নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
গল্প: ''আল্লাহ্ পাক যা করেন ভালোর জন্যই করেন!''
অনেক অনেক দিন আগের কথা। এক এলাকায় রাজত্ব করতেন প্রতাপশালী এক রাজা। তার ছিল এক চাকর। চাকরটা সুখে দু:খে যে কোন অবস্থাই হোক না কেন, সব সময় রাজাকে একটি কথা প্রায়শই বলতো, “রাজা মশাই, কখনো মন খারাপ করবেন না। কেননা আল্লাহ পাক যা করেন তার সব কিছুই নিখুঁত ও সঠিক।”
একবার রাজা মশাই বেরুলেন শিকার করতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে শিকারে যেয়ে নিজেরাই এক হিংস্র প্রাণীর আক্রমণের শিকার হলো। রাজার চাকর সেই প্রাণীকে মারতে পারলেও, ততক্ষণে রাজা তার একটা আঙুল খুইয়ে বসেছেন। রাগে-যন্ত্রণায়-ক্ষোভে রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠেন, “আল্লাহ যদি ভালোই হবে তাহলে আজকে শিকারে এসে আমার আঙুল হারাতে হতো না।”
চাকর বলল, “এতকিছুর পরও আমি শুধু আপনাকে এটাই বলবো, আল্লাহ সব সময়ই ভালো ও সঠিক কাজই করেন; কোনো ভুল করেন না।''
চাকরের এই কথায় রাজা মশাই আরও বিরক্ত হলেন। চাকরকে জেলে পাঠানোর হুকুম দিলেন।
অনেক দিন পেরিয়ে গেল। শিকার করা তার নেশা। শিকার না করলে ভালো লাগে না। তাই আবার একদিন রাজা মশাই শিকারে বের হলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যও যেন তার পিছু ছাড়ে না। এবার তিনি একদল বন্য মানুষের হাতে বন্দি হলেন। এরা তাদের দেবদেবির উদ্দেশ্যে মানুষ বলি দিত। তারা রাজা মশাইকে বলি দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু রাজা মশাইকে বলি দিতে নিয়ে তারা দেখলো যে, রাজা মশাইয়ের হাতের একটা আঙুলই যে নেই!
''সর্বনাশ! সর্বনাশ হয়ে গেছে!'' -চিতকার করে উঠলেন বন্য মানুষদের সরদার! দলের সকলকে ডেকে নির্দেশ দিলেন, ''আঙুল হারা এই বিকলাঙ্গ অপয়াকে দিয়ে বলির কাজ হবে না। দেবতা একে গ্রহন করবেন না। একে এখনি জঙ্গলের বাইরে বের করে দাও।''
সরদারের নির্দেশমত তারা রাজাকে বনের বাইরে নিয়ে ছেড়ে দিল। রাজা কোনোমতে জানে বেঁচে প্রাসাদে ফিরে এলেন। প্রাসাদে ফিরে এসে প্রথমেই তিনি তার সেই পুরোনো চাকরকে মুক্ত করে তার সম্মুখে উপস্থিত করার হুকুম দিলেন। চাকরকে তার সামনে আনা হলে রাজা মশাই চাকরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ”ভাই, আল্লাহ আসলেই ভালো। তোমার কথা ১০০% সঠিক। তুমি একথা বলতে আর আমি বিরক্ত হতাম। কিন্তু সত্যি সত্যিই যে আল্লাহ পাক নির্ভুল এবং নিখুঁত, আজ তার প্রমান হাতে নাতে পেয়েছি। আমি আজ প্রায় মরতেই বসেছিলাম। কিন্তু হাতের একটি আঙুল না-থাকার কারণে প্রাণ নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছি।''
একটু থেমে রাজা মশাই আবার যোগ করলেন, ''তবে, তোমার কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছে। আল্লাহ পাক ভালো, এটা তো বুঝলাম। কিন্তু তাহলে তিনি আমাকে দিয়ে তোমার মত একজন ভালো লোককে জেলে পুরলেন কেন?”
