![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনের বাগিচা পায়ে দলে হালের অবার্চীন, মুখোশের অন্তরালে তারা মরুয়তে দীন
পাথুরে মেঝেতে নেমে এলো রুদ্র। সিড়ি যেখানে শেষ হয়েছে সেটা ছোট খাটো একটা রুমের সমান। তবে চতুর্ভুজ নয়, পুরোপুরি গোলাকার। দেয়ালে লাইটের আলো ফেললো ও। গোলাকার দেয়ালটা পাথরের তৈরি। পুরো দেয়াল জুরে হিন্দুদের বিভিন্ন মুর্তির অবয়ব ফুটে আছে। দেয়ালের পাথর খোদাই করে এ সব মুর্তি বানানো হয়েছে। মুর্তিগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগলো ও। নিশ্চয়ই মুর্তিগুলোর ভিতরেই গুপ্ত পথটা বন্ধ করার কৌশল লুকানো আছে। কিন্তু অনেকক্ষন চেষ্ঠা করেও কৌশলটা ধরতে পেলো না রুদ্র। গুহার উপর থেকে লাইট ধরে আছে আবুল। চিতকার করে বললো- কিছু পেলি?
আবুলের চিতকার গুহার ভিতরে প্রতিধ্বনি তুললো। রুদ্রও চিতকার করে বললো- নাহ্! বন্ধ করার কৌশলটা ধরতে পারছি না। এটা পরে দেখছি। আমি গুহার ভিতরে ঢুকলাম।
রুদ্রের চিতকারও প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে এলো। গুহার সামনে গিয়ে গুহার মুখে এবার লাইট ধরলো রুদ্র। নিকষ কালো অন্ধকারে বেশি দুর দেখা গেল না। বাতাস ভারি হয়ে আছে। একটা সেদো গন্ধও নাকে ঢুকছে। গুহার ভিতরে পা বাড়ালো এবার। গোলাকার গুহার চতুর্দিকে চুনসুরকি দিয়ে ঢালাই দেয়া হয়েছে। দেয়ালে কিছুদুর পরপর মশাল জালানোর জন্য লোহার চোঙ গাথা আছে। কিছুদুর যেতেই গুহাটার দেয়ালে পাশাপাশি দুটো লোহার দরজা দেখতে পেলো ও। একটা দরজা খুলে ভিতরে উকি দিলো। লাইটের আলোয় দেখলো বেশ বড়সড় একটা রুম। ফাকা। বাকি রুমটাতেও উকি দিলো। সেটাও ফাকা। আবার সামনে এগিয়ে চললো ও। গুহার দেয়ালে আগের মতোই আরো কয়েকটা রুম দেখতে পেলো। অনেকটা পথ যাওয়ার পরে পথটা একটা বন্ধ দরজার সামনে গিয়ে শেষ হলো। দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো ও। চারকোনা একটা করিডোর বাম সাইডে বেকে গেছে। করিডোরের দু দেয়ালে সারি সারি মশালের লোহার চোঙ বসানো আছে। করিডোরের শেষ মাথায় আরেকটা দরজা। এটা কাঠের তৈরি। তবে লোহার পাত দিয়ে মোড়ানো। কাঠ খোদাই করে দরজায় রাজকিয় চিত্র ফুটে তোলা হয়েছে। পুরো চিত্র একেবেকে এসে দরজার ঠিক মাঝামাঝি জায়গায় একটা বৃত্তে এসে মিশেছে। বৃত্তটাতে কাঠের সাথে লোহার পাত বসানো আছে। একটা বৃত্তের মাঝে পরপর আরো চারটে বৃত্ত। মোট পাচটি বৃত্ত। বৃত্তগুলো খাজ কাটা এবং একটা বৃত্তের খাজ আরেকটা বৃত্তের খাজের সাথে মিলে আছে। বৃত্তগুলোকে নড়ানো যায়। কোন বৃত্তকে নড়ালে সেটা উপরে উঠে আসে এবং পরবর্তি খাজের সাথে যখন মিলে যায় তখন সেটা চট করে বসে যাচ্ছে। রুদ্র বুঝতে পারলো এটা একটা লক। পাচটা বৃত্ত একটা নির্দিষ্ট জায়গায় না বসালে এই দরজা খুলবে না। অনেক চেষ্ঠা করেও এই লকটা খুলতে পারলো না ও। আবুলের কথা মনে পড়লো এবার। অনেক দেরি হয়ে গেছে। আবুল হয়তো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে। এই লক পরেও খোলা যাবে। রুদ্র এবার ফিরে চললো।
রুদ্রের ফিরতে দেরি হওয়ায় ভিষন দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছিলো আবুল। নিচে রুদ্রের টর্চের আলো দেখে স্বস্তি ফিরে পেলো। একটু পরে সিড়ির গোড়ায় রুদ্রকেও দেখতে পেলো ও। রুদ্রকে দেখে চিতকার করে বললো- তোর ফিরতে দেখে আমি তো টেনশনে মরে যাচ্ছিলাম। কি পেলি?
