![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক পাওয়া যাচ্ছে না তাই আমিই লেখক...
সন্ধ্যাক্ষনের সূর্য রক্তবর্ন নিয়ে তাকিয়ে থাকাটাই তো স্বাভাবিক । কিন্তু আমারও কি এই সময় এইভাবে বসে থাকা ঠিক ? কোন অজানা ভবিষ্যতকে চিন্তা করে মিটিমিটি হাসছি কে জানে ।গতকালও সে ছিল আমার পাশে । জানতাম আমি আমাদের সুন্দর পরিনতি হবে না । তার বাবা তার সমক্লাসে পড়া ছেলের সাথে তাকে কখনোই বিয়ে দেবেন না । তার উপর আবার বেকার । দেখতেও তেমন সুদর্শন না ।কিন্তু আমাদের প্রেম চলছে । কেন করছি তা জানি না । সেও করছে তাই আমিও করছি । এভাবে প্রেম চলার পথে হঠাৎ করে সে হয়তোবা চলে যাবে । চেয়ে তাকিয়ে থাকবো তার দিকে । আমি তার চলে যাওয়া দেখবো কিছুক্ষন । হয়তো এই নিশ্চিত ভবিষ্যতকে জেনে গেছি তাই মিটিমিটি হাসছি কামনাকে আড়াল করে । সূর্যটা ততক্ষনে ডুবেই গেলো । দেয়াল থেকে নেমে প্লাষ্টিক স্যান্ডেল জোড়া পায়ে লাগিয়ে আমিও চলে গেলাম ।
- এই তুমি একটা কবিতা বল না । এই সুন্দর বিকেলে তোমার মুখে নতুন কবিতা শুনতে মন চাচ্ছে । একটু আহ্লাদিভাবেই বলল তিথি । বিকেল যতই বিরক্তিকর হোক তিথির কাছে সুন্দরই লাগে শুধু আমার একটা কবিতা শোনার আবদারের জন্য ।তাই প্রতিদিনই একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যয় করতে হয় তার জন্য একটি নতুন কবিতা লেখায় । এতদিনে গুনলে হয়তো রবিন্দ্রনাথ, নজরুল থেকেও আমি বেশী কবিতা লিখে ফেলেছি ।কবির বিচারেও যদি তার বাবা রাজি হত ! কিন্তু কবি তো কোন চাকরি না ব্যবসাও না তো তার বাবা কেন রাজি হবে। আবার কবিদের একটা খারাপ রেপুটেসানও আছে তারা এলোমেলো চলে, ঠিকমত গোসল করে না, তারা বদ্ধ উম্মাদ । কিন্তু আমি তো রসিক কবি খুব গোছালো নিয়মিত গোসলও করি !!
তিথিকে কবিতা শুনাতে অবশ্য আমারও খারাপ লাগে না । তার মনযোগী চেহারাটা আমার কাছে অপরুপ লাগে ।মেয়েদের মনে হয় হাসিমাখা চেহারা থেকে মনযোগী চেহারাটাই একটু বেশী সুন্দর ।
- এ্যাই বল না ।
- আরে বলছি তো বাবা একটু দেখে নিচ্ছি ।
"সকালে তুমি এসেছিলে মিষ্টি রৌদ হয়ে
ভাবনার আকাশটা ছিল গাঢ় নীল
স্বপ্নগুলো ভেসে বেড়াচ্ছিলো বিচ্ছিন্ন সাদা মেঘ হয়ে
হঠাৎ করে অনিশ্চয়তার কালো মেঘটা ডেকে দিল সূর্যকে
তুমি হারিয়ে গেলে…
জানতাম না তুমি যে এসেছিলে আমার কালবৈশাখী ঝড়ের সকালে ।"
কবিতাটা শুনে তিথি একটু নড়েছড়ে উঠলো । উঠারও অবশ্য কারন আছে কারন আমি তাকে সব সময় অনন্দ, খুশি প্রেম ভালোবাসা টাইপ কবিতা শুনাতাম ।সেই কবিতাগুলোতে কোন দুঃখ থাকতো না ।
- আজকের কবিতাটা এমন শুনালো কেন ?
