![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখক পাওয়া যাচ্ছে না তাই আমিই লেখক...
পরান চাঁদ প্রথম অজ্ঞান হয়েছিলেন প্রায় দু’বছর আগে তার অতি আদরের একমাত্র সন্তান ফুরকান চাঁদ নিখোঁজ হওয়ার ঠিক পরদিন সন্ধ্যায় । কিশোর বয়সী ছেলে ছিল ফুরকান বয়স ষোল কি সতের হবে । চঞ্চলপ্রকৃতির হাসিখুশির রেখা সবসময়ই ফুরকানের মুখে লেগে থাকতো । পরান চাঁদের অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ধারা সেই থেকেই এখনো নিয়ম করে চলছে । জ্ঞান ফিরলে অবাক হয়ে সবার দিকে তাকিয়ে থাকেন । সবাই তাকে সান্তনা দেন, পুলিশের তল্লাশি পুরোদমে চলছে পরান চিন্তা কোরো না তুমি, ফুরকানকে অবশ্যই খোঁজে পাওয়া যাবে । পরান চাঁদ তখনো বড় বড় চোখে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে দেখেন সবাইকে ।পুলিশ তো সেই দুই বছর ধরেই তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে এখনো তো কোন হদিস মিলেনি ফুরকানের ।
পরান চাঁদের বাড়ির পেঁছনেই একটা ঘন জঙ্গল আছে । তিনি প্রতিবারই জ্ঞান হারান এ ঘন জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে থেকে । এর অবশ্য একটা কারণও আবিষ্কার করেছে অনেকে সেটা হলো এই জঙ্গলের পাশ দিয়েই একটা চিকন রাস্তা চলে গেছে সাধারণত যে রাস্তাগুলো মানুষ হাঁটতে হাঁটতে তৈরি হয় । এই রাস্তা পেরোলেই জঙ্গলের অপর প্রান্তে বিশাল খেলার মাঠ । এই মাঠেই বিকালে খেলতে যেত ফোরকান আর প্রায় সন্ধ্যা হয় হয় এই সময় সে বাড়ি ফিরতো ।পরান চাঁদ হয়তো ফোরকানের বাড়ি ফেরা পথে চেয়ে থেকেই অচেতন হয়ে যান । সবাই এইরকমই কিছু একটা আন্দাজ করে নেয় ।
পরান চাঁদের বৌ সন্তান নিয়ে ছোট সুখের সংসার ছিল ।একমাত্র সন্তানকে হারানোর পর সবকিছুই উলট পালট হয়ে যায় । পরান চাঁদ এখন আগের মত নেই । আচরণে এসেছে অনেক পরিবর্তন । সবসময় নীরব হয়ে থাকেন । ক্ষেত খামারেও মনযোগ নেই ।রসকষওয়ালা সৌখিন লোক হিসেবে যার খ্যাতি ছিল গ্রামে সে এখন সম্পূর্ণ রসকসহীন । বউটাও শান্তিতে নেই আর থাকবেইবা কীভাবে চোখের সামনে স্বামীর এ অবস্থা দেখলে কেএইবা ঠিক থাকতে পারে । একে তো পুত্রশোক সাথে আবার স্বামীশোক ।
পরান চাঁদ নিজেই নিজের সাথে কি যেন বিড় বিড় করে বলেন। উঠতে বসতে হাঁটতে ঘুমাতে প্রায়সময়ই দুই ঠোঁটই নড়তে থাকে । তিনি নিজেও এই অমানসিক শোক থেকে বের হওয়ার শত চেষ্টা করে যাচ্ছেন । নিজেকে নিজেই প্রায়সময় এইভাবে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন, দক্ষিণের বাড়ির কলিম উদ্দিনের দুই সন্তানসহ পুরো পরিবারই তো তাদের নানার বাড়ি থেকে আসতে এক্সিডেন্টে মারা যায় বেশিদিন হয়নি অথচ কলিম উদ্দিন দিব্বি ঠিক আছে, পাশের বাড়ির রহিম মিঞাঁর ছেলেটা পানিতে ডুবে মারা গেছে গতবছর এখনতো রহিম মিঞাঁ শোক কাটিয়ে আগের মতই আছে, বলি বাড়ীর তপনের একমাত্র মেয়েকে তার শশুর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য পুড়িয়ে মেরে ফেলে প্রায় বছরখানেক হয়েছে অথচ তপনও তো সেই শোক কাটিয়ে উঠে গেছে । এইরকম আরও অনেক ঘটনা নিজের মনের মধ্যে সারাক্ষণ আওড়ায় আর বিড়বিড় করেন পরান চাঁদ শুধু পুত্র শোকের একটু সান্তনা পাওয়ার জন্য । কিন্তু কোনভাবেই পুত্রশোক তিনি ভুলতে পারছেন না । গ্রামের অনেকে বলেন পরান চাঁদ এইরকম ভেঙ্গে না পড়ে যদি পুলিশকে তাগাদা দিয়ে সন্তানের খোঁজ করতেন তাহলে অনেক আগেই হয়তো ফোরকানকে পেয়ে যেতেন । অথচ তিনি এতই ভেঙ্গে পড়েছিলেন যে পুলিশের কাছে ডায়েরীটাও খুলেছিলেন তার বৌ ।
