নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

১৯৭১ : অস্পষ্ট স্মৃতি থেকে

১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৩৬



স্বাধীনতা যুদ্ধের দিনগুলোর কথা আমার স্পষ্ট মনে পড়ে না। কষ্ট করে স্মৃতি রোমন্থন করতে গেলে মুছে যাওয়া কিছু স্মৃতি অত্যন্ত অস্পষ্টভাবে মানসপর্দায় ধরা পড়ে।

কবে কখন কোথায় কীভাবে এবং কেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কিংবা অতর্কিতে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল পরে ইতিহাস পড়ে জানতে পেরেছি। কিন্তু সেদিন জানতে পারি নি, কারণ জানার মতো বয়স, জ্ঞান এবং বোঝার ক্ষমতা তখনও আমার হয় নি। কেননা, তখনও আমি চালতে কিংবা বটের শুকনো পাতার ঘুড়ি উড়িয়ে দল বেঁধে ছুটে বেড়াই মাঠ থেকে মাঠে। প্রচণ্ড ঝড়েও সাথিদের সংগে আম কুড়োতে যাই, হাতে থাকে পাখি মারার গুলতি, দিগম্বর হয়ে খালে ও পুকুরে ঝাঁপ দিই।

তখন আমার বয়স কত, তা আমি জানি না। হতে পারে ৪, ৫, বা ৬; তবে ৭- এর বেশি হবে না তা নিশ্চিত। কিন্তু সেই সময়ে ঘটে যাওয়া, আমার চোখের সামনে দেখা বিস্ময়কর অনেক কিছুই আমার ভাসা ভাসা মনে পড়ে।

শৈশব, কিংবা সদ্য শৈশবোত্তীর্ণ বয়সের এমনি একদিন। দুপুরের ঝাঁঝালো রোদে আমরা একদল শিশু-কিশোর লাংগলচষা ক্ষেতের উপর দৌড়ে ঘুড়ি উড়ানোর মহোল্লাসে মেতে উঠেছিলাম। হঠাৎ প্রলয়ংকারী শব্দে পশ্চিমাকাশ বিদীর্ণ করে প্রায় মাথা ঘেঁষে উড়ে গেলো একঝাঁক বোমারু বিমান। আমরা অবুঝ কিশোরের দল ভয়ে প্রচণ্ড চিৎকার দিয়ে দু হাতে কান বন্ধ করে বাড়ি অভিমুখে ছুট দিয়েছিলাম। কেউ কেউ ক্ষেতের ইটায় হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলো। সারা গ্রামে শোরগোল। হন্তদন্ত হয়ে আমার মা বাড়ি থেকে ছুটে এলেন, এলেন আরো অনেকে। শক্ত ঢিলার উপর আছাড় খেয়ে পড়ে গিয়েছিলাম আমিও। বুক ছুলে গিয়ে রক্ত বেরুচ্ছিল। মা আঁচলে বুক মুছে দিয়ে ত্রস্ততার সাথে বাড়ি নিয়ে গেলেন। সবাই তখন কী এক আতংকে ভুগছিলাম।

সেদিন থেকেই শুনতে পেলাম এবং কিছুটা বুঝতে পারলাম দেশে গণ্ডগোল চলছে। তবে কীসের গণ্ডগোল চলছে সে বিষয়ে স্পষ্ট না। কেবল শুনতাম, মিলিটারিরা গ্রামের পর গ্রাম, হাটবাজার পুড়ে ছারখার করে দিচ্ছে, নির্বিচারে মানুষ মেরে শহরগ্রাম উজাড় করে দিচ্ছে। এই মিলিটারির লোকেরা কারা সে বিষয়ে আমি কিছুই বুঝতে পারতাম না। এবং কেনই যে তারা শহরগ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছিল, কেনই যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছিল তা কিছুতেই আমার ধারণায় আসতো না।

একদিন সন্ধ্যার কিছু পূর্বে আমাদের গ্রাম থেকে আধ-মাইল দূরে পশ্চিমের দু’ গ্রাম গাজিরটেক ও সুতারপাড়ায় গোলাগুলির শব্দ শোনা গেলো। গোলাগুলির শব্দ ক্রমেই নিকট ও প্রকট হতে লাগলো। সমস্ত কাজকর্ম ফেলে বাবা ও চাচা আমাদের সবাইকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন আমাদের বাড়ির পুবদিকে অবস্থিত একটা ঘন জংগলের ভিতর, যেটাকে গ্রামের মানুষ ‘বাগ’ বলতো। আমাদেরকে এক জায়গায় জড়ো করে বসিয়ে কোনোরকম টু-শব্দটি পর্যন্ত করতে নিষেধ করে দিলেন। বাবা আমার শরীর জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন এবং তাঁর সর্বাংগ থরথর করে কাঁপছিল। কী জানি কেন, আমার তখন একটুও ভয় পাচ্ছিল না। গোলাগুলির শব্দটাকে ইদের পটকা ফোটানোর মতোই রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছিল।

একসময় গোলাগুলির শব্দ থেমে গেলো। আমরা জংগলের ভিতর গুঁটিসুটি করে বসে - চারদিকে এক রহস্যময় স্তব্ধতা। অনুভব করতে লাগলাম, বাবার শরীরের কম্পন আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। এরপর আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বাবার ডাকে যথন ঘুম ভাংগলো তখন সকালে সূর্য উঠে গেছে। আমরা বাসায়।

এরপর প্রতিদিনই খবর আসতো, আজ এ গ্রামে মিলিটারি আসবে। অতএব, সকাল সকাল রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া, অতঃপর সপরিবারে জংগলের ভিতর আত্মগোপন ও রাত্রিযাপন। অবশেষে এ কাজটি আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপের একটি অংশবিশেষে পরিণত হয়ে গেলো। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় কিংবা সন্ধ্যার কিছু পরে পার্শ্ববর্তী গ্রামসমূহে গোলাগুলি শুরু হতো। সে শব্দ ক্রমশ বিকট হতে থাকতো, আবার একসময়ে তা ধীরে ধীরে মিলিয়েও যেতো।

