নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবিরা গাছের মতো, অন্য কবির ছায়ায় বাড়ে না।

মিছিলখন্দকার০০৭

কবি

মিছিলখন্দকার০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৫

(সে কাঁদছিল কেন?)

তখন সকাল
ক্ষমতায় মাঘ মাস
সূর্যকে রুখে স্বমহিমায় কুয়াশা
বাসে আমার পাশে যে মেয়েটা
সে খুব কাঁদছিল আর তার কান্নায়
আরও আর্দ্র হয়ে উঠছিল গাড়ির কাঁচ
প্রগাঢ় হচ্ছিল কুয়াশা
কারও অনুভূতি সামান্য ভেজাতে তাতে
মাঝে মাঝে সে বাটন টিপছিল ফোনে
তার কান্না বাঁধ ভেঙে ঢুকে পড়েনি
কোনো হার্দিক জনপদে
অথচ কতো সহজে বন্যায় ডুবে আ্রছে
অর্ধশতাধিক উপজেলা
কোনো কোনো বিকেলে সে মেয়েটা
আমার ভেতরে ঢুকে কাঁদে
তখন বিকেল তলিয়ে যায়
আর আমি ট্রাউজার তুলে
তুমুলে ঠেলে সে স্রোত
তার চোখের কাছে পৌঁছতে গিয়ে
সময়ের টানেলে ঢুকে পড়ি
যেখানে তাকে করতে চাওয়া প্রশ্নটা
আর ফণা তুলতে পারে না!

(মোম)
নদী পাড়ের মানুষেরা
ভাঙনের শব্দ সবিস্তারে চেনে
হাওয়ার সাথে তাদের এমনই খাতির যে
নাগরের চেয়ে বেশি পরিচিত ঝড়ের ইঙ্গিত
তাদের গ্রীষ্মের মধ্যে বাতাস মিশিয়ে দেয় শীত
প্রকৃতির এমনই নিয়ম
জনৈক আশাবাদীর এমন রূপক
চাঁদের বিমাতা বন্ধুর রাতে
হতে পারল না তাও মোম!

(মিছিল খন্দকার)
এই লোক,
ফিলিং স্টেশনে দাঁড়িয়ে সিগ্রেট ধরানোর মতো বিপজ্জনক!

(আপন মাহমুদ)
'রজনীগন্ধা কেন সবজি নয়?'
এই প্রশ্নের মধ্যে আপনকে হাঁটতে দেখি
পৃথিবীর সবজি খামারে
আপন মানে আপন মাহমুদ।
কবি।
আমার সাথে তার এভাবে হুটহাট দেখা হয়ে যায়
মাঝে মাঝে তাকে
'পাতা ঝরার শব্দ হতে ফুল ফোটার শব্দ পর্যন্ত হেঁটে'
যেতে দেখি!
মাঘে মাঘে বাজতে দেখি
'বেহালাবাদকের আঙুলে'!

(সেল্যুকাস)
সে দাঁত ক্যালাইয়া হাসে
আর কয় কান্দি,
আর আপনেরা তারে দেন স্বান্তনা
'কান্দে না সোনা!'

(আধা চামচ)
তারা মাঝে মাঝে সত্যের লিকারে
আধা চামচ মিথ্যা চিনি মিশিয়ে দেয়
আর তাতে প্রতারণা
মাছের পোনার মতো
খুশি হয়ে জোট বেঁধে নাচে
বিষয়টা এমনই নিগুঢ়
যে টের পায় না কাপে ও কাঁচে!
তাদের বানানো চায়ে ঘটনা আছে!

(খেদ)
এই যে শব্দের শুরুতে 'চ' বর্নটা দেইখাই
কারও কারও খাড়া হয়া উঠতাছে...
আর 'খাড়া হয়া ওঠতাছে' শুইনাই
ঠোঁটে তাক কইরা বইসা আছেন
'কুত্তার বাচ্চা' গালি
আপনেগোর কান দেখছি ভালোই সজাগ
ভাইয়েরা, স্লাংয়ের দায়ে আপাতত
আমার চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করেন
ধরাইতে ধরাইতে তামাক
আর একের পর এক দরদী আইসে
ফাঁক বুইঝা চুইদা যাক!

