নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
sometimes blue sometimes white sometimes black even red, even golden ! yes dear - its me - i am sky ! color your life, than your life will be colorful
১.
বিশাল রাজপ্রাসাদ, তাঁর চেয়েও বিশাল তাঁর সাম্রাজ্য। অসংখ্য সৈন্য-সামন্ত আর প্রজা। আকাশে বাতাসে প্রচন্ড তাণ্ডবে যুদ্ধের দামামা বেজে চলছে। চারোদিকে শত সহস্র হাতি আর লক্ষ লক্ষ ঘোড়ার পায়ের আওয়াজ আর অসংখ্য সৈন্যর ঢাল তলোয়ারের ডংকার তাণ্ডবে পৃথিবীও যেনো আর্তনাদ করে কেঁপে উঠছে বারংবার।
বিশাল এই তাণ্ডবের মাঝে নিজেকে ভূমিকাহীন আবিস্কার করে আশ্চর্য হই! এইখানে আমি ধুলো মলিন বস্ত্রে দাড়িয়ে কি করছি? আমার এইখানে কি কাজ? নিজেকে প্রশ্ন করে কোনো সদুত্তর খোঁজে পাইনা। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি যেনো কাল মহাকাল অনন্তকাল ধরে এইখানে এইভাবে দাড়িয়ে আছি, অপেক্ষা করছি কোনো বিশেষ এক মুহুর্তের জন্য। আদি অনাদিকাল ধরে অপেক্ষা করে করে আজ এখন, কেনো কিভাবে যেনো মনে হলো - আমি কি তাহলে মহামান্য সম্রাট, রাজাধিরাজ সাম্রাজ্যের অধিপতিকে দেখতে অপেক্ষা করছি? কিন্তু কেনো?
আ-ক্র-ম-ণ
গগন বিদারক গর্জনে স্তম্ভিত হই! লক্ষ লক্ষ সৈন্য-সামন্তের ভিড়ে সিংহের কেশরের মতো লম্বা চুলে তার্মপাতের বর্ম গায়ে ধেয়ে আসা আতিকায় বিশাল কালো ঘোড়ার পিঠে বাম হাতে লাগাম আর ভারী ঢাল, ডান হাতে লম্বা বর্শা। প্রতিশোধের আগুনে ক্রুদ্ধ অগ্নিদৃষ্টির যাকে দেখছি এ কোনো মানুষ নয়! মানুষরূপী রাক্ষস আর দানবের সংমিশ্রণে সম্রাাটকে দেখে চমকে উঠি! বরফ শীতল কাঁপুনি দিয়ে এক শীতল স্রোত বয়ে যায় শরীরে! - একি! এ যে আমি! আমিই! তাহলে, আমিই নিজের জন্য অপেক্ষা করছি অনাদি অনন্তকাল! কাল মহাকাল!
২.
ছিন্ন ছিন্ন স্থানে আগুন জ্বলছে আর কুণ্ডলী পাঁকানো ধোঁয়া। কুকুর, হায়েনা আর শুকুনও যেনো আতঙ্কিত - একি প্রকৃতির কোনো সর্বনাশ। চারোদিকে হাহাকার। অসংখ্য নারী আর শিশুর চিৎকার আর কান্নার বিলাপ। মৃত লাশের মাঝে নিজের প্রিয়জনদের লাশ খোঁজার আকুতিতে ভারী হয়ে আছে পরিবেশ। বর্শার আঘাতে, তীরবিদ্ধ, তলোয়ারে কাটা মৃত মানুষের লাশের স্তূপ আর স্তূপ। এ যেনো শুধু মৃত মানুষের ভয়াবহ ভয়ংকর এক জগত, জীবিত আর কেউ নেই। এক যুদ্ধের প্রচন্ড প্রলয় এসে ছিনিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ।
৩.
