নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

.. তবুও আমি আঁধার পথিক, আঁধারের অতিথি হয়েছি আজ বিনা নোটিশে। ঘুম নেই চোখে, ক্লান্তি নেই চরণে... জানি না চলছি কোন্ মেঠো পথ ধরে! *facebook.com/shimulzia *facebook.com/ziaulshimul *ziaulshimul.blogspot.com

জিয়াউল শিমুল

মনের বাগিচা পায়ে দলে হালের অবার্চীন, মুখোশের অন্তরালে তারা মরুয়তে দীন

জিয়াউল শিমুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

চন্দ্র ।। পর্ব - ১৬

২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫৩

জঙ্গলের কালি মন্দির। গুপ্ত গুহায় ঢুকবে আজ রুদ্র। সাথে আছে ওর রুম মেট আবুল।

দুপুরের খাবারের পরে জঙ্গলে আসার আগে কয়েক জনকে কিছু দায়িত্ব ভাগ করে দেয় রুদ্র। মামাতো ভাই আরশাদকে দায়িত্ব দেয় মেলা কমিটির বাকি সদস্যদের সাথে কথা বলার জন্য। চাচাতো ভাই আজমলকে দায়িত্ব দেয় কালো বাদুর সম্পর্কে যে যা জানে সব তথ্য সংগ্রহ করার এবং সেই সাথে গত বছর যে দুই জন ছেলে মেয়ে হারিয়ে গেছে তাদের পরিবারের সাথে দেখা করে তথ্য নেয়ার জন্য। মামাতো ভাই আহমাদকে দায়িত্ব দেয় থানায় যাওয়ার। কালো বাদুর সম্পর্কে পুলিশের কাছে কি তথ্য আছে, মেলায় যে লোক খুন হয়েছে তার সম্পর্কে পুলিশ কি জেনেছে, খুনিকে চিহ্নিত করতে পেরেছে কি না, যে দুই জন ছেলেমেয়ে গত বছর হারিয়েছে তাদের বিষয়ে পুলিশ কতদুর এগিয়েছিলো- এ সব বিষয়ে তথ্য নিতে হবে ওকে। সেই সাথে যোগাযোগ করতে হবে ফাহিমের সাথে। ফাহিম দুই জনকে সাথে নিয়ে সার্কাস পার্টির খোজে সকালেই দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আর কিছুক্ষন পরে ওরা হয়তো দিনাজপুরে পৌছে যাবে। ফাহিম এখানকার থানায় যোগাযোগ করলে ওকে সার্কাসের মেয়েটার কথা জানাতে হবে। সার্কাস দেখানোর সময় সাইকেল থেকে পড়ে যাওয়ার কারন মেয়েটার কাছে জানতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে মেয়েটি মিথ্যা বলছে কি না? যারা সার্কাস দেখায় তারা বহুদিন প্রাকটিস করে খেলাটাকে রপ্ত করে। তাদের অ্যাকসিডেন্ড হওয়া সহজ নয়। সম্ভবত মেয়েটি অন্যমনস্ক ছিলো। এই অন্যমনস্কর কারনটা জানতে হবে। চন্দ্রকে কিডন্যাপের সাথে এই কারনটা যুক্ত ছিলো নাতো!

সব তথ্য হাতে আসতে সময় লাগবে। রুদ্র আশা করছে রাত থেকে তথ্য পাওয়া শুরু করবে ও। আর সব তথ্য পেতে অন্তত কয়েক দিন সময় লাগবে। এই ফাকে গুপ্ত গুহাটির অবস্থা জানতে হবে ওকে। দরকার পড়লে গুপ্ত গুহাটি সত্যই ওর কোন কাজে আসবে কিনা কিংবা গুহাটিকে কাজের উপযোগি করে নেয়া যাবে কিনা- সেটা জানা জরুরি। যদি গুহাটি কাজের না হয় তাহলে ওকে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

বেদির সাথে হাতে ধরা লাঠিটিকে আশি থেকে পচাশি ডিগ্রির মাঝে রেখে কালি মুর্তির ডান পাশের নিচে আঘাত করলো রুদ্র। আঘাতের সাথে সাথে মুর্তি বাম পাশে বেশ কিছুটা সরে গেলো। আরেকটা আঘাতেই মুর্তি পুরো সরে গিয়ে নিচে গুপ্ত গুহা উন্মোচিত হলো। এর আগে মুর্তি পুরোপুরি সরাতে বেশ কয়েক বার আঘাত করতে হয়েছিলো। এবার দুই আঘাতেই পুরো সরে গেলো। রুদ্র আবুলকে বললো- তুই প্রাকটিস কর। আমি নিচে নামবো, তুই উপরে থাকবি। দুজন এক সাথে নামা যাবে না। নিচে কি আছে আমরা জানি না। যদি দুজন এক সাথে নামি আর কোন কারনে গুহার পথ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমরা সমস্যায় পড়বো। কারন নিচ থেকে খোলার কৌশল আমরা জানি না।