- কেমন ?
- দুঃখ, ছেড়ে যাওয়া এসকল কিছু আসলো যে ।
- না মানে সবসময় তো সুখের কবিতাই শুনাই তাই আজকে একটা দুঃখের কবিতাই না হয় শুনালাম ।
- খবরদার সাইয়াম, এরকম কথা মুখেও আনবা না কবিতাতেো অনেক দূরের কথা । ধমকের সুরে কথাগুলো বলে তিথি চুপ করে রইল ।তাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে সেও অনেক অনিশ্চয়তায় ভুগছে ।
- আমি একটু সংশয় নিয়ে মনের ভেতর ঘোরাঘুরি করা কথাগুলো বলেই ফেললাম ।…. দেখ তিথি তোমার আমার যে অবস্থান তা তোমার বাবা কখনো মেনে নিবেন না । আমাদের প্রেমের কোন নীড় নেই । আমার জন্য কেন তুমি শুধু শুধু সময় নষ্ট করছো… কথা শেষ না হতেই তিথি হাঁটা ধরলো । আমি আটকাতে চাইলাম, পরে আর আটকালাম না, ছেড়ে দিলাম ।দুঃখের মাঝে এক ফোটা সুখও যেন অনুভব করলাম মনে । মনে মনে চেয়েছি সে যেন আর না আসে । ভালো কাউকে যেন পেয়ে যায় ।
তিনদিন হলো তার কোন ফোন ম্যাসেজ আসেনি আমিও খবর নেয় নি । আমি তো তাকে ছেড়েই দিয়েছি খবর নেব কেন । কিন্তু সারাক্ষন কেন যেন নিজের সাথে নিজেই অভিমান করে চলছি । আমারও যে ভালো লাগছেনা ।একবার ভাবি খবর নেয় আবার ভাবি না থাক । শুধু এপিট ওপিট করছি । ঘুমও হচ্ছে না ঠিকমত ।দরজাটা কে যেন জোরে নক দিল কয়েকবার ।
- কি হলো এত জোরে নক দিচ্ছেন কেন একটু দাঁ… তুমি !! তিথি শাড়ী পড়ে দাড়িয়ে আছে বাহিরে । মেয়েদের শাড়ী পরায় ভালো লাগে কিন্তু তিথিকে একটু অন্যরকমই ভালো লাগে ।তাই আজও তাকে অন্যরকমই লাগছে ।
- কি অবাক হচ্ছো কেন ? আমায় ছাড়া তো মনে হয় ভালই আছ । আমার কোন খবর নাও নি কেন ? তুমি আমাকে চাও না ? এতগুলো প্রশ্ন করে সে যেন হাঁফিয়ে উঠলো ।
- ইয়ে…মা..মানে…
- আমতা আমতা করছ কেন ?
- না মানে একদম বিয়েশাদী করেই দেখা করতে আসলে । বরকেও নিয়ে আসতে । অবশ্য রুমের অবস্থা ভালো না । আনো নি ভালোই করেছ ।
- আমার সাথে ফাজলামী করছ নাহ ! একদম চুপ । সরো বলেই আমাকে ধাক্কা দিয়েই আমার রুমে ডুকে পড়লো । এই তোমার ভালো পানজাবী আর প্যান্ট আছে ।
- আছে তো কেন ?
- ওগুলো পরো আর ভালো স্যান্ডেল টুপি আছে ?
- হ্যা আছে। কেন এগুলো কেন ?
- এতো কথা বলো কেন আমি পরতে বলেছি পরো । আমি আর কথা বাড়ালাম না । ওকে অনেক মিষ্টি লাগে যখন আমার উপর এমনভাবে খবরদারি করে ।
- এ্যাই তুমি একটু বাহিরে দাড়াও না আমি জামা পরবো কিভাবে ?