চাকর বলল, “রাজা মশাই, আমি যদি আজ আপনার সাথে থাকতাম, তাহলে আপনার বদলে আজ আমি কোরবান হয়ে যেতাম। আপনার আঙুল ছিল না, কিন্তু আমার তো ছিল। কাজেই আল্লাহ যা করেন সেটাই সঠিক, তিনি কখনো কোনো ভুল করেন না।”
রাজা মশাই মাথা নেড়ে চাকরের কথায় সম্মতি দিলেন। অবলীলায় তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল- ''ঠিক বলেছো ঠিক। তুমি সঠিক বলেছো। আল্লাহ পাক সত্য, সঠিক এবং নি:সন্দেহে নিখুঁত।''
ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০১
নতুন নকিব বলেছেন:
ওয়াআলাইকুমুসসালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
সকাল সকাল আপনার দেখা আনন্দিত করলো। কেমন আছেন?
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০২
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর গল্প।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৫
নতুন নকিব বলেছেন:
গতকাল আপনি ভোট দিতে পেরেছেন বলে একটি পোস্টে জানিয়েছিলেন। ধন্যবাদ।
আপনাকে ভাগ্যবান না বলে উপায় নেই।
পোস্টে আগমনে শুভকামনা। অনেক ভালো থাকুন।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৫
হাবিব বলেছেন:
আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর রহমতে স্বজনদের দোয়ায় ভালো আছি.....
আশা করি আপনিও ভালো আছেন........
আসলেই তাই "আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
মন্দ যা কিছু হয় সব আমাদের হাতের কামাই........."
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আসলেই তাই "আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
মন্দ যা কিছু হয় সব আমাদের হাতের কামাই........."
--- ঠিক বলেছেন। এই বিশ্বাসটুকু অনেক বড়।
৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১১
অক্পটে বলেছেন: সত্যিই হয়তো আমাদের জন্য ভাল কিছু রয়েছে। হাসিনা হেরে(!) যাওয়ার মধ্যেও ভাল কিছু নিহিত আছে বলে মনে করি। খুব সম্ভবত অত্যাচারীর জন্য কোন সাজা অপেক্ষা করছে। ইতিহাস বলে কোন অত্যাচারীই রেহাই পায়নি। তাহলে সেটা এই সময়ে এসে তো আর মিথ্যে হতে পারেনা।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
রাজনীতি করি না। রাজনীতি নিয়ে মন্তব্যও পারতপক্ষে করি না।
মহান আল্লাহর কাছে শুধু দুআ করি, 'হে আল্লাহ আপনি আমাদের চরিত্র সংশোধন করে দিন। এই জাতিকে সত্যিকারের মানুষ হবার তাওফিক দান করুন। হিংসা বিভেদ ভুলে মানবতার পক্ষে সত্যের পক্ষে দাড়াবার সাহস এবং শক্তি দিন। মিথ্যার প্রলোভনে সত্যকে ছেড়ে নাহি যাই, সেই তাওফিক চাই, খোদা, তাওফিক চাই।'
৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১২
সেলিম৮৩ বলেছেন: গল্পে অাপনি কি ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন তা হয়তো একটু বোঝা গেল।
যাহোক, অারো ১০/১৫ বছর এমনই যাবে। তারপর হয়তো কোনটা ভালো ছিলো অার কোনটা মন্দ ছিলো বোঝা যাবে।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৭
নতুন নকিব বলেছেন:
নির্বাচনের ফলাফল কিংবা নির্বাচনের কোনো বিষয়ের সাথে এই গল্পের একচুয়ালি কোনো যোগসূত্র কল্পনা করিনি। কেউ যদি করে থাকেন, সেটা তার পারসোনাল ব্যাপার।
পোস্টে আপনার উপস্থিতিতে ধন্যবাদ।
৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: গল্পটা সুন্দর ও যথার্থ।
তবে তা নির্বাচণের সাতে যদি কেউ মিলিয়ে থাকেন তবে ভুল করবেন।
আল্লাহ যা করেন অবশ্যই ভালর জন্যই করেন।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩১