একদিন সকাল থেকেই গ্রামময় হৈহৈ রৈরৈ রব পড়ে গেলো, আজ মিলিটারিদের সাথে মুক্তিবাহিনীর লড়াই হবে। লড়াইটা হবে গ্রাম থেকে আধমাইল উত্তরে দোহারের খালে। দোহারের খাল পার হবার জন্য বানাঘাটা গ্রাম থেকে আমাদের ডাইয়ারকুম গ্রামে আসার একটাই মাত্র জায়গা আছে। সেটি হামিদ মোল্লার ভিটা বরাবর। ঐ জায়গা পার হয়ে আমাদের গ্রাম আক্রমণ করতে আসবে মিলিটারিরা। আর তখনই তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

আমি সেদিনই প্রথম জানতে পেরেছিলাম গেদা ভাই, রজব মামা, তোতা কাকা, এঁরা হলেন আমাদের ডাইয়ারকুম গ্রামের মুক্তিবাহিনীর নেতা। আর সেদিনই এসব নেতাদের আমি প্রথম দেখি এবং সেদিনই প্রথম একটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলাম - মিলিটারিরা আমাদের শক্র, মুক্তিবাহিনীরা আমাদের নিজস্ব মানুষ, যাঁরা দেশকে স্বাধীন করার জন্য মিলিটারিদের বিরুদ্ধে লড়ছেন।

আক্রমণ-স্থানে যাবার রাস্তাটি আমাদের বাড়ির ৫০ গজ পশ্চিম থেকে শুরু হয়েছে। ক্রমে ক্রমে সেখানে মানুষের ভিড় জমতে থাকলো। আমাদের গ্রামসহ পাশের অন্যান্য গ্রাম থেকেও মানুষ ছুটে আসতে লাগলো। কেউ বড়ো, কেউ ছোটো - সকল শ্রেণির সকল পেশার মানুষ। কারো হাতে দা, রামদা, কারো ঢালশুর্কি, কারো হাতে লাঠি ও বাঁশ। কেউ হাতে নিয়েছে জুঁতি, কেউ কুঁচি, কেউবা কাঁচি। কুড়াল, খুন্তি এসবও। দুপুর হতে না হতেই আমাদের বাড়ির উত্তর দিকের চকটি জনে জনারণ্য হয়ে গেলো। এত মানুষ আমি এর আগে দেখি নি।

আমার মন চঞ্চল হয়ে উঠছিল; ঐখানে কী ঘটছে তা জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠছিলাম আমি। ঘরের ভিতরে জানালার পাশে বসে দেখতে লাগলাম - খালপাড় ধরে কেবল মানুষ আর মানুষ। তারা অপেক্ষা করছে মিলিটারিদের জন্য, একটা লড়াইয়ের জন্য, একটা প্রতিরোধ গড়ার জন্য, তারা ডাইয়ারকুম গ্রামে শক্রর আগমন ঘটতে দেবে না।

আমিও ঘরে বসে একটা লড়াই দেখার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিলাম। বিকেল গড়িয়ে যাচ্ছে, তবুও লড়াইটা শুরু হচ্ছে না। একসময় সন্ধ্যা হলো। অত দূরে আর কিছুই দেখা যায় না। মা-ও একবার বাড়ির বাইরে, আবার ঘরের ভিতর চিন্তিতভাবে পায়চারি করছিলেন। আমাদের দু ভাইবোনকে মা ভাত বেড়ে খেতে দিলেন। আগেভাগেই খেয়ে নেয়া ভালো, কখন কী হয় কে জানে।

শেষ পর্যন্ত ওখানে মিলিটারিরা এসেছিল কিনা, বা দু-পক্ষে কোনো যুদ্ধ হয়েছিল কিনা তা আমি জানি না। আমাদের বা শত্রুবাহিনীর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল কিনা, বা হলেও কতখানি ছিল, তা জানার কোনো উপায় ছিল না আমার। বা তখন জেনে থাকলেও এখন আর সেটা মনে নেই। তবে, এটা আমার ছোটো চোখে দেখা একটা বিরাট বিস্ময়কর ঘটনা। এখনো চোখে ভাসছে, দোহারের খালপাড়ে হামিদ মোল্লার ভিটা বরাবর মানুষ থৈ থৈ করছে। (ঐ সময়ের কেউ যদি আমার ফেইসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে থেকে থাকেন, যাঁরা এ ঘটনাটি জানেন, দয়া করে অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন। অন্য কোনো ঘটনাও শেয়ার করতে পারেন।)

প্রাচীন পাণ্ডুলিপির প্রথম কয়েকটা পৃষ্ঠা পড়া যায় না - ধুলোবালি জমে থাকে, পোকায় কাটে - লেখা অস্পষ্ট থাকে। আমার অস্পষ্ট স্মৃতিগুলোর কিছু কথা এতক্ষণ ভাবছিলাম। এখন আরো অনেক কিছু মনে পড়ছে। মনে পড়ছে, যুদ্ধ শুরু হবার ক'মাস পরই আমার একমাত্র চাচা বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। আমার বুড়ো দাদি ছেলের জন্য কেবলই কাঁদতেন। কাঁদতে কাঁদতে চাচির চোখ সারাক্ষণ ফুলে থাকতো। ১৩ ডিসেম্বর ২০২০ সালের সন্ধ্যায় আমার চাচির সাথে মোবাইলে আলাপকালে চাচি জানালেন, চাকরির উদ্দেশ্যেই চাচা বাড়ি থেকে ঢাকা গিয়েছিলেন। কোনো এক রেললাইনের পাশেই নাকি তার চাকরি হবে বলে চাচা বলে গিয়েছিলেন। চাচি বললেন, চাচা চলে যাওয়ার পর বাড়ির সবাই ধরে নিয়েছিলেন, চাচা আর বেঁচে নেই। কারণ, ঢাকা থেকে চাচার কোনো খবর আসতো না বাড়িতে। এতদিন ধরে খবর না পাওয়ায়, দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতির ভয়াবহতার জন্যই চাচার মরে যাওয়ার ব্যাপারে বাড়ির সবাই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল।

আমার আরো মনে পড়ছে, যুদ্ধ শুরু হবার পরপরই ঢাকায় বসবাসরত আমার ফুফা-ফুফুসহ অনেকেই সপরিবারে গ্রামে ফিরে এলেন। তাদের সংগে এলো বেশ কয়েকটা হিন্দু পরিবার। সেই পরিবারকে প্রতিবেশীদের সাথে ভাগাভাগি করে জায়গা করে দেয়া হলো। তাদেরকে টুপি, জায়নামাজ দেয়া হল। ভেংগে ভেংগে তারা বলতে শিখলো, লাই ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।

