নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাই,আমি পদাতিক চৌধুরী।পথেঘাটে ঘুরে বেড়াই।আগডুম বাগডুম লিখি। এমনই আগডুম বাগডুমের পরিচয় পেতে হলে আমার ব্লগে আপনাদেরকে স্বাগত।
পরেরদিন সকাল বেলা বাপজানকে সঙ্গে নিয়ে গেলাম ডাক্তার বাবুর চেম্বারে। ডাক্তার বাবু হালদার বাবুর পূর্ব পরিচিত বলা ভালো, বন্ধু স্থানীয়। মূলত সেই সূত্রে বাপজানদের সকলকেই উনি খুব ভালোভাবে চিনতেন। অনেকক্ষণ ধরে সেদিন আমাকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করলেন। বুকে পিঠে একটা যন্ত্র ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিতে বললেন। এমন যন্ত্র আমি ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি। ডাক্তারবাবুর কথামতো জোরে শ্বাস নিতে আমার বেশ কষ্ট হচ্ছিল। রাতের সেই ব্যথাটা তখনও আমাকে বেশ কাবু করে রেখেছিল। উনি হাত দিয়ে বেশ জোরে টিপে টিপে পরীক্ষা করাতে আমার চোখে জল চলে আসে। কোনক্রমে দম ধরে নিজেকে সামলে নিলেও লাগছে কিনা ডাক্তার বাবুর জিজ্ঞাসায়, মুখে কিছু না বলে মাথা নেড়ে সম্মতি জ্ঞাপন করি।চোখে তখন রীতিমত জল ছল ছল করছে।ডাক্তারবাবু আগের দিন রাস্তায় যেতে যেতে এবং দুপুরে ও রাতে কি কি খেয়েছি তার খোঁজখবর নিলেন।এবার মুখ ভার করে বললেন, পেটে অত্যধিক গ্যাস হওয়াতে রাতে বুকের যন্ত্রণার কারণ।চিন্তার কোন কারণ নেই বলে উনি বাপজানকে আশ্বস্ত করলেন। সামান্য কিছু ওষুধ দিয়ে আরেকবার ভয়ের কোনো কারণ নেই বলে হালদার বাবুকেও জানাতে বললেন।অস্বীকার করব না রাতের সেই ভয়াল স্বপ্নটা এতক্ষণ পর্যন্ত আমার মধ্যে চেপে বসেছিল। ডাক্তারবাবুর কথাতে আমিও কিছুটা আশ্বস্ত হই। বাকি রাস্তা কিছুটা ফুরফুরে মেজাজেই বাপের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে দোকান ঘরে চলে আসি।
আমার এই সুখানুভূতি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দোকানঘরে ফিরে আমি খুব মর্মাহত হলাম। হালদারবাবু আমাকে গ্রামে ফেরত পাঠানোর যাবতীয় ব্যবস্থা সেরে রেখেছিলেন।শুরুতেই 'আমি যাব না' বলে প্রতিবাদ করলেও কোন লাভ হল না।আমার কথা কারো কাছে গ্রাহ্য হল না। স্বপন কাকার কাছ থেকে জানতে পারলাম,এ বাড়িতে হালদার বাবুর মুখের উপর কথা বলার সাহস কারো নেই। আমরা ডাক্তারখানায় চলে গেলে উনি নাকি দাদাকে ডেকে আমার ফেরানোর ব্যবস্থা পাকা করে যান। জীবনে এক কঠিন লড়াইয়ের সম্মুখীন হলাম। বাপ, দাদা পাশে থেকেও সবাই নির্বিকার। অসহায়ভাবে আমাকে এগিয়ে দিলো এক অনিশ্চয়তার দিকে। মুখে তারা নানাভাবে সান্ত্বনা দিলেও তা যে কোনো ভাবেই আমার পক্ষে যথেষ্ঠ ছিলনা। গহরকে নিয়ে দুশ্চিন্তা যে কি অসম্ভব চাপ তৈরি করেছিল এবং পরিণামে ভিতরে ভিতরে যে কতটা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম তা কেবল অন্তর্যামীই জানেন।
সেদিন দীর্ঘ রাস্তায় এক প্রকার নিরব থেকেই দাদার পাশে হেঁটে গেছি। শুরুতেই দাদা বিভিন্নভাবে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে এতটা মন খারাপ করার কি আছে, এটাই তো শেষ যাওয়া নয়। কদিন বাদে আবার আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমাকে বোঝাতে থাকে। কিন্তু দাদার সেসব কথা আমার কানে ঢুকছিল না। আমি তাৎক্ষণিক ঘটনায় বিশ্বাসী। সুদূরপ্রসারী কোনো ভাবনা আমার মাথায় আসে না বা ভাবার চেষ্টাও করি না।স্বভাবতই দাদার শত কথাতেও আমি একটাও শব্দ না করাতে একসময় বাধ্য হয়ে দাদাও মুখ বন্ধ করে। সেদিনের এই নীরবতা আমার কাছে অধিক শ্রেয় বলে মনে হয়েছিল।ইত্যবসরে গতকাল থেকে ঘটে যাওয়া একটার পর একটা ঘটনা যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আজ ডাক্তারখানায় যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যে মানুষটার উদারতা আমাকে মুগ্ধ করেছিল, মূহূর্তেই তা যেন ধুলোয় গড়াগড়ি খেতে লাগলো। ওনার করা সমস্ত কাজ আমার কাছে গুরুত্ব হারাল।কাজেই নেপথ্যের কান্ডারী হিসেবে যাবতীয় ক্ষোভ গিয়ে পড়লো হালদার বাবুর উপরে।