রুদ্র কোন কথা না বলে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এলো। তারপর বললো- যা আশা করেছিলাম তার চেয়েও বেশি পেয়েছি।
আবুল উত্তেজনায় ফুটছে। বললো- কি পেয়েছিস?
- আমি লুকিয়ে থাকার জন্য একটা ভালো জায়গা খুজছিলাম। কিন্তু ভিতরে যতো জায়গা আছে তাতে দশ পনেরো জন থাকা যাবে। বেশ কয়েকটা রুম আছে। গুহাটার শেষ মাথায় রাজকিয় ডিজাইনের একটা দরজা আছে কিন্তু সেটা খুলতে পারি নি। ওটাতে একটা লক আছে। লকটা খুলতে পারলে হয়তো আরো কিছু পাওয়া যাবে।
- তোর কি মনে হয় তুই লকটা খুলতে পারবি।
- হয়তো পারবো। তবে অনেক সময় লাগবে।
- আমি কখন ঢুকবো?
- তুই ঢুকতে চাইলে ঢুকতে পারিস। কোন সমস্যা নেই। তবে রাজকিয় দরজাটাতে হাত দিবি না। শুধু দেখে চলে আসবি। হাত দিয়ে কোন বিপদে পড়িস সেটা আমি চাই না।
- ঠিক আছে, তুই থাক। আমি একটু ঘুরে আসি
- যা। তবে তাড়াতাড়ি চলে আসিস।
আবুল টর্চ জালিয়ে গুপ্ত গুহার ভিতরে নেমে গেলো। রুদ্রের ভিতরটা সব সময় মুচড়ে উঠছে। চোখের সামনে জলজল করে ভেসে উঠছে চন্দ্রের মুখটি। কি নিষ্পাপ সেই মুখ! যে ছিলো রাজকন্যার মতো সে এখন কোথায় আছে, কেমন আছে, কি করছে? চন্দ্রকে ছাড়া কিভাবে থাকবে ও? চন্দ্রকে ছাড়া নিজেকে ওর অমাবশ্যার রাতের মতো অন্ধকার মনে হয়। চন্দ্রকে নিয়ে কত সপ্ন বুনেছে, কত রাত বিনিন্দ্রায় কেটেছে- তার হিসেব নেই। চন্দ্র কি বেচে আছে! রুদ্রের হৃদয়টা ছ্যাৎ করে উঠলো। মুখটা হয়ে উঠলো নিষ্ঠুর, চোখদুটো ক্ষ্যাপা শার্দুলের মতো জলে উঠলো। যারা ওর স্ত্রিকে কিডন্যাপ করেছে তাদেরকে ও ছাড়বে না। এক এক করে সবগুলোকে খুন করবে। যারা চন্দ্রকে ওর কাছ থেকে আলাদা করেছে তাদের বাচার অধিকার নেই। হয় নিজে মরবে নয়তো মারবে। কিন্তু যে দস্যু কালো বাদুর চন্দ্রকে অপহরন করেছে তাকে কি ও ধরতে পারবে? যুগের পর যুগ যারা লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে আছে, পুলিশ যাদেরকে শত চেষ্ঠা করেও ধরতে পারে নি তাদের সন্ধান কি ও পাবে? পারবে কি তাদেরকে শাস্তি দিতে? ওকে যে পারতেই হবে। কিন্তু কিভাবে? এবার কালো বাদুরকে ধরার ছক কষতে শুরু করলো রুদ্র। যারা নিজেদেরকে অদৃশ্য বলয়ের ভিতরে আবদ্ধ করে রেখেছে তাদেরকে সেই অদৃশ্য বলয় থেকে টেনে বেড় করতেই হবে। যেভাবেই হোক চন্দ্রকে ওর ফিরে পেতেই হবে। চন্দ্র ছাড়া ও নিঃস্ব, রিক্ত। চোখ বন্ধ করে বেদির উপরে শুয়ে চন্দ্রকে উদ্ধারের পরিকল্পনা করতে লাগলো ও।
