নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার জন্য ভালোবাসা।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য : মুরগীর ট্রেনযাত্রা !!

২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:২৪

বছর কুড়ি আগের কথা। প্যাসেঞ্জার ট্রেনে যাচ্ছি আসানসোল থেকে আদরা। ট্রেন ভর্তি ভর্তি, খুঁজলে দু-একটা সিট মিলবে। যেমন আমি পেয়েছি। আর ওই যে লুঙ্গি পরা, ময়লা পাঞ্জাবি, হাতে একটা সরু দড়ি, অন্য প্রান্তে বাঁধা এক যুবতী মুরগির ঠ্যাং; উনি খোঁজেন নি। সটান উঠে হাতের প্রান্ত বেশ তরিবত করে দরজার রডে বেঁধে দিলেন, আর দরজার সামনে মেঝেতে বসে পড়লেন দেহাতি স্টাইলে। মুরগিটিও বেশ পোষ মানা টাইপের। নিশ্চিন্তে চলন্ত ট্রেনের হাওয়া খেতে আরম্ভ করল।
টি-টি বাবু এলেন। হঠাৎ হঠাৎ এনাদের উদয় হয়। এনারা না এলে বড্ড আফসোস হয়; টিকিটের পয়সাটা ফালতুই গেল। আর এলে যাই বলুন, আমার কিন্তু বেশ টেনশন হয়। টিকিটটা হারাইনি তো?
টিকিট দেখালাম। একে একে সবাই দেখাল। সবশেষে মুরগি ওয়ালা। মুরগিওয়ালা ময়লা পাঞ্জাবির পকেট থেকে পাতলা পিচবোর্ডের একখানা টিকিট বের করে টিটিবাবুর হাতে দিল।
টিটিবাবু টিকিটটা উলটে পালটে বললেন, “আর মুরগির টিকিট?”
“মুরগির টিকিট?” দেহাতি বলল, “মুরগিরও টিকিট?”
কী আর করা যায়? টিটিবাবুর বোধহয় আজ একটাও কেস নেই। অতএব, এই মুরগিটিকেই জবাই করার মনস্থির করে ফেলেছেন। বললেন, “টিকিট লাগবে। নাহলে ফাইন দিতে হবে।”
“অ।” দেহাতি বলল, “তা কত ফাইন?”
“আড়াইশো।”
“বঠে?” দেহাতি মাথা চুলকে জিজ্ঞেস করল, “রসিদ দিবে?”
“কেন দেব না?” টিটিবাবুর প্রত্যয়ী উত্তর, “নিশ্চয়ই দেব।”
“তবে লেখুন।” দেহাতিও বেশ জেদের সঙ্গে বলে।
টিটিবাবুর পকেট থেকে রসিদ বই বেরুল। ঘসঘস করে কী সব লিখে, ফড়াৎ করে কাগজখানা ছিঁড়ে দেহাতির নাকের সামনে বাগিয়ে ধরল কাগজখানা।
এদিকে দেহাতি ততক্ষণে মুরগির ঠ্যাং এর দড়ি খুলে কোলে নিয়ে আদর করছেন। কাগজটার দিকে একবার তাকিয়ে মুরিগিটাকে ছুঁড়ে দিল দরজার বাইরে।
ফর্‌র্‌ করে একটা শব্দ, মহাশূন্যে মুরগিটাকে দেখা গেল কিছুক্ষণ। ট্রেন এগিয়ে গেল। দেহাতি বলল, “আমার মুরগি নাই।”

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৬:৩৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ সুন্দর।

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৭

গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫০

মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: এর জন্য কয়েকটা উপযুক্ত বাংলা বাগধারা আছে।

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:২৮

গেছো দাদা বলেছেন: এক এক করে বলে ফেলুন দাদা।

৩| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভারতে কি কখনও ট্রেন খালি থাকে না?
সব সময় ভিড় লেগেই থাকে কেন?

একবার আমি বোলপুর থেকে ফেরার পথে এক ট্রেনে উঠোলাম বউ নিয়ে।
হায় হায়--- মানুষ আর মানুষ। সিট তো দুরের কথা, পা রাখার জায়গা নাই।

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩১

গেছো দাদা বলেছেন: এখন ট্রেনের সিট একদম ফাঁকা দাদা।যে কেউ বসার সিট পেয়ে যাবে। আসলে ট্রেন চলাচল একদম বন্ধ। হা হা হা।

৪| ২৬ শে নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৬

মন থেকে বলি বলেছেন: একেই বলে সেয়ানে সেনানে কোলাকুলি

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৩৩

গেছো দাদা বলেছেন: হুমম। আর আমাদের কাছে বিনা পয়সার তামাশা ।

৫| ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৫৯

মেহবুবা বলেছেন: এটা কি সত্যি ঘটনা? মজার।
দেহাতি অর্থ কি ?

২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ১:২৬

গেছো দাদা বলেছেন: কিছুটা সত্যি কিছুটা কল্পনা। দেহাতি অর্থ গ্রাম্য ।

৬| ২৭ শে নভেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪৬

গেছো দাদা বলেছেন: এখানেই সবাই থেমে গেল।

৭| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২০ সকাল ৭:৩২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
তবে একটি ব্যাপার বুঝা গেছে । সেটা হচ্ছে উপমহাদেশে এখনো সততা ফিরে আসেনি।
সেটা ব্যক্তি পর্যায়ে হোক আর সরকারি কর্মচারীরা ই হোক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.