তবে এই না পাওয়ার যাতনার মধ্যেও কিছুটা সুখানুভূতি মনকে আন্দোলিত করে তোলে।শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বপন কাকার মিষ্টি আচরণ কিছুটা হলেও আমার মনকে শান্তি দিয়েছিল।যদিও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মাত্র দেড় দিনের মধ্যেই তার ছন্দপতন ঘটে।কিন্তু সেই স্বল্প সময়ে মনের অজান্তেই আপনজনদের দূরে সরিয়ে স্বপন কাকা প্রবেশ করেছিল হৃদয়ের অনেকখানি গভীরে।জুড়ে নিয়েছিল অনেকখানি স্থানও। কত কথাই না এই অল্প সময়ে মানুষটার সঙ্গে হয়েছিল। দাদির পরে আর একজনের সঙ্গে যেন প্রাণ খুলে কথা বলতে পেরেছিলাম। চলে আসার সময় মাথায় ও পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে কাকা বলেছিল,
-মন খারাপ করিস না মাহমুদ। কদিন বাদেই দেখবি আবার ঠিক এখানে চলে এসেছিস।
স্বপন কাকার কথাটা ওই সময় আলাদাভাবে আমার অনুভূতিতে কোন পরিবর্তন না ঘটালেও যতই বাড়ির পথে এগোতে থাকি ততই কানের মধ্যে যেন প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। এই ভাবনার সঙ্গে সমান্তরালভাবে গহরের চিন্তাও আমার শিরদাঁড়ায় যেন কুঠারাঘাত করতে থাকে।বুঝতে পারি মনের ক্লান্তি শারীরিক ক্লান্তির উপর চেপে বসেছে।তাই মনের বিরুদ্ধে গিয়ে পা দুটোই শরীরটাকে কোনোক্রমে টানতে থাকে।শেষের দিকে পাও যেন জড়িয়ে আসতে থাকে। অবশেষে দুপুরের অনেক পরে আমরা বাড়িতে উপস্থিত হই।
বাড়ি ফিরতেই প্রত্যাশামতো অস্বাভাবিকতা আমার চোখে ধরা পড়ে।সবাই এসে কথা বলছে ঠিকই কিন্তু তার মধ্যেও কেমন যেন একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ, একটা থমথমে ভাব। বুঝতেই পারি মাত্র এক রাতের ব্যবধানে পরিবেশটি আমূল বদলে গেছে। দাদিই প্রথম খবরটি দিল, গতকাল কাবুল চাচার ছোট ছেলে গহর পুকুরে ডুবে মারা গেছে। কথাটা শোনা মাত্রই দাদা আঁতকে উঠলো। কোন পুকুরে, কখন পাওয়া গেছে, সঙ্গে আর কেউ ছিল কিনা,উদগ্রীব ভাবে এক নিঃশ্বাসেই প্রশ্নগুলো করে ফেলে।তবে দাদি অনেকটা নির্লিপ্তভাবে সেসব প্রশ্নের উত্তর দিলেও বারেবারে আমার দিকে তাকাতে থাকে।সে সময় দাদীর চোখে মুখের সঙ্গে গলার স্বরটাও কেমন যেনো অচেনা লাগছিল।জীবনে এই প্রথম দাদিকে আমার কোন অপরিচিত সন্দেহভাজন ব্যক্তি বলে মনে হল।প্রচন্ড অস্বস্তি হচ্ছিল এভাবে পাশে বসে থেকে।সুযোগ খুঁজছিলাম কি করে এখান থেকে বের হওয়া যায়।হঠাৎ পেচ্ছাপ পেয়েছে বলে এক ছুটে ওখান থেকে বেরিয়ে সোজা মায়ের কাছে চলে যায়।মা তখন রান্নাঘরে ব্যস্ত ছিল।আশপাশে দুই এক জন ভাই বোন ছিল।সকলের সঙ্গে টুকটাক কথা বলে গোসল সেরে বারান্দায় শুয়ে পড়ি।অনেক পরে মায়ের রান্না শেষ হয়।খেতে বসলাম ঠিকই কিন্তু খাবার কোন টান ছিল না কিম্বা খাবার কিছুতেই যেনো গলার ওপাশে সরছিল না।খাওয়া শেষে আবার বারান্দায় গিয়ে শুয়ে পড়ি। সেদিন সারাদিনে আর দাদির কামড়া মুখো হইনি।পরপর দুদিন এভাবেই কাটে। আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা না করায়, মনে মনে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম, এটা ভেবে যে এই যাত্রার মতো হয়তোবা বেঁচে গেছি।গহরের পুকুরে ডোবানোর দায়টি অন্তত আমার গা থেকে নেমে গেছে।
মনে মনে যা ভাবি না কেন ভিতরে ভিতরে একটা অস্বস্তি থেকেই গেছিল।আগেও বলেছি শুরুতে দাদির চাহনিটা আমার ভালো লাগেনি। যে কারণে ফেরা থেকেই আমি দাদিকে এড়িয়ে চলছিলাম। দাদা একবার ডেকেছিল আমাকে গহরের কবর জিয়ারত করবে বলে। কিন্তু ক্লান্তির দোহাই তুলে আমি যেতে রাজি হইনি। দাদা অবশ্য স্বীকার করেছিল মাত্র দুদিনেই দীর্ঘ রাস্তা অতিক্রান্তের ফলে আমার অবসন্নের কথা। যে কারণে আর চাপ না দিয়ে নিজেই চলে যায় গহরের কবর জিয়ারত করতে।এই পর্বে দাদা দুদিন বাড়িতে ছিল।দ্বিতীয় দিন রাতের বেলা দাদির কামরা থেকে বেশ জোরে জোরে দুজনেরই কথা শুনতে পাই।এমন উচ্চঃস্বরে কথা ইতিপূর্বে কখনো শুনিনি।অন্ধকারে আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম,ভাই-বোন সবাই গিয়ে ভিড় করেছে দাদির কামরার সামনে।আমি অবশ্য আর ওমুখো হইনি। তবে কান খাঁড়া করে রেখেছিলাম ওদের মধ্যে ঝগড়ার কারণ কি তা বুঝতে।রাতে মাকে জিজ্ঞেস করেও তেমন কোনো সদুত্তর পাইনি। মনে মনে বেশ মজা পেয়েছিলাম, যাক তাহলে নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। দাদা-দাদি নিজেরা ঝগড়া করছে যখন তাহলে এ যাত্রায় বেঁচে গেছি।
