![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
১৯৮০-৮৩ সালে আমরা যখন ৭ম-১০ম শ্রেণিতে পড়ি, ঢাকা জেলার বান্দুরা (নবাবগঞ্জ থানা) থেকে এক তুখোড় ইংরেজি শিক্ষক এসে যোগদান করলেন আমাদের মালিকান্দা হাইস্কুলে (ঢাকা জেলার দোহার থানা)।
স্যারের নাম উৎপল চন্দ্র সাহা। স্যার ইংরেজি ক্লাসে পাঠ্যবিষয় তেমন পড়ান না, পড়ান শেক্সপিয়র- টু বি, অর নট টু বি দ্যট ইজ দ্য কোয়েশ্চন। আমরা বুঝি না কিছুই- কেবল হাঁ করে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি; মুগ্ধ না হয়ে খুব বিরক্ত হই। কারণ, পরীক্ষার পড়া আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আরো আছে- তিনি শুধু ইংরেজিই না, বাংলাও পড়ান। বাংলা ক্লাসে রবীন্দ্রনাথের 'ছুটি' পড়াতে গিয়ে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস থেকে শুরু করে ছোটোগল্পের ইতিবৃত্ত বয়ান করতে থাকেন। আমরা যথারীতি বিরক্ত হই- ফটিকচরিত্র আলোচনা অধিক গুরত্বপূর্ণ আমাদের জন্য। এই উৎপল স্যারের কাছেই জীবনে প্রথমবারের মতো সুকান্ত ভট্টাচার্যের নাম শুনেছিলাম- তিনিই প্রথম 'ছাড়পত্র'-এর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
উৎপল স্যার একদিন সৈয়দ আলী আহসানের 'আমার পূর্ব-বাংলা' কবিতাটির ভূয়সী প্রশংসা করলেন এবং সেটি পাঠ করে শোনালেন। অন্য একদিন পাঠ করলেন 'ছবি' নামক একটা কবিতা (কবি আবু হেনা মোস্তফা কামাল)। তাঁর বিবেচনায় বাংলা সাহিত্যের সেরা কবিতা যে-গুলো, তিনি আমাদের সে কবিতাগুলো পাঠ করে শোনাতেন বিভিন্ন ক্লাসে।
আমি তখন কবিতা লিখতে শুরু করেছি। একটা-দুটা ট্র্যাংক ভরে গেছে (ক্লাস টেনের শেষের দিকে)! এতো এতো কবিতার মধ্যে সুকান্ত, নজরুল, জসীমউদ্দীনের প্রভাবপুষ্ট কবিতার সংখ্যাই বেশি- কিন্তু যে-কবিতাটিতে 'ছবি' ও 'আমার পূর্ব-বাংলা'র সুস্পষ্ট প্রভাব বিদ্যমান, সেটির নাম 'এমন একটি ছবি'। এটির সুনির্দিষ্ট রচনাকাল আমার মনে নেই, তবে ১৯৮০ থেকে ১৯৮৬- এর মধ্যিখানে যে-কোনো একদিন লিখেছিলাম তা নিশ্চিত। নীচে আমার 'এমন একটি ছবি' জুড়ে দিলাম। ১৬ ডিসেম্বর ২০১২-তে লেখা এ নিয়ে ব্লগপোস্টটির লিংক দিলাম কমেন্টের ঘরে। 'এমন একটি ছবি' কবিতাটি ২০০৫ সালের মহান একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'অন্বেষা'য় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে (প্রকাশক : ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ)।
আমার নিজের লেখা কবিতায় সুর দিয়ে গান তৈরির একটা শখ জেগেছে আমার মধ্যে। এর আগেও কয়েকটা কবিতায় সুর দিয়ে গান করেছি, আগামীতেও স্বরচিত কবিতা থেকে গান করার ইচ্ছে দিনে দিনে প্রবলতর হচ্ছে।
এবার 'এমন একটি ছবি' কবিতায় সুর দিয়েছি। গানটি কেমন হলো জানালে খুশি হবো।
এমন একটি ছবি
- খলিল মাহ্মুদ
এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী :
যেখানে পাহাড়ের কোলে
ছলছল ঝরনাধারার রোদে ঝিলিমিলি
উদার আকাশে
চপলা মেঘ-পরীদের মত্ত নাচানাচি
কিংবা
রুপালি নদীর তটে তটে
হাওয়ায় হাওয়ায় দোদুল সাদা কাশবন।
এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী :
যেখানে সবুজে ঘেরা
হাজার পাখির একটি নিবিড় বন
ঝিলের জলে
সাদা সারসের এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যাবলি
মাঝিরা রঙিন পাল তোলে নায়ে পুবালি বাতাসে
কাজল দিঘিতে
প্রস্ফুটিত একটি শাপলার মোহন হাসি
কৃষাণের হাতে ধানের একগুচ্ছ সোনালি শিষ
এবং
সারি সারি পাটের সবুজ বীথি।
এমন একটি ছবি আঁকে নি কোনো শিল্পী।
অথচ এই ছবিটি
আমি প্রতিদিন নয়ন ভরে দেখি।
তুমি যদি ছবিটি দেখতে চাও
একবার তাকাও এই বাংলায় :
কোনো নিপুণ শিল্পীর তুলিতে আঁকা নয়,
অথচ কেমন সতেজ
শ্যামল সুন্দর এই ছবিটি।
গানে 'ছলছল' শব্দের জায়গায় 'চঞ্চল', 'নয়ন'-এর জায়গায় 'দু চোখ' এবং 'কিংবা'র পরে 'ধরো' শব্দটা যোগ করা হয়েছে।
কবিতা, সুর ও মূল কণ্ঠ : খলিল মাহ্মুদ
এ-আই কভার : সোনারু
কবিতা রচনাকাল : ১৯৮৬
সুর সৃষ্টি : ২৫ এপ্রিল ২০২৫
গানের লিংক : প্লিজ এখানে ক্লিক করুন - এমন একটি ছবি
অথবা নীচের লিংকে ক্লিক করুন।
এ কবিতার উপর একটি পুরোনো পোস্ট :
এমন একটি ছবি - একটি সুপ্রভাবিত কিশোর-কবিতা
০১ লা মে, ২০২৫ রাত ১২:৪৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমি খুশি হলাম। ধন্যবাদ কমেন্টের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা মে, ২০২৫ রাত ১২:৪১
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: ভালো লাগলো ।