নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নতুন নকিব

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।

নতুন নকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

মৌসুমের প্রথম ফল ভক্ষন এবং নতুন কাপড় পরিধানের দোআ

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৫২

মৌসুমের প্রথম ফল ভক্ষন এবং নতুন কাপড় পরিধানের দোআ

ছবিঃ অন্তর্জাল।

মৌসুমের প্রথম ফল ভক্ষনের দোআ

প্রিয়তম নবীজী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতিটি কাজেই মুমিন মুসলিমের জন্য রয়েছে সর্বোত্তম শিক্ষা, আদর্শ ও অনুপ্রেরণা। প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেসব কাজ করতেন, উম্মতে মুহাম্মাদিও সেসব কাজ করতে ভালোবাসেন। আমরাও ভালোবাসি। প্রাণপন। হৃদয় নিংড়ানো সেই ভালোবাসার তুলনা হয় না। উপমা হয় না। নজির মেলে না।

তিনি করুনার বার্তাবাহকঃ

বস্তুতঃ প্রিয়তম রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি আমাদের এই যে মুহাব্বত, এই যে তুলনাহীন ভালোবাসা, এটা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অনন্য সাধারণ এক নেআমত। জীবনে দেখিনি প্রিয়তম রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র চেহারা মোবারক। তাঁকে দর্শনের সৌভাগ্যলাভ করিনি ক্ষনিকের জন্য; কিন্তু তাঁর প্রেমে আকুল ব্যাকুল আমরা। মাতোয়ারা জগত জাহান। গাছপালা, তরুলতা, সাগর নদী, ঝর্ণা পাহাড়, মেঘমালা, ফুলের মেলায় তাঁর ভালোবাসার আভা। তামাম আলমে তাঁর আলোচনা। তাঁর প্রেমের ফল্গুধারা বহমান নদীতে-ঝর্ণায়-আকাশে-বাতাসে-গিরি কন্দরে-মরু বিয়াবানে। হবেই না বা কেন? তিনি যে রহমাতুল্লিল আলামীন। গোটা জগতের জন্য তিনি যে দয়ার আধার। করুনার বার্তাবাহক। করুনার শ্রেষ্ঠতম প্রতিভূ। তাকে তো রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেনই মহান রব্বে কারিম -

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ

আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। -সূরা আম্বিয়া, আয়াত-১০৭

তাঁর স্মরণকেও যে সমুন্নত করেছেন মহান মালিকঃ

আযানের ধ্বনিতে তাঁর নাম ভেসে বেড়ায় ইথারে ইথারে পৃথিবীজুড়ে জলস্থলে। গুনগুন সুরে দরূদের নজরানা পেশ করে তাপিত প্রাণ সিক্ত-শীতল করে অনুভবে তাকে কাছে টেনে নেয় বিশ্বাসীর পোড়া অন্তর। আযানে, ইকামাতে, নামাজের বৈঠকে তাকে স্মরণ করা হয় গভীর দ্বীপ্তিমান বিশ্বাস ও ভক্তিতে। হবেই না বা কেন? তিনি যে নিত্য স্মরণীয়। নিজের নামের সাথে জুড়ে দিয়েছেন প্রিয় হাবিবের মধুমাখা নাম। নিজের সাথে সাথে তাঁর স্মরণকেও যে সমোন্নত করেছেন মহান মালিক স্রষ্টা মহিয়ান -

وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ

আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি। -সূরা আল ইনশিরাহ, আয়াত-০৪

প্রতিটি সুন্নতের আমলে রয়েছে সাওয়াব, শারীরিক ও আত্মিক উভয়বিদ উপকারঃ

তিনি যে স্থানে যেভাবে যে কাজটি করতেন, আমাদেরও সেসব করতে হবে একই পদ্ধতিতে তাকে অবিকল অনুসরণের মাধ্যমে। তিনি যেসব ক্ষেত্রে দোআ করতেন, তাঁর উম্মত অনুসারী হিসেবে বিশ্ব মুসলিমের অংশ হিসেবে আমরাও সেসব দোআ পড়তে ভালোবাসি বিনম্র ভক্তিতে, বিগলিত অন্তরে, বিসিক্ত প্রেমময়তায়। কারণ, আলহামদুলিল্লাহ, আমরা জানি, তাঁর আচরিত প্রতিটি কাজের অনুসরণে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা অবধারিত করে দিয়েছেন গোটা মানব জাতির যুগপত শারীরিক ও আত্মিক উভয়বিদ উপকার। এতে রয়েছে পার্থিব ও পারলৌকিক ফায়দা, সাওয়াব এবং মর্যাদালাভের অনন্য উপকরণ। উভয় জাহানের মুক্তি এবং কল্যানও সুন্নাতের আমলের এই আলোকিত পথেই।