তৃতীয়দিন সকালে দাদা চলে যেতেই দাদি ইশারা করে ডাকে আমাকে। দাদির মুখটা তখনও থমথমে।বুঝতে পারে গত রাতের ঝগড়ার রেশটা তখনও চোখ মুখে রয়ে গেছে। যাইহোক দাদির এমন ডাকে আচমকা বুকের মধ্যে গুরু গুরু করে ওঠে। মুহূর্তে একটা অশনিসংকেত টের পাই। সঙ্গে সঙ্গে দুশ্চিন্তার কালো মেঘ আমার চিন্তার জগতকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। মনে মনে প্রশ্ন করতে থাকি, কি এমন কথা থাকতে পারে যে তার জন্য দাদি আমাকে এমন চুপিসারে ডেকে নিয়ে এসেছে।উল্লেখ্য গত রাতে ঝগড়ার ঘটনাটি আমার মাথা থেকে সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়ে গিয়ে বরং নিজের কৃতকর্মের চাপেই কিছুটা চোরের মত দাদির পিছু পিছু কামরায় প্রবেশ করি। আমি ঢুকতেই একবার উঁকি দিয়ে বাইরেটা দেখে নিয়ে, দাদি কামড়ার দরজাটা বন্ধ করে দেয়। ভিতরে ঢুকে তখনও ভালো করে বসিনি।হঠাৎ প্রথম কথা ধেয়ে এলো আমার দিকে,
-গহরকে পুকুরে ডুবিয়েছিস কেন?
দাদি যে এমন করে সরাসরি আমাকে প্রশ্ন করতে পারে তা আমার কল্পনায়ও ছিলনা।উল্লেখ্য গত তিনদিন ধরে তৈরি হওয়া আমার মনের যাবতীয় প্রতিরোধ শক্তি দাদির এক প্রশ্নেই মুহূর্তে ফুৎকারে উড়ে যায়। আমি ঠিক ভেবে পেলাম না ঠিক কি উত্তর দেব বা ছুটে পালিয়ে যাবো কিনা।মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে রইলাম। দাদি আবার খোঁচা দিয়ে জিজ্ঞাসা করে,
-কিরে চুপ করে আছিস কেন? আমার কথার উত্তর দে।
বুঝতে পারি, নাহা! দাদি আমাকে ছাড়বেনা।একবার গলা খাকারি দিয়ে গলাটা পরিষ্কার করার চেষ্টা করলেও কোনো শব্দই যেনো বের হচ্ছিল না।একটা অসহনীয় অবস্থা আমাকে রীতিমত অবরুদ্ধ করে ফেলে। নিজের উপর তখন আর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না।শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়।বাইরে ঘামে গলা-মুখ ভিজতে থাকে অথচ গলার ভিতর শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়।উপায়ন্তর না পেয়ে,ডান পায়ের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ক্রমাগত মাটির নিচে ঘষতে থাকি।একবার মনে হচ্ছিল, 'না বলে দিই ছুট।কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো ছুটে পালাবোই বা কোথায়।পাশাপাশি পেট থেকে গলা পর্যন্ত বিকল্প প্রতিরোধগুলো যেন আন্দোলিত হতে থাকে।মাঝে মাঝে সেগুলো দুমড়েমুচড়ে গেলেও কিছুতেই একটিকে নির্দিষ্ট করতে পারছিলাম না। ফলে সম্ভব হচ্ছিল না দাদির প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে।কতগুলো যুক্তি খাড়া করলেও মুখের এপারে আসছিল না, ওপারেই মিলিয়ে যাচ্ছিল। কেবল সাপুড়ে মন্ত্র পড়ার মতো ঠোঁট দুটোকে আন্দোলিত করে গেছি। ইছামতি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখেছি, সব ঢেউ পরিপূর্ণতা পায় না। অগণিত ঢেউ তীরে আসার আগেই মিলিয়ে যায়।আমার প্রতিরোধগুলোও তেমনি সেদিন জিহ্বায় ডগায় আসতে পারছিল না। তার আগে মুখগহবরের মধ্যে বা গলার ভেতরে মিলিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছিল।তবে কথা যাই হোক, দাদি এতটা নিশ্চিত কিভাবে হলো তা ভেবে ভিতরে ভিতরে তোলপাড় হতে থাকে। যাইহোক সমস্ত দায় মেনে নিয়ে এই প্রশ্নটা করার ইচ্ছে জাগলেও সেটাও জিহ্বার আসার আগেই শুকিয়ে গেছিল।
আমার নিরুত্তর দেখে দাদি যা বোঝার বুঝে গেছে।এবার আমার আরও কাছে এসে বলতে লাগলো,