দোহারের খালের উত্তর পাড়ে হামিদ মোল্লার ভিটার পশ্চিম কাছ ঘেঁষে আমাদের একটি জমি ছিল। প্রতিবারের মতো সে-বছরও জমিতে আউশ-আমন ধান বোনা হয়েছিল। ভরা বর্ষায় প্রায় প্রতিদিনই আমি বাবার সাথে নৌকায় করে সেই জমি দেখতে যেতাম। বর্ষার পানিতে খালের দুই পাড় ডুবে গেছে। ভিটা বরাবর একটা বাঁক থাকায় পানির স্রোত সরাসরি ভিটায় এসে লেগে ডানে-বামে বাঁক নেয়। দোহার গ্রামের ভিতর দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য লাশ পানিতে ভেসে আসতো; ভিটায় বাড়ি খেয়ে কিছু লাশ আমাদের ধানক্ষেতে ঢুকে পড়তো। বাবা সেই লাশগুলো নৌকা দিয়ে ঠেলে খালের মূল স্রোতে ভাসিয়ে দিতেন।

দুপুর বা বিকেলে মায়ের সাথে আমাদের বাড়ির উত্তর পাশের খালে গোসল করতে নামতাম। মা পূর্ব দিকে আমাদের দেখাতেন- পুড়িয়ে দেয়া ঢাকা শহরের সাদা-কালো ধোয়া কুণ্ডলি পাকিয়ে আকাশে উঠে যাচ্ছে। তখনো আমরা ঢাকা শহরে যাই নি। এতদূর থেকে ঢাকা শহরের ধোয়া দেখাও আমাদের জন্য বিস্ময়কর ছিল। এবং এ দৃশ্য দেখাও আমাদের একটা দৈনন্দিন রুটিনের মতো হয়ে গেলো।

অবশেষে একদিন আমাদের গ্রামে মিলিটারিদের দেখা গিয়েছিল। ‘মিলিটারি’ বলতে আমরা পাকিস্তান আর্মিকেই বুঝতাম। কিন্তু যাঁদের দেখা গেলো, তারা পাকিস্তানি আর্মি নয়, পাকিস্তান আর্মির পোশাক ছিল খাকি রঙের (পুলিশের পোশাকের মতো)। একদিন দুপুরের দিকে দেখা গেলো কালো চক্রাপাক্রা রঙের পোশাক পরা বিরাট একটা মিলিটারির দল গ্রামের ভিতর থেকে বের হয়ে আমাদের বাড়ির পশ্চিম দিকের রাস্তা দিয়ে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে যাচ্ছে (চলতি ভাষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চার-রঙা কম্ব্যাট পোশাককে আমরা বড়ো হয়েও চক্রাপাক্রা বলতাম)। সম্ভবত আমাদের দক্ষিণের গ্রাম ঘাড়মোড়া, ঝনকি বা আরো দক্ষিণে শিমুলিয়া গ্রামে তাঁদের ঘাঁটি ছিল। তাঁরা ধীর পায়ে চকের রাস্তা দিয়ে হামিদ মোল্লার ভিটা বরাবর উত্তর দিকে হেঁটে যেতে লাগলেন। আমাদের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কোণে একটা হিজল গাছ ছিল, আমি সেই হিজল গাছে চড়ে 'মিলিটারি'দের লম্বা সারিকে চকের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে চলে যেতে দেখলাম।

এখন যত সহজে লিখছি বা বলছি, ঐ সময়ের অনুভূতিটা এরকম ছিল না। ‘মিলিটারি’ বলতেই যেহেতু পাকিস্তান আর্মিকে বুঝতাম, এই শব্দটার মধ্যেই একটা ভয়ঙ্কর আতঙ্ক ছিল। এই মিলিটারি দলটাকে দেখেই আমি আতঙ্কিত এবং যুগপৎ অবাক হলাম। যে মিলিটারির ভয়ে আমরা এতদিন জঙ্গলে গিয়ে রাত কাটিয়েছি, যারা গ্রাম-শহর পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে, পাখি মারার মতো মানুষ মেরেছে, তারা আজ আমাদের গ্রামের ভিতর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, অথচ গ্রামে কোনো আতঙ্ক, হৈচৈ নেই, সবকিছু খুব স্বাভাবিক ভাবেই চলছে। বাড়ির পশ্চিম পাশের একটা হিজল গাছে উঠে বসলাম আমি; আমার শরীর কাঁপছিল ভয়ে। মিলিটারিদের লম্বা সারিটি চকের রাস্তায় এঁকেবেঁকে চলে যাওয়া বিরাট একটা কালো সাপের মতো লাগছিল।