নতুন নকিব বলেছেন:
সঠিক বলেছেন। ধন্যবাদ সরকার সাহেব।
আমার কাছে গল্পটি ভালো লেগেছে বলেই শেয়ার করেছি। নির্বাচনের সাথে এই গল্পের আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। সম্পর্ক যে নেই, সেটা গল্পটি পড়ে একটু চিন্তা করলেই বুঝাও যায়। এই গল্পের প্লাটফর্ম নির্বাচনের কোনো বিষয়কে নির্দেশ করে না।
ভালো থাকুন।
৭| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নীতি কথা ভালো লাগলো।
আমাদের আল্লাহর উপর পূর্ণ ঈমান নিয়ে
সকল কাজ করতে হবে। ফলাফল যাই হোকনা
কেন মনে রাখতে হবে আল্লাহ যা করেন তা মানুষের
মঙ্গলের জন্যই করেন।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৩
নতুন নকিব বলেছেন:
নূরু ভাই, মন্তব্যে আসায় অভিনন্দন। সুন্দর বলেছেন- আমাদের আল্লাহর উপর পূর্ণ ঈমান নিয়ে সকল কাজ করতে হবে। ফলাফল যাই হোক না কেন মনে রাখতে হবে আল্লাহ যা করেন তা মানুষের মঙ্গলের জন্যই করেন।
৮| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০৩
আফসানা মারিয়া বলেছেন: হ্যা, আল্লাহ কখনো অবিচার করেন না। সবই সময়ের ব্যাপার।
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫
নতুন নকিব বলেছেন:
সঠিক বলেছেন- আল্লাহ কখনো অবিচার করেন না।
ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।
৯| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩১
নেয়ামুল নাহিদ বলেছেন: চমৎকার গল্প, মন ভালো করে দেওয়ার মত
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনিও চমৎকার মানুষ। শুভচিন্তার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। সুন্দর কমেন্টে কৃতজ্ঞতা।
১০| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:০৪
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: গল্পটি আমি এবং আমার মা পড়েছি, খুব সুন্দর একটি গল্প
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২২
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার আম্মাকে সালাম। তাকে আমাদের জন্য দুআ করতে বলবেন।
অনেক ভালো থাকুন।
১১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১০
মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার লেখা !
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:২৪
নতুন নকিব বলেছেন:
আপনার দুর্বোধ্য সব বাংলা শব্দের সমাহারে চমকপ্রদ কবিতার নিবিষ্ট পাঠক।
ভালো থাকুন শক্তিমান কবি।
১২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩২
সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: যদিও আগেই পড়া ছিল তারপরও ভালো লাগল।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪২
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যে আসায়।
শুভকামনা জানবেন।
১৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:১৭
নতুন নকিব বলেছেন: থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের বিষয়ে অনেকেরই জানার আগ্রহ। কেউ কেউ জানতে চেয়ে প্রশ্নও করেছেন। বিষয়টি নিয়ে একটি পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে লেখাটি পুরোপুরি গোছাতে না পারায় পোস্ট না দিয়ে কমেন্ট আকারে এখানে রেখে দেয়া হল-
ভূমিকা:
ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ রাত ১২.০১ মিনিট হওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় আরেকটি নতুন সন গণনা। একটি বছরকে পশ্চাতে ফেলে রেখে মানবজাতি এগিয়ে যায় সম্মুখপানে। আমাদের দেশে সম্প্রতি বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নামে সাধারণত যা হয়, (ফ্যাশন শো, ফায়ার প্লে, ডিজে) এগুলো সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি কী? এগুলো মুসলমানদের মৌলিক চেতনা-বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক না সঙ্গতিপূর্ণ? আমাদের সমাজের ধনিক শ্রেনির কিছু অতি আধুনিক উঠতি বয়সী যুবক যুবতীর নিকট এই দিবসটি হয়ে ওঠে বেহায়াপনার অন্যতম উপকরন। ইতোপূর্বেকার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতায় এই দিবসটির দু:সহ কিছু স্মৃতিও আমাদের রয়েছে, যা এখনো আমাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। সঙ্গত কারনেই আজকের আলোচনা অতি গুরুত্বপূর্ন এই বিষয়টিকে সামনে রেখে।
থার্টি ফাস্ট নাইট ও ১লা জানুয়ারি পালনের ইতিহাস:
ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী, খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজার সর্বপ্রথম ইংরেজী নববর্ষ উৎসবের প্রচলন করে। ১লা জানুয়ারি পাকাপোক্তভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর। ধীরে ধীরে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার (খ্রিষ্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক, (বলাবাহুল্য, যার বিবাহ বহির্ভূত একটি সন্তান ছিল) পোপ গ্রেগরীর নামানুসারে যে ক্যালেন্ডার) অনুযায়ী নববর্ষ পালন করা হয়ে আসছে। ইরানে নওরোজ বা নববর্ষ শুরু হয় পুরনো বছরের শেষ বুধবার এবং উৎসব চলতে থাকে নতুন বছরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত। সাধারণভাবে প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জমশীদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এই নওরোজের প্রবর্তন করেছিলেন। মেসোপটেমিয়ায় আকিতু বা নববর্ষ শুরু হতো নতুন চাঁদের সঙ্গে। ব্যাবিলনে নববর্ষ শুরু হতো মহাবিষুবের দিনে ২০ মার্চ। অ্যাসিরিয়ায় শুরু হতো জলবিষুবের দিনে ২১ সেপ্টেম্বর। মিসর, ফিনিসিয়া ও পারসিকদের নতুন বছর শুরু হতো ২১ সেপ্টেম্বর। গ্রীকদের নববর্ষ শুরু হতো খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত ২১ ডিসেম্বর। রোমান প্রজাতন্ত্রের পঞ্জিকা অনুযায়ী নববর্ষ শুরু হতো ১ মার্চ এবং খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৩ এর পরে ১ জানুয়ারিতে। মধ্যযুগে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে নববর্ষ শুরু হতো ২৫ মার্চ।
বছরের বিদায় বেলায় নববর্ষের প্রাক্কালে একজন মুমিনের অনুভূতি:
বর্তমানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নামে যে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, হৈ-হুল্লোড় এবং নগ্নতার প্রদর্শন চলে, তা কি একজন নিম্নস্তরের মুমিনের জন্যও শোভা পায়? পেতে পারে? পাওয়ার প্রশ্ন আসতে পারে? বরং বছরের সূচনালগ্নে যখন একজন মুমিন উপস্থিত হয়, তখন তার অনুভূতি এই ধরণের হওয়া উচিত, যে দিনগুলো আমার শেষ হয়ে গেল, তা তো আমার জীবনেরই একটি মূল্যবান অংশ। একটি বছর শেষ হওয়ার সরল অর্থ, আমার জীবন নামক প্রাসাদ থেকে ৩৬৫ দিনে ৩৬৫ টি মূল্যবান ইট পাথর যেন খসে পড়ল! আহ, আমার জীবন সংকীর্ণ হয়ে এলো! হায় হায় বিগত এই একটি বছরে আমি কতটুকু কি ভালো কাজ করতে পেরেছি! আমি তো অনন্ত পথের যাত্রী! আমার সওদা কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি! আহ, এই দিন তো আনন্দের নয়, এ তে চিন্তার ব্যাপার! এখন আনন্দ-উল্লাসের সময় নয়, বরং সময় হল, হিসাব-নিকাশের! কাজেই একটি বছরের উপসংহারে দাঁড়িয়ে মুমিনের মানসপটে প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, একটি বছরকে তো আমি শেষ করেছি, কিন্তু যে মহান উদ্দেশ্যে (তাঁর ইবাদত-বন্দেগীর জন্য) মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাকে এই বসুন্ধরায় পাঠালেন, সে পথে কতটুকু অগ্রসর হয়েছি? সে পথে আমার প্রাপ্তি কতটুকু? ইসলামী জাহানের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু (মৃ-২৩ হি.) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে তাঁর খুৎবায় এক ঐতিহাসিক উক্তি উপস্থাপন করেছিলেন, যা ইমাম তিরমিযী (রহ.) (২০৯-২৭৯ হি.) স্বীয় গ্রন্থ তিরমিযী শরীফ এবং ইমাম ইবনে আবী শায়বা (রহ.) (মৃ.-২৩৫ হি.) স্বীয় গ্রন্থ মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বায় উল্লেখ করেন। হযরত উমার রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেছিলেন, হিসাব চাওয়ার পূর্বে নিজের হিসাব করে নাও, তোমার কাজ পরিমাপ করার পূর্বে নিজেই নিজের কাজের পরিমাপ করে নাও। (জামে’ তিরমিযী ৪/৬৩৮)
ইসলাম ধর্মে উৎসবের রূপরেখা:
আমরা অনেকে উপলব্ধি না করলেও উৎসব সাধারণত একটি জাতির ধর্মীয় মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত হয়। উৎসবের উপলক্ষগুলো খোঁজ করলে পাওয়া যাবে, উৎসব পালনকারী জাতির ধমনীতে প্রবাহিত ধর্মীয় অনুভূতি, সংস্কার ও ধ্যান-ধারণার ছোঁয়া। যেমন, খৃস্টানদের 'বড়দিন' তাদের বিশ্বাস মতে- 'স্রষ্টার পুত্রের জন্মদিন'। ইহুদীদের নববর্ষ 'রোজ হাশানাহ' ওল্ড টেষ্টামেন্টে বর্ণিত ইহুদীদের ধর্মীয় পবিত্র দিন ‘সাবাত’ হিসেবে পালিত হয়। এমনিভাবে প্রায় সব জাতির উৎসবের মাঝেই ধর্মীয় চিন্তাধারা খুঁজে পাওয়া যাবে। আর এজন্যই প্রিয় নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বর্থহীনভাবে মুসলিম জাতির উৎসব নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ফলে অন্যদের উৎসব এ জাতির সংস্কৃতিতে অনুপ্রবেশের কোন সুযোগ নেই। রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, 'প্রত্যেক জাতির নিজস্ব ঈদ (উৎসব) রয়েছে, আর এটা (ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা) আমাদের মুসলিম জাতির ঈদ।' (বুখারি শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
এ হাদিস থেকে মুসলিম এবং অমুসলিম জাতির উৎসবের মৌলিক একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য প্রতিভাত হয়। অমুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসবের দিনগুলো হচ্ছে, তাদের জন্য। এ দিনে তারা নৈতিকতার সব বাঁধ ভেঙ্গে দিয়ে অশ্লীল কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, আর এই কর্মকান্ডের অবধারিত রূপ হচ্ছে, মদ্যপান ও ব্যভিচার। অপরদিকে মুসলিম জাতির উৎসব হচ্ছে, ইবাদতের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। বিষয়টিকে আমাদের গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। ইসলাম কেবল কিছু আচার-অনুষ্ঠান এবং আনুষ্ঠানিকতার নাম নয়, বরং তা মানুষের পুরো জীবনকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নির্দেশনা অনুযায়ী বিন্যস্ত ও সজ্জিত করতে নির্দেশ দেয়। সে জন্য মুসলিম জাতির আনন্দ-উৎসব আল্লাহ তাআ'লার বিরুদ্ধাচরণ ও অশ্লীলতায় নিহিত নয়, বরং আল্লাহ পাকের নির্দেশ পালন ও তাঁর নিষেধাবলী থেকে বিরত থাকার মাঝেই নিহিত। তাই তাদের প্রতিটি কাজের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে জড়িয়ে থাকবে তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের ঈমান, আখিরাতের প্রতি তাদের অবিচল বিশ্বাস, আল্লাহ তাআ'লার প্রতি ভয় এবং নিখাঁদ ভালোবাসা।
থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করা:
উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ পালন করা নিঃসন্দেহে পরিত্যাজ্য। এটা বিজাতীয় উৎসব। বিজাতীয় উৎসবে যারা অংশ গ্রহণ করবে, তারা তাদের দলভূক্ত বলে গন্য হবেন। কারণ নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, 'যে অন্য জাতির সাথে আচার-আচরণে, কৃষ্টি-কালচারে সামঞ্জস্য গ্রহণ করবে সে তাদের দলভূক্ত বিবেচিত হবে।' (সুনানে আবু দাউদ)
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহর দ্বর্থহীন ঘোষণা, 'প্রত্যেক জাতির জন্য আমি একটি নির্দিষ্ট বিধান এবং সুস্পষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি।' (সুরা মায়িদাহ আয়াত-৪৮)
তাই, একজন মুসলিম খৃস্টান পাদ্রী পোপ গ্রেগরিয়ান এর নামানুসারে যে ক্যালেন্ডার, সেই ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ইংরেজী ১ জানুয়ারিকে নববর্ষ হিসেবে পালন করতে পারেন না।
বর্তমান বাংলাদেশের হালচাল:
বাংলাদেশের মত একটি বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রে এ রাতে জায়গায় জায়গায়, বিভিন্ন স্পটে উচ্ছৃংখল কিছু যুবক-যুবতীদের বেহায়াপনায় বাঁধা সৃষ্টি করতে পুলিশ-র্যাব নিযুক্ত করতে হয়। পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রায় সব অভিজাত হোটেল যথা, ওয়েস্টিন, রুপসী বাংলা, প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁও, আগ্রাবাদে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য টিকেট বিক্রি করা হয়। টিকেকের মূল্য ত্রিশ হাজারের উর্ধ্বে। এই দেশে অনেক নামধারী মুসলমান আছেন, যারা একটি রাতকে উদযাপনের জন্য হাজার-হাজার টাকা ব্যয় করে হোটেল শেরাটনে রাত কাটাবেন, মদপান করে নাচ-গান করবেন, অন্যায় ও পাপ কাজে লিপ্ত হবেন। এসব মহৎ(?) কাজ করে নতুন দিন ও নতুন বর্ষকে স্বাগতম জানাবেন। হায়রে আফসোস!
আমাদের করণীয়:
সুতরাং ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে ইংরেজী নববর্ষ সংক্রান্ত যাবতীয় অনুষ্ঠান বর্জন করতে হবে। কারণ এতে কয়েক ধরণের ইসলাম বিরোধী কর্মকান্ড রয়েছে। যথা-
১. শিরকপূর্ণ অনুষ্ঠানাদি, চিন্তাধারা ও সংগীত।
২. নগ্নতা, অশ্লীলতা, ব্যভিচারপূর্ণ অনুষ্ঠান।
৩. গান ও বাদ্যপূর্ণ অনুষ্ঠান।
৪. সময় অপচয়কারী অনর্থক বাজে কথা ও কাজ।
এমতাবস্থায় প্রতিটি মুসলিমের দায়িত্ব হল, নিজে এগুলো থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা এবং মুসলিম সমাজ থেকে এই ঈমানবিধ্বংসী প্রথা উচ্ছেদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো নিজ নিজ সাধ্য ও অবস্থান অনুযায়ী। এ জন্য আমাদের করণীয় হলো-
১. এ বিষয়ে দেশের শাসকগোষ্ঠীর দায়িত্ব হবে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নববর্ষের যাবতীয় বিজাতীয় অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।
২. যাদের নিজস্ব প্রভাব ও দাপট রয়েছে, তাদের কর্তব্য হবে অধীনস্থদেরকে এ কাজ থেকে বিরত রাখা।
