নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধা জাহানের প্রশাসকের বউয়ের বাচ্চাদের জন্য পিঠাপুলি বানিয়ে দেয়ার শখ আর পারিষদ ডেকে নিজের ভাতা হ্রাসকরনের মানসিকতা

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪০



দ্বিতীয় খলিফা, খলিফাতুল মুসলিমীন, আমিরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর শাসনকাল। ক্ষমতা গ্রহনের পূর্বে কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি। ব্যবসা বানিজ্যের মাধ্যমে তিনি ভাল লাভবান হতেন। তাঁর পরিবার পরিজনও সাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতো। খাবার দাবার, পোষাক আশাকসহ যাবতীয় বিষয়ে তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের পরিপাটিভাব লক্ষ্যনীয় ছিল। বনেদি ব্যবসায়ী হিসেবে যা থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু যেদিন থেকে মুসলমানদের আমীর নিযুক্ত হলেন সেদিন থেকে তাঁর ব্যবসা-বানিজ্য ক্লোজড। খলিফাতুল মুসলিমীন পদে সমাসীন হওয়ায় তাঁর জন্য মাসিক ভাতা নির্ধারিত হলো বায়তুল মাল থেকে।

আমিরুল মুমিনীন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর স্ত্রী এক দিন বললেন, 'আমিরুল মুমিনীন, আপনিও আমীর হলেন আমাদের দিনকালও খারাপ হতে লাগলো। কত দিন ভালো খাবার খাওয়া হয় না বলতে পারেন? কত দিন হয়ে গেল, বাচ্চাদের একটু পিঠা পুলি বানিয়ে দেয়া হয় না। কত দিন ভালো পোষাক পরি না, আপনি কি একটু খোঁজ খবর নেন?'

অর্ধ জাহানের শাসক উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু উত্তর করলেন, 'প্রিয়তমা স্ত্রী, এর চেয়ে বেশী করার কিংবা দেবার সামর্থ্য আমার নাই।'

শুধু এতটুকু বলেই ক্ষান্ত নন। খলিফাতুল মুমিনীন বলে চললেন, 'জেনে রেখো, দূরবর্তী নদী তীরে একটি চর্মরোগগ্রস্থ ছাগল যদি অসুস্থ হয়ে কষ্ট পায়, কিংবা আফ্রিকার কোন ভাঙ্গা রাস্তায় চলতে গিয়ে একটি ঘোড়াও যদি সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে শেষ দিবসে আমি উমারকে আল্লাহর দরবারে আসামী হিসাবে দাঁড়াতে হবে।'

পেরিয়ে গেল অনেকগুলো দিন। খলিফাতুল মুমিনীনের স্ত্রী এক দিন ঘরে ভালো খাবার দাবারের আয়োজন করলেন। তা পরিবেশন করলেন আমিরুল মুমেনিন এর সামনে।

উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলেন, 'এ খাবার কোথায় পেয়েছো? বায়তুল মাল থেকে আবার টাকা আনাওনি তো?'

স্ত্রী বললেন, 'হে আমিরুল মুমেনিন, আমি আপনার স্ত্রী হতে পারি কিন্তু যেসব লোক আপনি বায়তুল মাল পাহারা দেবার জন্য রেখেছেন তাদের কাছে আমার আলাদা কোন মূল্য নেই, তাদের কাছে মূল্য শুধু সততার। আমি প্রতি মাসের খরচ হতে কিছু পয়সা বাঁচিয়ে কয়েক মাস পর আজকে এই খাবারের আয়োজন করতে পেরেছি।'

উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু খাবার মুখে নিলেন না, দৌড়ে গেলেন মসজিদে নববীর দিকে। মুয়াজ্জিনকে নির্দেশ দিলেন, 'জরুরী ই'লান জানিয়ে দাও।'

খলিফার জরুরি তলব জানিয়ে দেয়া হল। সকলে ই'লান শুনে উপস্থিত হলেন।

আমিরুল মুমিনীন বললেন, 'হে পরিষদের নেতৃবৃন্দ, আমি আপনদের তখনই বলেছি, আমার মাসিক ভাতা বেশী হয়ে যাচ্ছে। এখন দেখুন, আমার স্ত্রী ভাতা থেকে জমাতে পারছে, এমনকি তা দিয়ে আমাদের জন্য ভালো খাবার পর্যন্ত তৈরী করেছে, এখন হয় আমার ভাতা কমানো হোক, অন্যথায় আমি ইস্তফা দিবো।'