হাদিয়া না কি সাদাকাহ, জেনে নেয়া সুন্নতঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে যখন কোনো মৌসুমের প্রথম ফল-ফলাদি আসতো প্রথমেই তিনি জিজ্ঞেস করে নিতেন তা হাদিয়া অর্থাৎ, উপহার বা উপঢৌকন; না কি সাদাকাহ বা দান। যদি সাদাকাহ বা দান হতো তবে তিনি তা গ্রহণ করতেন না, বরং অন্যদের মাঝে বিলিয়ে দিতেন। আর যদি হাদিয়া অর্থাৎ, উপহার বা উপঢৌকন আসতো তা তিনি নিজে খেতেন এবং অন্যদেরকেও তা থেকে প্রদান করতেন।

ফলফলাদিতে বরকতের জন্য দোআ করতেন তিনিঃ

বস্তুতঃ রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো একটি কাজও অর্থহীন ছিল না। তাঁর প্রতিটি কাজই অর্থপূর্ণ এবং অনুসরণযোগ্য। তিনি যখন ফল খেতেন তখন দোআ করতেন। সাহাবায়ে কেরাম যখন তার কাছে মৌসুমের প্রথম ফল নিয়ে আসতেন তখন তিনি ফলফলাদিতে বরকতের জন্য দোআ করতেন। নিজের জন্যও দোআ করতেন। হাদিসে এসেছে-

হযরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করেন, সাহাবায়ে কেরাম যখন কোনো নতুন ফল দেখতেন তখন তাঁরা তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে পেশ করতেন। আর তিনি তা গ্রহণ করে এ মর্মে দোআ করতেন -

اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي ثِمَارِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي مَدِينَتِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَفِي مُدِّنَا ، اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ عَبْدُكَ وَخَلِيلُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنِّي عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنَّهُ دَعَاكَ لِمَكَّةَ ، وَإِنِّي أَدْعُوكَ لِلْمَدِينَةِ , بِمِثْلِ مَا دَعَاكَ بِهِ لِمَكَّةَ وَمِثْلِهِ مَعَهُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি ছিমারিনা; ওয়া বারিক লানা ফি মাদিনাতিনা; ওয়া বারিক লানা ফি সায়ি'না ওয়া ফি মুদ্দিনা; আল্লাহুম্মা ইন্না ইবরাহিমা আবদুকা ওয়া খালিলুকা ও নাবিয়্যুকা, ওয়া ইন্নি আবদুকা ওয়া নাবিয়্যুকা; ওয়া ইন্নাহু দাআকা লিমাক্কাহ, ওয়া ইন্নি আদউকা লিলমাদিনাতি বিমিছলি মা দাআকা বিহি লিমাক্কাতা ওয়া মিছলিহি মাআহু।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের ফলসমূহে আমাদের জন্য বরকত দান করুন; আমাদের শহরে আমাদের জন্য বরকত দিন; আমাদের জন্য আমাদের ‘সা’ এবং আমাদের ‘মুদ্দ’-এ (পরিমাপক যন্ত্রে) বরকত দিন। হে আল্লাহ! নিশ্চয় (ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) আপনার বান্দা, আপনার বন্ধু এবং আপনার নবী। আর আমিও (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার বান্দা এবং আপনার নবি। তিনি (ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) আপনার কাছে মক্কার জন্য দোআ করেছিলেন। আর আমি (মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ন্যায় মদিনার জন্য আপনার কাছে দোআ করছি এবং এর সঙ্গে আরও সমপরিমাণ দোআ করছি। এরপর রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকে সর্বকনিষ্ঠ (ছোট) দেখতেন তাকে ডেকে সে ফল দিয়ে দিতেন।’ -মুসলিম, মুয়াত্তা মালেক, শামায়েলে তিরমিজি