রক্তে লাল আমার তলোয়ার। শেষ বিকেলের আলোতেও ক্ষুধার্ত তলোয়ার চিক চিক করে উঠে। রক্তের নেশায় আমার তলোয়ার আরোও রক্ত চায়। আমার কপালের দুপাশের শিরাগুলো ধপধপ করে কেঁপে উঠে। কি এক অজানা দ্রোহে ধ্বংসের মাতম যেনো আমার মাঝে এখনও শত সহস্র বাদ্য বাজাতে থাকে। প্রতিদ্বন্দ্বী আর কাউকে খোঁজে পাই না। না আর কেউ নেই। অস্তগামী সূর্যের দিকে তাকিয়ে সূর্যের চেয়েও যেনো ক্ষমতাধর এই আমি, ঢাল ছুড়ে ফেলি আর রক্তাক্ত তলোয়ার অসম শক্তিতে ভূমিতে পুতে যুদ্ধ সমাপ্তি ঘোষণা করি।
কিন্তু একি, সারাদিনের যুদ্ধও যখন আমাকে ক্লান্ত করতে পারেনি এখন কেনো এতো অবসন্ন লাগছে। আমার পায়ের নিচের মাটি, আমার পৃথিবী - আমার কাছে অথৈ সাগরের পানির মতো দুলে উঠে। চারোদিকে হাত বাড়াই কোনো অবলম্বনের আশায়, কিন্তু সবই মরীচিকার মতো দূরে সরে যায়। কখন যে ধুলোয় গড়িয়ে পড়েছি বোঝার আগেই আধো আলো আধো অন্ধকারে দেখতে পাই শ্বেত শুভ্র দুইটি শিশু, শ্বেত শুভ্র তাঁদের বসন। আমার হাত ধরে ডাকছেন চলো - চলো, সময় নেই। সময় নেই। রাক্ষস আর দানবের শক্তির সাম্রাজ্যের সম্রাট এই আমি অনুভব করি শরীরে কোনো শক্তি অবশিষ্ট নেই। আশ্চর্য হই, কথা বলারও শক্তি নেই। যেনো হাজার হাজার মাইল পাড়ি দেওয়া ক্লান্ত অতি সাধারণ কোনো এক পথিক মাত্র। নিস্তেজ অসাড় নিষ্প্রাণ। তাঁরা আবারও তাড়া দেয় - চলো চলো, সময় নেই, সময় নেই। কি নিষ্পাপ তাঁদের চেহারা। আচ্ছা এরা কি দেবশিশু? সমস্ত শক্তি এক করে, জীবনের শেষ শক্তিতে অস্ফুট স্বরে জানতে চাই - কোথায়? শিশুরা কি সুন্দর নির্মল হাসি হাসি মুখে পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন চিরোসত্য নিষ্ঠুর বাক্যটি উচ্চারণ করে “যেখানে সবাইকে যেতে হয়, যেতে হবে। সময় শেষ।
সাম্রাজ্যবাদী দানব, ভয়ঙ্কর রক্ত পিশাচ রাক্ষস, বিশাল ক্ষমতাধর সম্রাট এই আমি! হীরক স্বর্ণ খচিত রাজপোশাক আর বর্ম গায়ে এই আমার দানবীয় রাক্ষসের দেহ মৃত্যুর ক্ষমতার কাছে তুচ্ছ হয়ে ধুলোয় মাখামাখি হয়। চরোদিকে শুনশান নিরবতা। যুদ্ধ সব শেষ করে দিয়েছে। আর মৃত্যু শেষ করে দিয়েছে আমায়। সমাপ্ত হয়েছে সম্রাট আর সাম্রাজ্য।
- সমাপ্ত -
পূর্ব প্রকাশ: ৯০ এর দশকে লেখাটি সাপ্তাহিক যায়যায়দিন পত্রিকায় বিশেষ সংখ্যায় ছাপা হয়েছে।
ছবি: হিমালয় পর্বতমালা
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০৭
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
বর্তমানের যুদ্ধ নিয়েও গল্প লিখবো। আশা করি পড়ে আপনার ভালো লাগবে। আপনাকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ।
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:৩৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
।।।। অনেক কঠিন একটি লেখা।
বুঝতে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
আপনাকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ। আপনি একা অনেকের বক্তব্য আপনার মন্তব্যে বলে দিয়েছেন। আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।
৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৭:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: খুব অন্যরকম একটি লেখা খুব সুন্দর
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:০০
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
সাপ্তাহিক যায়যায়দিন বিশেষ সংখ্যার জন্য লেখা। খুবই শ্রম দিয়ে লিখতে হতো, কারণ যেমন তেমন লেখা তো আর ছাপা হতো না। আপনার হয়তো মনে আছে, তখন যায়যায়দিনে সবচেয়ে ভালো লেখাগুলো পড়ার সুযোগ হতো। আপনাকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ।
৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:২৯
সোনাগাজী বলেছেন:
সভ্যতা খুবই দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে, অনেক জনগোষ্ঠীর কাছে ইহা এ্যাবসষ্ট্রাক্ট।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
খুবই কষ্টকর সংবাদ পেয়েছি গতকাল। লেখালেখি করার মতো আর আগ্রহ পাচ্ছি না।
৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯
রাজীব নুর বলেছেন: সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক।
দুঃখ কষ্টের সময় লেখালেখিটা বেশি করবেন।
৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৫:২৯
আঁধারের যুবরাজ বলেছেন: সাম্রাজ্যবাদী দানবরা সব যুগেই বিরাজমান।
৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৯
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: আপনার লেখায় ১,২,৩ দেখে লেখাটা পড়তে ভালো সুবিধা হয়েছে...
