নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমে সংবাদের বিশেষ শিরোনাম ছিল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে অবৈধ মানাব পাচার । থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সীমান্তে গভীর জঙ্গলে গণকবর আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার থেকে মানবপাচারের ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পায় । সে সাথে সন্ধান মিলে পাঁচ শতাধিক গনকবরে যেখান থেকে উদ্ধার করা হয় শতাধিক বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মরদেহ৷ এদের সবাই নৌকায় ভেসে মিয়ানমার বা বাংলাদেশে থেকে জীবনের প্রয়োজনে ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মালয়েশিয়ায় পারি দিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্য তাদের সাথে অসম্ভব ভাবে প্রতারণা করেছে। এরপর আন্তর্জাতিক চাপে নিজেদের ইজ্জত রক্ষার জন্য থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার সরকার যথেষ্ট কঠোর হয়েছিল। তাতে আমরা ধরে নিয়েছিলাম সমুদ্রে নৌকায় ভেসে অবৈধ পথে মালয়েশিয়া বা থাইল্যান্ড যাওয়ার প্রবনতা প্রায় কমে আসবে। বাস্তবে তা কোন ভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। গত ১০ ফেব্রুয়ারী ১২০ জন বা তার অধিক যাত্রী নিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাবার সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে বঙ্গোপসাগরের ইঞ্জিন বিকল হয় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। আমি যখন এই লেখা লিখছি তখনকার সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ১৫ জনের মৃতদেহ ও ৬৫ জনকে জীবিত সগর থেকে উদ্ধাট করা সম্ভব হয়েছে। আর প্রায় চল্লিশ জন বা তার অধিক মানুষের সন্ধান এখনো মিলেনি। তবে মৃত্যের সংখ্যা বরো বাড়ার সম্ভবনার কথাই বলছেন আমাদের কোস্টগার্ড। সাগর থেকে জীবিতের সকলেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী মুসলমান রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্যে নির্বিচারে গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর কারণে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ ছাড়া আগে থেকেই বাংলাদেশে চার লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। সব মিলিয়ে উখিয়া-টেকনাফে অশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ১১ লাখের বেশি, যারা কর্মহীন ও অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের বড় একটি অংশ অবস্থান করছে উখিয়ায়। তাদের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতে মানব পাচারকারী চক্রগুলো আবারও তৎপর হয়ে উঠেছে। সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারে টার্গেট করা হচ্ছে এসব রোহিঙ্গাকে। এই মানব পাচারে বাংলাদেশী ছাড়াও মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমারের নাগরিকরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। আর রোহিঙ্গাদের পাচারের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা শিবির গুলিতে আছে একাধিক চক্র। ইতোমধ্যে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্হা সরকারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করেন। যেখানে দেশী বিদেশী মানব পাচারকারী চক্রগুলো বিস্তারিত দেওয়া ছিল। তার পর ও অবৈধভাবে মানব পাচার বন্ধ করা সম্ভব হয় নি।
সাগর পথে অবৈধভাবে মান পাচারের সঙ্গে সম্পৃক্তরা আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। কিছুদিন আগে আমরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জাতে পেরেছি মাদক ও মানব পাচারের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে কক্সবাজারের অনেকেই আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। কিছুদিন আগেও যাদের কেউ রিক্সা বা ভ্যান চালক ছিলেন কেউ না লবন ক্ষেতের দিন মজুর। তাদের সকলের ই মুল হোতা নাকি টেকনাফের সাবেক সাংসদ আব্দুর রহমান বদি ও তার পরিবার। অবশ্য বদিকে নিয়ে সংবাদ মাধ্যম থেকে জাতীয় সংসদ সব খানে আলোচনার ঝড় উঠলেও আমাদের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তার টিকিটি পর্যন্ত ছুতে পারে নি। উল্টো দুর্নীতি দমন কমিশন বদিকে দায় মুক্তির সনদ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমন কি আমাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শ্রেণীর অসাধু সদস্য ও মানব পাচারকারীদের সহায়ক-শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে ।
আমাদের সরকার মানবপাচার রোধে যথা সাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আট বিভাগে মানবপাচার প্রতিরোধ ট্রাইবুনাল করার কথা ও ভাবছে সরকারব। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৩০ জুন ২০১৯ পর্যন্ত সারা দেশে ৪ হাজার ৬০১টি মানব পাচারের মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭টি মামলা ঝুলছে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে। আটটি বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৬৪টি মানব পাচার মামলা বিচারাধীন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৭৯টি, রাজশাহী বিভাগে ২৩৫টি, খুলনা বিভাগে ৮৩৩টি, বরিশাল বিভাগে ৩৮৫টি, সিলেট বিভাগে ২২৬টি, রংপুর বিভাগে ৫৮টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২১টি মানব পাচার মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তবে বাস্তব সত্য পাচারকারীরা এতটাই শক্তিশালী যে বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় তাদের বেশীর ভাগকেই বিচারের মাধ্যমে সাজার ব্যবস্হা সম্ভব হয় না বলেই পাচারকারীরা বীরদর্পে তাের কার্যক্রম চালায়ে নিয়ে যাচ্ছে।
অবৈধ পথে বিদেশ পারিদিতে গিয়ে প্রায়ই পৃথিবীর বিভিন্ন স্হানে বিভিন্ন ভাবে জীবন দিতে হয় আমাদের দেশের মানুষকে সেই সাথে বর্তমানে যোগ হয়েছে রোহিঙ্গা সংকট। সামাজিক ভাবে অবৈধ পথে বিশেষ বিদেশ যাত্রাকে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সরকারকে এই ব্যাপারে কঠিন থেকে কঠিনতম ব্যবস্হা গ্রহন করতে হবে। আর যাতে একটু মানুষকে ও এই পথে জীবন দিতে না হয়। তা না হলে সরকারের সমস্ত উন্নয়ন দেশে ও বিদেশে পুরোপুরি ম্লান হয়ে যাবে।
২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৩৪
ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: রাজীব নুর ভাইয়া প্রথমত পেটের ক্ষুধা অর্থাৎ বেকারত্ব দ্বিতীয়ত জনসচেতনতা ও সুস্ঠ আইন প্রয়োগের অভাব ই মুল কারন।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: নির্বোধ লোকজন বুঝে না কেন অবৈধ্য ভাবে বিদেশ গেলে নানান সমস্যা। এত এত ঘটনা ঘটেছে তারা দেখে না? বুঝে না। দেশে শুনেও যদি যায় তাহলে ঐ নির্বোধ গুলো মরুক।