বেশ কিছুক্ষন পরে গুপ্ত গুহা থেকে উঠে এলো আবুল। উত্তেজিতভাবে বললো- রাজকিয় দরজাটার ওপাশে নিশ্চয়ই কিছু আছে রুদ্র। গুপ্তধনও থাকতে পারে।
সিড়িতে পদশব্দ শুনেই রুদ্র বুঝতে পেরেছিলো আবুল গুপ্ত গুহা থেকে উঠে আসছে। চোখ বন্ধ করেই বললো- কি আছে অনুমান করা কঠিন। তবে এই গুহাটা কোন জমিদার যে প্রায় সময়ই ব্যবহার করতো তাতে সন্দেহ নেই। তাছাড়া এতোগুলো রুম তৈরি করার মানে হয় না। আর দরজাটাও রাজকিয় হতো না। দরজার ওপাশে গুপ্তধন না থাকলেও বিশেষ কিছু হয়তো নিশ্চয়ই আছে। কারন ওটা সেই বিশেষ ব্যক্তির জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা যে এই গুপ্ত গুহাটা তৈরি করেছে।
আবুল রুদ্রের চোখ বন্ধ করা চিন্তিত মুখের দিকে তাকিয়ে বললো- কি ভাবছিস?
রুদ্র চোখ খুলে বললো- ভাবনার তো শেষ নেই আবুল। চন্দ্রকে কিভাবে উদ্ধার করবো আমি? কিভাবে খুজে বেড় করবো অদৃশ্য কালো বাদুরদেরকে? আর তারাই যে চন্দ্রকে কিডন্যাপ করেছে সেটাও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছি না। সত্যিই কালো বাদুর আছে কি না সেটাও জানি না। চন্দ্র বেচে আছে কি না তাও জানি না। আমি গভির সমুদ্রে পড়ে গেছি। আমি কোন বোধশক্তি পাচ্ছি না। ভিষন ক্লান্ত লাগছে। মনে হচ্ছে শরিরের সমস্ত শক্তি কেউ যেনো চুষে নিয়েছে। পুরো শরির অবশ হয়ে গেছে। শরিরে যে প্রান আছে সেটা বোঝার অনুভুতিটাও যেনো নষ্ট হয়ে গেছে। সব সময় ভিষন পিপাসা লাগছে। পানি খেয়েও সে পিপাসা যাচ্ছে না। বুকের ভিতরে ভিষন যন্ত্রণা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত গলিত লাভা বুককে পুড়িয়ে দিয়ে গলায় উঠে আসছে। ঢোক গিলতেও সমস্যা হচ্ছে। চন্দ্রের মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠলেই আমার হৃদপিন্ড হার্টবিট মিস করছে। এটাই কি ভালোবাসা! এটাই যদি ভালোবাসা হয় তাহলে চন্দ্র তো আমার প্রান। চন্দ্রকে না পেলে আমি নিশ্চিত ধ্বংস হয়ে যাবো আবুল।
রুদ্রের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। বন্ধুর এমন অবস্থা আবুলকেও ভিষন বিচলিত করে তুললো। বললো- চন্দ্রকে আমরা নিশ্চয়ই খুজে পাবো রুদ্র। মন থেকে যে কাজটা করা যায় সেটাতে অবশ্যই সফলতা আসে। চন্দ্রকে আমরা যেভাবেই হোক খুজে বেড় করবো। যতো দিন চন্দ্রকে খুজে পাওয়া যাবে না ততোদিন আমি তোর সাথেই আছি।
