নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজকুমারী - ও আমার সহেলিয়া || এটাই আমার লেখা ও সুর করা আমার সেরা গান মনে হয়

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:২১

২৫ এপ্রিল ২০২২-এর রাতের খবর। আমার ঘরে টিভি ছাড়া থাকে সবসময়ই, যদিও সাউন্ড অফ করে পিসিতে কাজ করা এখন অভ্যাসে দাঁড়িয়েছে। তবে, খবরের সময় হলে, কিংবা অকারণেও মাঝে মাঝে সাউন্ড অন করি (যেহেতু পিসিতে গান কম্পোজিশনে ব্যস্ত থাকি, টিভিতে সাউন্ড থাকলে সমস্যা হয়)। তো, রাত এগারটা বা বারটা হয়ত হবে। চ্যানেল আইয়ের পর্দায় চোখ। শুধু একঝলক দেখলাম - ডেনমার্কের রাজকুমারী ম্যারি এলিজাবেথ ৩দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায়। 'এলিগ্যান্ট বিউটি' - একঝলকের দৃষ্টিতেই আমার এই ইম্প্রেশন হয়ে গেল।



কিন্তু মনে হলো, তিনি খুব চঞ্চলা, এবং আরো মনে হলো, হয়ত তরুণী, অল্পবয়স্কা, কলেজ-পড়ুয়া, বড়োজোর ভার্সিটি-পড়ুয়া হবেন। মুহূর্তে চঞ্চলা হরিণীর মতোই যেন আড়ালে চলে গেলেন। এ রাজকুমারী সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। কিন্তু জানার ইচ্ছে হলো তাঁর ব্যাপারে; তিনি কেন ঢাকায় এসেছেন সে ব্যাপারেও। মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, সেটাও জানা গেল।




ম্যারি এলিজাবেথ লিখে ইন্টারনেটে সার্চ দেয়ার পর অজস্র ছবি উঠে এলো। আমি হয়ে গেলাম দ্বিধান্বিত। বেশ কয়েকটা মুভি ক্লিপসও উঠে এলো। তাহলে কি তিনি অভিনেত্রীও, প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কলের মতোই? কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করে জানলাম, মেরি এলিজাবেথ উইনস্টিড নামে আমেরিকার একজন বিখ্যাত অ্যাক্ট্রেস ও সিঙ্গারও আছেন।

ফেইসবুক, ইউটিউব খোঁজাখুঁজি করতে করতে টায়ার্ড হয়ে গেলাম। উইকিপিডিয়ায় ম্যারি এলিজাবেথ থেকে পেলাম, "ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন হলেন ডেনমার্কের রাজকুমারী ও ডেনমার্কের রাজকুমার ফ্রেডরিক-এর ধর্মপত্নী। ফ্রেডরিক হলেন সিংহাসনের আপাত উত্তরাধিকারী, যার অর্থ হল তিনি সফল হলে, ম্যারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেনমার্কের রাণী হয়ে যাবেন। ডেনমার্কের তৃতীয়-সর্বোচ্চ উপার্জনকারী রপ্তানি শিল্প পোশাক শিল্প। আর ম্যারি এ শিল্পের একজন সক্রিয় পৃষ্ঠপোষক এবং তিনি কোপেনহেগেন ফ্যাশন সামিটের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।" তার জন্ম ১৯৭২ সালে। অর্থাৎ, তাকে যে কলেজ স্টুডেন্ট ভেবেছিলাম, তা ভুল ছিল। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। রাজপুত্রের সাথে ৩ বছরের প্রেম। ২০০৪ সালে বিয়ে। এ তথ্যগুলো ইন্সট্যান্টলি যোগাড় করেছিলাম। আপনারা কেউ এটা চেক করে কনফার্ম করতে পারেন।



ম্যারি এলিজাবেথ ঢাকায় এসেছিলেন কেন? সাদা কালো লিংক থেকে যা পেলাম :


"তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন ডেনমার্কের রাজকুমারী ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন। মূলত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশা এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত দেখতেই এই সফর ডেনিশ রাজকুমারীর।

ঢাকায় পৌঁছে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ম্যারি এলিজাবেথ। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে টেকসই এবং সবুজ ফ্রেমওয়ার্ক এনগেজমেন্ট বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়।