নতুন ফল দেখলে কিংবা ভক্ষন করে যেভাবে দোআ করবো আমরাঃ

সুতরাং, আমরাও নতুন কোনো ফল দেখলে কিংবা খেলে এভাবে দোয়া করবো -

اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي ثِمَارِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي مَدِينَتِنَا ، وَبَارِكْ لَنَا فِي صَاعِنَا وَفِي مُدِّنَا ، اللَّهُمَّ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ عَبْدُكَ وَخَلِيلُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنَّهُ دَعَاكَ لِمَكَّةَ اللَّهُمَّ إِنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُكَ وَنَبِيُّكَ ، وَإِنَّهُ دَعَاكَ لِلْمَدِينَةِ ، وَإِنِّي أَدْعُوكَ لِمَكَّةَ وَ لِلْمَدِينَةِ وَبِلَادُنَا بَنْغْلَادِيْش ، بِمِثْلِهِمَا مَا دَعَاكَ بِهِمَا لِمَكَّةَ و لِمَدِيْنَةِ وَمِثْلِهِ مَعَهُ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি ছিমারিনা; ওয়া বারিক লানা ফি মাদিনাতিনা; ওয়া বারিক লানা ফি সায়ি'না ওয়া ফি মুদ্দিনা; আল্লাহুম্মা ইন্না ইবরাহিমা আবদুকা ওয়া খালিলুকা ও নাবিয়্যুকা, ওয়া ইন্নাহু দাআকা লিমাক্কাতা; আল্লাহুম্মা ইন্না মুহাম্মাদান আবদুকা ওয়া নাবিয়ুকা; ওয়া ইন্নাহু দাআকা লিমাদিনাহ; ওয়া ইন্নি আদউকা লিমাক্কাতা ওয়া মাদিনাতি ওয়া বিলাদুনা বাংলাদেশ; বিমিছলিহিমা মা দাআকা বিহিমা লিমাক্কাতা ওয়া মাদিনাতি ও মিছলিহি মাআহু।’

অনুবাদ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের ফলসমূহে আমাদের জন্য বরকত দিন; আমাদের শহরে আমাদের জন্য বরকত দিন; আমাদের জন্য আমাদের ‘সা’ এবং আমাদের ‘মুদ্দ’-এ (পরিমাপ যন্ত্রে) বরকত দিন। হে আল্লাহ! নিশ্চয় ইবরাহিম আলাইহিস সালাম আপনার বান্দা, আপনার বন্ধু এবং আপনার নবি। তিনি (ইবরাহিম আলাইহিস সালাম) আপনার কাছে মক্কার জন্য দোআ করেছিলেন। হে আল্লাহ! নিশ্চয় মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার বান্দা ও আপনার নবী। তিনি মাদিনার জন্য আপনার কাছে দোআ করেছেন। আর আমি তাঁদের (হযরত ইবরাহিম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) মতো মক্কা, মাদিনা ও আমার জন্মভূমি বাংলাদেশের জন্য দোআ করছি। আর এর সঙ্গে আরও সমপরিমাণ দোআ করছি।’

ছোটদের হাতে মৌসুমের প্রথম ফল তুলে দেয়াও একটি সুন্নতঃ

প্রিয়নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো মতে মৌসুমের শুরুর দিকে যে কোনো নতুন ফল দেখলে কিংবা খেলে আল্লাহ তাআ'লার নিকট বরকতের জন্য দোআ করা একটি অন্যতম সুন্নত আমল। পাশাপাশি আমাদের কচিকাঁচা ছোট শিশু সন্তানদের হাতে সেগুলো হাদিয়া হিসেবে তুলে দিয়ে তাদের কোমল অন্তরে প্রফুল্লতা আনয়ন এবং তাদেরকে আনন্দদান করা অসাধারণ আরেকটি সুন্নাত ইবাদাত। আমরা যদি এগুলো মেনে চলতাম, সত্যিই ধন্য করতে পারতাম আমাদের যাপিত জীবন।

কাপড় পরিধানের দো‘আঃ

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ كَسَانِيْ هَذَا (الثَّوْبَ) وَرَزَقَنِيْهِ مِنْ غَيْرِ حَوْلٍ مِنِّيْ وَلاَ قُوَّةٍ