আজকের দিনে বড্ড বেশী মনে পড়ছে আমিরুল মুমিনীন হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর মত মানবতার প্রকৃত বন্ধু, ন্যায়-ইনসাফ আর সুশাসন আর সত্যিকার আদর্শের মূর্ত প্রতিককে। হৃদয়ে ঝড় তোলা সেই আদর্শ আজ কোথায়? আজকের পৃথিবীর শাসকগোষ্ঠীর আয়েশি জীবন যাপন দেখলে অন্তর ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়া খলিফাতুল মুসলিমীনদের সেই আদর্শগুলো খুব বেশি করে মনে যায়! খুব বেশি করে কাঁদায়! খুব বেশি করে ভাবায়! যুগপত বিচলিত বিমোহিত করে!

হৃদয়ের অর্গল খুলে বলতে ইচ্ছে করে! ফরিয়াদের হাত উঁচু করে মহান মালিকের দরগাহে বিনীত আরজু পেশ করতে ইচ্ছে হয়, 'হে আসমান জমিন কুল কায়েনাতের রব, হে তামাম বিশ্ব জগতের মালিক, পৃথিবী আজ বিভীষিকাময়! এখানের বাসিন্দাগন বড্ড ক্লান্ত! অন্যায় অবিচার অনাচার এখানকার বাসিন্দাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে প্রতিনিয়ত! হে মালিক মহিয়ান, হে দয়ালু মেহেরবান, আমাদের জন্য উমারের মত দরাজ দিল ইনসাফের প্রতিভূ আরেকজনকে পাঠান। ঘুনে ধরা পৃথিবীকে যিনি বাঁচিয়ে তুলবেন। গুমরে গুমরে কেঁদে চলা মানবতার আধমরা অবয়বে জলসিঞ্চন করে যিনি সতেজ পরিপাটি করবেন পুনরায়।'

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯

শামচুল হক বলেছেন: চমৎকার ঘটনা তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৮

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনাকেও ধন্যবাদ পোস্টে এসে মন্তব্য রেখে যাওয়ায়। অনেক ভাল থাকবেন। নিরন্তর প্রার্থনা।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৩

মাহিরাহি বলেছেন: I can not give you the reference of Ram Chandar or Krishna, because they were not historical figures. I can not help it but to present to you the names of (Hazrat) Abu Bakar (RA) and (Hazrat) Umar Farooq (RA). They were leaders of a vast Empire, yet they lived a life of austerity.
― ​
Mahatma Gandhi

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৩

নতুন নকিব বলেছেন:



ইসলাম ধর্মের প্রথম এবং দ্বিতীয় খলিফা আবু বকর এবং উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা সম্পর্কে উপমহাদেশের অন্যতম গুনীজন মহাত্মা গান্ধীর অসাধারন মূল্যায়ন তুলে ধরলেন। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৩| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭

মাহিরাহি বলেছেন: Stating that he was deeply impressed by the governance of Hazrat Umar bin Khattab, Arvind Kejriwal, the chief minister of Delhi, said that he would try to emulate the second Caliph of the Muslims for the betterment of the people.

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



খলিফাতুল মুমিনীনদের হৃদয়স্পর্শী জীবনাচার দ্বারা কত মানুষই তো যুগে যুগে প্রভাবিত হলেন। হতে থাকবেন। সত্যানুসন্ধানীগনই সত্যের পথে ছুটে থাকেন অনুসন্ধানী মন নিয়ে।

শুভকামনা অন্তহীন।

৪| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: হৃদয় স্পর্শক।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৭

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, অাপনাকে মোবারকবাদ। শুভকামনা জানবেন।

৫| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৬

রাজীব নুর বলেছেন: গৌতম বুদ্ধ গৃহত্যাগ করার পর একবার গৃহে এসেছিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী তাঁর পুত্র রাহুলকে বলেছিলেন বুদ্ধের অনেক সম্পদ আছে, তাঁর কাছ থেকে তা চেয়ে নিতে। সেই মতো রাহুল বুদ্ধের কাছে সম্পদ চাইলে বুদ্ধ বলেছিলেন আত্মদীপ ভব। নিজেকে প্রজ্জ্বলিত করো।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮

নতুন নকিব বলেছেন:



ভাল কথা বলেছেন গৌতম বুদ্ধ। আপনি কেমন আছেন?