২৫ এপ্রিল ২০২২ রাজকুমারী ম্যারি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। প্রথমে তিনি উখিয়ার কুতুপালং ৫ নম্বর ক্যাম্পে যান। সেখান থেকে ডেনমার্কের সংস্থা ডেনিশ রিফিউজি কাউন্সিল পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন।

এখান থেকে সুন্দরবন ভ্রমণে যাওয়ার কথা রয়েছে ডেনমার্কের রাজকুমারীর। জলবায়ুর পরিবর্তন সেখানে কী ধরনের সংকট তৈরি করেছে এবং সেখানকার বাসিন্দাদের জীবনযাত্রাকে কতটা প্রভাবিত করেছে, তা প্রত্যক্ষ করবেন তিনি।

২৬ এপ্রিল রাতে ইস্তাম্বুলের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন ম্যারি এলিজাবেথ। এর আগে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ডেনমার্কের রাজকুমারী।

১৯৭২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন ম্যারি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন। ব্যবসা এবং বিজ্ঞাপন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ম্যারি। তিনি অস্ট্রেলিয়া এবং কোপেনহেগেনে কাজ করেছেন। ইংরেজি, ড্যানিশ এবং ফ্রেঞ্চ ভাষায় কথা বলতে পারেন ড্যানিশ রাজকুমারী।

২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিকের সময় ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্স ফ্রেডরিকের সাথে দেখা হয় ম্যারির। ২০০৪ সালের ১৪ মে বিবাহ উদযাপন করেন তাঁরা। এই দম্পতির ঘরে ৪টি সন্তান রয়েছে।"




কিন্তু এই পোস্ট ম্যারি এলিজাবেথের ঢাকা সফরের উপর পর্যালোচনার জন্য না। ম্যারি এলিজাবেথ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমার একটা গান সৃষ্টি হয়ে গেছে সেটা বলাই হলো মূল লক্ষ্য।
তবে, ম্যারিকে প্রথমবার যখন একঝটকায় বাহু দুলিয়ে চঞ্চলা কিশোরীর মতো আড়ালে চলে যেতে দেখেছিলাম, তখনই তার একটা কিশোরীসুলভ ছবি আমার মনের ভেতর চিত্রিত হয়ে যায়। আমি কল্পনা করি, এমন একটা মেয়ে, অনেক কাল আগে, যখন আমি গ্রামের স্কুলে পড়ি - তখন সে গ্রামে এসেছিল, হয়ত কোনো আলো-ঝলমল শহর থেকে, কিংবা সে হতে পারে কোনো বিদেশিনী, এমনকি কোনো রাজকুমারীও। সেই রাজকুমারী সেই যে চলে গেল, তার সাথে আর ইহজনমে দেখা হলো না। অথচ তার জন্য আমার মন আজও কাঁদে।

গানটা প্রতীকী। গ্রামের মানুষেরা সেই যে গ্রাম ছেড়ে ঝাঁকে ঝাঁকে শহরে যাচ্ছেন, ভুলে যাচ্ছেন গ্রাম, আর ফিরে যাচ্ছেন না গ্রামে। ভুলে যাওয়া ঠিকানায় আবার যদি তারা ফিরে যান, সেই আকুতি নিয়ে এ গানটি।

'রাজকুমারী' হলো সমগ্র পৃথিবীর প্রতীক, বা প্রতিনিধি। 'আমি' হলো 'বাংলাদেশ'। সমগ্র পৃথিবীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে, তারা সবাই আসুক এ সোনার বাংলাদেশে। সম্প্রীতি, পারস্পরিক সহযোগিতায় উন্নতির চরম মাত্রায় পৌঁছে যাক বাংলাদেশ - এ হলো গভীর বাসনা মনের ভেতর।

গতকাল সন্ধ্যায় (২৪ এপ্রিল ২০২২), আমার আগের গানটির অডিও ত্রুটিগুলো ঠিক করে নতুন করে ভিডিও করছি। গুন গুন করতে করতেই নতুন আরেকটা সুর, খুব দ্রুতই কণ্ঠে উঠে এলো। আমি একেবারে প্রথমবারেই সুরটা তুলে ফেললাম, এবং গাইছি, মুখে যে লিরিক আসে, যে-শব্দ আসে, সেটাই বলছি - সুরটা যেন একেবারে রেডিমেড, তরতর করে আমার মগজ দিয়ে কণ্ঠে ঢুকে গেল।