- ঠিক আছে।

রুদ্র আবুলকে লাঠিটা দিয়ে বললো- আর যদি আমি নিচে নামার পরে পথ বন্ধ হয়ে যায় এবং তুই খুলতে না পারিস তাহলে বাড়িতে খবর দিবি। মুর্তি ভেঙ্গে আমাকে উদ্ধার করবি। এবার গুপ্ত পথটা বন্ধ কর। তারপর খোল। বেশ কিছুক্ষন প্রাকটিস কর। ততোক্ষনে তোকে আমি কালো বাদুরের কথা বলছি।

আবুল লাঠি দিয়ে মুর্তির নির্দিষ্ট জায়গায় আঘাত করলো কিন্তু মুর্তি নড়লো না। গুপ্ত পথ বন্ধ করার জন্য বেদি থেকে লাঠির দুরত্ব দশ থেকে পনেরো ডিগ্রির মাপে রেখে নির্দিষ্ট জায়গায় আঘাত করতে হয়। ডিগ্রির মাপে ভুল হচ্ছে ওর। বেশ কয়েক বার আঘাত করার পরে মুর্তি নড়লো।

রুদ্র বলে চললো কালো বাদুরের কথা- কালো বাদুর একটা প্রাচিন দস্যু দলের নাম। এরা কখন কোথায় হামলা করে সেটা কেউ বুঝতে পারে না। কি জন্য হামলা করে সেটাও অনেক সময় বোঝা যায় না। কখনো কারো সম্পদ লুট করে আবার কখনো শুধু হত্যা করে, সম্পদে হাতই দেয় না। কিংবা কাউকে অপহরন করে, তাকে জিবনে আর কখনো পাওয়া যায় না। এদেরকে কেউ আজ পর্যন্ত দেখে নি। দেখে নি বলতে যারা দেখেছে তাদের কেউ জিবিত নেই। কালো বাদুরের কোন সদস্যকে যে দেখে তাকে তারা হত্যা করে। বিষয়টাকে অন্যভাবেও বলা যায়, কালো বাদুরেরা কাউকে হত্যা করতে চাইলেই কেবল তাকে দর্শন দেয়। আমি জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই কালো বাদুরের নাম শুনছি। আমার বাবা, নানাও তাদের জ্ঞান হওয়ার পর থেকে এদের নাম শুনেছে। তার মানে এরা যুগের পর যুগ ধরে আছে। কত কাল থেকে আছে সেটা আমি জানি না। এরা যুগের পর যুগ ধরে নিজেদেরকে লোকচক্ষুর আড়াল করে রাখতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য এদেরকে অদৃশ্য কালো বাদুর বলা হয়। পুলিশ এদেরকে বহু বছর থেকেই হন্যে হয়ে খুজছে। কিন্তু আমার ধারনা পুলিশ তাদের কোন তথ্যই জানে না। এরা লুট করে, খুন করে, গুম করে অথচ কেউ তাদেরকে দেখতেই পারে না, যে দেখে সে আর বেচে থাকে না। এদের কৌশল সম্পুর্ন আলাদা যেটা কেউ ধরতে পারছে না। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, কালো বাদুর বলে আসলে কিছুই নেই। এটা লোকদের বানানো।

- কিন্তু যে লুট হচ্ছে, খুন হচ্ছে, গুম হচ্ছে সে সব তো আর বানানো না।

- না, সে সব বানানো না। আমি ছোট থাকতে পাশের গ্রামে একবার ডাকাতি হয়। যে বাড়িতে ডাকাতি হয় সে বাড়ির সবাইকে খুন করা হয়েছিলো। এমনকি একটা এক বছরের বাচ্চাকে তলোয়ার দিয়ে দুটুকরো করা হয়েছিলো। সে বাড়ি থেকে পরের দিন কালো কাগজের একটা চিরকুট পাওয়া যায়। চিরকুটে সাদা কালিতে লেখা ছিলো, 'সবাই তৈরি থেকো। আবার আসবো।' কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে সে ডাকাতরা ধরা পড়ে। জানা গেলো তারা কালো বাদুর নয়, তাদের দিক থেকে পুলিশের নজর কালো বাদুরের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য তারা এমন চিরকুট লিখেছিলো।

- কালো বাদুরের নাম নিয়ে কেউ এমনটা করতেই পারে। তাই বলে কালো বাদুর নেই হয়ে যায় না। যদি কালো বাদুর নাই থাকে তাহলে নামটা ছড়ালো কেন? তাও আবার এমন অদ্ভুদ একটা নাম!