-তোর জন্মের সময় তুই ছিলি সাত মেসে,একটা মাংসপিণ্ড টাইপের।হাত পা বুক মাথা তখনও ভালো করে তৈরি হয়নি।বুকের কাছে খুব ধুকপুক ধুকপুক করতো।কেউ ভরসা দিতে পারিনি যে তুই বাঁচবি। ওদিকে তোর মাও ছিল মরণাপন্ন অবস্থায় মধ্যে। টানা কয়েকদিন জ্ঞান ছিল না।কিছু খেতেও পারত না।তোর বাপ রাতদিন পড়েছিল তোর মায়ের পিছনে।যম-মানুষের লড়াই করে অবশেষে তোর মাও সুস্থ হয়। তোকে প্রথম দিন থেকেই নিজের কাঁধে দায়িত্ব নিলেও আশা করিনি যে তুই শেষ পর্যন্ত তুই ফিরবি।যাইহোক উপরওয়ালার রহমতে তুইও ক্রমশ স্বাভাবিক হতে লাগলি।কিন্তু সুস্থ হয়ে তোর মায়ের আরেকটি রূপ দেখে আমি খুব মর্মাহত হয়েছিলাম।তোর মা তোর দিকে ফিরেও তাকাতো না।মুখে বলতো যে ছেলে আমাকে মারতে মারতে পৃথিবীতে এসেছে সে হয়তো কোনদিনো আমাকে মেরেই ফেলবে।আমি কত করে বোঝাতাম, বৌমা ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে ওরকম বলতে নেই।মনে প্রশ্রয় দিও না এসব চিন্তাভাবনার।ওরা হলো ফেরেশতা।ও রকম ভাবলে উপরওয়ালার রহমত থেকেও বঞ্চিত হবে।সংসারে বালা-মুসিবত কিছুতেই দূর হবে না।কিন্তু কে শোনে কার কথা। কোনদিন পারিনি বোঝাতে।তোকে সামনে দেখলে কেমন যেন হিংস্র হয়ে উঠত।বাধ্য হয়ে আমিই তোকে সারাক্ষণ আগলে রাখতাম।তোর বাপজান তো সারাবছর বাড়ি থাকতো না। আর মায়ের স্নেহ ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় স্বভাবতই তোর প্রতি একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম। আর এ কারণেই নিজের হাতেই তোকে গড়তে থাকি।নিজের ছেলে মেয়ে মানুষ করতে গিয়ে আমি এতটা সতর্ক ছিলাম না যতটা তোর প্রতি হয়েছিলাম।খেলতে গিয়ে পাড়ার ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে তোর প্রায়ই ঝগড়া হতো।তোকে ইচ্ছে করেই সবাই খুব রাগানোর চেষ্টা করত।দেখামাত্র আমি সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াতাম। তুইও বদ কম ছিলিস না।কামড়ানো রোগ তোর বহুদিনের।যখন-তখন যাকে-তাকে কামড়ে দিতিস।পাড়ার অনেকে এ নিয়ে তোর মায়ের কাছে অভিযোগ করলেও আমার কাছে সুবিধা করতে পারত না।যদিও তোর মা এই নিয়ে আমাকে কথা শোনাতে কম করতো না।আদর দিয়ে বাঁদর করছি, বলে রাতদিন প্রায়ই অভিযোগ করত।আমি অবশ্য সে সব অভিযোগকে কোনদিনই পাত্তা দেইনি।হেসে উড়িয়ে দিতাম।জানতাম বড় হয়ে জ্ঞান-বুদ্ধি হলে তুই সত্যিকারের মানুষের মত মানুষ হবি।নিজের পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে কখনো আমি এতটা ভাবতাম না।কিন্তু আশপাশে মানুষগুলোর তোর প্রতি এমন আচরণ দেখে আমি সারাক্ষণ খুব চিন্তায় থাকতাম।রাতে ঘুমও ভালো হতো না তোর চিন্তায়।সেই তুই কিনা শেষ পর্যন্ত এতবড় একটা অঘটন ঘটিয়ে আমার যাবতীয় আশা-আকাংখা-স্বপ্ন-সব শেষ করে দিলি? এখন তোকে আমি বাঁচবো কেমন করে?কিছুটা আগাম অনুমান করে গত রাতে তোর দাদাকে বলেছিলাম তোকে সঙ্গে নিতে। কিন্তু সমস্যা আছে জানিয়ে কিছুতেই রাজি হলো না।
কথাগুলো একটানা বলে একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে দাদি চুপচাপ বসে রইলো।
আমিও এতক্ষণ অন্য জগতে ছিলাম। দাদি যেনো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।নিজের অপরাধবোধের আগুনে নিজেই দগ্ধ হতে থাকি। ধিক্কার জানাতে থাকি নিজে নিজেকেই।সঙ্গে ঘন ঘন দীর্ঘশ্বাসই এসময় আমাদের উপস্থিতির সাক্ষ্য বহন করছিল।আমি মাথা নিচু করে থাকলেও বুঝতে পারছিলাম যে দাদি শুকনো মলিন মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এবং কি অসম্ভব চাপ নিয়ে। সত্যিই তো আমারই বা কি হবে?বুঝতেই পারি কাবুল চাচারা তো তাহলে আমাকে ছাড়বেনা। নানান হাবিজাবি ভাবনা মাথার মধ্যে ঢুকে পড়ে। ভাবতে থাকি এমতাবস্তায় আজি কোথাও পালিয়ে যাব কিনা... খানিক বাদে আমি মুখে কিছু না বলে ঐ স্থান ছেড়ে চলে আসি।
এতক্ষণ রাকিব মিয়াও যেন অন্য জগতে ছিলেন।মামু চাচা থামতেই বলে উঠলেন,
- তারপর..
