নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধ্যাত্মিক পুরুষ, ধর্মগুরু; খানকা থেকে বলছি।

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।

জাকির এ মাহদিন

আমি পথিক। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। আক্ষরিক অর্থেই আমি পথিক। একে একে জীবনযাত্রার সব সুতো কেটে দিচ্ছি। আবার শূন্যের উপর নির্মাণও করছি। এটাই প্রকৃতপক্ষে জীবন। অথবা- জীবন এমনই। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ির দুরন্ত প্রয়াস, যে সাগরের পাড় নেই। আমি মানবতার মুক্তির জন্য বিবেকের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শোষিত-বঞ্চিতের পাশে দাঁড়াতে চাই।

জাকির এ মাহদিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের ক্রিকেট ও নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৫৫

বাংলাদেশের মতো একটি ছোট্ট ও অনুন্নত দেশের পক্ষে বিশ্বক্রিকেটের স্বপ্নিল অঙ্গন চষে বেড়ানো চাট্টিখানি কথা নয়। তাইতো কারও পা যেন মাটিতে পড়তে চায় না। অথচ এ জাতির হাজার বছরের সংগ্রামের ইতিহাসের এটা একটা অংশ মাত্র। বাঙালী আজন্ম সংগ্রামী জাতি। এ জাতির প্রতিটি সদস্য জীবনযুদ্ধে ও অন্যান্য সব ব্যাপারে আত্মসম্মানবোধ রক্ষার ময়দানে এক একজন লড়াকু সৈনিক। এরই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম, কঠোর অনুশীলন ও একনিষ্ঠ সাধনার ফসল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটমঞ্চে বাংলাদেশের গৌরবময় অবস্থান ও সাফল্য। এটা এ দেশ ও জাতির সম্পদ; বীরত্বের স্মারক। এ জন্য এ ক্ষেত্রে যেকোন অর্জন ও বিজয় কোটি বাঙালীর হৃদয় ছুঁয়ে যায়।



যুগ যুগ ধরে শোষিত বঞ্চিত হয়ে আসা এমন একটি মানবগোষ্ঠীর এতটুকু প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বাসে-উল্লাসে মেতে ওঠা, আনন্দের জোয়ারে ভেসে যাওয়া অতি স্বাভাবিক। কেননা বিশ্বের আবেগপ্রবণ জাতির খেতাবটা কিন্তু আমাদেরই। তবে আজ মনে হয় এ বিষয়ে নজর দেয়ার সময় এসেছে। বিজ্ঞজনদের প্রশ্ন, এ ধরনের আবেগ ও বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস আমাদের নতুন প্রজন্মকে শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে দাঁড় করাবে?



এক সময় বাংলাদেশে ফুটবল খেলা তুমুল জনপ্রিয় ছিল। এখন সেটা নেই। তার পরও বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বাংলাদেশের উন্মাদনা দেখলে শুধু আমি কেন, যেকেউ অবাক না হয়ে পারেন না। হায়রে বাঙালী! ভিন দেশের পতাকায় ছেয়ে যায় বাংলার আকাশ। বাতাসে ভেসে বেড়ায় পরদেশী ঘ্রাণ। ফুটবলের ক্ষেত্রেই যদি এমন হয়, যেখানে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নেই, ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কেমন হতে পারে বা হচ্ছে বলাই বাহুল্য। অথচ এসবের দ্বারা আমাদের কী পরিমাণ সম্পদ নষ্ট হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার কি বিশাল ক্ষতি হচ্ছে, সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন ধর্ম-কর্মের কতটুকু ক্ষতি হচ্ছে বা মিডিয়ায় এসব খেলাধুলার ফলাও প্রচার নতুন প্রজন্মের ওপর কী প্রভাব ফেলছে এদিকে কারও নজর দেয়ার সময় নেই।



খেলাধুলার প্রতি এ ধরনের আবেগ-উন্মাদনা, প্রচারণা ও জাতীয় গুরুত্ব দেয়া কতটুকু যৌক্তিক তা গুণীজনরাই বিচার করবেন। বিশেষ করে ক্রিকেটে দীর্ঘ সময়ের ব্যাপারটাও লক্ষণীয়। খেলা চলাকালীন ও শেষে বিজয় অর্জিত হলে ফেসবুক-ব্লগ খেলা সম্পর্কিত পোস্টে ভরে যায়। এমন আবহ ও প্রেক্ষাপট তৈরি করার জন্য আমি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকেই দায়ি করব। ক্রিকেটের খবর প্রায়ই জাতীয় দৈনিকের প্রধান শিরোনাম হওয়ায় সর্বশ্রেণীর জনসাধারণ বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম প্রবলভাবে আকৃষ্ট হয়। মিডিয়ার যদিও এক্ষেত্রে ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত, কিন্তু এর ফলে শ্রমিকের কর্ম ফাঁকি, শিক্ষার্থীর ক্লাশ ফাঁকি, চাকরিজীবী ও ভিআইপির অফিস কামাই অহরহই ঘটছে। এমনকি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তারকে দেখা গেছে রোগী ফেলে অন্য রুমে দরজা বন্ধ করে টিভিতে খেলা দেখতে।



একটি অনুন্নত দেশে- যেখানে লাখ লাখ গৃহহীন, বস্ত্রহীন, চিকিৎসাহীন, শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত, অন্নের অভাবে ঘর থেকে বের হলে আগুনে পুড়ে মরতে হয়, জীবন্ত দগ্ধ হতে হয়, জলে ডুবতে হয় কিংবা গাড়ির চাকায় পিষ্ট হতে হয়, সেখানে তাদেরই ঘাম ও রক্তের টাকায় বিনোদনের নামে শ’শ’ কোটি টাকা অপচয় ও লুটপাট...



নাহ... বিষয়গুলো আমি মেলাতে পারি না!! বহির্বিশ্বে আমাদের পরিচিতির এতই যদি দরকার হয়, আর আমাদের বলতে কাদের, এই মানুষগুলোর? যাদের দূরবস্থার কথা উপরে বলেছি? বিদেশে কেন, এরা কি নিজ দেশে মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়ার পথ আছে? আর বিনোদনেই যদি পেট ভরে, তাহলে ওপর তলার বাসিন্দারা রাস্তায় রাত যাপন করছেন না কেন??



বিশ্ব আজ বিনোদনের নামে এমনই আত্মঘাতী প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেছে যে, একটি জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা মানুষ হওয়ার সময় খুব কমই পান। জ্ঞানার্জনের সুযোগ নেই, মতবিনিময়ের সুযোগ নেই, এমনকি পারিবারিক-সামাজিক পরিবেশে অবস্থানের অবসর পর্যন্ত নেই। এর শেষ কোথায়?



দুঃখিত, লেখাটিতে হয়তো তরুণদের অনেকেই আঘাত পেতে পারেন, তাদের নিকট ক্ষমাপ্রার্থী। মূলত আমি ভালো করেই জানি এটা কি পরিমাণ আবেগ-অনুভূতির ব্যাপার। আমি নিজেও গভীর রাতে হুজুরদের ফাঁকি দিয়ে প্রচুর দেখেছি, আলবৎ এখনো... তবে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা অভিভাবকদের কেউ অস্বীকার করতে পারবেন বলে মনে হয় না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.