(অজ্ঞাত উল্কা)
পাখির পাখা থেকে পালকের মুক্তি
বাতাসে রটে গেলে
সিবিচের চেয়ারে পড়ে থাকে
অজ্ঞাত যুবকের নির্বিকার লাশ
হাতে দেশলাই বক্স, কোমল পানীয়
জানে কি, ঠিক কয়টায়
বাতাসের ঝাপটায় ঝরেছে উল্কা
পুলিশ এসে সেটা গাড়িতে তুলে নেয়
রেখে আসে ডোম ঘরে
পাতার মর্মর কেটে ছিঁড়ে
ডাক্তার দেখে খুটে
কিভাবে ঘটেছে দুপুরের অপব্যয়
ছাতা চেয়ারের কাছে কি জানা যাবে?
যুবকটা অজ্ঞাত হলো ঠিক কিভাবে।

(মার্বেল)
গুপ্ত গলিতে আটক বহুদিন
হারিয়ে ফেলেছেন যাবতীয় পথ?
একটু সাবধান
কোটর থেকে
চকচকে দুটো চোখ
কলমে তুলে নিয়ে
খেলতে মার্বেল
পাড়ার ছেলেপেলে
ঘুরছে সুনসান
তাদের কাছে নাকি
ইতোমধ্যেই
১০ টা জমেছে
ডজন মেলাতে
আপনি হলে হয়!

(বড় ভাই)
সে সারাদিন ওড়াউড়ি করে
মিছিল-মিটিং করে
চেয়ার ছোঁড়াছুড়ি করে
নেতাদের চামচামি করে
রাজনীতি-টীতি করে,
চান্দা-টান্দা তোলে,
কলেজ ক্যান্টিনে খায় ফাও
ভিড়ের মধ্যে মেয়েদের বুক টিপে দেয়
বোনের প্রেমিকার নামে
পাড়ায় ঢোকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে
জুনিয়রদের সিগ্রেট টানার অপরাধে শাসায়
বড় আপুর ব্যাপারে তার খুব আগ্রহ বলে
আমাকে আদরটাদর করে; ডাকে, 'ছোড বাই'

(চোরাটান)
কেন যে পুড়ে পুড়ে ছাই রাতে
মনে পড়ে জেলে পাড়া
শুকোতে দেয়া শুটকি গন্ধ
চুলে লাগে সামুদ্রিক হাওয়া
ঢেউয়ের ঝাপটায় এই
ভিজে গেল বুকের বাদাম
দূরে; কিছুটা ভেতরে ওই মৃদু
আলোর ইশারা, দোলে কার নাও
তবে কী কপিলা বলে কেউ আছে
কুয়াকাটা মেছো পল্লীতে
যে আমাকে প্ররোচনা দিতে থাকে
ভেতরে ভেতরে ডাকে, মাঝি
কোথায় যে দেয় চোরাটান
রাতের বিকেলে, কপিলার ঘুম ভাঙে
পাশে তার শিশু কেঁদে ওঠে
সমুদ্র ডেকে বলে বুঝি তাকে
মানুষের ভেতরেও ঘূর্নিস্রোত থাকে!

(গোপন)
কবি, আপনে আমার দলে বলেই দিচ্ছি এসব করতালি
যতই দেখেন আওয়াজ দারুণ, আসলে বাল কলস খালি!!

(সময় ও ঘড়ি)
যতটা নীল ভাবো ততটা নীল নয়
কিছুটা বিভ্রম, চোখেতো লেগে রয়
দূরেরও চাওয়া থাকে দেখবে কাছ থেকে
অতটা বাঁকা নয়, যতটা গেছি বেঁকে
সে ভালো বেঁকে যাওয়া, বৃত্ত হতে গেলে
ঘুরব চারপাশে কেন্দ্রে তাকে পেলে
সে ঠিক আমি নয়, আমিও নয় সে
এ টান চোরাটান, বুঝেছি বয়সে
যা দেখি আসলে তো সবটা দেখা নয়
আমি যা ঠিক দেখি, তার তা ভুল হয়
ভুল কে ভুল বলা কতটা ভুল-ঠিক
আমার মাঝেও সে চলছে টিকটিক!