আমি আজও নিশ্চিত নই, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কোনো প্লাটুন বা কোম্পানি আমাদের দোহারে মোতায়েন হয়েছিল কিনা। যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটা নিশ্চিত, এই মিলিটারি দলটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অংশ। ঐ মিলিটারিদের গায়ে যে পোশাক ছিল, বড়ো হয়ে বাংলাদেশ আর্মির গায়ে ঐ পোশাকই দেখেছি। কাজেই, ঐ দলটা যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীরই কোনো প্লাটুন হয়ে থাকবে, সেই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। বাই চান্স তা না হয়ে থাকলে এ সন্দেহ দূর হতে মনে হয় আরো অনেক সময় লাগবে, হয়ত সারাজনমেও এই সন্দেহ দূর হবে না। একটা প্লাটুনে ২৫ থেকে ৪০ জনের মতো জনবল থাকে। ঐ দলেও জনবল এরকমই ছিল। আমার ফেইসবুক লিস্টে আমাদের দোহারের কোনো মুক্তিযোদ্ধা যদি থেকে থাকেন, কিংবা এ ব্লগের কোনো দোহারী ব্লগার এ লেখাটি পড়ে এ ব্যাপারে মতামত দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো; বিশেষ করে আমাদের সুতারপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোহাম্মদ বায়েজীদ মীর স্যারের প্রতি অনুরোধ থাকলো- লেখাটি আপনার নজরে এলে দয়া করে জানাবেন, বাংলাদেশ আর্মির কোনো কোম্পানি বা প্লাটুন আমাদের দোহারে মোতায়েন হয়েছিল কিনা। তখন হয়ত বুঝি নি, যা এখন সহজেই অনুমেয় যে, সময়টা হয়তো ১৬ ডিসেম্বর বা এর আগে-পরের কোনো একদিন হয়ে থাকবে, যখন পাক-বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঘোষণা হয়ে গেছে এবং মুক্তি বাহিনীরা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরে একত্র হচ্ছেন। (নোট : এ 'মিলিটারি' দলটির হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য আজও আমার চোখে স্পষ্ট ভাসে। তাদের পোশাক কালো বা ৪ রঙা চক্রাপাক্রা ছিল, তাতে কোনো ভুল নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশ আর্মির পোশাক ৪ রঙা চক্রাপাক্রা ছিল কিনা, তা নিশ্চিত হতে না পারায় মনে হচ্ছে, ব্যাপারটা এমনও হতে পারে যে, ওটা ১৯৭১-পরবর্তী সময়ের, বিশেষ করে ১৯৭৫-এর সময়কার কোনো সেনা-টহল বা মহড়াও হতে পারে, যা আই-এস ডিউটি বা 'ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন' বজায় রাখার জন্য পরিচালনা করা হয়ে থাকতে পারে। এ নোট সংযোজনের তারিখ : ২৬ মার্চ ২০২৪)

ঐ সময়ের একটা সুন্দর স্মৃতির কথা মনে পড়ে। একদিন বাবার সাথে দেবিনগরের হাটে গেছি (জয়পাড়া হাঁট। তখন আমরা 'দেবিনগরের হাট'ই বেশি বলতাম)। খালের পুবপাড়ে ব্রিজের গোড়ায় মাইক্রোফোন হাতে এক ব্যক্তি অনর্গল বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছেন। তার বক্তৃতায় বার বার একটা কথা উচ্চারিত হচ্ছে :

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম


কথাটা শুনতে শুনতে আমার মুখস্থ হয়ে গেল। আর বক্তার কণ্ঠে একটা নামও বার বার ধ্বনিত হচ্ছে। নামটি হলো 'শ্যাখ মুজিব! শ্যাখ মুজিব!' যে ব্যক্তি বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তাকে পরে চিনতে পারি, তার বাড়ি ঝনকি। তিনি নাটকের প্রম্পটার হিসাবে বেশ দক্ষ ও বিখ্যাত ছিলেন। আমার ফেইসবুক লিস্টের কেউ তাকে চিনে থাকলে প্লিজ নামটি বলবেন, তার নাম আমি ভুলে গেছি, যদিও কোনো এক-সময় তার সাথে আমার পরিচয় হয় এবং নাটক-যাত্রা, ইত্যাদিতে তার প্রম্পটিঙে আমি অভিনয়ও করেছি।

আরো একটি দিনের কথা অনেক বেশি মনে পড়ছে। সেদিন দুপুরে এক মিছিল এলো। ছেলেবুড়ো, যুবক সবাই সেই মিছিলে। তাদের কণ্ঠে উদাত্ত শ্লোগান। তাদের কারো কারো হাতে পতাকা। দৌঁড়ে যাচ্ছে মিছিল- প্রচণ্ড আবেগ আর উত্তেজনায় টগবগ করছে সেই মিছিল।

যখন গাঁয়ের রাস্তা জনস্রোত আর গগনবিদারী স্লোগানে টলমল করছিল, মানুষের হাতে ছিল পতাকা - কী মহোল্লাসে আমারও চিত্ত চঞ্চল হয়ে উঠেছিল- এক অভূতপূর্ব উত্তেজনা, এক দুর্দমনীয় নেশা হাতে একটা পতাকা ধরার জন্য। কিন্তু ন্যাংটো শ্রীযূতকে কে দেবে পতাকা?

আমার মতো আরো অনেকের হাতেই এমন পতাকা ছিল- তাই আর মুহূর্ত দেরি নয়, হাতের নাগালেই ছিল খড় নাড়ার কাড়াল, আর ছিল আমার প্রিয় গামছাটি। আমি কাড়ালের মাথায় গামছা বেঁধে এক পলকে বানিয়ে ফেললাম বাংলাদেশের পতাকা- আর দৌড়ে মিশে গেলাম রাস্তার মিছিলে।

মিছিল গিয়ে জমায়েত হলো আমাদের গ্রামের স্কুলের ময়দানে। চারদিক থেকে ছুটে আসতে লাগলো মানুষের ঢল। বিরাট মাঠ মানুষে ভরে গেলো। মাইকে অনবরত বেজে চলছে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটিসহ দেশাত্মবোধক ও জাগরণের আরো অনেক অনেক গান, যা শুনলে যে-কোনো বয়সেই রক্ত টগবগিয়ে ফুটতে থাকে। এটি ছিল সম্ভবত যুদ্ধ জয়ের আনন্দোৎসব, বিজয়দিবসের গণ সমাবেশ। তখন ঠিকই বুঝি নি, শুধু জ্ঞান হবার পর সুনিশ্চিত ধারণায় বুঝেছিলাম ওটা ছিল ১৬ই ডিসেম্বর বা এর আগে-পরের কোনো একদিন।

যুদ্ধ শেষ হবার পর একদিন ছায়াপড়া বিকালে হঠাৎ চাচা বাড়ি ফিরে এলেন। আমার এখনো স্পষ্ট মনে পড়ে – চাচা দুয়ারে পা দিতেই আমরা সবাই দৌড়ে ছুটে গেলাম। পুলিশের পোশাক গায়ে চাচা দাঁড়িয়ে আছেন। পশ্চিমের আমগাছ আর ঘরের ছায়ায় পুরোটা দুয়ার ঢেকে গেছে। দাদি সেই চাচাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছেন। চাচি কাঁদছেন। ছোটোবেলায় পুলিশকে খুব ভয় পেতাম বলে চাচার গায়ে পুলিশের পোশাক দেখে আমি ভয়ই পেয়েছিলাম। আসলে পুলিশ নয়, বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকা গিয়ে চাচা আনসার বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন।

