নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তবু আজও স্বপ্ন দেখার নেই মানা ........

শহুরে আগন্তুক

নিজের কাছে নিজেই অচেনা রয়ে গেছি আজো । চেনার চেষ্টা করছি । মানুষ হিসেবে কেমন তা অন্যরাই ভাল বলতে পারবে । আমার কাছে আমি আমার মতোই । আশাবাদী , স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি । সুন্দর এবং শুদ্ধ অনুভূতিময় স্বপ্ন ।

শহুরে আগন্তুক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গ্রাজুয়েটকথন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম সমাবর্তন এবং একজন খুব সাধারণ ছেলের তিনটি দিন

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৭

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সব ডিগ্রি অর্জনকারীদের জন্যে নিয়মিতই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়, যেখানে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামন্য রাষ্ট্রপতি গ্রাজুয়েটদের আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করে থাকেন। সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান যেখানে অংশ নেয় হাজার, হাজার শিক্ষার্থী । গত চার বছর সিনিয়রদের সমাবর্তন কেবল দেখেই এসেছি, আল্লাহর অশেষ রহমতে এবার আমিও এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম সমাবর্তনের অংশ হলাম ।



সমাবর্তন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম চলে তিন দিন ব্যাপি । প্রথম দুইদিন গ্রাজুয়েটদের গাউন বিতরন, রিহার্সাল এবং আনলিমিটেড ফটোসেশন। তৃতীয়দিন হয় সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠান, যেখানে দেশের রাষ্ট্রপতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং নিমন্ত্রিত অতিথিগন গ্রাজুয়েটদের বরণ করে নেন ।



৪৯ তম সমাবর্তনের এরই মধ্যে প্রথম দুইদিন শেষ । আগামীকাল মূল অনুষ্ঠান। তার আগে এই দুইদিনের ব্যাপারে কিছু লিখতে বসলাম । কাল পর্যন্ত যদি বেঁচে থাকি এবং সমাবর্তন শেষ করতে পারি, তাহলে কালও লিখার আশা রাখি ।



১১.০১.২০১৫ ইং



আজ গাউন বিতরনের প্রথম দিন। গাউন দেয়া হবে ক্যাম্পাসে নিজের ডিপার্টমেন্টে সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা । সবাই ক্যাম্পাসে চলে গেলো বোধহয় সূর্য ওঠার আগে, আর আমি যেহেতু বরাবরই লেট লতিফ ; আমি গেলাম সাড়ে বারোটায় ।



গাউন হাতে পেলাম। অতি উদ্ভট ড্রেস । কুচকুচে ঢোলা বোরকা টাইপ মূল পোষাক, হুডি এবং হ্যাট। গায়ে দিলে একদম কাকের মতো দেখা যায়!! পেছনে সুপার ম্যানের মতো " আচল " উড়িয়ে চলার মতো ব্যবস্থাও আছে । অতি হাস্যকর অবস্থা.... কিন্তু পোশাকটা গায়ে এক ধরনের শিহরন জাগায় । শিহরনটা অর্জনের, জীবনের একটা পর্যায় সম্পন্ন করতে পারার আনন্দের। অন্য কোন পোশাক কি এমন অনুভূতির জন্ম দিতে পারে? আমার জানা নেই।



গাউন অফিসের ভেতরেই গায়ে দিয়ে ফেললাম :-P .... বহুদিন শেভ করা হয় নি বলে মুখে দাড়ি গোঁফের জঙ্গল, মাথার চুল কাকের বাসা। সাথে আয়না নেই, কিন্তু মোবাইল তো আছে। ফ্রন্ট ক্যামেরাকেই আয়না বানিয়ে নিজের তসবির দেখা হলো এবং দেখে মনে হলো না দেখাই ভালো ছিলো >_< .... ডাকু গব্বার সিংয়ের সাথে মোবাইলের স্ক্রীনে ফুটে ওঠা ব্যক্তির চেহারার অদ্ভুত সাযুজ্য! বেশীক্ষণ এই তসবির দেখলে হৃৎযন্ত্র বিকল হওয়া অবশ্যম্ভাবী।



সারা ক্যাম্পাস গিজগিজ করছে দু'পেয়ে কাকে । যেদিকে চোখ যাবে সেদিকেই তারা । সবার মুখে হাসি, চোখে আনন্দ। নানা কারণেই আমি ঠিক হাসতে পারার মতো অবস্থায় নেই। কিন্তু এতো শত শত আনন্দিত মানুষের ভীড়ে কি মন কি বিষাদের মেঘ কাটিয়ে আনন্দিত না হয়ে পারে? কখনোই না :-)