৩. ইমামগণ এ বিষয়ে মুসল্লীদেরকে সচেতন করবেন ও বিরত থাকার উপদেশ দেবেন।
৪. পরিবারের প্রধান এ বিষয়টি নিশ্চিত করবেন যে, তার পুত্র-কন্যা, স্ত্রী কিংবা তার অধীনস্থ অন্য কেউ যেন নববর্ষের কোন অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়।
৫. এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকে তার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, সহপাঠী, পরিবারের মানুষ এবং প্রতিবেশীকে উপদেশ দেবেন এবং নববর্ষ পালনের সাথে কোনভাবে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবেন।
তাই, আমরা বাংলার সুনাগরিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি, তারুণ্যের প্রতি হৃদয়ের তপ্ত আহ্বান এবং আর্জি পেশ করছি, জাগ্রত হোন বাংলার সভ্য জনগণ ও দেশপ্রেমিক জনতা, আজকের এই বাংলার সভ্য রূপকে অসভ্যতার রূপ দিয়ে কলঙ্কিত করার পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রতীক থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনের বিরুদ্ধে। পীর আওলিয়ার লালনভুমি বাংলার পবিত্র রক্ত যাদের শরীরে প্রবাহমান, আশা করছি তারা আজকের এই পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতিকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে নিজ ধর্মীয় স্বকীয়তা বজায় রাখায় দৃপ্ত শপথ গ্রহন করবেন। আর যারা বুঝে না অথবা বুঝেও মীর জাফর সেজে নিজ সভ্যতা ও ধর্মীয় অনুভূতিকে পদদলিত করে পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির এই নোংরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন তাদের বিরুদ্ধে ঈমান এবং দেশপ্রেমের ব্রত নিয়ে গর্জে উঠবেন। জাগ্রত হোক জাতীয় বিবেক এই প্রত্যাশায়।
পরিশেষে...
মুসলিম উম্মাহর প্রতি কুরআনের ছোট্ট একটি আয়াতের উদাত্ত আহবান করতে চাই। আর তা হলো- ‘আল্লাহ জীবন-মৃত্যু সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য, কে সবচেয়ে বেশি সুন্দর আমল করতে পারে।’ (সুরা মুলক : আয়াত ২)
আসুন, নববর্ষ উদযাপনে বর্ষবরণের অশ্লীল ও অপচয়মূলক কাজ থেকে বিরত থেকে সুন্দর ও কল্যাণমূলক জীবন গঠনের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হই।
বর্তমান সময়ের যাবতীয় ফেতনা, ঘোর মূর্খতা ও কুসংস্কারের অন্ধকার পরিহার করে সঠিক পথ খুজে পাওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করি।
বিশেষ করে বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে নিজেদেরকে দ্বীনি ও ইসলামি আদর্শের বাস্তবায়নে সমাজ পরিবর্তনের সংস্কৃতি চালু করি।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গভীর রজনীতে পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্তুতি নিয়ে বিগত জীবনের গোনাহ এবং আগত নতুন বছরের কল্যাণ কামনা করার সংস্কৃতি চালু করার তাওফিক দান করুন। অন্যায় ও ফাহেশা কাজ থেকে হেফাজত করে কল্যাণের পথে এগিয়ে যাওয়া তাওফিক দান করুন। আমিন।
১৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১২
মাহিরাহি বলেছেন: আল্লাহ যা করেন মানুষের ভালর জন্যই করেন।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৮
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটাই। ভরসা তো তাঁরই উপরে রাখতে হয়।
শুভকামনা জানবেন।
১৫| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯
আরোগ্য বলেছেন: গতকাল যা হয়েছে তা যদি স্বাভাবিকভাবে হতো তাহলে আঘাত পেতাম কম কিন্তু যেভাবে হল....
