস্তিষ্কই যখন শয়তানের কারখানা, তখন সেটাকে আর অলস ভাবে ফেলে রাখতে চাই না।

আশার বাপ

আমি নিজেকে মানুষ ভাবতে ভালবাসি। আর সেই মানুষ প্রজাতির কিছু গুণ আমি রপ্ত করেছি যার কয়েকটা আপনাদের শেয়ার করার চেষ্টা করছি মাত্রঃ১, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মাথা নষ্ট করা।২, অপরের সমালোচনা করা।৩, নিজের দোষ গুলো ছোট করে দেখা।৪, অপরের উন্নতি দেখে ঈর্ষা করা।৫, সুযোগ পেলেই অসৎ পন্থা অবলম্বন করা।৬, প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাহিদা।৭, মানুষের কান ভারী করা।৮, বিনা পরিশ্রমে অধিক সফলতা আশা করা।৯, সর্ব ক্ষেত্রে সুবিধাবাদী মনোভাব পোষণ করা।আমার এই গুণ গুলোই আমাকে আংশিক মানুষে পরিণত হতে সহায়তা করেছে।তবে কিছু পশুর সাথে আমার বেশকিছু মিল আছে,১, আমি বিড়ালের মত আরাম প্রিয়।২, পিঁপড়ার মত সঞ্চয়ে ভালবাসি।৩, গরুর মত নিরীহ আমার মন।৪, মাঝে মাঝে শিয়ালের মত পান্ডিত্ত করি।৫, প্যাঁচার মত রাত জাগতে ভাল লাগে।৬, পাখির মত স্বাধীনতা পছন্দ করি।পরিশেষে বলতে চাই, সৃষ্টি জগতে আমি একটি প্রাণী।তাই নিজেকে প্রাণী ভাবতেই ভাললাগে এর বেশি কিছু হয়ে অন্য প্রানীর সম্মানে আঘাত দিতে চাই না, হয়তো পারবও না।

আশার বাপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাজার বছরের পুরানো পানাম নগরে একদিন

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৯

সাধারণ জ্ঞান পড়ার সময় জানতে পারলাম, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশের লোকশিল্প জাদুঘর অবস্থিত। তখন ইচ্ছে হল সময় করে একদিন সেই জাদুঘর দেখে আসা উচিৎ। যেই ভাবা সেই কাজ, আমি আর নয়ন বেড়িয়ে পড়লাম সোনারগাঁর উদ্দেশ্যে। বাস প্রথমে আমাদের নামিয়ে দিল সোনারগাঁ রোডের সামনে। সেখান থেকে রিক্সায় চড়লাম। জাদুঘরের দ্বিতীয় গেটের সামনে নেমে ঘড়ি দেখলাম দুপুর ১টা বাজে। শুক্রবার তাই চিন্তা করলাম জুমা পড়ে, খাবার খেয়ে তারপর ভেতরে প্রবেশ করব। মসজিদের সন্ধানে হাটতে হাটতে দূরে কিছু পুরাতন বাড়ি দেখতে পেলাম। সন্দেহ হল এখান পুরাতন বাড়ি এল কোথা থেকে। যদিও জানতাম সোলতানী আমলে সোনারগাঁ বাংলার রাজধানী ছিল। তাই মনে মনে ধরেই নিলাম সেই রাজাদের বাড়ি হবে হয়ত। কিছু দূর গিয়ে দেখলাম পানাম বাজার। তার পাশেই সাইনবোর্ডে লেখা পানাম সিটি। হ্যা, পানাম সিটিই সেই সোলতানী আমলে হিন্দু রাজাদের বাসস্থান। জাদুঘর দেখতে এসে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত আমরা পানাম সিটি পেয়ে গেলাম সারপ্রাইজ গিফট হিসাবে। এলাকার লোকজনের কাছে পানাম সিটি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা অল্প কিছু তথ্য দিল যা যথাযথ ছিল না। পরে সেই পানাম সিটির চারপাশের পরিখা ঘুরে দেখার পর ভেতরে প্রবেশের সময় পানাম সিটির ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত পড়লাম।
বাংলায় মুসলিম শাসনের পূর্বে তৎকালীন সূবর্ণগ্রামে ১৩শ সনের দিকে স্থানীয় হিন্দু রাজা দনুজমাধব দশরথদেব পানাম নগরী স্থাপন করেন। সোলতানী শাসন আমল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৬১০ সালের পূর্ব পর্যন্ত সোনারগাঁও ছিল বাংলার রাজধানীও নদীবন্দর। পানাম নগরে মোট ৫২ ভবন ও একটি রাস্তা আছে যা ৬০০মি. দীর্ঘ। এর চারপাশ পরিখা বেষ্টিত ছিল যদিও বর্তমানে তা তেমন বুঝা যায় না। হাজার বছরের পুরানো পানাম নগরে প্রবেশের পর আপনি কখন যে মনের অজান্তে হাজার বছর পেছনে চলে যাবেন বুঝতেই পারবেন না।
পানাম সিটি থেকে বেরিয়ে রিক্সা নিলাম, উদ্দেশ্য জাদুঘর। জাদুঘরের দ্বিতীয় গেট দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল লোকজ হস্তশিল্পের তৈরি নানা জিনিসের দোকান। ডান দিকের সেতু পার হলেই আছে নাগর দোলনা, জামদানি শাড়ির দোকান, কাঠের তৈরি পুতুলের দোকান আরো অনেক কুটিরশিল্প। আরো কিছুদূর পর দেখতে পেলাম বিশাল দিঘী যার পাশেই আছে লোকশিল্প জাদুঘরের পুরাতন ভবন প্রায় ১০০ বছরের পুরানো সর্দার বাড়ি। বর্তমানে এই সর্দার বাড়িতে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত আছে। সর্দার বাড়ি সামনে আছে গরুর গাড়ির ভাস্কর্য। এর পাশের রাস্তাদিয়ে সোজা হেঁটে গেলে দেখা মেলে জয়বাংলা খচিত জাতির পিতার ভাস্কর্য। এরপরেই পেলাম কাংখিত শিল্পাচার্য জয়নুল লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর।
জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে গ্রাম বাংলার লোকজ সংকৃতির বিভিন্ন নিদর্শন। এর মাঝে উল্লেখ যোগ্য কয়েকটা হল বিয়ের পিঁড়ি, পালকী, নকশি কাঁথা, কাঠেরপুতুল, জামদানী শাড়ি, কাঠের তৈরি নানাজাতের নৌকা, কাঠের সিন্দুক, কুলা, মটকা ইত্যাদি। ইট-পাথরের শহুরে জীবন থেকে মুক্তি পেতে আপনিও একদিন ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁ থেকে।
যাতায়াত: ঢাকা থেকে সোনারগাঁর দুরত্ব মাত্র ত্রিশ কি:মি। লোকাল বাসে গেলে সোনারগাঁ রোডে নেমে সেখান থেকে রিক্সায় মাত্র ৫ মিনিট চড়লেই পৌঁছে যাবেন জাদুঘরের প্রধান প্রবেশ পথে। জাদুঘরের প্রবেশ পথ থেকে ৫ মিনিট রিক্সায় চড়ে যাওয়া যাবে পানাম সিটি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.