বন্ধু - বান্ধবদের সাথে দেখা হলো সিনেট বিল্ডিংয়ে । ক্লাসের অনেকেই সেখানে। একেকজনের চেহারায় " কোপাইয়া ছবি তুলছি " টাইপ অভিব্যক্তি! কয়েকজন দেখলাম ছবি তুলতে তুলতে এই হাঁড় কাঁপানো শীতের মধ্যেই ঘেমে গিয়ে গাউন খুলে নিজেকে বাতাস করছেন। এতোক্ষণে নিজের উপর মেজাজ খারাপ হওয়া শুরু হলো। কেন দেরি করলাম এতো? কেন শেভ করলাম না? চুল কাটালাম না? দিন দিন এমন গন্ডার হয়ে যাচ্ছি কেন? ইত্যাদি ইত্যাদি ।



ছবি তোলা শুরু হলো। একদম শুয়ে পড়া ছাড়া, অন্য সম্ভব্য সব স্টাইলেই মোবাইলে আর অন্যদের ডিএসএলআর এ ছবি উঠলো। তবে একটা কথা বাজি ধরে বলা যায়, ৪৯ তম কনভোকেশনের সবচেয়ে বিচ্ছিরি ছবি এসেছে আমার >_< ( তো কি হইছে?! একদিন ছবি খারাপ আসতেই পারে । জাতি তো জানে জাতি আসলে কেমন?! ;) B-) )







একসময় ছবি তোলা শেষ হলো এবং মনে হলো আমি না নিজের ডিজিটাল ক্যামেরাটা নিয়ে আসছি!



সমাবর্তনের পোষাক আর ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রেস্ট, টাই নিয়ে সগৌরবে বাড়ি ফিরলাম। এদিন আর বাসার কাউকে খুব বেশী কিছু বলি নি। ওটা পরের দিনের জন্যে তোলা থাকলো ।



১২.০১.১৫ ইং



রাতে ঘুম হয় না একদমই । প্রায়ই চোখে যখন ঘুম আসে তখন দেখা যায় যে বাইরে আলো হয়ে গেছে ।



এই দিনও একই কাজ ঘটলো এবং যথারীতি ক্যাম্পাস গেলাম পৌনে একটায় ( আমি এতো গাধা কেন!? X( ) । এবার আর ভুল করি নি, সকালে সেভ করিয়ে, চুল কাটিয়ে তারপর এসেছি। ফলাফল আরও ভয়াবহ। শেভ করার প্রথম দুইদিন ছেলেদের উদ্ভট দেখায়। আমাকে শেভ, আর্মি ছাট চুল এবং নিজের ফেস প্যাটার্ন - সব মিলিয়ে লাগলো এলিয়েনের মতো ।



আবার ছবির সাগরে প্লাবন.... একসাথে দাড়িয়ে ছবি, সোজা হয়ে ছবি, ত্যাড়া ব্যাকা কাইত হয়ে ছবি, হ্যাট মাথায় ছবি, হাতে নিয়ে ছবি, আকাশের দিকে ছুড়ে ছবি..... ছবি আর ছবি। ক্যাম্পাসের কোথাও পা ফেলার জায়গা নেই । পুরোটা মনুষ্য কাকেদের দখলে। অপরাজেয় বাংলা, রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাড়াতে পারা লটারি জেতার মতো ব্যাপার।



এর মধ্যেই অদ্ভুত এক ব্যাপার। ইউনিভার্সিটির অন্য কোন বিভাগে আজ ক্লাস হয় নি, কিন্তু আমাদের শিক্ষকরা ঠিকই দুটো ক্লাস নিলেন। আজও। এবং দ্বিতীয় ক্লাসটা যা করনো হলো তা প্রায় কেউ-ই কিছু বুঝলাম না। অহেতুক চমৎকার একটা দিনের মধ্যে শিক্ষকরা কালির দাগ বসালেন খুব সানন্দে ।



দেড়টা থেকে সাড়ে চারটা পর্যন্ত ক্লাস চলে যখন শেষ হলো, ততক্ষণে বিরক্তিতে মুখ তেতো হয়ে গেছে ।



ক্লাস শেষ । আর ক্যাম্পাস থাকার ইচ্ছা রইলো না। বাসে উঠে বসলাম। বাস ছাড়ার একটু আগে আমার ছোট কাকুর ফোন। কাকু অফিস শেষ করে প্রায়ই একটু হাটতে বের হন। আজ এসেছেন ক্যাম্পাসে। আশেপাশে সমাবর্তনের পোশাকধারী মানুষ দেখে আমাকে ফোন দিয়েছেন ।