- তা হয় না। আমি কবে স্কুলে যাবো তার ঠিক নেই। কিংবা আর কখনো যাবো কিনা তারও নিশ্চয়তা নেই। চন্দ্রকে না পেলে আমার জিবনটা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমার সাথে তুই থাকতে পারিস না, তোর থাকাও সম্ভব নয়। তুই কাল হোস্টেলে চলে না।
- তোকে এমন অবস্থায় রেখে আমি যেতে পারবো না। তুই জানিস না তোকে আমি কতোখানি ভালোবাসি। তুই শুধু আমার বন্ধু নোস, আমার ভাইয়ের মতো। তোকে এ অবস্থায় রেখে আমি হোস্টেলে ফিরতে পারি না। আর ফিরে গিয়েই বা কি লাভ হবে? আমি পড়াতে মন বসাতে পারবো না। সব সময় ছটফট করবো। তার চেয়ে তোর সাথে আছি, এটাই আমার ভালো মনে হচ্ছে।
- আমার জন্য আমি তোকে সমস্যায় ফেলতে পারি না। বেশি দেরি করলে তোর বাড়ির সবাই টেনশন করবে। কাল তুই চলে যা।
- আমি যাচ্ছি না। কাল বাবাকে চিঠি পাঠিয়ে দিবো। দেখা যাক বাবা কি বলে? আমি শুধু তোকে সাহায্য করতে চাই।
- ঠিক আছে। কাল চিঠি পাঠিয়ে দে। তোর বাবা যদি কিছু দিন থাকতে বলে তাহলে থাক। অন্যথায় তোর বাবার চিঠি পাওয়ার পরে একদিনও আর থাকবি না।
- সেটা তখন দেখা যাবে। এখন কি করবি? একটু পরে কিন্তু বেলা ডুববে।
- চল্, এবার বাড়ি যাওয়া যাক্।
আবুল গুপ্ত গুহার পথটা বন্ধ করার জন্য মুর্তির নিচে যখন আঘাত করতে যাবে তখন রুদ্র ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো- দাড়া। আরেক বার দেখি ভিতর থেকে পথটা বন্ধ করা যায় কিনা?
রুদ্র আবার সিড়িতে পা দিলো। তবে একদম নিচের মেঝেতে না নেমে শুধু একটু নামলো। তারপর সিড়ি যেখান থেকে শুরু হয়েছে তার পাশের পাথুরে দেয়ালের অনেকটা জায়গা জুরে পরিক্ষা করতে শুরু করলো। দেয়ালের এ জায়গাটাতেও উপর থেকে নিচ পর্যন্ত খোদাই করে বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এবং চিত্রগুলো বিভিন্ন বৃত্তের সাথে মিশে গেছে। বৃত্তগুলো পরিক্ষা করতেই ও যা আশা করেছিলো সেটা পেয়ে গেলো। একটা বৃত্ত ঘড়ির কাটার বিপরিতে ঘোরাতেই উপরে উঠে এলো। বৃত্তের নিচে সৃষ্টি হলো ছোট্ট একটা গর্ত। সে গর্তে লোহার বৃত্তাকার বেশ পুরু একটা চাকতি দেখতে পেলো ও। চাকতিটিতে চাপ দিতেই সেটা কিছুটা ডেবে গেলো আর সাথে সাথে মুর্তি সরে এসে গুহাটির পথ বন্ধ হয়ে গেলো। উপরে আবুল খুশিতে চিতকার করে উঠলো। নিচ থেকে রুদ্র আবুলের শুধু ভোতা শব্দ শুনতে পেলো। চাকতিটিতে আরেকবার চাপ দিতেই সেটা উপরে আগের জায়গায় চলে এলো আর মুর্তিটা সরে গিয়ে গুহার মুখ আবার উন্মোচিত হয়ে গেলো। গুহার মুখ খুলে যেতেই আবুল খুশিতে বলে উঠলো- কিভাবে পেলি?