- বাহিরে যাওয়া লাগবে না । আমি ওদিকটায় ফিরছি । তাকাবো না ভয় পেয় না ।একটু মুচকি হেসেই কথাটা বললো । তাকে মুচকি হাসিতেও অনেক সুন্দর লাগে । তাকে যে কোন ভাবে সুন্দর লাগবে না সেটাই আমার মাথায় আসে না ।
তারপর আর কি সোজা কাজী অফিস ।মেয়েটা আমারে বিয়ে করেই ফেললো ।আমি বোকার মত তাকে অনুসরন করেই গেলাম শুধু । কখনো উপলব্ধি হয়নি এমন নরম মনের মেয়ে এমন সাহসিকতা দিয়ে আমায় ভালোবাসে । আমার মত কুর্খের এর থেকে বেশী আর কি চাওয়ার আছে ।
- তিথি আমার হাতকে শক্ত করে ধরে বললো, এখন বিশ্বাস হলো তো আমি তোমায় ছেড়ে যাচ্ছি না ।খবরদার আর কখনো এইরকম কবিতা লিখবানা ।
- ওকে, ঠিক আছে আর লিখব না ।
- আমার কবিতা কই ? আমি তোমার মুখে এখন কবিতা শুনবো ।আমি পকেট থেকে কবিতার কাগজটি বের করতে লাগলাম । এতদিন তার সাথে দেখা হয়নি ঠিকই কিন্তু প্রতিদিনই তার জন্য আমি একটি করে কবিতা লিখেছি ।
একটি মেয়ে দেখেছিলাম ঝরনা তীরে বসে আছে
মনে ধরেছিল ঝর্নার দিকে তাকিয়ে থাকা মুখটি
ঝরায়েছিলাম তার জন্য ভালোবাসার ঝর্নাধারা
চেয়েছিলাম তাকে পাওয়ার জন্য
হয়তোবা পেয়ে যাব কোন একদিন ।
-আর সেই ঝর্নাধারার মেয়েটি আমার হাত ধরে হাঁটছে নীড়ে ফিরবে বলে…
.....
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পাঠে এবং ভালোলাগা জানানোর জন্য গুলশান কিবরীয়া
২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৩৯
আধখানা চাঁদ বলেছেন: জানা গল্পটিও নতুন করে জানতে ভাল লাগে যদি গল্পের আবেগ সেই পর্যায়ে থাকে। এই গল্পটির মত হাজার গল্প আছে, সেই শুরু, সেই পরিসমাপ্তি, কিন্তু এই গল্পটি আপনার।
গল্পের শুরু, শেষ, পরিসমাপ্তি, গল্প বলার ধরণ সব কিছুই অনেক ভাল হয়েছে।
পোস্টে ২য় ভাল লাগা।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ অনেক ভাললাগা জানানোর জন্য ।
৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:২০
সুমন কর বলেছেন: গোছানো লেখা ভাল লাগল।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভালোলাগা প্রকাশের জন্য সুমন কর ভাই ।
৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৪
মামুন রশিদ বলেছেন: কবিতা দুটি সত্যি সুন্দর ।
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠে এবং ভাললাগা জানানোয়..মামুন রশিদ ভাই ...
৫| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:১৩
জুন বলেছেন: মামুন রশিদের মত বলি কবিতা দুটো ভারী মনকাড়া ।
+
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠে এবং ভালোলাগার অব্যক্ততাকে ব্যক্ত করার জন্য...জুন..
৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: কলমের কালি শেষ ,
ঝর্নাধারার মেয়েটি আমার হাত ধরে হাঁটছে নীড়ে ফিরবে বলে… শেষ কবিতাটির শেষ লাইনের মতোই গল্পটির শেষ টেনেছেন ।
বুঝতে পারছি কলমের কালি শেষ হয়েছে আপনার । পারফেক্ট টাইমিং ।
শুভেচ্ছান্তে ।
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: । অসংখ্য ধন্যবাদ পাঠে এবং ভাললাগা জানানোয় আহমেদ জী এস ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৫৮
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: বেশ ভালো লিখেছেন , বিশেষ কোরে কবিটি