পরান চাঁদের মনে পড়ে ফোরকানের নিঁখোজ হওয়া দিনের কথা ।ফোরকানের মা তার বাপের বাড়ি গিয়েছিল বেড়াতে ।ফোরকান গিয়েছিল বিকালে খেলতে ।বাড়িতে সে একাই ছিল ।ওইদিন খেলার মাঠ থেকে ফোরকান একটু তাড়াতাড়িই চলে আসে ।এসব কথা মনে করতেই পরান চাঁদের চোখ বেয়ে অঝরে পানি পড়তে থাকে ।পরান চাঁদ আজও দাড়িয়ে আছে সেই জঙ্গলের দিকে তাকিয়ে । তার চোখের সামনে ভেসে উঠে ফোরকানের নিঁখোজ হওয়া সন্ধ্যারই কিছু দৃশ্য ।পরান চাঁদ নিজ থেকে কখনোই আসতে চায় না এখানে দৃশ্যগুলো দেখার জন্য ।কিন্তু এই দৃশ্যগুলো দেখানোর জন্য তাকে কে যেন নিয়ে আসে এখানে ।পরান চাঁদ এই দৃশ্যগুলো ফোরকান গত হওয়া থেকেই দেখে আসছে কিন্তু কাউকে কখনো বলতে পারেনি, কখনো কাউকে বর্ণনা করতে পারেনি । সে দেখতে পায়-
‘তার ঘরের পেছনের দরজা দিয়ে ফোরকানের চাচী আলতা তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে চলে যাচ্ছে । ফোরকান ঘরের অপর কোণে দাড়িয়ে আছে চাচীর দিকে তাকিয়ে । এরপর কিছুক্ষণ ঝাপসা দেখায় । এরপর আবার দেখতে পায় একজন মাঝ বয়সী লোক তার কাঁদে একটা মৃতদেহ নিয়ে সন্ধ্যার আঁধারে টর্চ হাতে জঙ্গলের দিকে ঢুকে যাচ্ছে….’
ঠিক তখনই পরান চাঁদ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:২৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন:
মন্তব্যে অনেক ধন্যবাদ মদন ভাই ।
ভাল থাকুন ।
২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০১
হাসান মাহবুব বলেছেন: ভালো লিখসেন। টানটান ভাবটা বজায় ছিলো সারাক্ষণ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩০
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো হামা ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যে ।
ভালো থাকবেন ।
৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:০২
লেখোয়াড় বলেছেন:
ভাল লাগল ছোট গল্প।
নামটি দারুনসসসসসসসস।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩২
কলমের কালি শেষ বলেছেন: দারুন মন্তব্যে অনেক ভালোলাগা এবং ধন্যবাদ লেখোয়াড় ভাই ।
শুভ কামনা রইল ।
৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: গল্পটা ভাল লেগেছে।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৩
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ঢাকাবাসী ভাই সুন্দর মন্তব্যে ।
ভালো থাকুন ।
৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫
মামুন রশিদ বলেছেন: দুর্দান্ত লিখেছেন । চালিয়ে যান ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৩৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনুপ্রেরনামূলক দুর্দান্ত মন্তব্যে অনেক ভালোলাগা মামুন রশিদ ভাই ।
ভাল থাকবেন সবসময় ।
৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:১৮
সকাল হাসান বলেছেন: ছোট গল্প হিসেবে অসাধারন!