উত্তাল ১৯৭১ শেষ হলো। বাংলাদেশ স্বাধীন। তখনো আমরা স্বাধীনতার অনুভূতি সম্বন্ধে কিছু বুঝি না। বুঝি শুধু চাচার গল্প। সন্ধ্যায় খাওয়া দাওয়ার পর পরই দুয়ারে বিছানা বিছিয়ে চাচাকে ঘিরে বসে পড়তাম আমরা। চাচা যুদ্ধকালীন ভয়াবহ দিনগুলোর কথা বর্ণনা করতেন একনাগাড়ে। চাচার বর্ণনা এমন ছিল যে, অনেক সময়ই তার কথা শুনে আমাদের গা শিউরে উঠতো। কুর্মিটোলা থেকে পাকিস্তান আর্মি বঙ্গবন্ধুকে ধরে নিয়ে যায় – এরকম লিরিকের একটা গান গাইতেন চাচা। যুদ্ধ শেষ হবার ৪/৫ বছর পর পর্যন্ত প্রায় নিয়মিতই চাচার গল্প শুনতাম এভাবে।

বড় হয়ে পড়ালেখা ও জীবিকার জন্য বাড়ি ছাড়লাম। বাড়িতে গেলে কোনো কোনো অবসরপূর্ণ সন্ধ্যায় আগের মতোই চাচার মুখে সেই যুদ্ধের কাহিনি শুনতে বসে পড়তাম। ২৫-৩০ বছর আগের কথা কী ঝলমলে ভাষায় বলে যেতেন চাচা, যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সদ্য ফেরত এলেন। চাচার মুখে সেই যুদ্ধের কাহিনি শুনি বাল্যকালের মতোই গা শিউরে উঠতো।





একটা আশ্চর্য ভাবনা মাত্র কয়েক মাস আগে থেকে আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। চাচার কাছে তো কোনো মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র ছিল না- মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় কি তাহলে চাচার নাম অন্তর্ভুক্ত হয় নি?

মুক্তিযোদ্ধা সনদপত্র, নামীয় তালিকা হালনাগাদকরণ- বড়ো হয়ে এই বার্নিং ইস্যুগুলোর সাথে সম্পৃক্ত হবার অনেক সুযোগ হয়েছে আমার- কিন্তু আশ্চর্য, একটি দিনের জন্যও আমার মনে হয় নি, দেখি তো চাচার নামটা কোন সেক্টরে দেখানো হয়েছে- আচ্ছা দেখি তো চাচার নামটা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিনা- আশ্চর্য, ঘুণাক্ষরেও এ বিষয়টি আমার মনে উঁকি দেয় নি। এমনকি আমার চাচাকেও কোনোদিন বলতে শুনি নি- আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। শুধু যখন যুদ্ধের দিনগুলোর কথা আলোচনা প্রসঙ্গে কোথাও উঠে আসতো- দেখতাম অনর্গলভাবে চাচা বলে যাচ্ছেন- কীভাবে জঙ্গলে জঙ্গলে রাত কাটাতে হয়েছে- গুলিবিদ্ধ সহযোদ্ধাদেরকে কীভাবে তাঁরা শুশ্রূষা করেছেন- এসব।

নিজেকে যখন খুব অপরাধী মনে হলো- তখন একবার মনে মনে ভাবলাম খুঁজে দেখি চাচার নামটা সত্যিই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আছে কিনা। পরক্ষণেই ভাবলাম- কী লাভ, চাচার নামটা কোথাও খুঁজে না পেলে তো শুধু আমার কষ্টই বাড়বে, আর কিছু না তো। আমার দরিদ্র চাচা জীবিতাবস্থায় জীবিকার জন্য অনেক কঠিন সংগ্রাম করে গেছেন, তিনি হয়তো জানতেনও না 'দরিদ্র' মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার থেকে কী কী সুবিধা দেয়া হচ্ছে, এ নিয়ে তাঁকে কোনোদিন একটা কথাও বলতে শুনি নি - যুদ্ধ করলাম, অথচ সরকার আমারে কিছুই দিল না।

আমার চাচার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় না থাকলে এমন কীই বা ক্ষতি আমার বা চাচার পরিবারের? তাতেই তো আর প্রমাণিত হলো না যে আমার চাচা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমার চাচা যে একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তার সবচেয়ে বড় দলিল তো আমি নিজে- এখনো চোখের সামনে উজ্জ্বল ভাসে- যুদ্ধ শেষ হবার পর কোনো এক বিকেলে চাচা বাড়ি ফিরে এলেন- আমার দাদি 'আনছের আনছের' বলে চাচার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন- সেই দৃশ্য আজও এতটুকু ম্লান হয় নি।

আমার মুক্তিযোদ্ধা চাচা দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভোগার পর ২০০৬ সনের ১৪ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। আপনারা আমার চাচার রুহের মাগফেরাত কামনা করবেন প্লিজ।


(১ নম্বর সিকোয়েলটি ১৯৯১ সনে লেখা এবং পরবর্তীতে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত। ১ নম্বর সিকোয়েলের ঘটনা অবলম্বনে আমার প্রথম উপন্যাস ‘স্খলন’-এ একটা পরিচ্ছেদ রয়েছে। ২ নম্বর সিকোয়েলটি ২০০৯ সালের দিকে লেখা)

কিছু লিংক

১। ১৯৭১ - আমার যুদ্ধে না যাবার কথা

২। বাল্যস্মৃতি - ১৯৭১; সত্তাগত

৩। যেদিন প্রথম পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলাম

৪। মনুষ্য-স্বভাব - সদর আলির জন্য প্রশংসা

৫। আমার মামা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার ও মামা শ্বশুর বীর নুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের কথা

৬। খোলস - গল্প

৭। ১৯৭১ - আমার যুদ্ধে না যাবার কথা

৮। ১৯৭১ - আমার যুদ্ধে না যাবার কথা

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনার মুক্তিযোদ্ধা চাচার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আপনার চাচাকে আল্লাহপাক বেহেস্ত নসীব দান করুন।