আপনার জন্য শুভকামনা।

৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৩২

সনেট কবি বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন । আল্লাহ আপনার মঙ্গল করুন।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



মোবারকবাদ। আগমনে মুগ্ধতা। শুভকামনা নিরন্তর।

৭| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২১

আল ইফরান বলেছেন: বেশ চমৎকার লিখেছেন । আমাদের মুসলমান দেশের শাসকরা যদি এখান থেকে শিক্ষা নিতো তাহলে দুনিয়া এবং আখেরাত- কোথাও আমাদের বেইজ্জত হওয়ার ভয় থাকতো না।
আল্লাহ আমাদের অন্তর্দৃস্টি উন্মোচনের তাওফিক দান করুন।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩০

নতুন নকিব বলেছেন:



আপনার মূল্যবান মন্তব্য হৃদয় ছুঁয়ে গেল। অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

ভাল থাকবেন, প্রত্যাশা নিরন্তর।

৮| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৩

ভিন্নচিন্তা ভিন্নমত ভিন্নপথ বলেছেন: @ নতুন নকিব-জনাব,একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক রাষ্ট্রের শাসকের সাথে সপ্তম শতাব্দীর খলিফা-র তুলনা করা অর্থহীন। যতদিন মুসলিম বিশ্বে বাদশাহ-সুলতান-আমীর-শেখ শাসিত শাসন ব্যবস্থা চালু থাকবে, ততদিন খলিফা উমরের মতো শাসকের জন্য আপনাকে কান্নাকাটি করে যেতে হবে।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৯

নতুন নকিব বলেছেন:



জ্বি, সেই কান্নাকাটিটাই তো করে যাচ্ছি, দাদা।

একবিংশ শতাব্দীর আধুনিক রাষ্ট্রের শাসকের সাথে সপ্তম শতাব্দীর খলিফা-র তুলনা করা অর্থহীন।

--- ইতিহাস জানতে হবে, দাদাভাই। জানতে হবে। প্রজন্মকে সোনালী দিনের এসব ইতিহাস না শোনালে তারা জানবে কি করে? ইতিহাসের চর্চা করা মানেই কি তুলনা করা? সপ্তম শতাব্দি কেন, মানবতার গল্প আর শিক্ষা পেতে খৃষ্টপূর্বাব্দে ফিরে যেতে হলে তাতেও আপত্তি তোলার কথা না। যদি কি না আপনার সত্যিকারের ভিউ হয় মানবতার মুক্তি সাধন।

যতদিন মুসলিম বিশ্বে বাদশাহ-সুলতান-আমীর-শেখ শাসিত শাসন ব্যবস্থা চালু থাকবে, ততদিন খলিফা উমরের মতো শাসকের জন্য আপনাকে কান্নাকাটি করে যেতে হবে।

--- এই অংশে আপনি কিন্তু একটি সত্যকে খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। গড্ডালিকাপ্রবাহে গা ভাসানো আজকের যুগের শাসকগনের জন্য খলিফাতুল মুমিনীনদের জীবন থেকে শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু রয়েছে। অবশ্য যদি তারা সেটাকে উপযুক্ত জ্ঞান করে তা থেকে উপদেশ গ্রহন করেন।

শুভকামনা আপনার জন্য।

৯| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯

আরোগ্য বলেছেন: ইসলাম ধর্ম স্বয়ংসম্পূর্ণ আর আমাদের কাজকর্ম ত্রুটিপূর্ণ।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪২

নতুন নকিব বলেছেন:



ঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ। আমাদের ত্রুটিগুলো কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা রাখতে হবে। সত্যিকারের আদর্শ জীবনাচারের সর্বত্র সর্বক্ষেত্রে ধারন করতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.