চমৎকার ভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছেন! শুভকামনা রইলো! লেখার এই ধারাটা বজায় রাখুন!
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যে অনেক ভালো লাগলো সকাল হাসান ভাই ।
শুভ কামনা ।
৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:০৩
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: বেশ ভাল লিখেছেন---ছোট গল্পের পুরো আবহটাই বজায় ছিল।
ভাল থাকুন। শুভেচ্ছা
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যে বেশ লাগলো নাসরিন চৌধুরী ।
ভালো থাকবেন সবসময় ।
৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ২:১৬
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব ভালো লাগলো। সম্প্রতি পড়া অনুগল্পগুলোর মধ্যে আপনার গল্পটি বেশ ভালো লেগেছে।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮
কলমের কালি শেষ বলেছেন: খুব ভালো লাগলো কাভা ভাই আপনার ভালোলাগার মন্তব্যে ।
শুভ কামনা রইল ।
৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
মাহমুদ০০৭ বলেছেন: ভাল লাগলো । দীর্ঘ বাক্যের ব্যাপারটা নজর কাড়লো ।
আবহ বজায় রাখতে পেরেছেন ।
গুড লাক ।
ভাল থাকবেন ভাই ।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন: আপনার বিশ্লেষনধর্মী মন্তব্যে অনেক ভালো লাগলো মাহমুদ০০৭ ভাই ।
ভালো থাকুন সবসময় ।
১০| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৪
তুষার কাব্য বলেছেন: ভাল লাগল ছোট গল্প।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৫১
কলমের কালি শেষ বলেছেন: পাঠে এবং কমেন্টে অনেক ভাল লাগা তুষার কাব্য ভাই ।
শুভ কামনা ।
১১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৯
সুমন কর বলেছেন: ছোট গল্প হিসাবে বেশ ভাল লাগল। ভিন্নতা অাছে।
ণ -এর ব্যাপারে সর্তক হতে হবে।
০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৪৬
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যে এবং সতর্কতামূলক উপদেশে । অনেক ভাল লাগলো সুমন কর ভাই ।
ভালো থাকবেন সবসময় ।
১২| ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৫৫
মনিরা সুলতানা বলেছেন: উরে বাস টান টান উত্তেজনা ...
লেখা ভাল লেগছে
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: আপনার ভালোলাগাষ মন্তব্যে অনেক ভাল লাগলো মনিরা সুলতানা ।
শুভ কামনা ।
১৩| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৬
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন:
থ্রিলিং এককথায়। চালিয়ে যান।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৫
কলমের কালি শেষ বলেছেন: মন খারাপ করে দিলাম বলে দুঃখিত ।
থ্রিলিং মন্তব্যে অসংখ্য ভালো লাগা রেজওয়ানা আলী তনিমা ।
সুন্দর থাকুন সবসময় ।
১৪| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৬
জাফরুল মবীন বলেছেন: বেশ ভাল লাগল গল্পটি।
ধন্যবাদ আপনাকে।
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৪৭
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভালোলাগার মন্তব্যে মবীন ভাই ।
ভালো থাকুন ।
১৫| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০০
অতঃপর জাহিদ বলেছেন: কলমের শেষ কালি দিয়ে এতো সুন্দর কেমনে লেখেন!! আপনার নাম জানতে পারি??
১০ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫৪
কলমের কালি শেষ বলেছেন:
নাম দিয়ে কাম কি !! নাম জাইনা গেলে আর ছদ্মবেসে লেখবো কিভাবে ।
সুন্দর মন্তব্যে অনেক ভালো লাগলো অতঃপর জাহিদ ভাই ।
শুভ কামনা সবসময় ।
১৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:১১
দ্য ইলিউশনিস্ট বলেছেন: এক টানে পড়ে গেলাম। খুব ভাল লেগেছে।
১৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:২৯
কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো লাগার প্রকাশে দ্য ইলিউশনিস্ট ভাই ।
ভালো থাকুন ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫
মদন বলেছেন: