![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝে মাঝে আমার খুব ইচ্ছে হয় চারোদিকে শুধু হাসিমুখ দেখতে... ঘুম থেকে উঠে পূর্নিমা হোটেলে নাস্তা খেতে গিয়ে দেখবো 'গ্লাস বয়-ম্যাসিয়ার, ক্যাশিয়ার, খদ্দের' সবাই হাসছে... হাসছে রাস্তার অচেনা পথচারীরা... চা খেতে মোশারফ মামার টং দোকানে গিয়ে দেখবো সবাই হাসছে... হাসছে রিকশাওয়ালারা, বাস কিংবা প্রাইভেটকার চালকরা... হাসছে হকাররা... হাসছে গার্মেন্টস্ শ্রমিকরা... হাসছে স্কুলের ক্ষুদে শিক্ষার্থী থেকে ভার্সিটির বুদ্ধিজীবি টাইপের গম্ভীর ছেলেটাও! হাসছে পিঠা বিক্রেতা ময়না বানু... হাসছে নির্মান শ্রমিক জালাল মিয়া... হাসছে টোকাই শফিক... হাসছে ফুলওয়ালী কুসুম! আহারে! চারোদিকে কি দারুন প্রানবন্ত সব হাসিমুখ আর হাসিমুখ... ইট,কাঠ,কংক্রিটের এই শহরের রাস্তা-ঘাটে মলিন মুখ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে গেছি! যদি কোনদিন সত্যি সত্যি এই রকম হাসিমুখ দেখতে পেতাম তবে কেমন হতো কে জানে... নিশ্চয় ভয়ংঙ্কর আনন্দময় কিছু একটা হয়ে যেতো! একদম চোখ ভিজে যাবার মত আনন্দময়...
ও ভাই, কে আছেন... শুনছেন! ভাসমান শ্রমিক মজিদ মিয়ার ছোট ছোট বাচ্চাগুলো না খেয়ে আছে। কাজ নেই। অবরোধে থমকে গেছে দেশ তবু পেটের কি বিলাসিতা... কেবল ভাত চায়। মোটা চালের ভাত।
বড় মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে অটোরিকশা চালক রুস্তম আলী নিজেকে বন্ধক রেখেছেন এনজিওর পাশ বইয়ের ভাঁজে। অবরোধের আগুনের ভয়ে ফাঁকা পকেট, শূন্য হাঁড়ি, ছোট মেয়ের মলিন মূখ আর রাত পোহালে কিস্তির টাকার জন্য খেকশেয়ালের হাঁকডাক... রুস্তম আলী আকাশের পানে চেয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন, যেন বেঁচে থাকাটা আজন্ম পাপ!
ককটেলের আঘাতে রক্তাক্ত আনোয়ারা বেগম ২০ মিনিট রাজপথে পড়েছিলেন। কেউ এগিয়ে আসেনি। অতঃপর আনোয়ারা বেগম মরে গেছেন। দুই দল ক্ষমতালোভীদের অশ্লীল রাজনীতির হিংস্র থাবায় মরে গেছে আরও ২০ জন। নিহতদের ভীড়ে হারিয়ে যায় আহতদের আর্তনাদ... প্রিয়জনের কান্না আর স্বজনের শোকার্ত হাহাকার। হায়! মানব জীবন এতো সস্তা আর মূল্যহীন কেন? এতো এতো মানুষ মরে তবু রাজনীতিবিদদের টনক নড়ে না। আচ্ছা, কতটুকু বিবেক বিসর্জন দিলে অনুভূতিহীন আর পাথুরে হৃদয়সম রাজনীতিবিদ হওয়া যায়?
ডিওএইচএসের বিশাল রাস্তা আজ প্রায় ফাঁকা। বিষন্য লাইট পোষ্টের আলোয় দাঁড়িয়ে আছি। বাতাসে বেহালার করুন সূর। রক্তের ঘ্রান। বিদ্রোহী সুধাংশুরা একদিন জেগে উঠবে। বিপ্লবী শ্লোগানে মুখোরিত হবে রাজপথ। অবশেষে একদিন ভোর হবে! সেদিন কবে আসবে জানি না। আমি তাই হাঁটা ধরি বেদনাসিক্ত মন নিয়ে... নিকোটিন বড় প্রয়োজন।
©somewhere in net ltd.