উচ্চারণ: আল্‌হামদু লিল্লা-হিল্লাযী কাসানী হা-যা (আসসাওবা) ওয়া রযাকানীহি মিন্ গইরি হাওলিম মিন্নী ওয়ালা কুওওয়াতিন
অর্থ: সকল হামদ-প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য; যিনি আমাকে এ (কাপড়) টি পরিধান করিয়েছেন এবং আমার শক্তি-সামর্থ্য ছাড়াই তিনি আমাকে এটা দান করেছেন। -হাদীসটি নাসাঈ ব্যতীত সুনান গ্রন্থকারদের সবাই সংকলন করেছেন। আবূ দাউদ, নং ৪০২৩; তিরমিযী, নং ৩৪৫৮; ইবন মাজাহ্‌, নং ৩২৮৫। আর শাইখ আলবানী একে হাসান বলেছেন। দেখুন, ইরওয়াউল গালীল, ৭/৪৭

কাপড় পরিধানের আরেকটি দোয়াঃ

اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيهِ، أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهِ وَخَيْرِ مَا صُنِعَ لَهُ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ».

বাংলা উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লাকাল-হামদু আনতা কাসাওতানীহি। আসআলুকা মিন খইরিহি ওয়া খইরি মা সুনি‘আ লাহু। ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহি ওয়া শাররি মা সুনি‘আ লাহু।

বাংলা অর্থ : “হে আল্লাহ্! আপনারই জন্য সকল হাম্‌দ-প্রশংসা। আপনিই এটি আমাকে পরিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ ও এটি যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করি। আর আমি এর অনিষ্ট এবং এটি যে জন্য তৈরি করা হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই”। -আবূ দাউদ, নং ৪০২০; তিরমিযী, নং ১৭৬৭; বাগভী, ১২/৪০; দেখুন, মুখতাসারুশ শামাইল লিল আলবানী, পৃ. ৪৭

নতুন কাপড় পরিধানের দো‘আঃ



উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি কাসানি মা উয়ারি বিহি আওরাতি ওয়া আতাজাম্মালু বিহি ফি হায়াতি।

অর্থ: সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাকে কাপড় পরিয়েছেন, যা দিয়ে আমি লজ্জাস্থান ঢাকি এবং জীবনে সৌন্দর্য লাভ করি।

সূত্র: আবু উমামা (রা.)-এর বর্ণনা থেকে বর্ণিত, উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) নতুন কাপড় পরিধান করার সময় এই দোয়া পড়তেন। -তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬০

اللّٰهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ كَسَوْتَنِيْهِ، أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهِ وَخَيْرِ مَا صُنِعَ لَهُ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা লাকাল-হামদু আনতা কাসাওতানীহি। আসআলুকা মিন খইরিহি ওয়া খইরি মা সুনি‘আ লাহু। ওয়া আ‘ঊযু বিকা মিন শাররিহি ওয়া শাররি মা সুনি‘আ লাহু

অর্থ: হে আল্লাহ্! আপনারই জন্য সকল হাম্‌দ-প্রশংসা। আপনিই এটি আমাকে পরিয়েছেন। আমি আপনার কাছে এর কল্যাণ ও এটি যে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছে তার কল্যাণ প্রার্থনা করি। আর আমি এর অনিষ্ট এবং এটি যে জন্য তৈরি করা হয়েছে তার অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। -আবূ দাউদ, নং ৪০২০; তিরমিযী, নং ১৭৬৭; বাগভী, ১২/৪০; দেখুন, মুখতাসারুশ শামাইল লিল আলবানী, পৃ. ৪৭

অপরকে নতুন কাপড় পরিধান করতে দেখলে তার জন্য দো‘আঃ

تُبْلِيْ وَيُخْلِفُ اللّٰهُ تَعَالَى

উচ্চারণ: তুবলী ওয়া ইয়ুখলিফুল্লা-হু তা‘আলা

অর্থ: তুমি পুরাতন করে ফেলবে, আর মহান আল্লাহ এর স্থলাভিষিক্ত করবেন। -সুনান আবি দাউদ ৪/৪১, হাদীস নং ৪০২০; দেখুন, সহীহ আবি দাউদ ২/৭৬০

পরিধেয় কাপড় খুলে রাখা বা পাল্টানোর সময় পড়তে হবেঃ

بِسْمِ اللّٰهِ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ

অর্থ: আল্লাহ্‌র নামে (খুলে রাখলাম)। -তিরমিযী ২/৫০৫, নং ৬০৬, ও অন্যান্য। আরও দেখুন, ইরওয়াউল গালীল, নং ৫০; সহীহুল জামে‘ ৩/২০৩

