নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বন্যার পনি শুকালে ও ক্ষত শুকায়নি উত্তরাঞ্চলে

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৯



দেশের উত্তরাঞ্চল সহ বাংলাদেশের প্রায় অর্ধেকের উপর দিয়ে বয়ে গেল প্রলংকরী বন্যা। ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানিতে সিলেট সুনামগঞ্জ কিশোরগঞ্জ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হাওড়ে আগাম বন্যায় সর্বস্ব হারিয়ে অসহায়ত্বের কাছে বন্দী হয়েছে হাওড়ের কৃষক সহ সাধারন মানুষ। হাওড়ের বানের পানি এখন ও কমেনি। নিজের ও পরিবারের ক্ষুধা মেটানোর জন্য কাজের সন্ধানে শহর মুখি হতে হয়েছে হাওড়ের কৃষক পরিবারের অনেক ছাত্রকেই। দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ গুলি সব সময় ই ভগ্যবঞ্চিত যমুনা ধরলা ঘাঘট সব সময় ই তাদের ভাগ্যনিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সেই সাথে আছে রাষ্ট্র পরিচলনাকারিদের অবহেলা। দেশের উত্তরাঞ্চলে এখন মঙ্গার সময় প্রতিবছর ই ভাদ্র থেকে কার্ত্তিক এ অঞ্চলের মানুষ কর্মহারা। লাখো পরিবারের কোটি মানুষকে অনাহারে রাতের পর রাত কাটাতে হয় মঙ্গাকবলিত মানুষ গুলিকে। মঙ্গার থাবা উত্তরের মানুষকে কিছুটা মুক্তি দিলেও এবারের বন্যা উত্তরাঞ্চলের মানুষকে কঠিন হুমকির মুখে ফেলেদিয়েছে। এবারের প্রলংকরী বন্যায় উত্তরাঞ্চলের কৃষি ফসলের পাশাপাশি ধ্বংস হয়েছে মৎস সহ গবাদীপশু রাস্তা ঘাটের ও বেহাল দশা।  বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যে কত সময় লাগবে তা ঠিক ভাবে জানেন না উত্তরাঞ্চলের বানভাসি মানুষ এমনকি সরকার ও না।



গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ আমাদের ফেইসবুক ভিত্তিক মানবিক উন্নয়ন ও স্বেচ্ছাসেবী গ্রুপ "নিরাপদ বাললাদেশ চাই " এর উদ্যোগে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের বানভাসি ও নাদীভাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্হ্য পরিবারের মাঝে খাদ্যসহযোগিতা প্রদানের জন্য সেখানে গিয়েছিলাম। নিজেদের সাধ্যমত চাল আলু ডাল তেল লবন মিলিয়ে প্রায় সাত শত ব্যাগ খাবার সাত শত পরিবারের হাতে তুলে দিতে পেরে নিজের অজান্তেই মনের ভিতর এক আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে । আমাদের খাদ্যবিতরন কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে আমাকে আমাদের সংগঠনের সহকারি গ্রুপ লীডায় নুরুল ইসলাম সবুজ ও স্হানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন ।সেই সাথে সহযোগিতা পেয়েছি গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সদস্যদের কাছ থেকে।



গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়ন যমুনা নদীর ভাঙ্গনকবলিত একটি এলাকা । ঐ ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক ই নাকি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । আমাদের ঐ এলাকায় যাওয়ার কথা শুনেই হলদিয়া ইউনিয়নের নলছিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হয়ে ছিল ঐ ইউনিয়নের প্রায় সাত শত পরিবারের সাতশত মানুষ । সেখানে পৌছে কথা হয়েছিল এলাকার বয়োঃ বৃদ্ধ যুবক তরুন গৃহিনী অনেকের সাথে । ওখানকার মানুষগুলির মুখের দিকে তাকালেই ভেসে উঠে কেমন জানি দুঃখের ছাপ । তাদের দুঃখের কথা শুনে আমরা ও মুহুর্তের জন্য ভাগিদার হয়েছিলাম তাদের দুঃখের । সত্তর বছরের মোতালিব চাচা তো আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাই শুরু করে দিলেন । যমুনায় তার ঘড় বাড়ি সবই গ্রাস করেছে পরের জমিতে কিছু ধান বুনলে ও এবারের বন্যায় তা ও শেষ হয়ে গেছে স্ত্রী কন্যাদের নিয়ে বছরের বাকী দিন গুলি কিভাবে পার করবেন এটাই তার বড় চিন্তা তার উপর আবার চালের বাজারে আগুন । মোতালিব চাচা কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন বাপরে সকাল থেকে দানা পেটে যায় নি । মোতালিব চাচার কান্না আমাদের ও চোখ ভিজিয়েছে । উত্তরাঞ্চলে আজ মোতালিব চাচাদের মত হাজারো অসহায় মানুষ নিরবে নিভৃত্তে কেঁদে যাচ্ছে । তাদের কান্না আমরা কয় জনই বা শুনতে পাই ?

আজ সমগ্র দেশ মিয়ানমার থেকে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের নিয়ে ব্যস্ত আর এটাই স্বাভাবিক । মিয়ানমারে সমরিক শক্তি ও বৌদ্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠি যে ভাবে একটি নিরস্ত্র অসহায় জাতিকে নিধনে নেমেছে তাতে কোন সুস্হ্য বিবেক ই চুপ থাকতে পারে না । মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে নিজেদের জন্মভূমি ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে বাংলাদেশে । আমরা বাংলাদেশীরা ও আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করছি অসহায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাদের জীবন বাঁচাতে । আমাদের সরকার থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ যার যতটুকু সাধ্যআছে তা নিয়ে ই দাড়ানোর চেষ্টাকরছি অসহায় রোহিঙ্গাদের পাশে । অসহায় রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করতে যেয়ে আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি উত্তারাঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষদের কথা । উত্তারাঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষদের অনেকের ই আজ কাজ কর্ম নাই । খেটে খাওয়া মানুষগুলির অনেকের ঘড়েই আজ চুলো জলছে না । কোন মতে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে উত্তারাঞ্চলের অসহায় বানভাসি মানুষেরা । উত্তরাঞ্চল থেকে বন্যার পানি ঠিক ই শুকিয়েছে কিন্তু বন্যা ওখানে যে ক্ষত সৃষ্টি করে দিয়ে গেছে তা যে কবে শুকাবে এটা বলা মুশকিল । অসহায় রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে আমাদের কাছে আশ্রয় নিয়েছে তাদের যেমন রক্ষাকরতে হবে সেই সাথে আমাদের বানভাসি মানুষ গুলিকে ও কোমড় শক্ত করে দাড়ানোর জন্য আমাদের যথা সাধ্যচেষ্টা করতে হবে ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১:০১

কানিজ রিনা বলেছেন: সত্যি প্রলয়ংকারী বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ
আর প্রলয়ংকারী রহিঙ্গা জনস্রোত সব মিলে
দেশ আজ মহা সমস্যা অতিক্রম করছে।
তবুও আবার লেখেন বন্যা কবলিত এলাকার
দুর্দশা নিয়ে। ধন্যবাদ।

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ২:৩৬

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: আপনাকে ও ধন্যবাদ কানিজ রিয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.