রুদ্র উপরে উঠে বললো- এই গুহাটা যে তৈরি করেছে সে নিশ্চয়ই গুহায় ঢুকে মুখটা তাড়াতাড়ি বন্ধ করতে চাইবে। যতোটা তাড়াতাড়ি সম্ভব। অন্যকেউ দেখার আগেই। তাই সিড়ি দিয়ে যতোটা না নামলেই নয় ঠিক ততোটা নেমেই সে পথটা বন্ধ করে দিতে চাইবে। আর রাজকিয় দরজার তালায় যে ডিজাইন আছে ঠিক তেমনটা না হলেও সিড়ির দেয়ালের ডিজাইনেও অনেক বৃত্ত আছে। এ থেকেই মনে হলো সিড়ি থেকে একটু নেমে দেয়ালের বৃত্তগুলো পরিক্ষা করলেই হয়তো পথটা বন্ধের উপায় পেয়ে যাবো। আর পেয়েও গেলাম। এবার বন্ধ করে দে।
আবুল গুপ্ত গুহার পথটা বন্ধ করে দিলো। মন্দির থেকে বেড়িয়ে এলো ওরা। জঙ্গল থেকে বেড় হতে সন্ধ্যে পেরিয়ে গেলো। আবুল রুদ্রের পাশে হাটতে হাটতে বললো- এবার কি করবি?
- এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। আমাদের হাতে তেমন কোন তথ্য নেই। যেটুকু সুত্র পেয়েছি সেগুলোর পিছনে লোক লাগানো হয়েছে। দেখা যাক কোন্ সুত্র চন্দ্রের দিকে ইঙ্গিত করে। তাই সব তথ্য আগে হাতে আসুক। তারপর তথ্যগুলো বিশ্লেষন করে দেখতে হবে আমাদের কোন পথে এগুনো উচিত। কালো বাদুর যদি সত্যিই থেকে থাকে তবে তারা চন্দ্রকে কিডন্যাপ করতে পারে। আবার সার্কাস দলও কাজটা করতে পারে। যারা মেলায় খুন করেছে তারাও করতে পারে। গত বছর দুই জন ছেলে মেয়েকে যারা কিডন্যাপ করেছে তাদের কাজও হতে পারে। অ্যাম্বুলেন্স এবং মাইক্রো কিডন্যাপের সাথে যুক্ত থাকতে পারে। এমনকি মেলায় কেউ দোকানদার সেজেও ওকে কিডন্যাপ করতে পারে। কিংবা সবগুলো একই সুত্রে গাথা হতে পারে। আমার কাছে এটাই মনে হচ্ছে। অথবা এমনটাও হতে পারে আমরা যেগুলো নিয়ে চিন্তা করছি তার একটাও নয়। দেখা যাক্ কি হয়? সব তথ্য হাতে আসলে হয়তো আমরা একটা পরিকল্পনা করতে পারবো। এখন আমরা মাঝ দরিয়ায় হাল বিহিন তরির মতো ঘুরপাক খাচ্ছি। যদি চন্দ্রকে কিডন্যাপের উদ্দেশ্যটা বোঝা যেত তাহলে হয়তো অনেকটা সহজ হতো। কিন্তু সেটা বোঝা যাচ্ছে না। আমরা কেবল ধারনা করতে পারি, কিন্তু সে ধারনার নিশ্চয়তা নেই।
- তোর ধারনাটা কি?
- চন্দ্রকে কিডন্যাপের বিষয়টা নানুর সাথে যুক্ত। কিন্তু নানুকে দিয়ে কিডন্যাপাররা কি করাতে চায় সেটা বোঝা যাচ্ছে না। আবার কালো বাদুর যদি শুধু নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের জন্য এটা করে থাকে তাহলে চন্দ্রকে ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তারা চন্দ্রকে বাচিয়ে রেখে নিজেদের বিপদ কেন ডেকে আনবে? যারা চন্দ্রকে কিডন্যাপ করেছে তারা যদি চন্দ্রকে ফিরিয়ে দেয়ার পরিবর্তে নানুকে দিয়ে কিছু করাতে চায় তাহলেই কেবল চন্দ্রকে তারা বাচিয়ে রাখবে। অন্যথায় নয়। আমার বড্ড ভয় হচ্ছে। চন্দ্র বেচে না থাকলে আমি বাচবো কি করে!
আবুল রুদ্রের কাধে হাত রেখে সান্তনা দিয়ে বললো- চন্দ্র অবশ্যই বেচে আছে। ওকে তুই নিশ্চয়ই পাবি।
নিজের কথা নিজের কানেই যেনো অবিশ্বাস্য লাগলো আবুলের!
চলবে.......
চন্দ্র উপন্যাসের ভুমিকা ও পর্ব সমুহের সুচিপত্র
©somewhere in net ltd.