যাই হোক। গল্পটা আগে থেকে জানতাম তবে পুরোপুরি জেনে বেশ ভাল লাগলো।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০
নতুন নকিব বলেছেন:
আঘাত পেতে পেতে এখন অনুভূতি ভোঁতা হওয়ার দিন এসেছে বোধ করি। আল্লাহ পাক আমাদের ব্যর্থতা, অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন।
শুভকামনা জানবেন।
১৬| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫২
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: গল্পটা আগেও শোনা, তবে ভাগ্যে যা ছিল তা হয়েছে, এটা দুর্বলদের মনকে শান্তনা দেওয়ার বাক্য মাত্র।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২
নতুন নকিব বলেছেন:
সেটাই, কামাল ভাই।
ভালো থাকবেন। শুভকামনা নিরন্তর।
১৭| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০২
ল বলেছেন: আল্লাহ সকলের মঙ্গল করুন।
শুভ নববর্ষ।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
সহমত।
ভালো থাকুন নিরন্তর।
১৮| ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:১১
সোহানী বলেছেন: সাদা মনের মানুষ বলেছেন: এটা দুর্বলদের মনকে শান্তনা দেওয়ার বাক্য মাত্র।
এর চেয়ে সত্য কিছু নেই...........
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৩
নতুন নকিব বলেছেন:
মোবারকবাদ।
শুভকামনা অশেষ।
১৯| ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:০০
গেম চেঞ্জার বলেছেন: দশ বছর আগে, এই গল্পটি আমি সম্ভবত আমাদের এলাকার ইমাম সাহেবের মুখ থেকে শুনেছি। কিন্তু আমার মনে তখনই প্রশ্ন জেগেছিল - এর উল্টোটা হলে কি হবে?
না বুঝলে পরিস্কার করে একটা গল্প দিয়ে বলছি - ধরুন ঘটনাক্রমে এক লোক হোচট খেয়ে কাঁদায় পড়ে গেছে। এখন সে কোনমতে উঠে আবার যাত্রা শুরু করল। কিছুদুর যাবার পর একদল লোক তাকে ধরে গাছে বেঁধে রাখল। তাদের হাত থেকে কিছুক্ষন আগে এক চোর ফসকে গেছে, যাবার সময় সেও কাদায় পড়েছিল।
এখনোও কি ওই লোক বলবে আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন?
আমার মনে হয় - এইসকল গল্প মুলত ধর্মের অসারতা প্রমানের মুল হিসেবে কাজ করে। এখন বাকিটা আপনাদের বিবেচনা।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৫:১৭
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ মন্তব্যে আসায়। আমার মনে হয়, চোর মনে করে যদি সেই নির্দোষ লোকটিকে ভুলক্রমে উত্তেজিত জনতা বেধে রেখে থাকেন, সেখানেও কোনো রহস্য, কিংবা কোনো কল্যান এই লোকটির জন্য হয়তো থেকে থাকবে।
এই ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় চিন্তা করা যেতে পারে-
এক. এই লোকটি ইতোপূর্বে এমন শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত চুরি করে সটকে পড়তে সক্ষম হয়েছিল। হয়তো আল্লাহ পাক তার আঁকুতি দেখে, তার অনুতপ্ত অন্তরের ডাক শুনে চুরি করার পরেও তাকে ধরা পড়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভদ্রলোক সংশোধন না হওয়ায় আজ তার এই দশা।
দুই. অথবা এই লোকটি এখানে সামান্য অপমান হয়েছেন তাকে চোর মনে করে বেধে ফেলেছেন বলে। কিন্তু তিনি যদি এখানে আটক না হতেন, মানে পথ চলতে থাকতেন তাহলে তার জীবন বিপন্ন হওয়ার মত বড় কোনো বিপদ আসতে পারতো। হতে পারে অপেক্ষাকৃত ছোট বিপদ দিয়ে তার বড় বিপদকে কাটিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিন. বিপদ আপদে ফেলে, তাকে পরিক্ষা করার জন্য আল্লাহ পাক এমনটি করে থাকতে পারেন।
যা ই হোক, এগুলো কেবলমাত্রই ধারনা, এর বাইরেও অন্য কোনো্ রহস্য থেকে থাকতে পারে। আল্লাহ পাকই ভালো জানেন।
অনেক ভালো থাকুন ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৯
হাবিব বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম নকীব ভাই.......