নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের\'

যাযাবর জোনাকি

‘আমাদের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝখানে একটা দেয়াল আছে, এর একদিকে থাকে চাওয়া,আর একদিকে পাওয়া। মুখ্য সমস্যা হল দেয়ালটা স্বচ্ছ কাঁচের’

যাযাবর জোনাকি › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুকুর চুরি (ছোটদের ছোট গল্প)

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:০৮


বল্টুরা থাকে এক্কেবারে পাতি মফস্বলের একটা ভাড়া বাড়ির নিচ তলায়। বল্টুরা দুই ভাইবোন। বল্টু আর বিনা।
ওদের বাবা মা দুইজনেই সরকারি চাকরি করে। বল্টুর খেলার সাথী বলতে দোতলার বাড়িওয়ালার ছেলে, সে বল্টুর চেয়ে অনেক বড় বয়েসে। তার সাথে খেলাধুলা যেমন মজায় চলে, তেমনি মাঝে মধ্যে দু-চারটে চড় থাপ্পড়ও খেতে হয়, একটু দোষ করলে।

একদিন বল্টুর মা বাবা দুইজনই বদলি হয়ে গেল একটা ছোট্ট সুন্দর সবুজ শহরে। সেখানে বল্টুদের একটা নানার বাড়ি আছে। প্রথমে তারা সবাই গিয়ে সেখানেই উঠলো। ছোট্ট বল্টুর কাছে বাড়িটা বিশাল বড়। বল্টুর সারাদিন কেটে যায় একা একা উঁচু পাঁচিলে ঘেরা বাড়িতে খেলে খেলে। এভাবেই এক এক করে অনেক দিন পার হয়ে গেল। বল্টু স্কুলে ভর্তি হল। কিছুদিন পরে পাড়ায় বল্টুর বন্ধু হল। আরও কিছুদিন পর বল্টু প্রাইমারি স্কুলে ভর্তিও হল।

এদিকে শহরের শেষ প্রান্তে বল্টুর বাবা-মা একটা ছোট্ট একটা জমি কিনে, নিজেদের ছোট্ট একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করতে লাগলো। বল্টুর তখন ভাবতেও ভালো লাগে নিজেদের একটা বাড়ি। বাড়ি দোতলা তুলতে তুলতে যখন কেবল দেড় তলা। তখন মামা, খালা, নানি এদের সাথে বল্টুর মায়ের কি একটা পারিবারিক গন্ডগোলে তাদের নানার বাড়ি ছেড়ে ঐ দেড় তলা বাড়িতে কোনমতে ঠাঁই করে নিতে হল। আর ঐ নানার বাড়িতে উঠলো বল্টুর কাজিন মাখনরা।

বিশাল বাড়ি, পাড়ার বন্ধুবান্ধব, পোষা বিড়ালগুলো সব ছেড়ে নতুন বাড়িতে এসে বল্টুর একটুও ভালো লাগেনা। নতুন বাড়ি নিয়ে বল্টুর যতখানিই উত্তেজনা ছিলো সব হতাশায় পরিনত হল। বন্ধু নেই, খেলার জায়গা নেই। এমনকি সাদাকালো টিভিতে কার্টুন দেখার জন্য বসার সোফাটিও নেই। এভাবেই একদিন সকালবেলা বল্টু বাড়ির পেছনে কুঁইকুঁই আওয়াজ শোনে। বল্টু ডিটেকটিভের মত ভাঙাচোরা ইট, সুরকির লাল পাহাড়, নালা পেড়িয়ে বাড়ির পেছনে গিয়ে দেখে, একটা মোটাতাজা, ভম্বল কুকুরের ছানা। গায়ের রঙ খাঁকি, মুখটা হুনুমানের মত কালো, লেজের আগাটা সাদা। অনেকদিন পরে বল্টুর মনটা আনন্দে নেচে উঠলো। বল্টু ওটাকে কোলে করে আদর করে বাড়ির সামনে নিয়ে এসে খাবার দিল। নাম রাখলো ভম্বল।এখন বল্টুর বেশির ভাগ সময় কাটে ভম্বলের সাথে খেলাধুলোয়। বল্টু খাবার টেবিলে বসার সাথে সাথে, ভম্বল খাবার ঘরের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে লেজ নেড়ে আবদারের সুরে ভৌ ভৌ করে ওঠে। বল্টু নিজের একটা রুটি, হাড়, মাংসের টুকরো চুপ করে জানালা দিয়ে চালান দেয় ভম্বলের দিকে। ভম্বল হাপুসহুপুস করে খেয়ে ফেলে।

এরমধ্যে, অনেকদিন পর বল্টুর সেই কাজিন মাখন, বল্টুর বাড়িতে বেড়াতে এলো। বল্টু খেলাধুলোর মাঝে একবার মাখনকে ডেকে দেখাল ভম্বলকে। মাখন এক নজরে ভম্বলকে দেখেই নিজের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইল।যেন ভম্বল তার নিজের সম্পত্তি। বলল, "তোদের বাড়িতে তো রাখার যায়গা নেই!" বল্টু রেগে, তেড়ে মাখনকে এক কথায় স্পষ্ট "না" বলে দিল। মাখন ছেলেটা একটু ফিচেল টাইপের। সে কারও সাথে গন্ডগোল করে না, কিন্তু নিজেরটা ঠিক বুঝে নেয়। মাখন তখন আর কিছু বলল না, চুপচাপ বাড়ি চলে গেল।

পরেরদিন সকালে নাস্তা খেতে বসে বল্টু ভম্বলের কোন ডাক না শুনে, একটু ভরকে গেল। সে পাগলের মত বের হয়ে গেল ভম্বল কে খুঁজতে। সারা পাড়া খুঁজে কোথাও ভম্বলকে পাওয়া গেল না। অনেকে ছোট ছেলে পেয়ে বল্টুকে বুঝালো যে ভম্বলকে তার মা অন্য জায়গায় নিয়ে গেছে। কেউ বলল মিনিসিপাল্টির গাড়ি নিয়ে গেছে। বল্টুর কোন কথায় বিশ্বাস হতে চায় না। শুধু বন্ধু হারানোর দুঃখটি আরেকবার দলাপাকিয়ে শুধু গলায় আটকে থাকে। বাড়ির কাউকে কিছু বলেও উপায় হল না। তখন বাড়ির সবাই নানান ঝামেলার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটা বাইরের কুকুরের ঝামেলা কেউ মাথায় চাপায় না। বল্টুর দিনগুলো আবার ডুবে যায় বন্ধুহীন কালো আঁধারে।

অনেকদিন পরে বল্টু আর তার মা তাদের বাড়ির কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্য কিছু টাকা ধার চাইতে যায় বল্টুর নানার বাড়ি অর্থাৎ মাখনদের বাড়িতে বেড়াতে। নানাবাড়ির সামনের উঠোনে পা রাখতেই, হঠাৎ বল্টুর দেখা হয় তার এক পুরান বন্ধুর সাথে। সে বাধা আছে চেইন দিয়ে বারান্দার গ্রীলের সাথে, বল্টুকে দেখে ল্যাজ নাড়ছে। ভম্বল!

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২০

রাজীব নুর বলেছেন: গল্প ঠিক আছে।
কিন্তু প্রথম লাইনটা বুঝি নি। পাতি মফস্বল কি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.