কাকুও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী ছিলেন। আইন বিভাগের। বর্তমানে ঢাকার জজ কোর্টে কর্মরত আছেন জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট জাজ হিসেবে। একজন প্রতিষ্ঠিত, সফল মানুষ। কাকু খুব আনন্দিত গলায় বেশ কিছু কথা বলার পর হুট করে একটা মন খারাপের কথা বললেন। কাকু সমাবর্তন নিতে পারেন নি। কারণটাও শুনে মনে হলো নিজের বুকের ভেতরটা ফাঁকা হয়ে গেলো পুরোপুরি।



আমি বাইরে দিয়ে খুব কাঠিন্য দেখানো মানুষ হলেও এমনিতে খুবই আবেগ প্রবণ মানুষ। কারণটা শুনে আমার চোখে পানি চলে এসেছিলো। সাথেসাথে বাস থেকে নেমে কাকুর সাথে দেখা করলাম, ছবি তুললাম। আমার সাথে আমার দুই বন্ধু মুন্না আর রফিকও নামলো কাকুর সাথে দেখা করতে। কাকুর পাশে দাড়িয়ে ছবি তোলার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আমি এও জানি তিনি নিজে সমাবর্তন নিতে না পারার দুঃখ আজ আমাকে দেখে অনেকখানিই ভুলে গেছেন। কাল যদি সমাবর্তন নাও হয় আমার তাতে একবিন্দু আফসোস নেই।



বাসায় এসে বাবা - মা সহ সবার সাথেই ছবি তোলা হলো। তারা দুজন বিরাটট খুশী! খুশি বাড়ির মেঝো কাকু, চাচি, দাদী, ফুপা, ফুপি, কাজিন সবাই। দাদী বিবিএ কি সেটা বোঝেন না, তাকে বোঝানো হলে নাতি " বিএ " পাশ করেছে। আমার অতি সহজ সরল মা ক্রেস্ট নিয়ে একেবারে সবাইকে দেখাতে নেমে পড়লেন। স্বল্পভাষী বাবা হাসলেন পুরোটা সময়ই। মেঝো কাকুর সাথে ছবি তোলা এবারই প্রথম। চাচাতো বোন মিফতা তার খালিদ ভাইকে ঐ অদ্ভুত পোশাকে দেখে হাসতে হাসতে প্রায় গড়াগড়ি দিলো কতক্ষন। বোন গ্রাজুয়েট হয়েছে বছর দেড়েক। মা কতোক্ষন আফসোস করলেন যে গাউন পরা অবস্থায় তার দুই সন্তানের ছবি করা গেলো না বলে। তাকে আশ্বস্ত করলাম আমার আর আপার আলাদা ছবিই তাকে একসাথে এক ফ্রেমে এনে দেবো।... বাবাকে ছোট বেলায় পাই নি। আমার এক বছর বয়স থেকেই তিনি প্রবাসে ছিলেন। থেকেছেন এক যুগেরও বেশী সময়। বাবা কে এতো আনন্দিত আমি আগে কখনো দেখি নি । মা'কেও না ।



দাদাকে মিস করেছি খুব ।



এখন ঘুমুতে যাবো । সবচেয়ে বেশী মনে পড়ছে ছোট কাকুর কথাগুলো। আমার এই কাকুকে আমি পৃথিবীর চেয়েও বেশী ভালোবাসি। তার কষ্টটা আমার পথ চলার, জীবনে শুণ্য থেকে তার মতো বড় হতে চেষ্টা করার অনুপ্রেরণা যোগাবে বলেই আমার বিশ্বাস ।



........ ঘুমুতে যাওয়ার আগে বন্ধুরা হুংকার দিলো কাল দেরী হলে আমার " খবর আছে " । আমি মিনমিনে গলায় বললাম - মোবাইলে এলার্ম নিজে নিজেই বন্ধ করে দেই, মা ঝাড়ির ভয়ে ডাকই দেন না । আমার আসলে একটা লক্ষ্ণী - পক্ষ্ণী টাইপ বউ দরকার, যে আলতো হাতে ধাক্কা - ধাক্কি করে সকালে ঘুম থেকে ওঠাবে :P :D ; " ওগো, উঠছো ঘুম থেকে? উঠো... দেরী হয়ে যাচ্ছে তো!... উঠছো?! উঠো উঠো.... এখনও উঠে না! দিলাম কিন্তু পানি ঢেলে! "



এই কথা শুনলে আমি অবশ্যই লাফ দিয়ে উঠে বসবো! .... আর হ্যা মাই ডিয়ার ফিউচার লেডি, মিস করেছি তোমাকেও আজ /:) .... গ্রাজুয়েট হয়ে গেলাম সত্যি, কিন্তু আমি কিন্তু এখনও টাই বাঁধতে পারি না ।



ওটা বাঁধা শিখবোও না ভেবেছি । কারণ টাই বাঁধার দায়িত্বটা আমি তোমার ঘাড়েই চাপাতে চাই । কাজেই ওটা তুমি অবশ্যই শিখে রেখো, কেমন? :-)



১৩.০১.১৫ ইং



সমাবর্তনের তৃতীয় এবং শেষ দিন ।



আচ্ছা, সকালে একবার ঘুম ভাঙ্গার পর পাঁচ মিনিট আবার ঘুমাতে গেলে, সেই পাঁচ মিনিট কেন এবং কিভাবে আধ ঘন্টা হয়ে যায়?! এই নিয়ে কি কোন গবেষণা হয়েছে?



...... তৃতীয় দিন সমাবর্তনের মূল আনুষ্ঠানিকতার দিন । রাষ্ট্রপতি, নিমন্ত্রিত অতিথি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বক্তৃতা, সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠাণসহ আরও নানা কাজ। পুরো অনুষ্ঠানমূলত বক্তৃতা নির্ভর বলে দেখলাম অনেকেই যেতে উসখুস করছে! এদের ছবি তোলাতেই আগ্রহ!! কি আজব!! মানুষ কতো ছবি তোলে? একেক জন ছবি তুলতে তুলতে গত দুই দিনেই তো শহীদ হয়ে গেছে, তৃতীয়দিনেও ছবি!!



এদের ভাব দেখে অনন্ত জলিলের " খিল মি সামউয়ান... খিল মি " ডায়লগটা মাথায় চলে আসে । আমি স্ট্রেট বলে দিলাম সার্কেলের আর কেউ না গেলেও, আমি মূল অনুষ্ঠানে যাবো। কারণ আমার এই অনুষ্ঠানটা দেখার খুব আগ্রহ, আগ্রহ বক্তৃতা শোনাতেও। ভুল পড়েন নি.... আমার আসলেই সমাবর্তনের বক্তাদের বক্তৃতা শুনতে আগ্রহ অনেক। কারণ এখানে যারা কথা বলবেন, তাদের একেকজন জ্ঞাণে, যোগ্যতায় মহীরুহ । সামনাসামনা বসে এদের কথা শোনা ভাগ্যের ব্যাপার ।



বিশেষ করে নিমন্ত্রিত অতিথির বক্তৃতার প্রতি আকর্ষন আমার সবচেয়ে বেশী । বিশ্ববিখ্যাত অ্যাপল ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের ২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির সমাবর্তনে দেয়া কনভোকেশন স্পিচটা ( ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো - Click This Link ) যারা এখনো পড়েন নি, তারা জীবনে নিজের অজান্তে বিশাল বড় এক অপ্রাপ্তি নিয়ে চলেছেন । আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের সমাবর্তনের কনভোকেশন স্পিচ দেওয়ার জন্যে আমন্ত্রন জানানো হয়েছিলো ড. ফ্রান্সিস গ্যারি ( Director General of Intellectual Property Organization - WIPO ), বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ( LDC ) একজন বড় বন্ধু হিসেবে তিনি সুপরিচিত । তিনি স্টিভ জবসের মতো বক্তৃতা দেবেন কালজয়ী বক্তৃতা করবেন এটা আমি আশা করি নি, কিন্তু তার কথা শোনার আগ্রহও আমার বেশ ছিলো ।



অনুষ্ঠানে ঢোকার সর্বশেষ সময় ছিলো ১১.৩০ মিনিট । আমরা বরাবরের মতোই নিজেদের লেট লতিফের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে ঢুকলাম ১১.৩৫ মিনিটে । অনুষ্ঠান শুরু হলো জাতীয় সংগীতের চার লাইন দিয়ে...... আজকের জাতীয় সংগীতের আমেজ অন্য রকম বেশী ভালো লাগার ছিলো ।