ব্যস,হয়ে গেল গানটা

***
কমেন্ট্রি বা কবিতা কিংবা প্রারম্ভিকা

সে ছিল জোসনার মতো ফুফুটে
পাঁপড়ির মতো শুভ্র
ছোট্টবেলায় আমাদের দেখা হয়েছিল
অনাবিল শান্তির মতো সুন্দর আমাদের গ্রামটি দেখার জন্য
সে এসেছিল, গ্রামের পর গ্রাম দেখে বিদেশিনী
রাজকুমীর মতো
সে খুব অবাক, মুগ্ধ ও অভিভূত হয়েছিল
আমি তার নাম দিয়েছিলাম – রাজকুমারী

***

ও আমার সহেলিয়া
তোমাকে আজও ভুলি নি
বলো তুমি আসবে কি আর
দেখতে আবার এই গ্রামখানি
বলো তুমি আসবে কি আর
দেখতে আমার এই গ্রামখানি

একদিন ছোটোবেলায়
তুমি এসেছিলে গ্রামে
ঠিকানাটা লিখেছিলে
ছোটো নীল খামে
কত চিঠি লিখেছিলাম
তুমি কোনো দাও নি সাড়া
নাকি তুমি ইচ্ছে করে
লিখেছিলে/দিয়েছিলে ভুল ঠিকানা
ও আমার সহেলিয়া
তোমাকে আজও ভুলি নি
বলো তুমি আসবে কবে
দেখতে আমার এই গ্রামখানি

সেই গ্রামে নদীতটে
কবি এক বসে থাকে
তুমি যদি যাও সেখানে
পাবে আমাকে
আছে এক সবুজ পাখি
তোমাকে গান শোনাবে
হাওয়াতে ছন্দ তুলে
দুলে দুলে / উড়ে উড়ে নাচ দেখাবে

ও আমার সহেলিয়া
তোমাকে আজও ভুলি নি
বলো তুমি আসবে কি আর
দেখতে আবার/আমার এই গ্রামখানি

২৭ এপ্রিল ২০২২


কথা, সুর ও মিউজিক কম্পোজিশন : খলিল মাহ্‌মুদ

মিউজিক কম্পোজিশন গাইড : বেবি লাবিব

ব্যাকগ্রাউন্ড টিউন : গ্রাম ছাড়া ঐ রাঙা মাটির পথ ও আমার সোনার বাংলা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

ও যে কেড়ে আমায় নিয়ে যায় রে : কণ্ঠ - খলিল মাহ্‌মুদ

গানটার একটা দীর্ঘ ভার্সন এর আগে ব্লগেই পোস্ট করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এটা নরমাল সাইজে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এ গানটার কনসেপ্ট, সুর ও লিরিক করার পরই মনে হয়েছে, এটাই আমার এ যাবত করা সর্বশ্রেষ্ঠ গান। আমার আরো কিছু কিছু গান কয়েকজন শ্রোতা ও ব্লগারের কাছে ভালো লেগেছে, কিন্তু আমার মনে হয়েছে এটাই সর্বেসর্বা। এটা আধুনিক গান, দেশের গান এবং এটা প্রেমের গান। নিজের গান নিজেই গুন গুন করে গাই, এটা গুন গুন করে থাকি সব থেকে বেশি।

গানের ইউটিউব লিংক : রাজকুমারী - ও আমার সহেলিয়া, আজও তোমাকে ভুলি নি




এটার অন্য ফটোমিক্স ভার্সন (রোমান্টিক ফটোমিক্স) : ভার্সন-২ - ও আমার সহেলিয়া



ছবিগুলো উইকিপিডিয়াসহ ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত।

তানিয়া আহমেদের ছবিগুলো তাঁর ফেইসবুক পেইজ থেকে নেয়া।

সবাই ভালো থাকবেন।

শুভ নববর্ষ-২০৩০।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩৫

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: পুরাটাই শুনলাম। ভালো হইছে।

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পুরাটাই শোনার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় সনেট কবি ফরিদ ভাই। শুভেচ্ছা।

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১:৫১

জগতারন বলেছেন:
আমিও পুরাটাই শুনিয়াছি।
আমার খুউব ভালো লাগিয়াছে।
এই গায়ক কবির প্রতি আমার অভিন্দন ও সুভেচ্ছা জানাই।

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ২:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ পুরো গানটি শোনার জন্য। আপনার ভালো লেগেছে জেনে অনুপ্রাণিত বোধ করছি। শুভেচ্ছা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.