(পূর্বাপর)
এখানে অনন্ত হাসি বাতাসে মর্মর
তাহার সামান্য আঁচে কাঁপে পূর্বাপর
কাঁপলে চোখের পাতা দৃষ্টি যায় ঝড়ে
যা কিছু হারালো তার কিছু মনে পড়ে
মনেতো পড়ছে তাকে ধরে রাখা চাই
যতোটা পারব ভাবি ততটা হারাই
হারালে হারাবো সব কি'বা ছিঁটেফোঁটা
পাকার আগেই কেন ঝড়ে পড়ে বোটা?
বোটাকে বোঝালে হবে? যত্নআত্নি নাও
বাম সেতো বাম নয়, ডান নয় তাও
যতটা চাইছো, ঠিক চাও ততটুক?
দিলেম পুরোটা কেন চাইছো অধিক
থাকার অধিক কিছু এনে দিতে বলে
নিজেকে খোয়ায়ে ফেলো কোন্ কলরোলে
আমিতো খুঁজছি তোমা দাঁড়িকমাসহ
যা কিছু কোথাও নেই দাবি আজ তাও!

(কবিরা কবিতো নয়)
মরিচা পড়তেছে হাড়ে হাঁটাহাঁটি বাদ
ডানেতো পড়তেছি ঝুঁকে বাম পাশে কাৎ
বুক ঠিক সটান রয়েছে পিঠ তাও কুঁজ
পায়েতে মিলেছে মাথা হয়েছি ত্রিভূজ
ত্রিভূজ হবার পর পড়েছি ধাঁধায়
সূক্ষ্মকোণ কিনা তাই কবিরা সুধায়
তাদের জবাব দিতেই কম্পাসে মেপে
নিজেকে বাঁকিয়ে নেব ঠিকঠাক সেপে?
কতটা বাঁকালে তাতে সূক্ষ্মকোণ হবে
আমিতো নাদান বাছা প্রজ্ঞাপূর্ণ ভবে
আপনারা বেঁকে তবে বলে দেন ভাই
এই দেখো সূক্ষ্মকোণ, দেখে বেঁকে যাই
দল-বেঁধে বেঁকে যাব লেগ-মাথা এক
কবিরা কবিতো নয়, ত্রিভূজ বেবাক!

(শস্যও মানুষ যেন)
ছুঁড়তেছে সময় তাতে লুকায়িত পাথরের ধার
আলোর ভেতরে ঢুকে সন্তর্পণে ফাটে অন্ধকার
রহস্যের ভস্ম মাখা; ছড়িয়ে পড়তেছে তার ছাই
পরিমিতি নেই; নিজে জ্বালামুখ খুলতেছে একাই
এতোসব মানুষের ভেতরের গূঢ় ঘনঘটা
যতো আড়ম্বর খোঁজে, ততখানি নয় সাদামাটা
যতটা সমুদ্র হলো ততটা গর্জন হতে গিয়ে
পাহাড়ের চূড়া থেকে পড়তেছে সে গড়িয়ে গড়িয়ে
কাঁটায় বিঁধেছে চোখ, কাঁটা তাতে দৃষ্টি খুঁজে পাক
নুড়িতে কেটেছে মুখ, নুড়িও তাহলে পাবে বাক?
পাথরে ভেঙেছে দু'পা সেও পেলে চলাচল গতি
পড়েছে উষর ভূমে, ভূমিটা কি হবে শস্যবতী?
মেধাবী পতনে তার, মাঠের তরঙ্গে থাক মিথ
শস্যও মানুষ যেন, মানুষের পরম সুহৃদ!