- এই এলাকাটা এক সময় বৃটিশদের দখলে ছিলো। তবে সেটা ক্ষনিকের জন্য। জনশ্রুতি আছে, কালো বাদুরের বারবার আক্রমনে তারা বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এবং কালো বাদুরের সাথে কুলিয়ে উঠতে না পেরে তারা এক সময় এ এলাকা ছেড়ে দেয়। একদিন সন্ধ্যা রাতে বৃটিশদের এক ক্যাপ্টেন তার বাহিনি নিয়ে প্রজা বিদ্রোহ দমন করে ফিরছিলো। আর তারা যে পথে ফিরছিলো সেই পথের কয়েকটা বড় গাছে চড়ে কালো বাদুরেরা লুকিয়ে ছিলো। কালো বাদুরদের পড়নে ছিলো কালো পোশাক। ক্যাপ্টেনের দল যখন সেই গাছগুলোর নিচে আসে তখন কালো বাদুরেরা গাছের ডালে দড়ি বেধে সেই দড়ি বেয়ে তরতর করে নেমে এসে ক্যাপ্টেনের দলের উপরে ঝাপিয়ে পড়ে। উপর থেকে আচমকা এভাবে আক্রমন হবে সেটা ক্যাপ্টেনের দল চিন্তাও করতে পারে নি। সৈন্যরা আতংকিত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে গুলি ছোড়ে। দস্যুরা যে গাছগুলোতে চড়েছিলো তার মধ্যে একটা গাছ তারা বাদ দিয়েছিলো কারন সে গাছটিতে ছিলো অসংখ্য বাদুর। বাদুরেরা খাবারের সন্ধানে রাতে বেড় হয় কিন্তু সন্ধ্যা রাতে তারা গাছেই ছিলো। সৈন্যদের বিক্ষিপ্তভাবে ছোড়া গুলি সে গাছেও গিয়ে লাগে। আর অসংখ্য বাদুরের ঝাক ভয় পেয়ে অনেকটা জায়গা জুড়ে পাখা ঝাপটিয়ে উড়াউড়ি শুরু করে দেয়। দস্যু কালো বাদুর আর বৃটিশ সৈন্যদের মাঝে ঝাকে ঝাকে সত্যিকারের বাদুর ঢুকে যায়। গাছের উচু ডাল থেকে দড়ি বেয়ে সরসর করে কালো কাপড় পড়া দস্যুরা তখনও নামছিলো। একটু বাতাসও ছিলো। বাতাসে দস্যুদের কালো পোশাক বাদুরের পাখার মতো উড়ছিলো। বাদুরের ঝাকের মাঝে দস্যুদেরকেও বাদুরের মতই লাগছিলো তখন। সেই লড়াইয়ে বৃটিশরা কয়েক জন ছাড়া সবাই মারা যায়। যে কয়েক জন বেচে ছিলো তারা গুরুতর আহত হয় এবং কয়েক দিন পরে তারাও মারা যায়। তবে মারা যাওয়ার আগে তারা দস্যুদের কথা বলে যায়। সত্যিকারের বাদুরদের ভিতরে দস্যুদেরকেও যে বাদুরের মতই লাগছিলো সেটাও তারা বলে। সে লড়াইয়ে দস্যুদেরও অনেকে মারা যায়। তবে তারা তাদের মৃত সহচরদেরকে নিয়ে যায়। এ জন্য তাদের কোন লাশ পাওয়া যায় না। তবে বেশ কিছু বাদুরের লাশ পাওয়া যায়, সৈন্যদের গুলিতে মরেছিলো এগুলো। এরপর থেকে সেই দস্যু দলের নাম হয়ে যায় কালো বাদুর।

- ভেরি ইন্টারেস্টিং! দস্যু কালো বাদুর বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলো!