৮| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:১৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
বেশ ভাল লিখেছেন
বিশাল রাজপ্রাসাদ, তাঁর চেয়েও বিশাল তাঁর সাম্রাজ্য। অসংখ্য সৈন্য-সামন্ত আর প্রজা। আকাশে বাতাসে প্রচন্ড
তাণ্ডবে যুদ্ধের দামামা বেজে চলছে। চারিদিকে শত সহস্র হাতি আর লক্ষ লক্ষ ঘোড়ার পায়ের আওয়াজ আর
অসংখ্য সৈন্যর ঢাল তলোয়ারের ডংকার তাণ্ডবে পৃথিবীও যেনো আর্তনাদ করে কেঁপে উঠছে বারংবার।
বিশাল এই তাণ্ডবের মাঝে নিজেকে ভূমিকাহীন আবিস্কার করে আশ্চর্য হই! এইখানে আমি ধুলো মলিন বস্ত্রে দাড়িয়ে
কি করছি? আমার এইখানে কি কাজ? নিজেকে প্রশ্ন করে কোনো সদুত্তর খোঁজে পাইনা।
উত্তর খুঁজে পাবেন । মানুষ নীজেই একটি বিশাল সাম্রাজ্য । এই সাম্রাজ্য রক্ষার জন্য বিধাতা গড়ে দিয়েছেন
এর চারিপাশে বিশাল এক সেনা বাহিণী ।
আর মানব দেহ দুর্গের ভিতরে দিয়েছেন নীজকে গড়া পিঠা আর রক্ষা করার জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন স্বয়্ংসম্পুর্ণ
জীবন্ত কোষ । মানব দেহে রয়েছে more than 30,000,000,000,000 cells. আর প্রতিটি কোষে রয়েছে
8,000,000,000 hydrogen atoms.
নীজের ভিতরে থাকা এই বিশাল তেজস্ক্রিয় এটম গুলিকে সঠিকভাবে পরিচর্চা করে সুস্থ রাখুন আর তাজা
করে আক্রমন করুন , সাম্রাজ্য সুরক্ষিত থাকবে ইনসাল্লাহ ।
উল্লেখ যে বা যাহারা সে একাকি ,সমাজ ,জাতি ,দেশ কিংবা সাম্রাজ্য যেই হোক না কেন তারা যতক্ষন বিধাতা প্রদত্ত
সম্পদকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে শক্তি সামর্থ বা সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারবেনা ততদিন তার আক্রমন কিংবা টিকে
থাকা কঠিন থেকে কঠীনতর হবে । ব্যক্তি জীবন হতে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কিভাবে শক্তি সামর্থ অর্জন করতে হবে
এবং জীবনযুদ্ধ হতে শুরু করে অন্য যে কোন ধরনের আক্রমন রচনা ও প্রতিরোধ করে জয়ী হওয়া যাবে তার বিষদ
বর্ণনা ও বিবরণ রয়েছে পবিত্র কোরানে । সেগুলি সঠিকভাবে (আধ্যাত্বিক ও বৈজ্ঞানিক উভয়ভাবে) অনুধাবন ,
অনুসরণ ও বাস্তবায়ন কৌশল অবলম্বন করা হলে বিজয় অনিবার্য । এর জন্য সর্বাজ্ঞে প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা
ব্যবস্থার বাস্তবায়ন , অনুশীলন ও প্রয়োগ কৌশল অবলম্বন ।
শুভেচ্ছা রইল
৯| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ,
যতো বীরশ্রেষ্ঠ, যতো প্রতাপশালীই আপনি হোন না কেন, মনি-মানিক্য খচিত পালঙ্ক ছেড়ে সাড়ে তিন হাত মাটির শয্যাই হয়ে উঠবে আপনার শেষ গন্তব্য ! ক্ষমতার তলোয়ারে রক্তই ঝরিয়ে যতোই নিজেকে বিজয়ী ভাবুন না কেন, আপনার শরীরের রক্ত-মাংশকে ঝরিয়ে ফেলতে উদ্যত মাটিশয্যার নগন্য কীটপতঙ্গের কাছে আপনি নিশ্চিত ভাবেই পরাজিত!
খুব দুরূহ করে লিখেছেন।
১০| ২০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: ছবিটা দারুণ সুন্দর!
আমার এবং আমার মত অনেকের বক্তব্য মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলে দিয়েছেন, যা আপনি সঠিকভাবে অনুমান করেছেন।
১১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১২:৪৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
এত বিশাল সাম্রাজ্য ছেড়ে কোথায় উধাও হয়ে গেলেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:০৩
কামাল১৮ বলেছেন: মনে হলো কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বর্ণনা শুনছি।তবে বর্ণনা খুবই সুন্দর।বর্তমানে যুদ্ধ হচ্ছে গাজায় ও ইউক্রেনে তবে ডাল তলোয়ারে না মিসাইল আর রকেটে।কবে যে বিশ্ব থেকে যুদ্ধ শেষ হবে,শান্তি আসবে পৃথীবিতে।