ফ্রম সাতক্ষীরা টু বেলগাছিয়া (পর্ব-৬/প্রথম খন্ডের দ্বিতীয় পর্ব)
পর্ব-৮
০৩ রা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: বহুদিন পর প্রথমেই আপনার কমেন্ট পেয়ে উৎফুল্ল হলাম।ধন্যবাদ কবি ভাই আপনাকে।
হ্যাঁ হাতেনাতে ধরাই বৈকি।আসলে নাতিকে যে দাদি হাড়ে হাড়ে চেনে।ছোট্ট বয়সে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কিন্তু ফলটা যে সুদুরপ্রসারী।আগামী পর্বগুলোতে তার পরিচয় পাবেন।
আর গল্প মানেই তো একটু সাসপেন্স থাকবে। নইলে নির্ভেজাল বর্ণনা পড়তে ভালোই লাগবে না।আজকের পর্বে অবশ্য আমি পেরেশানি রাখিনি।তবে ওটাও যে গল্পের প্রধান চাবিকাঠি।একেবারে পেরেশানি মুক্ত করিই বা কেমন করে।
পোস্টে লাইক ও সঙ্গে এতগুলো প্লাসে প্রেরণা পেলাম।কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা শ্রদ্ধেয় কবি ভাইকে।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দাদা সকালেও একবার ঢু মেরেছিলাম আপনার ব্লগে
কিন্তু ভগ্নমনোরথ হয়ে ফিরে এসেছিলাম আপনার ফ্রম
সাতক্ষীরা টু বেলগাছিয়ার নতুন পর্ব না পেয়ে। যাহোক
পুষিয়ে দিলেন!! দারুন পর্ব্টা উপভোগ করলাম। শুভ
কামনা রইলো আপনার জন্য। পরবর্তী পর্বটার অপেক্ষায়।
০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দুঃখিত প্রিয় নুরু ভাই। আপনি ঢু মেরে গেছেন অথচ সঠিক সময়ে আমি কোনো পোস্ট দিতে পারেনি।এমন বিলম্বিত পোস্টেও পুষিয়ে গেছে বলাতে রীতিমতো অস্বস্তি বোধ করছি।তবে ভালো লেগেছে জেনে আনন্দও পেলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার শুভকামনা গ্রহণ করলাম। আপনার জন্যও রইল নিরন্তর শুভেচ্ছা।
আগামী পর্বেও সঙ্গে আছেন জেনে আছেন যিনি পুলকিত হলাম।আমরা ধন্যবাদ আপনাকে।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় নুরু ভাইকে।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১
মুক্তা নীল বলেছেন:
দাদা ,
দাদি নাতির শ্রেষ্ঠ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ যেনো শুধু
কথোপকথন নয় মনে হলো বাস্তবেও দেখতে পেলাম।
আপনি যখন যে চরিত্রটির ভেতরে ঢুকেন সেটার বিন্দু
থেকে বৃত্তপর্যন্ত উপস্থাপনা থাকে নিদারুণ ।
আদর দিয়ে বাঁদর করছি--- নিম্নগামী ভালোবাসাগুলো
মনে হয় এমনই হয়। একদিকে অনুশোচনা অন্যদিকে
দাদীর কাছে কি জবাব দিবে সেটা দেখার জন্য আমিও
অপেক্ষায় রইলাম গভীর আগ্রহে ।
অনেক শুভকামনা রইলো এবং নিরাপদে থাকুন সবসময়।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট বোনের মন্তব্য গতকালই দেখেছি।কিন্তু আমি ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে গতকাল থেকে লগইন করার মত সময় করে উঠতে পারিনি।যে কারণে বিলম্বিত উত্তর দেওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
পোস্টের কথোপকথনের মধ্যে বাস্তবতা খুঁজে পাওয়াতে খুশি হলাম। ধন্যবাদ প্রিয় বোনকে।সহমত বোনের সঙ্গে যে নিম্নগামী ভালোবাসা কখনো কখনো আনন্দের আতিশয্যে বিড়ম্বনার কারণ হয়।গল্পে মামুচাচা কৈশোরের এই অনাকাঙ্খিত ঘটনায়নিজেও সামান্য দগ্ধ।সেদিনের সেই ধাক্কা যে এত বড় একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবেতাতা কল্পনাতেও ছিল না।
তবে ঘটনার মোড় যেহেতু অন্যদিকে... পরবর্তী পর্বে বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে।
সঙ্গে থাকার জন্য বোনকে অশেষ ধন্যবাদ।
হ্যাঁ আমরা সকলেই চেষ্টায় আছি ভালো সুস্থ থাকার... ক্রমশ মনোবল ভেঙে পড়ছে।দূরদূরান্ত থেকে এবার করোনা এক্কেবারে পাশেই প্রবেশ করেছে।পরিচিত দুজন একজন 42 পব 53 বছর বয়সীমানুষ গত 10 দিনে কোন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।ঘটনাটা মনের ভার অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা বোনকে।
দাদার পক্ষ থেকে নিরন্তর শুভেচ্ছা রইল।
৪| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২৭
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
মন খারাপ করিস না মাহমুদ
- ভরসা ও আনন্দ পেলাম। মাহমুদ কখনো মন খারাপ করেন কিনা জানা নেই তবে ঠাকুরমাহমুদ কখনো মন খারাপ করেন না।
কলিকাতায় আমার দাদাজানের এক ডাক্তার বন্ধু ছিলেন। নাম মনোহর চন্দ্র রায়। তিনি এ্যালুমিনিয়ামের বালতিতে তিন চার পদের সিরাপ ঢেলে ডাল ঘুটনি দিয়ে ঘুটে এক মিকচার বানাতেন, তারপর তার কাছে আগত রোগীদের দিয়ে দিতেন। প্রায় সকল রোগীকে ঐ একই ঔষধ দিতেন। মজার বিষয় হচ্ছে রোগী ভালো হতেন।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ঠাকুর মাহমুদ ভাই,
আশা করি ভাল আছেন।ব্যক্তিগত কাজে সময়ে প্রতিমন্তব্য না করাতে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
আপনি একজন চমৎকার মানুষ।গল্পের বিশেষ অংশটির মাধ্যমে নিজের মনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরাতে চমৎকৃত হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব ভালো লাগলো কলকাতায় আপনার দাদাজানের বন্ধু স্থানীয় এক জন ডাক্তার থাকার কথা শুনে।আমরা ছোটবেলায় জ্বর-জ্বারী হলে একটা ওষুধ খেতাম, খুব তেতো। বড়দের মুখে শুনতাম তার ডাক নাম ছিল কুইনাইন।জানিনা ডক্টর মনোহর বাবু তেমনই একটা মিকচার ওষুধটি করেছিলেন কিনা। ওই ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে বলি, ভীষণ ভালো ওষুধ ছিল।বিষয়টা আমিও দেখেছি, সব রোগীকে একই ঔষধ দেওয়া হত এবং আশ্চর্যজনকভাবে সবাই ভালোও হয়ে যেত।
আপনার সুন্দর মন্তব্য প্রীত হলাম। আবারো ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় মাহমুদ ভাইকে।
৫| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩৯
এম ডি মুসা বলেছেন: ভালো লাগা++
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৩৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
আমার কোনো পোস্টে আপনার প্রথম মন্তব্য, সু-স্বাগতম আপনাকে।