১৯৭১ এ আপনার বয়স অনুমানিক ৪ থকে ৫ বছর হবার কথা এর বেশী নয়। পোস্টে খুব গুরুত্বপূর্ একটি বিষয় উল্লেখ করছি - “মুক্তিযুদ্ধ আমাদের বয়স কম করে হলেও ৫ বছর বাড়িয়ে দিয়েছিলো! সে বয়সে যা বোঝা সম্ভব ছিলো না, তাও বুঝতে পারতাম” কারও কারও বয়স বেড়েছে তারও বেশী। আর কারও কারও বয়স আজও সেই একই যায়গায় থেমে আছে - আমার চাচাজান শহীদ সৈয়দ আতিকুল হোসেন ঠাকুর” বয়স ২৪।



১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৫২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রথমেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি গুরুগম্ভীর কমেন্টটির জন্য। আর কারও কারও বয়স আজও সেই একই যায়গায় থেমে আছে - আমার চাচাজান শহীদ সৈয়দ আতিকুল হোসেন ঠাকুর” বয়স ২৪। আপনার চাচারও রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব দান করুন। যদ্দূর মনে পড়ে, আপনার চাচাকে নিয়ে ব্লগে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন।

দিনগুলো খুব ভয়াবহ ছিল, যদিও পোস্টে সেই ভয়াবহতা ফুটে ওঠে নি। সন্ধ্যার সময় যখন পাশের গ্রামে তুমুল গোলাগুলি শুরু হতো, তখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে আমরা দিকভ্রান্ত হয়ে ছোটাছুটি করে পেছনের বাগে গিয়ে লুকাতাম, এটা ছিল সবচাইতে বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতি। এই বুঝি মিলিটারিরা গ্রামে ঢুকে পড়লো- এটা ছিল সবচাইতে বড়ো আতঙ্ক।

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: যুদ্ধ শুরু হয়ে ছিল ৫২ থেকেই ৫৭ তে ভাষানী স্পষ্ট জানিয়ে দেন,সালামালিকুম,তোমাদের মতো তোমরা থাক,আমাদের মতো আমর।৬৬ তে স্পষ্ট বর্ডার নাইন টেনে দেয়া হয় ৭১ ঘোষণা করাহয় ,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
৬৬ তে কলেজে পড়ি,তখন থেকেই প্রতিটা সংগ্রামে মাঠে ছিলাম।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ৬৬ তে কলেজে পড়ি, তখন থেকেই প্রতিটা সংগ্রামে মাঠে ছিলাম। আপনার প্রতি শুভেচ্ছা রইল নুরুল ইসলাম ভাই।

পাকিস্তানের সৃষ্টিতেই বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ঘটনা নিহিত ছিল। একটা দেশ - দুইভাগে বিভক্ত, যার মাঝখানে অন্য আরেকটা দেশ, এবং দুই ভাগের দূরত্ব ২২০০ কিলোমিটার- এমন ভৌগলিক অবস্থানে দুই দেশকে একত্রে দীর্ঘদিন চালানো সম্ভব না। আবার, এর সৃষ্টির মধ্যেও ছিল যেখানে জিন্নাহ্‌র চাতুর্য। সোহরাওয়ার্দি-বোস প্রস্তাবনা অনুযায়ী দেশ হলেও যে তা বহুদিন টিকতো, বিভিন্ন সময়ে বঙ্গপ্রদেশের আলাদা-এক্ত্র হওয়ার ঘটনায়ও তা ভুল প্রতীয়মান হয়। কাজেই, বাংলাদেশ নামক নতুন একটা দেশের সৃষ্টি অবশ্যম্ভাবী ছিল, যার চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে ৭ মার্চ ১৯৭১-এ, বঙ্গবন্ধুর ঘোষণায়।

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪১

চাঁদগাজী বলেছেন:



গেদা ভাই, রজব মামা, তোতা কাকা, তাঁদের যুদ্ধ নিয়ে কোথায়ও কিছু লিখেছিলেন?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: 'আমাদের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের কথা' নামে একটা প্রজেক্ট হাতে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নানা কারণে সেটা এখনো সম্ভব হয় নি। এরা জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর নানা প্রান্তে নিয়োজিত আছেন, কেউ কেউ মারাও গেছেন। তবে, তাদের নিয়ে কিছু লেখার একান্ত ইচ্ছে রয়েছে আমার।

৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




নুরুলইসলা০৬০৪ ভাই, আপনার মন্তব্যর জের ধরে আপনার বয়স অনুমান করছি ৭৪। আপনি কি পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে ছিলেন? যদি তাই হয় আমি যেই নুরুল ইসলাম ভাইকে চিনি যতোটুকু জানি তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের জপলিন আছেন তার একমাত্র মেয়ের সাথে। তাহলে আপনি আমাকে চেনার কথা।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ৮ নম্বর কমেন্টে নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: @ ঠাকুরমাহমুদ, না ভাই আমার বয়স আর একটু বেশি, আমি কানাডায় থাকি, আমি কখনো চাকরি করি নাই।

৬৬-তে নুরুল ইসলাম ভাই কলেজে পড়েন। তার বয়স ২০ না ধরে ২১ বা ২২ ধরুন। ২২+৩৪+২০=৭৬। ৭৬ হতে পারে বয়স। তবে, কোনোমতেই ৮০'র চাইতে বেশি হবে বলে মনে হয় না।

৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫০

মুরাদ বেগ বলেছেন: আপনার পুরনো লেখাটি পড়ে কি যে ভালো লেগেছে স্যার বলে বোঝাতে পারবো না।ভালোবাসা নিবেন।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখাটি পড়ে আপনার খুব ভালো লেগেছে জেনে আমিও খুশি হলাম। ভালোবাসা নিন আমারও। ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।

৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:০৫

সোহানী বলেছেন: অনেক অনেক ভালোলাগা ৭১ কে ঘিরে স্মৃতিচারণ প্রিয় ব্লগার।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সোহানী আপু, এ পোস্টটি পড়ার জন্য।

৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ২:১৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। সকল বৈষম্য দুর হোক

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ। সকল বৈষম্য দুর হোক।

৮| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৮:২১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: @ ঠাকুরমাহমুদ,না ভাই আমার বয়স আর একটু বেশি, আমি কানাডায় থাকি,আমি কখনো চাকরি করি নাই।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ৪ নম্বর কমেন্টের উত্তরে আপনার বয়সের একটা আন্দাজ করলাম। ওটা কি ঠিক আছে?