- জনশ্রুতি তাই বলে।

- কিন্তু এটা জনশ্রুতি হয় কি করে! ব্রিটিশদেরকে যারা এভাবে নাস্তানাবুদ করে ভাগিয়ে দিয়েছে তাদের তো ইতিহাসে স্থান পাওয়ার কথা।

- দস্যু কালো বাদুরদেরকে যারা দেখেছে বলে দাবি করেছিলো সেই সৈন্যরা ছিলো চরম আহত। অনেকের ধারনা তারা প্রলাপ বকেছে। তাদের মতে, বাদুর যে গাছে ছিলো সেই গাছের নিচে যখন ক্যাপ্টেনের দল আসে তখন তাদের চলার শব্দে বাদুরেরা বিরক্ত হয়ে যায়। কিংবা অন্য কোন কারনে বাদুরেরা হঠাত এক সাথে উড়াউড়ি শুরু করে দেয়। কিছু বাদুর ক্যাপ্টেনের দলের ভিতরে ঢুকে যায়। আর সৈন্যরা ভয়ে বিক্ষিপ্ত ভাবে গুলি ছোড়ে এবং নিজেরাই নিজেদের গুলিতে মারা যায়। দস্যু কালো বাদুর আসলে আক্রমনই করে নি, তাদের কোন লাশও পাওয়া যায় নি। এখন একদল বলছে কালো বাদুর আক্রমন করেছে আবার অন্যদল বলছে তারা আক্রমনই করে নি। এমন ঘটনা কিভাবে ইতিহাসে স্থান পায় যেখানে কালো বাদুর সম্পর্কে কেউ কিছু জানেই না? তাই এই ঘটনা ইতিহাসে স্থান না পেয়ে জনশ্রুতি হয়েই থাকে। আর ইতিহাসে কয়টা ঘটনাই বা স্থান পেয়েছে?

- আশ্চার্য! তো এই কালো বাদুরের বিষয়ে তোর নানার তো নিশ্চয়ই কিছু জানার কথা।

- নানুকে একবার বলেছিলাম। নানু বলেছিলো, কালো বাদুর বলে কিছু নেই। এটা লোকেরা ছড়িয়েছে। এদের নামে হয়তো অন্য কেউ অপকর্ম করছে।

- তোর নানু যখন বলছে তখন হতেও পারে। তাহলে তো চন্দ্রকে খোজার জন্য কালো বাদুরের পিছনে ছুটে লাভ নেই। আমি ভেবেছিলাম, এবার অন্তত কিডন্যাপারের নামটা জানা গেলো। কিন্তু সেটাও তো হলো না।

রুদ্র চিন্তিত হয়ে বললো- কালো বাদুরের শেষটা আমাকে দেখতে হবে। জানতে হবে সত্যিই কালো বাদুর নামে কিছু আছে কি না? যদি থাকে তাহলে চন্দ্রকে কিডন্যাপ তারা করতেই পারে। নানুর সাথে টক্কর দেয়ার ক্ষমতা হয়তো এদের আছে। কিংবা কালো বাদুরের নাম নিয়ে অন্য কেউ করতে পারে এটা।

ইতিমধ্যে আবুল বেশ কয়েকবার গুপ্ত গুহার পথ খুলে আবার লাগিয়েছে। একবার চেষ্টা করেই পারছে এখন। বেশ কয়েক বার খোলা এবং লাগানোর ফলে সিস্টেমটার জড়তা কাটিয়ে গেছে। এখন একবার আঘাত করলেই মুর্তি পুরোপুরি সরে গিয়ে গুপ্ত পথটা উন্মুক্ত হচ্ছে। রুদ্র এবার গুপ্ত গুহায় নামার জন্য তৈরি হলো। গুহার নিচে নামার পথে টর্চের আলো ফেললো ও। লোহার প্রসস্ত প্যাচানো সিড়িটা পাথুরে মেঝেতে গিয়ে ঠেকেছে। সিড়িটা যেখানে ঠেকেছে তার কিছুটা পশ্চিমে একটা গুহার মুখ। মুখটা অন্ধকার হয়ে আছে। সিড়ি দিয়ে নিচে নামার সময় আবুল ওর কাধে হাত রেখে বললো- আর কাউকে ডেকে আনলে ভালো হতো না?

- হতো। কিন্তু এই গুহার সন্ধান তুই ছাড়া কাউকেই এই মুহুর্তে আমি জানাতে চাই না। এটা গোপন রাখতে হবে।

- ঠিক আছে। সাবধানে যাস্। কোনো সমস্যা দেখলে সাথে সাথে ফিরে আসবি। আমি তৈরি থাকবো। তুই না ফেরা পর্যন্ত আমি স্বস্তি পাবো না।

- টেনশন করিস না। ইনশাল্লাহ আমার কিছু হবে না।

লোহার প্যাচানো সিড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করলো রুদ্র। দেখা যাক্ পশ্চিমের অন্ধকার গুহা ওকে কোথায় নিয়ে যায়।

চলবে......

চন্দ্র উপন্যাসের ভুমিকা ও পর্ব সমুহের সুচিপত্র

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.