পোস্টে লাইক করাতে ও ডাবল প্লাসে প্রেরণা পেলাম। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভেচ্ছা নিয়েন।
৬| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: দাদা এবার পোষ্ট দেরীতে দেওয়ার কারন আমি জানি।
সম্ভবত আপনার মোবাইল বা ল্যাপটপ চুরী হয়েছে।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হ্যাঁ ভাইয়ের অনুমান একেবারেই সঠিক।সঙ্গে ব্যঙ্কের এটিএম কার্ডও ছিল।খুবই মানসিক যাতনার মধ্যে ছিলাম কদিন। ঘটনার পর টেকনিক্যাল ঝামেলার কারণে প্রায় দুই তিন দিন প্রচন্ড ব্যস্ত ছিলাম।ব্লগেও ঢুকতে পারিনি।ধন্যবাদ প্রিয় ছোট ভাইকে।
৭| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: ভয়ের একটা গ্রাম্য চিকিতসা আছে।
দা বা বটির আগায় সামান্য লবন নিয়ে গরম করে খাইয়ে দিলে ভয় কমে যায়।
সাথেই আছি দাদা। চলতে থাকুক।
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৪৬
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ভাইয়ের দ্বিতীয়বার মন্তব্যের মধ্যে ভিন্ন একটি বিষয় উল্লেখ করাতে খুশি হলাম।বিষয়টি একেবারেই অপরিচিত আমার কাছে।শেয়ার করার ও সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাইকে।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট ভাইকে।
৮| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৪৮
রাকু হাসান বলেছেন:
দাদি ক্রমেই কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠছে। গ্রামীণ দাদির পরশ পাচ্ছি এই গল্পে।
বিদ্রোহী ভৃগু
বড্ড সাসপেন্সে রেখে শেষ করলেন প্রিয় পদাতিক দা'
আশা করি দ্রুই আমাদের পেরেশানি মুক্ত করবেন :
+++++
--আমিও চাই।
ব্যাথা<ব্যথা(প্রথম প্যারার উপরের দিকে)
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় ছোট ভাই রাকু,
আশা করি ভালো আছো। তুমি বলেছ ঠিকই যে দাদি চরিত্রটি ক্রমশ কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠছে।তবে আমি তোমাকে এ বিষয়ে আগাম কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছি না।দেখা যাক পরবর্তী পর্বে ঘটনা কোন দিকে অগ্রসর হয়।
বিদ্রোহী বিরু ভাই একজন বিচক্ষণ মানুষ। বিভিন্ন পোস্টে উনি ওনার বিচক্ষণতার ছাপ রাখেন। সে কথা মাথায় রেখেও বলবো, আরো কিছু পর্ব যাক আশা করি তোমাদের সাসপেন্সের অবসান ঘটবে।
ব্যথা টাইপোটা উল্লেখ করাতে খুশি হলাম।এখনই ঠিক করে নিচ্ছি।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবে।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ছোট ভাইকে।
৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ১:১৬
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সব কথা অতি সহজ সরল ও নন্দিত ভাবে উপস্থাপন
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নেওয়াজ ভাই,
পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকামনা জানবেন।
১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ ভোর ৬:৫০
ইসিয়াক বলেছেন: তারপর........
০৪ ঠা জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৫৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
পরের পর্বে...
১১| ০৯ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:০৭
নজসু বলেছেন:
আস সালামু আলাইকুম প্রিয় ভাই।
মিস করি আপনাকে; আপনার লেখাগুলোকে।
১০ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৩৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ওয়ালাইকুম আসসালাম। আশা করি ভাল আছেন।আমিও আপনাদেরকে প্রচন্ড মিস করি। মিস করি ব্লগের সেই চনমনে দিনগুলোকে।
পোস্ট সম্পর্কে মন্তব্যে উল্লেখ না ধরে নিচ্ছি যে আপনি পোস্টটি পড়েছেন।পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টটিতে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা প্রিয় ভাইকে।
১২| ১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৮:২৭
আরোগ্য বলেছেন: গহর যে একেবারে প্রাণ হারাবে তা ভাবিনি। এই পর্বটি গম্ভীর হয়ে গেল। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। শুভ কামনা।
ভাইটি, আমার এবারের পোস্ট নির্বাচিত পাতায় এসেছে, সময় করে চোখ বুলিয়ে যেও।
১৯ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০৪
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: সেদিন তুমি বলার পর তোমার পোস্টে গেছিলাম।কিন্তু তার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ব্লগিং করার মত মানসিকতা হারিয়ে ফেলেছিলাম।প্রচন্ড অ্যাংজাইটিতে ভুগছিলাম। নুতন বাড়িতে ওঠার একটা প্রস্তুতি চলছিল।কিন্তু মনের মধ্যে সব যেন গুবলেট হয়ে গেছে। আমাদের আশেপাশে করোনার থাবা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে... জানি না আমাদের ভাগ্যে কি লেখা আছে।
১৩| ২০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:৪১
লরুজন বলেছেন: পোস্টে লাইক দিয়ে শরিক হলাম,
এখন থেকে নিয়মিত আপনার সব পোস্ট পড়ব
২০ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১১:২৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমার ব্লগ বাড়ীতে আপনার পদার্পণ। সু স্বাগতম আপনাকে।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম।কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিয়মিত পাশে থাকবেন জেনে খুশি হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভেচ্ছা নিয়েন।
১৪| ২২ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:১৮
করুণাধারা বলেছেন: রাকিব মিয়ার প্রশ্নের জবাব আশাকরি তাড়াতাড়ি দেবেন।
এই পোস্ট জানিনা কেন আমার চোখ এড়িয়ে গেছে, সেজন্য পড়তে এত দেরি হল। বরাবরের মতো কাহিনীর উপস্থাপন ভালো লেগেছে। মাহমুদ সবসময় দাদির সাথে থাকতো, তাই তার আচরণে দাদির মনে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক। দাদি মনে হয় বেশ বুদ্ধিমতী। দেখা যাক এমন পরিস্থিতিতে তিনি কী পদক্ষেপ নেন!!
