![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ছোটবেলা থেকেই ভাল কিছু করে দেখাতে চাইতাম। স্পেশালি আমার দেশের জন্য... আমি ধান-শালিক আর মেঠোপথের এই বাংলাদেশকে খুব ভালবাসি। দেশের জন্য কিছু করার চেষ্টায় আমার নিরন্তর পথচলা। আমি বিশ্বাস করি চিরসবুজ বন্ধুত্বে। তাইতো আমি সবসময় বন্ধুসলভ, নির্মল বন্ধুত্বে না নেই। অতি কম সময়ের এ পৃথিবীতে আশেপাশে যারা আছেন যাদের সাঙ্গ করেই আমাদের পথচলা সেইসব প্রতিটি মানুষের সঙ্গে ভাতৃত্বের সম্পর্ক নষ্ট করতে খুবই অপছন্দ করি। প্রতিটি মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভালমানুষটিকে আমি সম্মান করি। প্রিয় রঙ সবুজ, নীল এবং এর বিভিন্ন শেড।
এই বুড়া বয়সে এসে স্কুল জীবনের কথা মনে পড়ছে। মনে পড়ে হাইস্কুলে পড়ার সময় পরীক্ষা আসিলেই গায়ে জ্বর চলিয়া আসিত। সন্ধ্যার বাতি জ্বলিবার আগেই টেবিলে বসিয়া যাইতাম।
কিছুক্ষণ পর আম্মা আসিয়া দুধ-মুড়ি-কলা দিয়া যাইতো। রাত হইবার সাথে সাথে পড়ার গতি বাড়িয়া যাইতো, আম্মাজান রান্নাঘরে টুংটাং শব্দে রান্না করিতেন আর আমি হাক ছাড়িয়া জোরে ছেড়া বইগুলো পড়তাম। জোরে জোরে বই পড়িতাম যেন আম্মাজানের কানে পড়ার শব্দ যায়। পড়তে পড়তে একটা সময় বেখেয়ালে একই লাইন বারবার পড়িতাম, ভাবতাম বলটা আরেকটু জোরে মারিলেই ছক্কা হইতো। তখন আম্মাজান একটা হাঁক ছাড়িতেন। আবার পড়া স্টার্ট। এইবার আর থামাথামি নাই। চলিত চিৎকার করিয়া। মনোযোগ চলিয়া আসিত এতোক্ষণে।
রাইত ১০ টা নাগাদ আব্বাজান আসিতেন। আমারে বেশ কয়েকবার ডাকিয়া পাশে বসাইয়া মাছের মাথাটা পাতে তুলিয়া দিতেন। এরপর আবার চলিত পড়াশোনা ১২ টা বাজিলে আম্মাজান দুধের গ্লাস নিয়া আসিয়া বলিতেন বাজান ঘুমাইয়া যাও। পরীক্ষার আগের রাত জাগিতে নাই। ধানাই-পানাই করিয়া আরো কিছুক্ষণ চলিত পড়াশোনা।
সকাল বেলা এলার্ম দিতাম টেবিল ঘড়িতে কিন্তু কী আশ্চর্য ঘটনা ঘড়ির আগেই আম্মাজান জাগিয়া যাইতেন। আমি উঠিয়া এলার্ম বন্ধ করিতাম। একদিনও এলার্ম বাজতো না, এজন্য মাঝে মাঝে ক্ষোভ পুষিয়া এলার্ম বন্ধ করিতাম না। আম্মাজান নাস্তার বাটি লইয়া এলার্ম বন্ধ করিতেন। আমার পড়ার বেগ বাড়িয়া যাইতো। বাংলা বা সমাজ পরীক্ষা হলেতো কথাই নেই পড়ার গতিতে আশেপাশের বাড়ির ঘুম ভাঙিত নিশ্চিত।
মাঝেমধ্যে ঘটিত মহা এক কাণ্ড। পাড়ার ছেলেপুলেরা গান গাইয়া যাইবারকালে আমার পড়ার শব্দে গান বন্ধ রাখিত। আমি শুনিবার জন্য একটু আস্তে পড়িলেও কোন লাভ হইতো না তাহার আমার বাড়ির ত্রিসীমানা নি:শব্দে যাতায়াত করিতো। এই পড়া চলিত পরীক্ষার দেড় ঘণ্টা আগ অবধি। এরপর গোসল করিয়া গরম ভাত খাইতাম, তয় ডিম খাইতাম না আন্ডা পাওয়ার ভয়ে। এরপর আম্মাজান চুল আঁচড়াইয়া দিতেন এরপর আমি চলিতাম, হাতে থাকিত বই। পড়িতে পড়িতে যাইতাম, মনে হইতো হাটিতে হাটিতে যাহা পড়িবো তাহাই আসিবে, আসিতো অবশ্য। বেল দেওয়ার আগ পর্যন্ত বই পড়িতাম, দরজার সামনে বই রাখিয়া হলে ঢুকিতাম। এরপর হাসিমাখা মুখে পরীক্ষা শেষ করিতাম।
সময়ের ব্যবধানে সেই দিনগুলো হারিয়ে গেছে। আম্মাজান দুধ-মুড়ি-কলা দেয় না। সন্ধ্যার বাতি জ্বললেও বই পড়া হয় না। রাত দশটায় আব্বাজান ফোন দিলে জানে ছেলে এখনো বাইরে। পরীক্ষার আগের রাতেও দেরী করে বাসায় আসা হয়। কেহ বই পড়ে, কেহ এমনি এমনি জেগে থাকে পরীক্ষার আগের রাতে। সকালে ওঠাতো রীতিমতো স্বপ্ন। সারাবছর দূরে সরিয়ে রাখা নতুন বইগুলো চকচক করে। কেহ কেহ মায়া ত্যাগ করে সেই নতুন পাতাগুলোকে পকেটবন্দী, মোবাইলবন্দী করে। পরীক্ষা আসে পরীক্ষা যায়। রাত, সকাল সব বদলাইয়া যায়, বদলায় না শুধু পরীক্ষা নিজেই।
সকালে ফাইনাল ইয়ারের টেস্ট পরীক্ষা
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৪:১৭
ভণ্ড বাবা বলেছেন: