নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সহজ বাংলাভাষী মানুষ। একজন গর্বিত বাঙ্গালী।

জাহিদুজ্জামান রাব্বি

জীবন কাষ্ঠমঞ্চের এক আনাড়ি অভিনেতা

জাহিদুজ্জামান রাব্বি › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কিছু গল্পের নাম নেই"

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৪

হঠাৎ করেই মেয়েটা হারিয়ে গেলো।
অনেকদিন বাদেই ছেলেটা লক্ষ্য করলো যে মেয়েটা লাপাত্তা।

ভার্সিটিতে ওঠার পর এই মেয়েটাকেই তার ভালো লেগেছিল। প্রথম মেয়েটাকে দেখে ছেলেটার হৃদগহীনে যে কি অদ্ভুত দোলাচাল শুরু হয়েছিলো তা সে আজও অনুভব করে।
গত এক সেমিস্টারে মেয়েটার কোনো দেখা মেলেনি। হঠাৎই যেন কর্পূরের মতো উঁবে গেছে সে। ফেসবুকেও নেই। এর মধ্যে একটি বারের জন্যও তাকে ফোন করা হয়ে ওঠেনি।
কোনো এক সন্ধ্যায় ছেলেটা ফোন করলো। রিসিভ করেই মেয়েটা বলল,

- কেমন আছো?
- চিনতে পেরেছো?
- কেনো চিনবো না? নাম্বার তো সেভ করাই আছে। বললে না তো, কেমন আছো?
- হুম, ভালোই। তুমি?
- ভালোই আছি।
- হঠাৎই খেয়াল করলাম তুমি হারিয়ে গেছো।
- হারাইনি তো। এইতো দিব্বি তোমার সাথে কথা বলছি।
- ক্লাস করছো ঠিক মতো?
- একদমই না।
- তুমি কি জানো! ভার্সিটির প্রতিটা বিল্ডিং তোমাকে মিস করে। গ্যালারী আর ক্যান্টিনটা বড্ড বেশি মিস করে তোমাকে।
- হাহাহা। তুমি সেই আগের মতই আছো। মজা করার ধরনও বদলায়নি।
- কি হয়েছে তবে? ক্লাস কেন করছো না?
- আসলে এই সেমিস্টারই ড্রপ দিয়েছি। বাসা থেকেই দিতে বলেছে।
- ও ... কোনো কারণ?
- বাসা থেকে বিয়ের কথা চলছে। সামনের মাসেই বিয়ে।

মুহুর্তেই হাসিখুশি ভাবটা ম্লান হয়ে যায়। ছেলেটা চুপ করে থাকে।
বুকের বাঁ পাশে কেমন একটা শীতল স্রোত অনুভব করে ও। গলাটা ধরে আসে ওর।

- সত্যিই বিয়ে করছো?
- হ্যাঁ সত্যিই। বাসা থেকে বড্ড প্রেসার দিচ্ছে। ছেলে আগামী মাসেই দেশে ফিরবে। তার পরপরই বিয়ে।

ছেলেটা কি বলবে ভেবে পায়না। সব কেমন এলোমেলো লাগে ওর।
হঠাৎই কোনো এক অদ্ভুদ শক্তি সঞ্চার করে বলে,
-শুনছো?
- হ্যাঁ, বলো।
- প্রথম দেখায় ভালোবাসা হয় কিনা আমার জানা নেই। তবে প্রথম দেখায় ভালোলাগা হয়। তোমার জন্য আমার তেমনটা হয়েছিলো। খুব করেই হয়েছিলো। তোমার হাসি আমায় প্রতিনিয়ত গ্রাস করেছে। তোমার কথাগুলো আমার প্রতিটা রন্ধ্র অনুভব করেছে সবসময়। হয়তো এগুলোই ভালোবাসা।

- এত দিনে তুমি এসব কথা বলছো !! ??
- হুম বলছি। কারণ, এখন আর কোন কিছু হারানোর ভয় লাগছে না।
- মানে?
- কোনো কিছুর হারানো নিশ্চিত হয়ে গেলে তা নিয়ে আর কোনো সংশয় থাকেনা। ভয় থাকেনা।
- আগামী মাসেই আমার বিয়ে।
- তাই-ই হয়তো বলতে পারলাম। না বললে যে ‘না বলার কষ্ট’ নিয়েই আমাকে জীবন পার করতে হতো। এখন নিজেকে খুব হালকা লাগছে। আমায় ভুল বুঝো না।
- আমার কিছুই বলার নেই। কি বলা উচিত ভাবতেও পারছি না।
- কিছুই বলতে হবেনা। আমি বলেছি, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। তুমি ভালো থেকো এটাই আমার কাম্য। আর শোনো, পড়ালেখাটা ছেড়ো না।

কিছুক্ষণ চুপ থেকে মেয়েটাই নিরবতা ভাঙ্গে __

- কাল বিকেল ৪টায় আমার বাসার সামনে একটু আসতে পারবা?
- আমি তোমার বাসা চিনি না।
- আচ্ছা, তবে কনভেনশনের সামনে?
- হুম ... আসবো।

ঠিক ৪টায় মেয়েটা হাতে একটা ব্যাগ নিয়ে এগিয়ে আসে। ছেলেটা তাকিয়ে থাকে।
মেয়েটা এসেই ওর হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে বলে,
- চলো।

ছেলেটা অবাক হয়ে প্রশ্ন করে,
- কোথায়?
- আমি বাসা থেকে বের হয়ে এসেছি তোমার হাত ধরবো বলে। আর শোনো, কোনো কিছু না হারানো অবধি নিশ্চিত হবেনা যে তা হারিয়ে গেছে।

ছেলেটার চোখের কোণে মুক্তোর মতো এক টুকরো পানি, আর মুখে বাচ্চা ছেলের অর্জনের হাসি।
সে শক্ত করে ধরলো মেয়েটার হাত।
বেরিয়ে পরলো দুজন, অজানার উদ্দেশ্যে।
হয়তো কোনো এক কাজী অফিসের খোঁজে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.