একটি প্রশ্ন ও তার উত্তরঃ

কাপড় পরিধানের সময় দোআ কেন? -এই প্রশ্নটি কেউ কেউ করে থাকতে পারেন। বস্তুতঃ পৃথিবীর দিকে একটু চোখ খুলে তাকালেই এর উত্তর লক্ষ্য করা সম্ভব। অগণিত দৃষ্টান্ত চোখে পড়বে যেগুলো থেকে এর যথার্থ উত্তর পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। অসংখ্য প্রাণি আমাদের চারপাশে এমন রয়েছে, যাদের পোষাক নেই। যারা পোষাক কি জিনিষ তাও বুঝে না। জানে না। অনুভূতিহীন। পোষাকের জন্য তাদের কোনো প্রয়োজনীয়তাও তারা কোনো দিন অনুভব করে না। বিনা পোষাকেই জীবন পার করে দেয়। তাদেরকে যে সৃষ্টিকর্তা বানিয়েছেন, আমরাও তো সেই একই মালিকের সৃষ্টি। তারা যেমন প্রাণি, আমরাও তেমনি। কিন্তু তাদের এবং আমাদের মাঝে বোধ এবং অনুভূতি ও অনুভবের প্রভেদ আকাশ জমিন। তারা জানে না, পোষাক সৌন্দর্য্য বর্ধনের উপকরণ। তারা এ-ও জানে না যে, পোষাক লজ্জা নিবারণের মাধ্যম। পোষাকের তাদের এবং আমাদের মাঝে এই যে বোধের, বিশ্বাসের, চিন্তার, মর্যাদার ব্যবধান তিনি তৈরি করে আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন, এর শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে কি? যাবে না।

وَإِن تَعُدُّواْ نِعْمَةَ اللّهِ لاَ تُحْصُوهَا إِنَّ اللّهَ لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ

যদি আল্লাহর নেয়ামত গণনা কর, শেষ করতে পারবে না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। -সূরা আন নাহল, আয়াত-১৮

নেয়ামতের মাঝেই তো ডুবে আছি। তো, যিনি আমাদেরকে বস্ত্র পরিধানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার মত যোগ্যতাসম্পন্ন করে অনেক অনেক প্রাণির উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দান করলেন, সামান্য শুকরিয়া কি বস্ত্র পরিধানের সময় আমাদের কাছে সেই মহান মালিক প্রতিপালক পেতে পারেন না?

শেষের প্রার্থনাঃ

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে মৌসুমের প্রথম ফল দর্শন ও তা খাওয়ার সময় হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে হাদিসে বর্ণিত অর্থপূর্ণ দোআ পড়া, ফলফলাদির বরকত এবং দেশের কল্যানে দোআ করার পাশাপাশি প্রথম ফলগুলো আমাদের অবুঝ সবুজ বুকের মানিক কচিকাঁচা ছোটদের হাতে হাদিয়া হিসেবে তুলে দিয়ে তাদের আনন্দিত করার নববী শিক্ষা গ্রহণের তাওফিক দান করুন। একইভাবে, সর্বাবস্থায় বস্ত্র পরিধানসহ নতুন বস্ত্র পরিধানকালীন দোআ রপ্ত করে তার উপরে আমল করে সাওয়াব অর্জনের সৌভাগ্য নসিব করুন।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০০

সোহানাজোহা বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ। ব্লগ খুলে খুব সুন্দর একটি পোস্ট পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। পোস্টটি প্রিয়তে রইলো।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭

নতুন নকিব বলেছেন:



প্রথম মন্তব্যে আপনাকে দেখে সত্যিই আনন্দিত হলাম। কারণ, (কোনো কারণে) অভিমান নিয়ে ব্লগ ছাড়ার ঘোষনা দেয়ার পরে পুনরায় যে ফিরে এসেছেন তা আপনার এই মন্তব্য দেখোর আগে জানতাম না। অবশ্য আপনার সেই বিদায়ী পোস্টটিতে (যেটি পরবর্তীতে আর দেখিনি, হয়তো সরিয়ে নিয়েছেন) আমি অনুরোধও করেছিলাম আপনার ব্লগ ছাড়ার সিদ্ধান্তটা পুনর্বিবেচনা করার জন্য। যাক, যে কারণেই হোক, শুকরিয়া এই জন্য যে, আপনি ফিরে এসেছেন। আসলে, ব্লগ তো বিশাল এক পরিবার। বিশাল একটি পাঠশালা। নানান পথ ও মতের মানুষ এখানে। সবার চিন্তা এবং মতও এক নয়। সকলের সাথে মিলেমিশে অনেক ভালোভাবে ব্লগিংকে উপভোগ করুন- সেটাই কামনা করি।

লেখাটি আপনার কাছে সুন্দর মনে হওয়ায় এবং পোস্ট প্রিয়তে নেয়ায় কৃতজ্ঞতাসহ শুভকামনা।

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:০১

নতুন বলেছেন: একটা জিঙ্গাসা ছিলো ভাই।

প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়ে বিয়ে করা ইসলাম সম্মত কিনা?

