নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির আন্দোলন এবং কিছু অমীমাংসিত প্রশ্ন

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৫৩



এক জোট থাকা স্বত্বেও দুটি দলের উদ্দেশ্য ভিন্ন। এক দলের চাই ক্ষমতা অন্যটির অস্থিতিশীলতা। কাজেই একদল একটু রয়ে সয়ে এগুতে চাইলেও অন্যটি অসহিস্নু। উপযুক্ত পরিবেশের অপেক্ষায় কালক্ষেপণের সুযোগ তাদের নেই। দ্বন্দ্বটি সেই ৫ জানুয়ারি নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকেই চলে আসছিল। দীর্ঘ এক বছর পড়ে এসে তা প্রায় প্রকাশ্য রূপ ধারণ করতে বসেছিল যা বুঝতে পেরে বড় রাজনৈতিক দলটি প্রমাদ গুনতে শুরু করে। অন্দরে চলছিল নানা বোঝাপড়া। যার ফলশ্রুতিতেই রাজনীতির মাঠটির এই হঠাৎ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা।



বলছিলাম বিএনপি জামায়াতের কথা। আঠার বিশ যাই বলুন না কেন। এর মধ্যে দল তো মূলত ঐ দুইটাই। কাজেই তাদের চাওয়া পাওয়াই আসল। অন্যান্যরা আছে থাকবে। সে সব দলের নেতারা অলংকৃত হবেন এবং করবেন এটাই তাদের একমাত্র কম্ম।



সমস্যা হল ক্ষমতায় আরোহণ বা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি দুটোর জন্যই প্রয়োজন জোরদার আন্দোলন। আর আন্দোলনে নামতে হলে চাই ইস্যু। কাজেই সবার আগে প্রয়োজন সেই ইস্যু সৃষ্টি। নির্বাচন নামক যে ইস্যুটি বর্তমান আছে তার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে নির্বাচন কালীন সরকার ব্যবস্থার মত বেশ কিছু অমীমাংসিত প্রশ্ন। আর এ সব প্রশ্নের উত্তর ঠিক করে নিয়ে নির্বাচনের দাবী তোলা অনেকটা সময় সাপেক্ষ। আর তা ছাড়া সেক্ষেত্রে যদি শেষ পর্যন্ত পূর্ব অভিজ্ঞতারই পুনরাবৃত্তি ঘটে তাতেও আশ্চর্যের কিছু থাকবে না। কাজেই স্বাভাবিকের চেয়ে অস্বাভাবিক পথটাকেই দল দুটির কাছে গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। প্রয়োজন হয়ে পরেছে একটি যুদ্ধ যুদ্ধ পরিবেশ তৈরি করা।

আর এই কাজটি করতে গিয়ে তারেক জিয়া বেছে নিলেন বঙ্গবন্ধুকে। কারণ তিনি জানেন এই একটি জায়গাতেই আওয়ামী লিগ কোনরূপ ছাড় দিবে না। আর তাই তিনি নিত্য নতুন ইতিহাস ফাঁদতে বসলেন। তিনি জেনে শুনেই এই বিভ্রান্তি ছড়াতে শুরু করেছেন। কারণ বঙ্গবন্ধু যে আসনে অধিষ্ঠিত সে স্থানটি তাকে আওয়ামী লিগ সৃষ্টি করে দেয়নি বরং তিনি নিজেই তাঁর স্থান তৈরি করে নিয়েছিলেন। আর তাও মহান মুক্তিযুদ্ধের পূর্বেই। বঙ্গবন্ধুর সরকারের নেয়া কর্মসূচি ও তাঁর দেশ শাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে উঠতেও পারে। কিন্তু তাঁর দেশ প্রেম। এ দেশের মানুষের স্বাধিকার প্রশ্নে তাঁর অবস্থান এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান প্রশ্নাতীত। এটা তারেক জিয়া খুব ভাল জানেন এবং মানেনও। আর মানেন বলেই তিনি ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করতে যান। তাঁর সেই সফর প্রসঙ্গে স্থানীয় এবং সফরসঙ্গী দলীয় নেতারা প্রশ্ন করলে তারেক রহমান বলেন, জাতির পিতা হিসেবে উনাকে (বঙ্গবন্ধু) সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত ও ফাতেহা পাঠ শেষে ফেরার পথে তারেক রহমান গাড়িতে বসে সহকর্মীদের সামনে বঙ্গবন্ধুর ১৯৭১-এর ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেন।



অথচ বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপি তথা তাদের জোটের যখন একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রয়োজন পড়ল তখন তারা এই মহান নেতাকেই বেছে নিলেন। এটা আমাদের দেশের রাজনীতিবিদদের নীতি হীনতার এক বিশ্রী দৃষ্টান্ত হয়েই ইতিহাসে জায়গা করে নিবে। এটা সম্ভব হয়েছে এ কারণেই, এ দেশে দলীয় প্রধান অবতার এর মত। তার বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না। তার ভাষণই শেষ কথা। সে ভাষণ প্রতিষ্ঠিত করাই হল নেতৃবৃন্দের একমাত্র কাজ। আর সে জন্যেই তারেক রহমানের এই নিত্য নতুন আবিষ্কারকে জায়েজ করতে তাঁর দলের নেতা কর্মীরা আদা জল খেয়ে নেমে পড়ে। এখানে সত্য মিথ্যার বালাই নেই। নীতি নৈতিকতার লেশমাত্র নেই। যেন এটাই স্বাভাবিক।



সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যারা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজী রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেদিনের সেই অকুতোভয় বীর সেনানীর দলেরও একটি বড় অংশ শুধুমাত্র আনুগত্যের খাতিরে আজ এই মিথ্যেকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না তাদের এই নীরবতা একটি মিথ্যেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সুযোগ করে দেয়ার জন্যে হলেও এটা মূলত তাদেরকেই দেবতার আসন থেকে টেনে হিচরে নিচে নামিয়ে আনছে। মিথ্যেটাকে প্রতিষ্ঠিত করছে না।



এই সুযোগে তারেক রহমান শেষ পর্যন্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের রূপকারকে রাতারাতি মুক্তিযুদ্ধের শত্রু(রাজাকার) বলে ঘোষণা দিয়ে বসলেন। এটা করে যে ফায়দা তিনি হাসিল করতে চাইলেন তাতে সফলও হলেন। এবার আর ক্ষমতাসীনরা শুধু কথা দিয়ে কথার জবাব দিতে রাজি থাকলেন না। তারা এবার যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়েই মাঠে নামলেন। যার প্রথম পর্বের কাজটি সমাধানের ভার পড়ল ছাত্রলীগ-যুবলীগের কাঁধে।



কোন ঐতিহাসিক সত্যকে মুছে ফেলতে চাইলে সর্বোত্তম পন্থাটি হচ্ছে পূর্বেই একটি দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা। অনেকে মনে করছেন তারেক জিয়া লন্ডনে বসে সেই কাজটিই করছেন। তাকে এতটা বোকা ভাবার কি কোন কারণ আছে? ২০১৪ সালের তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে ইতিহাসকে যে পালটে ফেলা যায় না এটা বুঝতে খুব বেশী বুদ্ধির প্রয়োজন হয় না। তারেক রহমান মূলত চাইছেন আওয়ামী লিগ অসহিস্নু হয়ে উঠুক। একটু লক্ষ করে দেখুন; মুখে তারা যাই বলুন না কেন ২৭ তারিখ গাজীপুরে বেগম জিয়ার জনসভা নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হল ঠিকই অথচ ২৬ তারিখে কিন্তু ছাত্রদল বা বিএনপির কারো টিকিটিও দেখা গেল না জন সভাস্থল বা তাঁর আশেপাশে। তারা এভাবেই একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করে জনসমর্থন আদায় করতে চাইছে। কিন্তু কথা হল এতে কি আদৌ তাদের জনসমর্থন বাড়বে বা জনগণ কি সত্যিই বিক্ষুব্ধ হয়ে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে? সাধারণ মানুষের মন থেকে কি মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান এত সহজেই মুছে যাবে? তারা কি এই জঘন্য মিথ্যাচারকে সহজভাবে গ্রহণ করবে?



বিএনপির এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ সম্পৃক্ত হবে কেন? বিএনপি জোট ক্ষমতায় এলে জনগণের কি লাভ হবে। এটাই তো তারা আজো স্পষ্ট করতে পারেনি। সাধারণ চোখে যা দেখা যায় তা হল

বিএনপি জোট ক্ষমতাসীন হলে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীরা মুক্তি পাবে, আন্তর্জাতিক বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে, পদ্মা সেতু সহ অগ্রসরমান প্রকল্পগুলি বন্ধ হয়ে যাবে। এ দেশের নতুন প্রজন্মকে এই কয় বছর ধরে শেখা ইতিহাসকে ভুলে যেতে হবে শিখতে হবে নতুন ইতিহাস। আর বিএনপির নেতা নেত্রীরা ওঁ তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। প্রশ্ন হল দেশের মানুষ কি তাই চায়?