দেরি করে ঢোকায় পেছনে বসতে হলো। বক্তৃতা শুরু হলে খুঁজে - পেঁতে সামনে গিয়ে সিট বসলাম । রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক, কনভোকেশন স্পিকার ড. ফ্রান্সিস হ্যারির সবার বক্তব্যই বেশ মন দিয়ে শোনা হলো। প্রথম দুজনের বক্তৃতা বেশী ভালো লেগেছে । ফ্রান্সিস সাহেবের বক্তৃতা মূলত তার ব্যাকগ্রাউন্ড বেজড ছিলো বলে কিছুটা হতাশই হলাম।



প্রোগ্রাম শেষ হলো । সব বন্ধু - বান্ধবরা মিলে খেতে গেলাম ধানমন্ডি " কড়াই গোশত " রেস্টুরেন্টে । অপরাজিতা এবং ভাইয়ার কল্যাণে বিশাল খাওয়াদাওয়া হলো ।



আজ প্রথম স্বেচ্ছায় টাই পড়লাম । টাইটা সমবার্তনের উপহার হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া । টাইয়ের নট বাঁধার মতো জটিল কাজ এখনো আয়ত্ব হয় নি, করার চেষ্টাও করি নি । বন্ধু মুন্নার সাহায্যে পরা হলো এবং বুঝলাম এই প্রথম টাইয়ে বেশ ভালোই মানিয়েছে ।



সন্ধ্যায় ক্লাসের সবার গ্রাজুয়েট ডিনার পার্টি ছিলো সেভেন হিলসে রেস্টুরেন্টে । আমি সেখানে না গিয়ে নিজের মতো করে ঘুরলাম ঘন্টা তিনেক । তারপর নারায়ণগঞ্জে ফিরে একটা টিউশনি সেরে বাসায় ফিরলাম সাড়ে দশটায় ।



এখন ঘুমিয়ে পড়বো ।



সামনের সকালটা থেকে নতুন ভাবে জাগতে চাই, নিজের অপ্রাপ্তিগুলো নিয়ে পড়ে না থেকে সামনে এগিয়ে যেতে চাই । আমার হাঁটার ইচ্ছা বহুদূর, জীবনের এই বন্ধুর পথেই ...... দোয়া করবেন সবাই আমার জন্যে ।



অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্যে ।



- মো. খালিদ রহমান গাজী

গ্রাজুয়েট

ফিন্যান্স বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সেশন: ২০০৯-১০



১৩ জানুয়ারি , ২০১৫

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৪

মাথা ঠান্ডা বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:১৬

রহস্৪২০ বলেছেন: মাথা ঠান্ডা বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: আর আপনি ?????????

৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: শুভেচ্ছা আন্তরিক আবেগকে গুছিয়ে শেয়ার করায়!!!

অভিনন্দন গ্রাজয়েশনে!

জাতি অপেক্ষায় একজন ভাল মানুষের, একজন ভাল নেতার, একজন ভাল সুনাগরিকের!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৯

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: দোয়া করবেন যেন তা হতে পারি :) ....

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫৬

সুমন কর বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। !:#P !:#P !:#P

লেখায় ৩য় ভাল লাগা।

অামিও প্রায় ৯/১০ বছর অাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করেছিলাম।


তাই অাজ থেকে অাপনাকে, তুমি করে বলব। যদি অাপত্তি না থাকে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫০

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: তুমি করে না বললেই আপত্তি থাকবে !!! আপনাকে ফেসবুকে খুঁজে এড পাঠাবো । আমার আইডি " মোঃ খালিদ রহমান " । ভালো থাকবেন ।

৫| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

আরজু পনি বলেছেন:

আপনার লেখাটা এতো প্রাণবন্ত লাগলো ! :D

আমার সময়ে আমি অনেক বোকা ছিলাম, কারণ পিয়ারু ভাইয়ের দারুণ সব ছবিতোলা থেকে নিজেকে বঞ্চিত করেছি। ড্রেস রিহার্সাল মিস করেছি !..
শুধু মূল অনুষ্ঠানে বোকার মতো বসে ছিলাম ।

যদিও হলের রিইউনিয়নে ইচ্ছেমতো ছবি তোলা মিস করিনি :P

গাউন গায়ে একটা ছবি আছে নিজের সংগ্রহে...আমার বর তুলে দিয়েছিল ।


নামের পরে গ্র্যাজুয়েট লিখেছেন ...পড়তে ভালো লাগছে।

জীবনে অনেক বড়, সফল মানুষ হোন। অনেক শুভকামনা রইল ।।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৩

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ । দোয়া করবেন আমার জন্য !!!! আর কেমন আছেন আপনি???

৬| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

বটের ফল বলেছেন: অভিনন্দন আপনাকে।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪

শহুরে আগন্তুক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.