৯| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০০

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আমাদের নতুন প্রজন্ম মুক্তি যুদ্ধ সম্পর্কে পাঠ্য বইয়ের বাইরে কিছু জানেনা। এদের জন্য হলেও মুক্তি যুদ্ধ নিয়ে আমাদের বেশি বেশি আলোচনা করা দরকার।
আপনার চাচার জান্নাত বাস কামনা করছি।
পোস্টটি ভাল লাগলো।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৩১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক বলেছেন। মুক্তিযুদ্ধে যাদের অবদান ছিল, তাদের সবার কথাই বলতে হবে। অনেকে চাতুর্যের সাথে অনেক নাম গোপন করেন, যেটা অন্যায়।

পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ গিয়াস ভাই।

১০| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৪

শাহ আজিজ বলেছেন: ভাল লাগছে পড়ে । আমি ১৪ বছরের কিশোর তখন । আমার লেখা বইয়ে যুদ্ধের সব উল্লেখ আছে ।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার বয়স এখন ৬৩/৬৪ তাহলে।

পোস্ট পড়ার জন্য ধন্যবাদ শাহ আজিজ ভাই। শুভেচ্ছা।

১১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:১০

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আপনি সঠিক। পাঞ্জাবী! পাঞ্জাবী আসতেছে! এই কথাগুলো কি পরিমাণ আতঙ্কের ছিলো তা বর্তমানে চিন্তা করার বাইরে। যারা যুদ্ধ করেছেন তারা আসলে দেশ স্বাধীন হবে - দেশ তাদের পদক দিবে - চাকরি দিবে এসব আশায় যুদ্ধ করেন নি, বরং উল্টো হয়েছে চাকরি হারিয়েছেন অনেকে। ব্লগার চাঁদগাজী ব্লগে এসব মাঝে মাঝে লিখেন - লিখে হেনস্তা হোন। তিনি সে সময়ের বাস্তবতা দেখেছেন। তাজ উদ্দিন সাহেব নিজের চাকরি বাঁচাতে গিয়ে চাকরি খেয়েছেন অনেকের।

যাক সেসব, আপনি আপনার চাচাজনের কষ্ট মনে রাখবেন না, তিনি এই জীবনে কষ্ট করেছেন কারণ, নিশ্চয় আল্লাহপাক পরজগতে তাঁর জন্য ভালো রেখেছেন। ৭১ এর ৯ মাস যে কি পরিমাণ দুঃসহ জীবন ছিলো তা আজও ভুলার নয়। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম এই জীবন থেকে মুক্তি নেই আমাদের বাদবাকি জীবন যাবে পথে পথে পালিয়ে পালিয়ে আর মুক্তিযোদ্ধারা অকাতরে মারা পরবেন খাবার আর অস্ত্র বারুদের অভাবে।

আপনার চাচজানের জন্য রইলো অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও দোয়া। আল্লাহপাক উনাকে বেহেস্ত নসীব দান করুন।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যারা যুদ্ধ করেছেন তারা আসলে দেশ স্বাধীন হবে - দেশ তাদের পদক দিবে - চাকরি দিবে এসব আশায় যুদ্ধ করেন নি।
খুবই মূল্যবান কথা বলেছেন ঠাকুরমাহমুদ ভাই। শতভাগ একমত।


যাক সেসব, আপনি আপনার চাচাজনের কষ্ট মনে রাখবেন না। স্বয়ং আমার চাচাকেই কোনোদিন এ নিয়ে আস্ফালন বা বড়াই করতে দেখি নি। তবে, একটা কথা সত্য। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধারা এখন যতখানি শ্রদ্ধার পাত্র, বা তাদেরকে যেভাবে মূল্যায়ন করা হয়, আমার চাচা জীবিত থাকাকালে ব্যাপারটা এতখানি প্রচার বা মূল্যায়ন পায় নি।

আবার এসে যে কমেন্টটা করলেন, তা এই পোস্টের ঔজ্বল্য অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। সেজন্য আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি ঠাকুরমাহমুদ ভাই। শুভেচ্ছা।

১২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

রাজীব নুর বলেছেন: ১। আমি কখনও দিগম্বর হয়ে খালে পুকুরে ঝাঁপ দেই নি। সেই সময় কি আপনি স্কুলে ভরতি হয়েছিলেন?
২। যুদ্ধের মধ্যে আপনাদের বাইরে যাওয়া উচিত হয়নি। ঘরে মায়ের কাছে থাকলে বোমার শব্দে ভয় পেতেন না।
৩। মিলিটারীর আতংকে কত দিন 'বাগ' এ ছিলেন? তখন খাওয়া দাওয়া কোথায় করেছিলেন? এক রাত?
৪। শহর থেকে আপনার ফুপু ফুপার সাথে একদল হিন্দু পরিবার এসেছে- এবং গ্রামের সব পরিবার তাদের ভাগাভাগি করে নিয়েছে- বিষয়টা খুব ভালো লেগেছে।
৫। যুদ্ধের সময় আপনার বয়স যদি ১৫/ ১৬ হতো আপনি কি যুদ্ধ করতেন? আপনার বাবা কি যুদ্ধে যেতে দিত?

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ১। কোনো রাখঢাক বা লাজলজ্জা নাই রাজীব ভাই - হাফপ্যান্ট বা কোনো কাপড় পরে আমরা খালে-পুকুরে জোট বেঁধে গোসলে নামবো, ডুবসাঁতার খেলবো- আমরা এতখানি ভদ্র আছিলাম না :) আমাদের দাপটে পুকুর থেকে ব্যাঙেরা লাফিয়ে ডাঙ্গায় চলে গিয়ে জঙ্গলে লুকাইত :)

হিসাবমতে ১৯৭৩ সালে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিন দেখতে পারেন লিংকের ৩ নাম্বার টাইটেলে।

২। ওটা ছিল খুবই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। তবে, ওটা যুদ্ধের কাল বা দেশের পরিস্থিতি খারাপ, তার আগে অতসব জানা বা বোঝার মতো জ্ঞান ছিল না। আর, জায়গাটা শহর না যে ঘরের মধ্যেই সময় কাটাবো। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হওয়া, খাওয়ার কথা মনে পড়লে এসে খেয়ে যাওয়া, তারপর সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা - এটা ছিল নিত্যদিনের হালচাল।