গণতন্ত্রের জন্য আকাঙ্ক্ষা থাকলেও এ দেশের মানুষের কাছে তার থেকেও অনেক বেশি অনুভূত হচ্ছে সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি আর কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা। যার কোনটিই বিএনপি তথা তাদের জোট সরকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তথাপিও তারা যদি এই বিষয়গুলিকে প্রাধান্য দিয়ে আন্দোলনের ডাক দিত তাও হয়ত হালে পানি পেত।



বর্তমান সরকার সুশাসন, দুর্নীতি আর কর্মসংস্থান প্রশ্নে আশা ব্যঞ্জক সাফল্য দেখাতে সক্ষম না হলেও বিএনপি ও তাদের জোটের নেতাদের মুখে গণতন্ত্র ছাড়া আর কোন শব্দই উচ্চারিত হয় না। এমনকি আওয়ামী লিগ যে ২০২১ এবং ২০৪১ এর দুটি গোল সেট করেছে তারা এমন কোন স্বপ্নের ভবিষ্যৎও দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে পারেননি। কাজেই তাদের কাছে গণতন্ত্রের ফাকাবুলি ছাড়া আওরাবার আর কিছুই নেই।

আর যে গণতন্ত্রের কথা তারা বলছেন সেটাও যে কতটা প্রতিধিত্বশিল গণতন্ত্র সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। যেখানে দলীয় কাউন্সিল হয় না। নেতা নির্বাচিত হয় দলীয় প্রধানের পছন্দে। যেখানে দলীয় প্রধান নির্ধারিত হন দলের জন্মদাতার সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে। যেখানে দলীয় প্রধানের কথাই শেষ কথা। সেখানে গণতন্ত্র কোঁথায়?



যে পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে এত কথা সেই নির্বাচন কি এটিও প্রমাণ করল না যে, এ দেশে দুটি দলের বাইরে আর কোন শক্তি নেই। এক দল নির্বাচনে না এলে অন্য দল তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবে এটাই তো স্বাভাবিক। আওয়ামীলীগ ইচ্ছে করলেই ডামী প্রার্থী দিয়ে নাটক সাজাতে পারত তাতে কি লাভ হত? বিএনপি জোট যেভাবে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে নির্বিচারে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছিল তাতে এটা করতে গেলে আরও কিছু লাশ পড়ত। তাতে লাভটা কার হত? এটা না করে শেখ হাসিনা বরং সেদিন দায়িত্বশীলতারই পরিচয় দিয়েছিলেন। যে কাজটি বেগম জিয়া করতে পারেন নি।



আজ যে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে বিএনপি জোট আন্দোলনে নেমেছে। তা সফল হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে তো নাকি গণতন্ত্রের লেবেলে স্বৈরতন্ত্র নব যৌবন লাভ করবে?



বিএনপি যে নির্বাচনের দাবিটি করছে তা কোন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে? আওয়ামীলীগ যে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় আর ফিরে যাবে না তা বলাই বাহুল্য। গ্রহণযোগ্য আর কোন ব্যবস্থা কি বিএনপি ভেবে রেখেছে। যদি না ভেবে থাকেন তাহলে অবিলম্বে তাদের সেই ব্যবস্থাটির রূপরেখা তৈরি করে উচিৎ। তা তারা করেছেন বলে কোন খবর এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তার মানে কি এই যে তারা পরাজয় মেনে নিয়েই আন্দোলন শুরু করেছেন অথবা নির্বাচন কিংবা স্বাভাবিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়ার বাইরে অন্য কোন উপায়কে সামনে রেখেই তাদের এই আন্দোলন!



[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: আপনার কথায় পরিষ্কার বিএনপির শাসনামলেও বঙ্গবন্ধুকে তারেক রহমান অসম্মান করেনি৷ বরং তার কবর জিয়ারত করতে গিয়ে এক উত্তম মানসিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল৷ অথচ আওয়ামী লীগ করেছে ঠিক উল্টো জিয়াউর রহমানকে রাজাকার ঘোষণা করেছে৷ এছাড়াও ৬ জন সেক্টর কমাণ্ডারকে রাজাকার আখ্যায়িত করেছে৷ বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকেও রাজাকার বলে আখ্যায়িত করেছে৷ শুধু মাত্র আওয়ামী লীগের কুকুর্মের সাথে একাত্মতা প্রকাশ না করায়৷ এসব লোক যদি রাজাকার হয়ে থাকে তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করলটা কে? বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি কারাগারে বসে নাকি অস্থায়ী সরকার পশ্চিমবঙ্গে রাজকীয় প্রাসাদে বসে যুদ্ধ করে স্বাধীন করল৷ তারেক রহমানের পিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার পরে না হয় সে এসব কথা বলা শুরু করেছে৷ যে কারও পিতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিবে আর সে চুপ করে শুনবে এসব যুক্তি আপনি কোথায় পেলেন? দলকানা হোন তবে অন্ধ বধির হওয়াটা মনুষত্বহীনতার লক্ষণ৷

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: কোন সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে মিথ্যের আশ্রয় নিতে হয় এটা কি ধরনের যুক্তি?
আওয়ামী লিগ যদি কারো উপরে মিথ্যে আরোপ করে থাকে তার বিরুদ্ধে যুক্তি, তথ্য উপাত্ত প্রদান করে তাকে মিথ্যে বলেই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আরেকটি মিথ্যের জন্ম দিয়ে নয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.