আর সীমিত পরিসরে স্ত্রীর কাছে সত্য গোপন করা ইসলামের শরিয়াতে জায়েজ কিনা এই বিষয়ে কিছু লিখুন্।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৩০

নেওয়াজ আলি বলেছেন: জানার কোনো শেষ নাই । জানলে উপকার

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৫৬

প্যারাডক্সিকাল সাজিদ বলেছেন: জাজাকাল্লাহ

৫| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪৫

অগ্নিবেশ বলেছেন: নতুন নকিব ভাই, নতুন ভাইয়ের মত শুধু আমার একার নয়, যারা ইসলাম সম্পর্কে সঠিক নলেজ নেই তাদের সবারই এখন একই প্রশ্ন, আপনি একটা পোষ্টের আকারে জানাতে পারবেন কি? ব্যাপার কি জানেন আমি অনেক আগেই বলেছি, যে যার মত করে ব্যাখা করে, তাহলে কি ইসলামের ভবিষ্যৎ অন্ধকার? বা অনান্য ধর্মের মতো এই ধর্মেরও সংস্কার করা হবে।

৬| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:২৪

রানার ব্লগ বলেছেন: সব কিছুতেই দোয়া?? জীবনের ৯০ ভাগই দেখছি দোয়া পড়তে পড়তে যাবে। ভালো কাজ বা সৃজনশীল চিন্তা করবো কখন?

আপনার কাছে আমার ব্যাক্তিগত প্রশ্ন হলো, শীত কাল আসলে এই যে মাওলানারা লং হর্ন বাজিয়ে তিব্র চিৎকারে মধ্য রাত অবাদি অশ্রবণীয় ভাষায় ওয়াজ করে যার কিয়দাংশ বোঝার বাহিরে এটা কতটা যুক্তিযুক্ত।

৭| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: সব কিছুর জন্যই দোয়া আছে। ঘরে প্রবেশের দোয়া, ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার দোয়া। সহবাস এর দোয়া। এসব কনো দিনই মানলাম না। করলাম না। তবুও বেশ ভালো আছি।

৮| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০১

পাঁচ-মিশালি বলেছেন: হজরত রাজীব নূর ,
বিসমিল্লাহ বলে সহবাস করা মুস্তাহাব। যদি বিসমিল্লাহ বলতে মনে না থাকে তাহলে বীর্যপাতের আগে বলতে হবে।
সহবাস করার কিছু নিয়ম কানুনঃ
<রাত্রী দ্বি-প্রহরে সহবাস করা।
< সহবাসের প্রথমে দোয়া পড়া।
< স্ত্রীর জরায়ু দিকে চেয়ে সহবাস না করা, ইহাতে চোখের জ্যোতি নষ্ট হয়ে যায়।
রবিবারে সহবাস না করা
< বুধবারের রাত্রে সহবাস না করা।
< চন্দ্র মাসের প্রথম এবং পনের তারিখ রাতে সহবাস না করা।
<বিদেশ বা সফরে যাওয়ার আগের রাতে স্ত্রী সহবাস না করা।
সবাই সহিহ ইসলামিক তরিকায় সহবাস করার তাউফিক প্রাপ্ত হউন

৯| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২০

রাজীব নুর বলেছেন: এত এত নিয়ম কানুন মানে কারা? ওরা কারা?
সবচেয়ে বড় কথা এসব নিয়ম না মানলেও কোনো সমস্যা নাই।

১০| ১০ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:৪২

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ছোট ফল বড় ফল খাওয়ার দোয়া কি এক।নাকি বড় ফল খাওয়ার বড় দোয়া ছোট ফলের জন্য ছোট দোয়া।বিস্তারিত লিখে জানাইলে উপকৃত হইবো।
ঘুমাতে যাওয়ার দোয়াটা জানি,ঘুম থেকে উঠে কি কোন দোয়া পড়তে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.