(জাতিস্মর)
সুন্দর শানানো ছুরি; দুপুরের ধনুক রোদ্দুরে
অলৌকিক, মাতৃগুন মাখামাখি প্রতীকি আগুনে
প্রকাশ্যে নিমের শাখা দুলছে কেবল; নীল আঙুল
নাড়াচ্ছে শরীর তার; দিঘীর কপালে খুব ঠাণ্ডা
বাতাস, অস্ফুটে গায় ভিন ভাষী গান; বেশ ভালো
লাগে, সেই সব সুর আঙুলে পেঁচিয়ে যাচ্ছি চলে
আহোবান করেনি যে তার অনুরাগে ক্রুর শখে
হাড় ভেঙে ঢুকালাম বাম হাত; কার ভুল বুকে
সেখানে লুকানো দু'টো নষ্ট চোখ বের করে এনে
দেখি, বিগত জন্মের দৃশ্যপট স্থিরচিত্রে ধরা
আর প্রত্ন ডাক বাক্সে ধুলোজমা কার দশটি চিঠি
নিজেরা চাচ্ছিল হতে ডাকহরকরা; দ্রুত পৌঁছে যেতে
তার জীবনের ঘুম ঠিকানায়; যেখানে উঠোনে
প্রিয় মানুষের ছায়া কুয়াশায় দূরে অপসৃয়মান!

(বালিতে-কাদায়)
ধরো আমি নেই, এই না থাকার মানে
আমি বাজছি কানে কানে অথবা সর্বাঙ্গে
তোমার; আমার থাকা তবে না থাকার
ভেতরে নিহীত বলে হলো প্রমানিত
যখন গরম কাল তখন তাহলে
বুঝি লাগতে পারে শীতও; এমন লাগাতে
তবে ফুলস্পিডে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে লেপে
জড়াবো শরীর; ভিনদেশে যেটা শুনশান
সেটাই এদেশে নাকি ভীড়; এই তথ্য
গূঢ় সত্য মানছি বলে; শীতের প্রকোপ
বেড়ে বরফের চাক যায় গলে; যাক
গলে, ভেঙে যাক, উড়ে যাক, পুড়ে যাক
থাকছে কিছু অবশেষ; যতোটা দুরত্ব
ততোটা নিকটে ডাকছে তার রেশ; আয়
যে পাবার পেতে পারে বালিতে-কাদায়!

(কলঙ্কের ছাপ)
রাতের দুয়ার ঠেলে এক অন্ধ বলে
দেখ্ দেখ্ উড়ন্ত মাছের পাখনায়
কেটে যাচ্ছে মেঘ; চাঁদের চিবুকে
ওই ঠোকর বসাচ্ছে ধূর্ত কাঠ-ঠোকরা
আর কপালের কূলে নিষিক্ত চুম্বন
লেগে আছে? বেশরম মোছ্ তাড়াতাড়ি
সে চুমুর উল্কি যতো ঘষে, আঙুলের
আঁচে ততটা উজ্জ্বল হয়; আন্ধা হাসে
ক্রুর হাসি পাশাপাশি করে ভবিষ্যত
-বানী, জানি, তোর ওটা কলঙ্কের ছাপ
আজীবন রয়ে যাবে; খরা-বৃষ্টি-ঝড়ে
কপালে চুমুর কিংবদন্তী করেই বহন
নির্বাসনে গিয়ে এক বনবাসীর মুখে
শোনে, কপালে নক্ষত্র ফুটে আছে তার
এ খবর রাজ্য হয়ে গেলে তাকে পেতে
ছুটে আসে রাজাপুত্র কতো; অথচ সে
ভাবে স্বপ্নে কে বা কারা লুটিয়ে নিয়েছে
তার সব; যার দাগ কপালে উজ্জ্বল
সে অন্ধকে সত্য ভাবে; আর সব খল!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৪৬

এহসান সাবির বলেছেন: বেশ!

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:১৩

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: অসাধারণ লেখেন আপনি ++++++

কিন্তু একসাথে এতো লেখা , আমার কেন যেন ক্লান্তি লাগে ।

তার কান্না বাঁধ ভেঙে ঢুকে পড়েনি
কোনো হার্দিক জনপদে
অথচ কতো সহজে বন্যায় ডুবে আ্রছে
অর্ধশতাধিক উপজেলা
কোনো কোনো বিকেলে সে মেয়েটা
আমার ভেতরে ঢুকে কাঁদে
তখন বিকেল তলিয়ে যায়
আর আমি ট্রাউজার তুলে
তুমুলে ঠেলে সে স্রোত
তার চোখের কাছে পৌঁছতে গিয়ে
সময়ের টানেলে ঢুকে পড়ি


ঈদ মুবারক :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.