নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দল-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না, অত্যাচারীর খড়্গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না- বিদ্রোহী রন-ক্লান্ত। আমি সেই দিন হব শান্ত।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
ফজরের নামায তরক করলে চেহারার জ্যোতি কমে যায়, যোহরের নামায তরক করলে... এটি হাদিস নয়, ভিত্তিহীন বর্ণনা মাত্রঃ
মসজিদে ঢুকে বারান্দার ওয়ালে চোখ পড়তেই দেখলাম বড় আর্টপেপারে ছাপানো কিছু কথা। কথাগুলো হৃদয়াগ্রাহী। অন্তরে দাগ কাটার মত। পড়লে যে কারও মনে হতেই পারে যে, এটি হাদিস এবং কথাগুলো হাদিসের। কিন্তু প্রকৃত সত্য কথা হচ্ছে, এই কথাগুলো কোনো হাদিসের বাণী নয় বরং নিছকই ভিত্তিহীন বর্ণনা। আকর্ষনীয় সেই কথাগুলো দেখে নিই একবার চলুন-
যে ব্যক্তি ফজরের নামায তরক করে তার চেহারার জ্যোতি কমে যায়। যে ব্যক্তি যোহরের নামায তরক করে তার রিযিকের বরকত কমে যায়। যে ব্যক্তি আসরের নামায তরক করে তার শরীরের শক্তি কমে যায়। যে ব্যক্তি মাগরিবের নামায তরক করে তার সন্তানরা তার কোনো কাজে আসবে না। যে ব্যক্তি এশার নামায তরক করে তার ঘুমের শান্তি চলে যায়।
অনেককে দেখা যায় তারা নামায তরক করার ক্ষতি হিসেবে এ বর্ণনাটি পেশ করে থাকেন এবং আশ্চর্য্য হওয়ার কিছু নেই, এটি লোকমুখে হাদিস হিসেবে খুব প্রসিদ্ধও বটে। কিন্তু বাস্তবে এটি নবীজীর হাদিস নয়। এটি কোনো লোকের বানানো উক্তি মাত্র।
হাদিসের নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে আমরা এর কোনো সূত্র পাইনি; সহীহ-যঈফ কোনো ধরনের সূত্রেই পাওয়া যায়নি। সুতরাং, এটিকে হাদিস হিসেবে বর্ণনা করার সুযোগ নেই।
পবিত্র কুরআনুল কারিমের বেশ কিছু আয়াতে এবং অনেকগুলো হাদিসে নামায তরক করার বিষয়ে সাবধানবাণী উচ্চারিত হয়েছে। নামায তরক করার ক্ষতি বা শাস্তি হিসেবে সেসবই বর্ণনা করা উচিত। এ ধরনের জাল বর্ণনা পরিহার করা উচিত।
এ বিষয়ক কয়েকটি আয়াত ও সহীহ হাদিস নিচে উল্লেখ করা হল-
সূরা মারইয়ামের ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ أَضَاعُوا الصَّلَاةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوَاتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا.
তারপর তাদের স্থলাভিষিক্ত হল এমন লোক, যারা নামায নষ্ট করল এবং ইন্দ্রিয় চাহিদার অনুগামী হল। সুতরাং অচিরেই তারা তাদের কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। -সূরা মারইয়াম (১৯) : ৫৯
জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে- তোমরা কেন জাহান্নামী হলে? তারা উত্তরে বলবে, আমরা মুসল্লী (নামাযী) হতে পারিনি। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-
مَا سَلَكَكُمْ فِي سَقَرَ، قالُوا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّينَ.
তোমাদেরকে কিসে ‘সাকার’ জাহান্নাম-এ নিক্ষেপ করল? তারা বলবে, আমরা মুসল্লীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না (আমরা নামায পড়তাম না)। -সূরা মুদ্দাছ্ছির (৭৪) : ৪২-৪৩
এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে-
بَيْنَ الرَّجُلِ وَبَيْنَ الشِّرْكِ وَالْكُفْرِ تَرْكُ الصَّلَاةِ.
নামায হল বান্দা ও কুফর-শিরকের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী। -সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৮২
আর বিশেষভাবে আসরের নামায তরক করার উপরেও সাবধানবাণী উচ্চারিত হয়েছে হাদিসে-
مَنْ تَرَكَ صَلاَةَ العَصْرِ فَقَدْ حَبِطَ عَمَلُهُ.
যে ব্যক্তি আসরের নামায তরক করল, তার আমল বরবাদ হল। -সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৫৫৩
সুতরাং, নামায তরক করা বিষয়ে কুরআনে হাকিমে বর্ণিত আয়াতসমূহ এবং উপরোক্ত সহিহ হাদিসের পাশাপাশি এ জাতীয় আরও যেসব সহিহ হাদিস রয়েছে সেগুলোই আমরা দলিল হিসেবে গ্রহন করবো এবং ভিত্তিহীন সকল বর্ণনা থেকে বিরত থাকব তা যতই শ্রুতিমধুর কিংবা হৃদয়াগ্রাহী হোক না কেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা আমাদের প্রতিটি বিষয়ে সহিহ জ্ঞান লাভের তাওফিক দান করুন।
২০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:০৩
নতুন নকিব বলেছেন:
ধন্যবাদ। কিন্তু কি কারণে এই পোস্ট আপনার কাছে ভালো মনে হল, যদি বলতেন একটু!
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৪০
রানার ব্লগ বলেছেন: এই রকম হাজারো বর্ননা বিভিন্ন মসজিদের দেয়ালে লেখা থাকে শুধু তাই না এরা এই গুলাকে সহি হাদিয়া বলে বিভিন্ন ওয়াজ মাহাফিলে সুর দিয়ে ওয়াজ নসিহত করে থাকে। আসলে বাংলাদেশের মানুষ এখনো নিজে নিজে কিছু জানতে ইচ্ছুক নয় তারা কিছু জানতে আগ্রহী হলে বই, হাদিস, কোরানের আসগে পাশেও যায় না তারা যায় সেই সব লোকের কাছে যাদের পেশাই হলো নিজের অল্প জ্ঞ্যানের বিক্রি।
বাংগালী যেদিন নিজে জানার চেস্টা করবে, যেদিন হাতের কাছের হাদিস কোরান বা কোন কিতাব খুলে নিজে পড়ার চেস্টা করবে দেখবেন ওই দিনের পর থেকে এই সব হাস্যকর আবোলতাবোল উক্তি কোথাও স্থান পাবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: এই গুলো ভালো পোষ্ট।
এই রকম পোষ্ট অব্যহত রাখুন।