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: না আপু তাড়াতাড়ি দিতে পারলাম-ই বা কোথায়? শেষ মুহূর্তে গৃহপ্রবেশের প্রস্তুতিকে সমানে বাধা দিয়ে চলেছে লকডাউন। ইচ্ছে ছিল 25 তারিখে নিজের ঘরে ওঠার।কিন্তু সেটাতো সম্ভব হলোই না।উল্টে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ও শনিবার সাপ্তাহিক লকডাউন ঘোষিত হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।আবার আমাদের নর্থ 24 পরগনা জেলা যেহেতু রাজ্যে করোনা আক্রান্ত জেলার দ্বিতীয় স্থান( কলকাতার পরেই)।কাজেই পরের সপ্তাহে, সপ্তাহব্যাপী লকডাউন ঘোষিত হওয়ার প্রস্তুতি চলছে।এমতাবস্থায় গৃহপ্রবেশ এ মাসের কতটা সম্ভব সে বিষয়ে গভীর আতান্তরে পড়েছি। আর এসব করতে গিয়েই ব্লগিংটাই একেবারে শিকেয় উঠে গেছে।এই সমস্যাটির না মেটা পর্যন্ত মনের অস্থিরতাও যাচ্ছে না।
পোস্টে লাইক করার প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা প্রিয় আপুকে।
১৫| ২২ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২৬
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমি এখন আপাততঃ আপনার লেখা পড়ছি না। শুধু লাইক দিয়ে কাজ এগিয়ে রাখছি। বেশ কয়েকটা পর্ব জমলে তারপরে পড়বো।
২২ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন:
বেশ!
আপনার এভাবে আগমনও আমার কাছে আনন্দের।
অপেক্ষায় থাকলাম অনেক গুলো পোস্ট পড়ে একটা কমপ্লিমেন্ট দেওয়ার।
আপাতত লাইক নিয়েই খুশি হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভেচ্ছা নিয়েন।
১৬| ২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:৩৫
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সিরিজটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
আগের ও এই সিরিজের অনেকগুলি লিখা পড়া হয়েছে। কোন এক বিচিত্র কারনে আমি মোবাইল থেকে সামুতে লগইন করতে পারছিনা, তাই মন্তব্য করা হয়ে উঠেনি।
শুভ কামনা জানবেন পদাতিক দা।
২৩ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:২৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: অনেকদিন পর লিটন ভাইকে পেয়ে আনন্দ পেলাম।কোন এক অজ্ঞাত কারণে ব্লগে লগইন করতে পারছেন না জেনে বিষন্ন হলাম।মাঝে মাঝে আমারও এমন হয় তখন প্রচন্ড খারাপ লাগে।
যাই হোক অবশেষে ব্লগে লগইন করলেন ও মন্তব্য করেছেন বলে খুশি হলাম।ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার শুভেচ্ছা গ্রহন করলাম।আপনার জন্যও রইলো নিরন্তর শুভেচ্ছা।
১৭| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ২:৩৪
মা.হাসান বলেছেন: প্রিয় পদাতিক ভাই, ব্লগে অনিয়মিত হয়ে পড়েছি, দুঃখিত।
আপনার গৃহ প্রবেশঅলরেডি কয়েক মাস পিছিয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা করছি এমাসেই নতুন বাসায় উঠুন, ফুল স্কেল কম্পিউটার লাগান এবং ডাবল বিক্রমে ব্লগিং করুন।
মায়ের অবহেলা সন্তানের অবচেতন মনে বড় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে দিতে পারে। গওহরের সাথে মামু যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার পিছনে মামুর মায়ের দায়ও কম দেখছি না। এই পরিবেশ থেকে বের হতে পারলেই মনে হয় মামুর জন্য ভালো হতো। তবে যা হবার তা তো হবেই।
শিশু মনের যাতনা-কষ্টের অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহি প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৫
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় মা. হাসান ভাই,
ভাড়া বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে সিফটিং এর কারণে প্রায় আট/নয় দিন ব্লগ থেকে দূরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলাম।বর্তমানে চাপ একটু কমেছে।এখন থেকে আবার ব্লগে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করব। দেরিতে প্রতিমন্তব্য দেওয়াতে ক্ষমাপ্রার্থী।নতুন বাড়িতে ব্লগিং করা সম্পর্কে আপনার আগাম শুভাশিসের জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে। এই মুহূর্তে আর্থিক লোড মাথায় একটু বেশি পড়ে গেছে। চাপমুক্ত হলে তেমনটি ইচ্ছা আছে। বাকিটা উপরওয়ালা নির্ভর।
পোষ্ট সম্পর্কে আপনার সুন্দর মন্তব্যে প্রীত হলাম।পারিপার্শ্বিক চাপেই বাচ্চারা অনেক সময় ছোট থেকেই অনেকটা হিংস্র প্রকৃতির হয়ে থাকে।কিন্তু আমরা সেসব না ভেবে কেবল তার উপর দায় চাপিয়ে দিই।এক কথায় তাকে নিয়ে ভালো মন্দ বিচার বিবেচনা করে ফেলি।তবে গল্পে যা হওয়ার হয়েই গেছে। বাকিটা পরবর্তী পর্বে জানতে পারবেন।
সবশেষে পোস্ট মূল্যায়নে আপনার সার্বিক মতামতে অনুপ্রাণিত বোধ করছি।কৃতজ্ঞতা জানবেন।
পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা আপনাকে।
১৮| ০১ লা আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৫
ইসিয়াক বলেছেন:
ঈদের শুভেচ্ছা রইলো প্রিয় দাদা।
০২ রা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৫৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: দেরীতে উত্তর দেওয়াতে ক্ষমাপ্রার্থী।আপনার ঈদের শুভেচ্ছা গ্রহন করলাম।আপনার জন্যও রইল ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।
১৯| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:০৭
মনিরা সুলতানা বলেছেন: বেশ পিছিয়ে আছি দেখছি
সময় করে শেষ করছি ...