৩। বাগে যাওয়ার ঘটনা ঘটতো সন্ধ্যায়। সন্ধ্যায় পশ্চিমের গ্রামগুলোতে গোলাগুলির শব্দ শুরু হতো। আমরা ধরে নিতাম, মিলিটারিরা আমাদের গ্রামের দিকে এগিয়ে আসছে। প্রাণ বাঁচানোর জন্য আমরা বাগে গিয়ে লুকোতাম। গোলাগুলি থেমে গেলে, কিংবা যখন বুঝতাম যে মিলিটারি আসার সম্ভাবনা এখন আর নেই, তখনি বাসায় ফিরে আসতাম। দিনে দিনে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল যে, আমরা জানতাম, সন্ধ্যায় গোলাগুলি হবে। কখনো আগেই খবর আসতো, আজ সন্ধ্যায় গ্রামে মিলিটারি আসবে। কাজেই, আগেভাগেই রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া শেষ করে আমরা বাগে চলে যেতাম।

৪। আমার জানা মতে, সব জায়গায়ই এমনটা হয়েছিল।

৫। বলার অপেক্ষা রাখে না যে অবশ্যই যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়তাম।

প্রশ্নগুলোর জন্য ধন্যবাদ।

১৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, " 'আমাদের গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের কথা' নামে একটা প্রজেক্ট হাতে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নানা কারণে সেটা এখনো সম্ভব হয় নি। এরা জীবিকার তাগিদে পৃথিবীর নানা প্রান্তে নিয়োজিত আছেন, কেউ কেউ মারাও গেছেন। তবে, তাদের নিয়ে কিছু লেখার একান্ত ইচ্ছে রয়েছে আমার। "

-এটাই ঘটেছে, যাঁরা যুদ্ধ করেছেন, তারা লিখতে পারেননি; কারণ, তাদের বড় অংশ ছিলেন নিরক্ষর; যাদের পড়ালেখা ছিলো ( ছাত্ররা ব্যতিত ) তারা যুদ্ধে যায়নি; পরে তারাই অনুমানে কিছু কিছু লিখেছে। শেখ হসাহেব ও তাজুদ্দিন সাহেবকে জীবিকার তাগিয়ে কোথায়ও যেতে হয়নি, যেতে হয়েছে গেদা ভাই, রজব মামা, তোতা কাকাদের; এটাই শেখ সাহেব ও তাজউদ্দিন সাহেব বুঝতে পারেননি।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তারা লিখতে পারেননি; কারণ, তাদের বড় অংশ ছিলেন নিরক্ষর; যাদের পড়ালেখা ছিলো ( ছাত্ররা ব্যতিত ) তারা যুদ্ধে যায়নি; পরে তারাই অনুমানে কিছু কিছু লিখেছে।


একসময় ইংরেজিতে লেখা জেনারেল সাইফুল্লাহ'র Bangladesh at War ছাড়া অন্য কোনো বই পাওয়া যেত না। খুঁজলে যেগুলো পাওয়া যেত তাহলো ইন্ডিয়ান অফিসারদের লেখা 'ইন্ডিয়া-পাকিস্তান ওয়ার (১৯৭১)'-এর বই। বাংলায়ও মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র, একাত্তরের দিনগুলো, এম আর আখতার মুকুলের বই ছাড়া তেমন বই পাওয়া যেত না। সেই অবস্থার কিছুটা উত্তরণ ঘটেছে বর্তমানে।

নিজ নিজ প্রফেশনের উপর বই লেখার প্রবণতা এমনিতেই আমাদের দেশে কম দেখা যায়। যারা যুদ্ধ করেছেন, তাদের অভিজ্ঞতা সম্বলিত বইও সেজন্যই কম।

আপনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। ব্লগে মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা আপনার কিছু পোস্টের লিংক দিন।

১৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১২

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের খুব সুন্দর উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। করোনা থেকে খুব সাবধান থাকবেন।

জয় বাংলা।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার প্রশ্নগুলোও সুন্দর ছিল।

১৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ !

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

১৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৮

শায়মা বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধা চাচার জন্য শ্রদ্ধা আর এ লেখাটা লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আর শুভকামনা ভাইয়া।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু পোস্টটা পড়ার জন্য।

১৭| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৫

ঢুকিচেপা বলেছেন: স্মৃতিচারণ পড়তে এখন খুব ভালো লাগে অথচ সেসময় কি ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে সবাইকে চলতে হয়েছে অনুধাবন করলে ভিতরটা শুকিয়ে যায় আর আক্রোশ হয় তারও দ্বিগুন।

“ এ নিয়ে তাঁকে কোনোদিন একটা কথাও বলতে শুনি নি - যুদ্ধ করলাম, অথচ সরকার আমারে কিছুই দিল না।”
প্রকৃত যোদ্ধারা কখনই কিছু চায়নি। কোন কিছু চাওয়ার বদলে যে যোদ্ধারা নিজের জীবনটাই দিতে প্রস্তুত তাঁদের আমরা কি দিতে পারি?

করুণাময় আল্লাহ ওনাকে জান্নাতবাসী করুন।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
প্রকৃত যোদ্ধারা কখনই কিছু চায়নি। ঠিক বলেছেন। সত্যিকার দেশপ্রেমিকরা দেশের কাছ থেকে কিছুই চান না, তারা শুধু দেশকে দিতে চান, এটাই তাদের ব্রত।

সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ঢুকিচেপা।

১৮| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেছে আর যারা দেখেনি এই দুই দলের/ প্রজন্মের চিন্তা চেতনার মধ্যে অনেক ব্যবধান আছে। আপনারা যে যুদ্ধ নিজের চোখে দেখেছেন তা আমাদের জন্য সঠিকভাবে অনুধাবন করা কষ্টসাধ্য। তবে বাঙালি সহজেই সব কিছু ভুলে যায় এটাই সমস্যা।

২১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৫১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যুদ্ধের সময় দেশের অবস্থা কেমন ছিল, তা অল্প হলেও আমি বুঝতাম। এখনো সেই অবস্থা পরিষ্কার মনে পড়ে। এটা এত ব্যাপক একটা পরিস্থিতি যে, স্বচক্ষে না দেখলে তা অন্যধাবন করা সত্যিই কঠিন।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর ভাই। শুভেচ্ছা নিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.