নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন সহজ বাংলাভাষী মানুষ। একজন গর্বিত বাঙ্গালী।

জাহিদুজ্জামান রাব্বি

জীবন কাষ্ঠমঞ্চের এক আনাড়ি অভিনেতা

জাহিদুজ্জামান রাব্বি › বিস্তারিত পোস্টঃ

আব্বা>আব্বু>আমি

১৯ শে জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৭

আমি তখন ছোট।
বিরক্তি প্রকাশ করার মতো ছোট।

দাদা গ্রাম থেকে প্রায়ই আসতেন খুলনায়, আমাদের বাসায়।
দাদা আসলে আমার খুশির অন্ত থাকতো না। কারণ, দাদা আসলে খুব সকালে চা-মুড়ির বন্দোবস্ত হতো। নাড়ু বানানো হতো।
দাদা যে কয়দিন থাকতো, এভাবেই রুটিন করা ছিলো। ঐসময় আমারও ঘুম ভেঙ্গে যেতো ঐ সকাল সকাল-ই।
আর দাদার সফেদ লম্বা দাঁড়িতে হাত বুলিয়ে এক পরম আনন্দ পেতাম। যাই হোক, মূল কাহিনীতে ফিরি।

দাদা তখন আমাদের বাসায় এসেছেন।
শরীর বিশেষ ভালো নেই। থেকে থেকে কাঁশেন। ডাক্তার দেখাবেন বলেই আব্বু নিয়ে এসেছেন তাঁকে।
যাই হোক, অতো শতো বুঝে নেয়ার বয়স আমার তখনো হয়নি। আমি শুধু বুঝি দাদা বেড়াতে এসেছেন।

এ পর্যায়ে আমাদের তৎকালীন বাসার কিছু বর্ণণা না দিলেই নয়।
আমরা থাকতাম দু রুমের একটা বাসায়। আব্বুর তখন ছোট খাটো এক চাকরী। তা দিয়ে আমাদের তিন জনের সংসার চলে যায়। অন্তত আমি তখনও কখনো অভাব ফিল করিনি।

দাদা যখন আসতেন, তিনি অন্য রুমেই শুতেন।
সেদিন রাতেও তিনি অন্য রুমেই ছিলেন। কিছুক্ষণ পরপর-ই কাঁশেন। কাঁশি আর থামে না।
ছোট ফ্লাট হওয়ায়, পুরো ফ্লাট জুড়েই শব্দ ছড়িয়ে পড়ে।

হঠাৎ কাঁশির বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
কিছুক্ষণ বিছানায় এদিকওদিক করলাম, কিন্তু কাঁশিও থামে না, ঘুমও আসে না।
একসময় বিরক্ত হয়ে মুখ দিয়ে "ধ্যাত!" টাইপের শব্দ বের হয়ে গেলো।

তখন চোখ মেলে দেখি, আব্বু আলমারির বক্স থেকে ফাইল বের করছিলেন, ঐ অবস্থায় তিনি ঘাড় ঘুড়িয়ে আমার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে আছেন। দেখেই আমার আত্মারাম খাঁচা ছাড়া অবস্থা।
মুহুর্তেই আমি টুপ করে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। সে রাতের আরকিছু আমার মনে নেই।

সেরাতের সেই চোখের চাহনি আমি বুঝিনি। শুধু ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছিলাম।
কিন্তু আজ বুঝি।
বুঝি যে,
সব কিছু সহ্য করা যায় কিন্তু বাবার প্রতি অন্যের সামান্যতম বিরক্তি-অবজ্ঞা সহ্য করা যায় না।
হোক সে নিজের সন্তান বা স্ত্রী।

#Happy Father's Day.

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.