শুভ কামনা ।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১১
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হ্যাঁ আপু একটা সময় আপনি পিছিয়ে ছিলেন এখন অবশ্য আমি নিজেই পিছিয়ে গেছি। ব্যস্ততা প্রচন্ড বেড়ে গেছে। কিছুতেই ব্লগিং করার মত সময় করে উঠতে পারছিনা। সেখানে পোস্ট দেওয়া তো দূরের কথা। আপনি ইত্যবসরে নিজেকে আপডেট করবেন এই আশাই করি।
পোস্টে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম কৃতজ্ঞতা জানবেন।
নিরন্তর শুভেচ্ছা আপনাকে।
২০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৯
আনমোনা বলেছেন: দাদি তার নাতিকে ভালোই চিনতেন, এবং তাকে নিয়ে বিপদেও পরে গেলেন।
কিন্তু বুঝলামনা, ডাক্তার এমন কি বললো যে হালদার তাকে আর রাখল নাা?
১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৪৩
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন আপু। দাদি তার নাতনিকে খুব ভালোই চিনতেন যে কারণে তার মনমরা থাকে সামনের সমূহ বিপদের আশঙ্কায় ছিলেন।
আর ডাক্তারবাবুকে তেমন কিছু বলতে হয়নি উনি নর্মাল চেকআপ করিয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে হালদার বাবু বিরক্ত হয়েছিলেন ওই টুকুন বয়সের একটি ছেলেকে কাজে নিয়ে যাওয়াতে। যে কারণে ভালোই ভালোই ডাক্তারের চেম্বার থেকে ফির্তেই তিনি তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
পোষ্টটিতে লাইক করাতে প্রেরণা পেলাম; কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভেচ্ছা নিয়েন আপু।
২১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: "ইছামতি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখেছি, সব ঢেউ পরিপূর্ণতা পায় না। অগণিত ঢেউ তীরে য়াসার আগেই মিলিয়ে যায়" - অতি চমৎকার এই পর্যবেক্ষণটি আমার খুব ভাল লেগেছে, কারণ এটা গল্পের সাথে খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই এসে মিশে গেছে। পুরো গল্পের মধ্যে এ দুটো লাইনই আমার মতে সর্বশ্রেষ্ঠ।
মা.হাসান এর নাম এবারেও নিতেই হচ্ছে, তার অত্যন্ত সূক্ষ্মদর্শী মন্তব্যটার জন্য।
দ্বান্দ্বিক দোলাচলে ঘোরপাক খাওয়া এ গল্পে ষোড়শ ভাল লাগা রেখে গেলাম। + +
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: "ইছামতি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে দেখেছি, সব ঢেউ পরিপূর্ণতা পায় না। অগণিত ঢেউ তীরে য়াসার আগেই মিলিয়ে যায়" - অতি চমৎকার এই পর্যবেক্ষণটি আমার খুব ভাল লেগেছে, কারণ এটা গল্পের সাথে খুব প্রাসঙ্গিকভাবেই এসে মিশে গেছে। "-পোস্টের এই অংশটি প্রাসঙ্গিক মনে হওয়াতে আনন্দ পেলাম ধন্যবাদ স্যার আপনাকে। সঙ্গে, "পুরো গল্পের মধ্যে এ দুটো লাইনই আমার মতে সর্বশ্রেষ্ঠ।" মনে হওয়াতে লেখালেখিতে আমার সর্বোচ্চ পাওয়া। অনুপ্রেরণা যোগায় এমন আন্তরিক মন্তব্য। কৃতজ্ঞতা জানবেন স্যার।
মা.হাসান ভাই একজন বিচক্ষণ ব্লগার।ওনার কমেন্টগুলো যেকোনো পোস্টের মান বৃদ্ধি করে দেয়। আপনিও একজন গুণী মানুষ।সঙ্গত কারণেই পরে এলেও ওনার কমেন্টগুলো আপনাকে আলাদা করে ভাবতে সাহায্য করে। সুন্দর মিসোস্ক্রিয়াধর্মী কমেন্টে মুগ্ধতা।
সবশেষে "দ্বান্দ্বিক দোলাচলে ঘোরপাক খাওয়া এ গল্পে ষোড়শ ভাল লাগা রেখে গেলাম। + +"- আপনার চমৎকার অভিব্যক্তি পোস্টে ভালো লাগা ও ডাবল প্লাসে অনুপ্রাণিত হলাম। আবারো কৃতজ্ঞতা হরতাল আপনাকে।
বিনম্র শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:৪২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: একেবারে হাতেনাতে ধরা দাদীর কাছে!!!!!!!
ইশশ.. এই বয়েসই এমন অনাকাংখিত ঘটনা... সামনে কি আছে কে জানে!
বড্ড সাসপেন্সে রেখে শেষ করলেন প্রিয় পদাতিক দা'
আশা করি দ্রুই আমাদের পেরেশানি মুক্ত করবেন
+++++