![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ বাসায় ফিরছিলাম,
অর্থহীন আড্ডা আর রোজকার কাজ শেষে।
ফিরছিলাম রাজকীয় বেশে,
রাজকীয় বাহন সেই রিকশাতে চড়ে।
রিকশা চালাচ্ছিলেন যে বুড়ো লোকটি,
তার দিকে খেয়ালই দেই নি।
রিকশা চলছে,
আমি কানে হেডফোন আর নিকোটিনে
নিমজ্জিত হয়ে জাস্টিন বেভার এর মত বেড়াচ্ছি।
রিকশা চলছে,
বৃদ্ধ লোকটির দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই
হঠাৎ রিকশা থেমে গেলো।
বুঝে উঠার আগেই,
বৃদ্ধ মানুষ টি হাত করজোড়ে দাঁড়িয়ে,
“বাবা আপনি রাগ করিয়েন না,
আমি আপনারে পৌঁছাইয়া দিমু’
কিছু না বুঝে তাকালাম,
দেখি মানুষটি কাঁপছেন,
জিজ্ঞেস করলাম, এই বয়সে রিকশা কেন?
জবাব হল, বৃদ্ধ এবং তার স্ত্রীর
পৃথিবীতে কেউ নেই।
সন্তান থেকেও নেই।
দেখভাল কেউ করে না।
মানুষটার জ্বর দু দিন ধরে,
ডাক্তারের ওষুধের দাম একশ বিশ টাকা,
হাঁয়!
একশ বিশ টাকার জন্য ওষুধ তাকে দেয়া হয় নি।
বাহ, কি সমাজ? কি মনুষ্যত্ব?
মহান চিকিৎসা পেশা।
মাত্র একশ বিশ টাকার জন্য
এই মানুষটাকে এই বয়সে,
অসুস্থতা নিয়ে রিকশা চালাতে হয়। .
নেমে গেলাম,
মানুষটার চোখে জল,
টাকা যে রোজগার হল না।.
পকেট থেকে ২০০ টাকা বের করে,
হাতে দিলাম।
মনে মনে বললাম, “বাবা, অপরাধী ছেলেকে
ক্ষমা কর, আর এই সমাজ টাকেও”
সোজা হেটে চলে এলাম,
মানুষটার চোখের দিকে ফিরে তাকানোর সাহস হয় নি।
ভিতরে প্রশান্তি,
যাক ভালো কিছু করলাম।
মানবতার সেবা করে আসলাম।
কিন্তু কিছু নির্মম প্রশ্ন মনে জাগে,
উত্তর পেলাম না খুঁজে।.
অনেক তো মানবতা দেখালাম।
কিন্তু মানুষটার এই অসুখের দিগুলোতে
খাদ্য দেবে কে?
সেটা কি ভেবেছি?
কে দেবে তার মুখে অন্ন?
মানবতা মরে গেলো এবার।
জানি, এই লোকটি কাল আবার
পথে নামবেন অন্নের খোজে।
আবার রিকশা চালাবেন।
আর আমরা সভ্যরা রিকশাতে চড়ে বেড়াবো।
কিন্তু,
তখন দয়া করে,
দয়া করে,
আমরা যেন তাকে,
প্রতারক না বলি।
তাকে গালি না দেই।
এক দিনের দয়াকে যেন মহান না করি।
আসল প্রতারক আমরা।
আমরা এই সমাজের রাজারা।
ভণ্ডামি করে বেড়াচ্ছি যারা, তারা।
তথাকথিত সমাজসেবীরা।
আমরা প্রতারক।
আমরা ব্যর্থ।
আমরা পারিনি এই লোকটি কে
বৃদ্ধ বয়সে শান্তি দিতে।
পারিনি তার খাবারের, ওষুধের নিশ্চয়তা দিতে।
ব্যর্থ আমরা।
এই দায় আমাদের।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৩০
গাজী বুরহান বলেছেন: খাটি কথা